জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির সমাবেশ ও র্যালি
নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে, অন্যথায় দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না: মির্জা ফখরুল
৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র্যালি-পূর্ব নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল -সংবাদ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকার ও গণভোটের দাবিতে আন্দোলনরত দলগুলোর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক চাপ নির্বাচন ব্যাহত করতে পারে বলে শঙ্কা তার। ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এক বিশাল সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালি পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার,(০৭ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে এই সমাবেশ ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের অবস্থান এবং সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়েই জাতীয় নির্বাচনের পথকে জটিল করে তুলছে। জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক আটটি দলের জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিকে ‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র’ বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যে রাজনৈতিক দলগুলো গণভোটের চাপ দিচ্ছে, তারাও নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।
গণভোটের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব স্পষ্ট করে বলেছেন, গণভোট যদি হয়, তবে তা অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই হতে হবে। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘একই ইস্যুতে আলাদা দিনে দুই ভোট করতে গেলে সরকারি অর্থের অপচয় হবে এবং মূল জাতীয় নির্বাচন গুরুত্ব হারাবে।’ তিনি আরও দাবি করেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে, অন্যথায় দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত এবং কয়েকটি দলের গণভোটের দাবির প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, সাত মাস ধরে জাতীয় সনদে সইয়ের জন্য যে ঐকমত্য কমিশন বসেছিল এবং অসংখ্য টাকা খরচ করে আলাপ আলোচনা করেছিল, তাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি।
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপির পূর্ণ সমর্থনের কথা আবারও উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ দুর্ভাগ্য আমাদের, যেই অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি; তারাই আজ এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছে। যাতে নির্বাচন ব্যাহত হয়।’
গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। শুক্রবার সকালে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সালাহউদ্দিন আহমদ, মির্জা আব্বাসসহ দলটির সিনিয়র নেতারা। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের চক্রান্ত চলছে গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার জন্য।’
‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের’ তাৎপর্য ও প্রেরণা নিয়ে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস আমাদের সেই পথেই যেতে অনুপ্রাণিত করে, যে পথে সত্যিকার অর্থে আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। একটা সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। জনগণের ভোটের অধিকারকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করতে পারব। বিচারের অধিকার নিশ্চিত করতে পারব। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, বিএনপি এগিয়ে যাব।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে অভিহিত করেন মির্জা ফখরুল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী থেকে উদ্ধার করে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের কাজটি বাংলাদেশের অগ্রগতির মোড় ঘোরানো দিক ছিল। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার চার বছরে জিয়াউর রহমান দেশে আমূল পরিবর্তন আনেন। তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তা দেশকে পরবর্তীকালে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দলসহ বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা আলাদা আলাদাভাবে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এসে শ্রদ্ধা জানান।
৭ নভেম্বরের চেতনা ও ৩১ দফা
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৭ নভেম্বরের চেতনাকে ‘গণতন্ত্রের চেতনা’ আখ্যা দেন এবং বলেন বিএনপির জন্ম হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি নতুন সংস্কারের ৩১ দফা দিয়ে জাতিকে সামনে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি এইনির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ এই নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’
মির্জা আব্বাস তার বক্তব্যে একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, বিএনপি মাঠে নামলে তাদের খুঁজেও পাওয়া যাবে না।
সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালি
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ২টা থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
সমাবেশ শেষে বিকেল ৪টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা (র্যালি) শুরু হয়। র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে কাকরাইল, মালিবাগ ও বাংলামোটর হয়ে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে কারওয়ানবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন ও ব্যানার বহন করা হয়। এছাড়াও, প্রতীকীভাবে খাঁচায় বন্দী শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রীদের প্রদর্শন করেন নেতাকর্মীরা।
এ সমাবেশ ও র্যালিকে ঘিরে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে সতর্ক অবস্থানে মোতায়েন থাকতে দেখা যায়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে বিএনপির সমাবেশ ও র্যালি
নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে, অন্যথায় দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না: মির্জা ফখরুল
৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে র্যালি-পূর্ব নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল -সংবাদ
শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকার ও গণভোটের দাবিতে আন্দোলনরত দলগুলোর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক চাপ নির্বাচন ব্যাহত করতে পারে বলে শঙ্কা তার। ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এক বিশাল সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালি পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার,(০৭ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে এই সমাবেশ ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের অবস্থান এবং সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়েই জাতীয় নির্বাচনের পথকে জটিল করে তুলছে। জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক আটটি দলের জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিকে ‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র’ বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যে রাজনৈতিক দলগুলো গণভোটের চাপ দিচ্ছে, তারাও নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।
গণভোটের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব স্পষ্ট করে বলেছেন, গণভোট যদি হয়, তবে তা অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই হতে হবে। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘একই ইস্যুতে আলাদা দিনে দুই ভোট করতে গেলে সরকারি অর্থের অপচয় হবে এবং মূল জাতীয় নির্বাচন গুরুত্ব হারাবে।’ তিনি আরও দাবি করেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে, অন্যথায় দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত এবং কয়েকটি দলের গণভোটের দাবির প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, সাত মাস ধরে জাতীয় সনদে সইয়ের জন্য যে ঐকমত্য কমিশন বসেছিল এবং অসংখ্য টাকা খরচ করে আলাপ আলোচনা করেছিল, তাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি।
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপির পূর্ণ সমর্থনের কথা আবারও উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ দুর্ভাগ্য আমাদের, যেই অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি; তারাই আজ এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছে। যাতে নির্বাচন ব্যাহত হয়।’
গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। শুক্রবার সকালে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সালাহউদ্দিন আহমদ, মির্জা আব্বাসসহ দলটির সিনিয়র নেতারা। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমের চক্রান্ত চলছে গণতন্ত্রকে আবার ধ্বংস করার জন্য।’
‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের’ তাৎপর্য ও প্রেরণা নিয়ে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস আমাদের সেই পথেই যেতে অনুপ্রাণিত করে, যে পথে সত্যিকার অর্থে আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। একটা সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব। জনগণের ভোটের অধিকারকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠা করতে পারব। বিচারের অধিকার নিশ্চিত করতে পারব। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, বিএনপি এগিয়ে যাব।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে অভিহিত করেন মির্জা ফখরুল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী থেকে উদ্ধার করে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের কাজটি বাংলাদেশের অগ্রগতির মোড় ঘোরানো দিক ছিল। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার চার বছরে জিয়াউর রহমান দেশে আমূল পরিবর্তন আনেন। তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, তা দেশকে পরবর্তীকালে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দলসহ বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা আলাদা আলাদাভাবে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এসে শ্রদ্ধা জানান।
৭ নভেম্বরের চেতনা ও ৩১ দফা
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৭ নভেম্বরের চেতনাকে ‘গণতন্ত্রের চেতনা’ আখ্যা দেন এবং বলেন বিএনপির জন্ম হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি নতুন সংস্কারের ৩১ দফা দিয়ে জাতিকে সামনে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি এইনির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ এই নির্বাচনে জয়যুক্ত হয়ে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’
মির্জা আব্বাস তার বক্তব্যে একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, বিএনপি মাঠে নামলে তাদের খুঁজেও পাওয়া যাবে না।
সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালি
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ২টা থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন। সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
সমাবেশ শেষে বিকেল ৪টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা (র্যালি) শুরু হয়। র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে কাকরাইল, মালিবাগ ও বাংলামোটর হয়ে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে কারওয়ানবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন ও ব্যানার বহন করা হয়। এছাড়াও, প্রতীকীভাবে খাঁচায় বন্দী শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রীদের প্রদর্শন করেন নেতাকর্মীরা।
এ সমাবেশ ও র্যালিকে ঘিরে নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে সতর্ক অবস্থানে মোতায়েন থাকতে দেখা যায়।