alt

সম্পাদকীয়

যৌতুকের বলি : বৈশাখীর নির্মম পরিণতি ও আমাদের করণীয়

: মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। এই ব্যধি এখনও বহু নারীর জীবন কেড়ে নিচ্ছে। সর্বশেষ খুলনার মারিয়া সুলাতানা বৈশাখীর হত্যাকা- আবারও প্রমাণ করল, এই কুপ্রথা কেবল আর্থিক নিপীড়নেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি অনেক নারীর জীবন কেড়ে নিচ্ছে।

বৈশাখীর স্বজনদের অভিযোগ অনুযায়ী, বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী ও স্বজন যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করতেন। নির্যাতন থেকে মেয়েকে রক্ষার জন্য যৌতুক দেয়াও হয়েছে কয়েক দফা। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশে এখনো এমন অনেক বৈশাখীর গল্প রচিত হচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, আইনানুগভাবে এই হত্যার বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। মামলার প্রধান আসামিরা পলাতক থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হলে সেটা কেবল বৈশাখীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে না, বরং সমাজে একটি কঠোর বার্তা দেবে যে, যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।

দেশে ১৯৮০ সালে যৌতুক নিরোধ আইন পাস করা হলেও, তা কার্যকরভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এখনও সমাজের একটি অংশ যৌতুককে স্বাভাবিক হিসেবে দেখে। শুধু আইন থাকলেই হবে না, এটি বাস্তবায়ন করতে হবে কঠোরভাবে। প্রতিটি থানায় যৌতুকবিরোধী সেল গঠন, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে শাস্তির বিধান কার্যকর এবং জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

এখানে সমাজের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। মেয়ের পরিবার যেন যৌতুক দিতে বাধ্য না হয়, সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি কন্যাসন্তানের প্রতি পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। মেয়েদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তুললে তারা সংসারে ন্যায্য সম্মান পাবে এবং যৌতুকের মতো অনৈতিক চাহিদার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে পারবে।

বৈশাখীর নির্মম মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, যৌতুক একটি ভয়ংকর সামাজিক ব্যাধি, যা পরিবার ও সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, সমাজ এবং পরিবারÑ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

tab

সম্পাদকীয়

যৌতুকের বলি : বৈশাখীর নির্মম পরিণতি ও আমাদের করণীয়

মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। এই ব্যধি এখনও বহু নারীর জীবন কেড়ে নিচ্ছে। সর্বশেষ খুলনার মারিয়া সুলাতানা বৈশাখীর হত্যাকা- আবারও প্রমাণ করল, এই কুপ্রথা কেবল আর্থিক নিপীড়নেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি অনেক নারীর জীবন কেড়ে নিচ্ছে।

বৈশাখীর স্বজনদের অভিযোগ অনুযায়ী, বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী ও স্বজন যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করতেন। নির্যাতন থেকে মেয়েকে রক্ষার জন্য যৌতুক দেয়াও হয়েছে কয়েক দফা। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশে এখনো এমন অনেক বৈশাখীর গল্প রচিত হচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, আইনানুগভাবে এই হত্যার বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। মামলার প্রধান আসামিরা পলাতক থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হলে সেটা কেবল বৈশাখীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে না, বরং সমাজে একটি কঠোর বার্তা দেবে যে, যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।

দেশে ১৯৮০ সালে যৌতুক নিরোধ আইন পাস করা হলেও, তা কার্যকরভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এখনও সমাজের একটি অংশ যৌতুককে স্বাভাবিক হিসেবে দেখে। শুধু আইন থাকলেই হবে না, এটি বাস্তবায়ন করতে হবে কঠোরভাবে। প্রতিটি থানায় যৌতুকবিরোধী সেল গঠন, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে শাস্তির বিধান কার্যকর এবং জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

এখানে সমাজের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। মেয়ের পরিবার যেন যৌতুক দিতে বাধ্য না হয়, সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি কন্যাসন্তানের প্রতি পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। মেয়েদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তুললে তারা সংসারে ন্যায্য সম্মান পাবে এবং যৌতুকের মতো অনৈতিক চাহিদার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে পারবে।

বৈশাখীর নির্মম মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, যৌতুক একটি ভয়ংকর সামাজিক ব্যাধি, যা পরিবার ও সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, সমাজ এবং পরিবারÑ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

back to top