বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের চিহিৃত করতে কমিশন গঠনের ‘রূপরেখা’ তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘এটা (কমিশন) প্রতিহিংসামূলক নয়। এটা কিন্তু প্রতিশোধ নেয়ার জন্যও নয়। কমিশন হচ্ছে আজকে বাংলাদেশ যেখানে পৌছে গেছে সেই অবস্থান সুরক্ষা করার জন্য। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও বর্তমান প্রজন্ম বাংলাদেশের ইতিহাসটা সঠিকভাবে জানতে পারে। বাংলাদেশকে ধ্বংশ করার যে বৃহৎ পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেটিই জানানোর জন্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সম্প্রীতি বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘সম্প্রীতির পথে সাফল্যের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সভায় সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ, এ কারণেই পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। যারা হত্যা করেছে তারা বুঝতে পেরেছিল যে বঙ্গবন্ধুর এক ফোটা রক্ত যদি বেঁচে থাকে তাহলে তারা যে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট এবং আবার পাকিস্তানী ধারায় নিয়ে যেতে চেয়েছিল যেটি করা সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করছি। কিন্তু এই যে পুরো ঘটনার অনেক অধ্যায় আছে। হত্যার বিচার বলতে বুঝায় যারা প্রত্যাক্ষভাবে জড়িত ছিল যারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিল। আইনের কথায় ষড়যন্ত্র, ঘটনা এবং ঘটনার পরে যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরও বিচার করা যায়।’
আনিসুল হক বলেন, ‘প্রসঙ্গিকভাবে বলছি, আপনারা যদি পাশের রাষ্ট্র দেখেন। ভারতে কিন্তু এখনও রাজিব গান্ধী ও ইন্দ্রিরা গান্ধীর বিচার শেষ করতে পারেনি। আর তার পাশের রাষ্ট্রের (পাকিস্তান) কথা যদি বলি। সেখানেও এমন হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। সেটি বলেও লাভ নেই, সেখানে কোন বিচারই হয় না। কিন্তু এই দেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন এই বিচার হওয়ার পরে অনেকগুলো বিচার রয়েছে। এই বিচার হওয়ার পরে অন্যায় তথা অন্যায়কে শ্রদ্ধা করা আর ন্যায়কে লাথি মারার একটা সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আদালতে যাই। সেই ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করি। সেই ক্ষেত্রে (বঙ্গবন্ধু হত্যার) এই বিচারটা একটি ওপেনিং। আর সেই বিচারটা আমরা শেষ করতে পেরেছি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান তো শুরুই করেছিল শাহ আইজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে। তিনি ছিলেন রাজাকার নাম্বার ওয়ান। এছাড়াও তার মন্ত্রীসভার অনেকেই আইয়ুব খানের মন্ত্রী ছিলেন। এই গোষ্ঠীর ধারাটা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যেই জিয়াউর রহমান দেশ শাসন শুরু করেছিলেন। এ থেকে তো পরিস্কার বুঝা যায়। যে ধারাটাকে কমপেক্টলী থ্রি-সিক্সটি ডিগ্রি পরিবর্তন করার জন্যই জিয়াউর রহমান এই (বঙ্গবন্ধু) হত্যাকান্ড করার পরে দেশ শাসন শুরু করেছিলেন। তার মানে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুর বিচার হওয়ার পরে এখন এদেরকে চিহিৃত না করলে এই শত্রুদেরকে লালন পালন করার অবকাশ তৈরি হবে। আমি সকলকে জেলখানায় বন্দির কথা বলছি না। হয়ত অনেকেই মরে গেছেন। কিন্তু এদেরকে ও এদের গোষ্ঠিকে আমরা চিহিৃত করতে পারেনি। এই গোষ্ঠির ব্যাপারে আমরা যদি সাবধান থাকতে পারে তাহলে ২০৪১ সালে উন্নত এবং ২১০০ সালের বদ্বীব পরিকল্পনায় পৌছাতে পারবো। ’
কমিশনের অগ্রগতির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজার বিষয়ে কমিশনের রূপরেখা তৈরি করেছি। আমাদের এই রূপ রেখার মধ্যে আছে এই কমিশন কয় সদস্যের হবে। রূপরেখায় আছে কমিশনের উদ্দেশ্য কি। কমিশনে আছে কমিশন কি কাজটা করবে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। তিনি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে চূড়ান্ত অনুমোদন করবেন।’
বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘সেদিন শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল, তা নয়, তার আদর্শকেও হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের ঘটনায় অত্যন্ত শক্তিশালী কমিশন গঠন করতে হবে। হত্যাকান্ডে কারাকারা কলকাঠি নেড়েছেন তা বের করা দরকার।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল জানিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘এই হত্যাকা- তো হঠাৎ করে ঘটেনি। এর একটি বিশাল প্রেক্ষাপট ছিল। সেই গোষ্ঠী এখনও এদেশে রাজনীতি করছে।’
মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট ২০২২
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের চিহিৃত করতে কমিশন গঠনের ‘রূপরেখা’ তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘এটা (কমিশন) প্রতিহিংসামূলক নয়। এটা কিন্তু প্রতিশোধ নেয়ার জন্যও নয়। কমিশন হচ্ছে আজকে বাংলাদেশ যেখানে পৌছে গেছে সেই অবস্থান সুরক্ষা করার জন্য। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও বর্তমান প্রজন্ম বাংলাদেশের ইতিহাসটা সঠিকভাবে জানতে পারে। বাংলাদেশকে ধ্বংশ করার যে বৃহৎ পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেটিই জানানোর জন্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সম্প্রীতি বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘সম্প্রীতির পথে সাফল্যের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সভায় সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ, এ কারণেই পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। যারা হত্যা করেছে তারা বুঝতে পেরেছিল যে বঙ্গবন্ধুর এক ফোটা রক্ত যদি বেঁচে থাকে তাহলে তারা যে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট এবং আবার পাকিস্তানী ধারায় নিয়ে যেতে চেয়েছিল যেটি করা সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করছি। কিন্তু এই যে পুরো ঘটনার অনেক অধ্যায় আছে। হত্যার বিচার বলতে বুঝায় যারা প্রত্যাক্ষভাবে জড়িত ছিল যারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিল। আইনের কথায় ষড়যন্ত্র, ঘটনা এবং ঘটনার পরে যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরও বিচার করা যায়।’
আনিসুল হক বলেন, ‘প্রসঙ্গিকভাবে বলছি, আপনারা যদি পাশের রাষ্ট্র দেখেন। ভারতে কিন্তু এখনও রাজিব গান্ধী ও ইন্দ্রিরা গান্ধীর বিচার শেষ করতে পারেনি। আর তার পাশের রাষ্ট্রের (পাকিস্তান) কথা যদি বলি। সেখানেও এমন হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। সেটি বলেও লাভ নেই, সেখানে কোন বিচারই হয় না। কিন্তু এই দেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন এই বিচার হওয়ার পরে অনেকগুলো বিচার রয়েছে। এই বিচার হওয়ার পরে অন্যায় তথা অন্যায়কে শ্রদ্ধা করা আর ন্যায়কে লাথি মারার একটা সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আদালতে যাই। সেই ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করি। সেই ক্ষেত্রে (বঙ্গবন্ধু হত্যার) এই বিচারটা একটি ওপেনিং। আর সেই বিচারটা আমরা শেষ করতে পেরেছি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান তো শুরুই করেছিল শাহ আইজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে। তিনি ছিলেন রাজাকার নাম্বার ওয়ান। এছাড়াও তার মন্ত্রীসভার অনেকেই আইয়ুব খানের মন্ত্রী ছিলেন। এই গোষ্ঠীর ধারাটা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যেই জিয়াউর রহমান দেশ শাসন শুরু করেছিলেন। এ থেকে তো পরিস্কার বুঝা যায়। যে ধারাটাকে কমপেক্টলী থ্রি-সিক্সটি ডিগ্রি পরিবর্তন করার জন্যই জিয়াউর রহমান এই (বঙ্গবন্ধু) হত্যাকান্ড করার পরে দেশ শাসন শুরু করেছিলেন। তার মানে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুর বিচার হওয়ার পরে এখন এদেরকে চিহিৃত না করলে এই শত্রুদেরকে লালন পালন করার অবকাশ তৈরি হবে। আমি সকলকে জেলখানায় বন্দির কথা বলছি না। হয়ত অনেকেই মরে গেছেন। কিন্তু এদেরকে ও এদের গোষ্ঠিকে আমরা চিহিৃত করতে পারেনি। এই গোষ্ঠির ব্যাপারে আমরা যদি সাবধান থাকতে পারে তাহলে ২০৪১ সালে উন্নত এবং ২১০০ সালের বদ্বীব পরিকল্পনায় পৌছাতে পারবো। ’
কমিশনের অগ্রগতির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজার বিষয়ে কমিশনের রূপরেখা তৈরি করেছি। আমাদের এই রূপ রেখার মধ্যে আছে এই কমিশন কয় সদস্যের হবে। রূপরেখায় আছে কমিশনের উদ্দেশ্য কি। কমিশনে আছে কমিশন কি কাজটা করবে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। তিনি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে চূড়ান্ত অনুমোদন করবেন।’
বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘সেদিন শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল, তা নয়, তার আদর্শকেও হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের ঘটনায় অত্যন্ত শক্তিশালী কমিশন গঠন করতে হবে। হত্যাকান্ডে কারাকারা কলকাঠি নেড়েছেন তা বের করা দরকার।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল জানিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘এই হত্যাকা- তো হঠাৎ করে ঘটেনি। এর একটি বিশাল প্রেক্ষাপট ছিল। সেই গোষ্ঠী এখনও এদেশে রাজনীতি করছে।’