alt

opinion » editorial

রেলপথে নিরাপত্তাহীনতা : চুরি ও অব্যবস্থাপনার দুষ্টচক্র

: শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নীলফামারীর সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথ বর্তমানে ভয়াবহ নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন। এই রেলপথের রেল লাইনকে শক্ত করে ধরে রাখার জন্য ব্যবহৃত ১২ হাজার ইলাস্টিক রেল ক্লিপ (ইআরসি) উধাও হয়ে গেছে। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর বলছে, চুরি এবং পুরাতন ক্লিপ ভেঙে যাওয়ার ফলে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে; কিন্তু মূল সমস্যা চুরি, যা রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তাহীনতার স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরছে।

সাধারণত, রেললাইনকে শক্তভাবে আটকে রাখতে সিøপারে ক্লিপ ব্যবহৃত হয়। এই ক্লিপগুলো না থাকলে রেললাইন নড়বড়ে হয়ে পড়ে, যা ট্রেন চলাচলের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এই রেলপথে প্রতিদিন ৬টি আন্তঃনগর ও একটি মেইল ট্রেন চলাচল করে। যদি ক্লিপের ঘাটতি থাকে, তবে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

চোরদের দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে যে, নতুন ক্লিপ প্রতিস্থাপনের পরও তা চুরি হয়ে যাচ্ছে। রেলপথ প্রকৌশল দপ্তরের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, ৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথের বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ হাজার ক্লিপ খোয়া গেছে। স্থানীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুলিশ বলছে, তদন্ত চলছে। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ পায়নি। ফলে চোররা নির্ভয়ে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

এটি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং দেশের রেলওয়ে অবকাঠামো রক্ষায় চরম অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার দৃষ্টান্ত। ২০১২ সালে এই রেলপথের সংস্কার করা হয়েছিল, অথচ এক দশকের মধ্যেই এটি ভয়াবহ অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। প্রশ্ন ওঠে, এত গুরুত্বপূর্ণ রেলপথের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রেলওয়ে কতটা দায়িত্বশীল? ক্লিপ চুরি রোধে কি সিসিটিভি ক্যামেরা বা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? কেন স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে?

রেলপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলওয়ের উচিত জরুরিভিত্তিতে ক্লিপ পুনঃস্থাপন করা এবং চুরি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। পুলিশি নজরদারি বাড়ানো, স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে সচেতনতা তৈরি এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নইলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা এড়ানো কঠিন হবে।

রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী দাবি করেছেন, রেললাইন এখনো ঝুঁকিপূর্ণ নয়; কিন্তু প্রশ্ন হলো, যদি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়, তখন কি দায় স্বীকার করা হবে? প্রতিটি দুর্ঘটনার পর দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন এবং স্থানীয় জনগণÑ সবার সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

tab

opinion » editorial

রেলপথে নিরাপত্তাহীনতা : চুরি ও অব্যবস্থাপনার দুষ্টচক্র

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নীলফামারীর সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথ বর্তমানে ভয়াবহ নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন। এই রেলপথের রেল লাইনকে শক্ত করে ধরে রাখার জন্য ব্যবহৃত ১২ হাজার ইলাস্টিক রেল ক্লিপ (ইআরসি) উধাও হয়ে গেছে। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর বলছে, চুরি এবং পুরাতন ক্লিপ ভেঙে যাওয়ার ফলে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে; কিন্তু মূল সমস্যা চুরি, যা রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তাহীনতার স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরছে।

সাধারণত, রেললাইনকে শক্তভাবে আটকে রাখতে সিøপারে ক্লিপ ব্যবহৃত হয়। এই ক্লিপগুলো না থাকলে রেললাইন নড়বড়ে হয়ে পড়ে, যা ট্রেন চলাচলের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এই রেলপথে প্রতিদিন ৬টি আন্তঃনগর ও একটি মেইল ট্রেন চলাচল করে। যদি ক্লিপের ঘাটতি থাকে, তবে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

চোরদের দৌরাত্ম্য এতটাই বেড়েছে যে, নতুন ক্লিপ প্রতিস্থাপনের পরও তা চুরি হয়ে যাচ্ছে। রেলপথ প্রকৌশল দপ্তরের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, ৫৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথের বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ হাজার ক্লিপ খোয়া গেছে। স্থানীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুলিশ বলছে, তদন্ত চলছে। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ পায়নি। ফলে চোররা নির্ভয়ে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

এটি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং দেশের রেলওয়ে অবকাঠামো রক্ষায় চরম অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার দৃষ্টান্ত। ২০১২ সালে এই রেলপথের সংস্কার করা হয়েছিল, অথচ এক দশকের মধ্যেই এটি ভয়াবহ অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। প্রশ্ন ওঠে, এত গুরুত্বপূর্ণ রেলপথের নিরাপত্তা নিশ্চিতে রেলওয়ে কতটা দায়িত্বশীল? ক্লিপ চুরি রোধে কি সিসিটিভি ক্যামেরা বা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? কেন স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে?

রেলপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলওয়ের উচিত জরুরিভিত্তিতে ক্লিপ পুনঃস্থাপন করা এবং চুরি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া। পুলিশি নজরদারি বাড়ানো, স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে সচেতনতা তৈরি এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। নইলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা এড়ানো কঠিন হবে।

রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী দাবি করেছেন, রেললাইন এখনো ঝুঁকিপূর্ণ নয়; কিন্তু প্রশ্ন হলো, যদি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়, তখন কি দায় স্বীকার করা হবে? প্রতিটি দুর্ঘটনার পর দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন এবং স্থানীয় জনগণÑ সবার সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

back to top