চলন্ত বাসে ডাকাতি, নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের অভিযোগের মতো গুরুতর ঘটনার তিন দিন পর মামলা এবং পুলিশের দুই থানার ঠেলাঠেলির ঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী বাসে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শুধু যাত্রীদের জন্যই নয়, বরং সাধারণ মানুষের মনে গভীর আতঙ্ক ও অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। পুলিশের দায়দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা, সীমানা নিয়ে বিতর্ক এবং সময়মতো পদক্ষেপ না নেয়ার ফলে এই ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছেÑমহাসড়কে নিরাপত্তা কোথায়? আর আইনের রক্ষকদের এমন গাফিলতি কি সমাজে ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা নষ্ট করছে না?
১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘটে যাওয়া এই ডাকাতির ঘটনায় যাত্রীদের বর্ণনা রোমহর্ষক। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতদের দখলে থাকা বাসে লুটপাট, মারধর, শ্লীলতাহানি, এমনকি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অথচ এই জঘন্য অপরাধের পরও মির্জাপুর ও বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের মধ্যে সীমানা নিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর প্রতিযোগিতা চলেছে। যাত্রীরা প্রথমে মির্জাপুর থানায় গেলেও সেখানে মামলা নেয়া হয়নি। পরে বড়াইগ্রাম থানাও দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে। শেষ পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে ঘটনা প্রকাশের পর চাপে পড়ে ৩ দিন পর মির্জাপুর থানায় মামলা হয়। এই বিলম্ব শুধু অপরাধীদের পালানোর সুযোগ করে দেয়নি, বরং পুলিশের দক্ষতা ও দায়বদ্ধতার ওপর প্রশ্ন তুলেছে।
এই ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন উদাহরণ নয়। সাম্প্রতিক সময়ে মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলতি মাসে যানচালকদের মানববন্ধন এবং গত ছয় মাসে শতাধিক ডাকাতির ঘটনা এই সংকটের গভীরতা প্রকাশ করে। পুলিশ দাবি করেছে, পরিসংখ্যানে ডাকাতি বাড়েনি। কিন্তু সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন তার বিপরীত চিত্র দেখাচ্ছে। পুলিশের থানা-ফাঁড়ি ধ্বংস, অস্ত্র লুট এবং মনোবল হারানোর কথা বলে হাইওয়ে পুলিশ দায় এড়াতে চাইলেও, এটি জনগণের জন্য কোনো সমাধান নয়।
আরও উদ্বেগজনক হলো, এই মামলার এজাহারে ধর্ষণের কথা উল্লেখ না থাকা, যদিও যাত্রীরা বারবার এমন ঘটনার কথা বলেছেন। পুলিশের দাবি, তারা ধর্ষণের প্রমাণ পায়নি। কিন্তু যাত্রীদের চিৎকার শোনা এবং নারীদের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা এই দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি কি পুলিশের তদন্তে শৈথিল্য, নাকি সংবেদনশীলতার অভাব? নারী যাত্রীদের মানসিক আঘাত এবং সমাজে তাদের অবস্থান বিবেচনা করে এই বিষয়ে আরও গভীর তদন্তের প্রয়োজন ছিল।
এই ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানার ওসি প্রত্যাহার একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ হলেও, এটি সমস্যার মূল সমাধান নয়। মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানো, থানাগুলোর মধ্যে সমন্বয় স্থাপন এবং দ্রুত মামলা গ্রহণ ও তদন্তের ব্যবস্থা করা জরুরি। জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
রোববার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
চলন্ত বাসে ডাকাতি, নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের অভিযোগের মতো গুরুতর ঘটনার তিন দিন পর মামলা এবং পুলিশের দুই থানার ঠেলাঠেলির ঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী বাসে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শুধু যাত্রীদের জন্যই নয়, বরং সাধারণ মানুষের মনে গভীর আতঙ্ক ও অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। পুলিশের দায়দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা, সীমানা নিয়ে বিতর্ক এবং সময়মতো পদক্ষেপ না নেয়ার ফলে এই ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছেÑমহাসড়কে নিরাপত্তা কোথায়? আর আইনের রক্ষকদের এমন গাফিলতি কি সমাজে ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা নষ্ট করছে না?
১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘটে যাওয়া এই ডাকাতির ঘটনায় যাত্রীদের বর্ণনা রোমহর্ষক। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতদের দখলে থাকা বাসে লুটপাট, মারধর, শ্লীলতাহানি, এমনকি ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অথচ এই জঘন্য অপরাধের পরও মির্জাপুর ও বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের মধ্যে সীমানা নিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর প্রতিযোগিতা চলেছে। যাত্রীরা প্রথমে মির্জাপুর থানায় গেলেও সেখানে মামলা নেয়া হয়নি। পরে বড়াইগ্রাম থানাও দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলে। শেষ পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে ঘটনা প্রকাশের পর চাপে পড়ে ৩ দিন পর মির্জাপুর থানায় মামলা হয়। এই বিলম্ব শুধু অপরাধীদের পালানোর সুযোগ করে দেয়নি, বরং পুলিশের দক্ষতা ও দায়বদ্ধতার ওপর প্রশ্ন তুলেছে।
এই ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন উদাহরণ নয়। সাম্প্রতিক সময়ে মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলতি মাসে যানচালকদের মানববন্ধন এবং গত ছয় মাসে শতাধিক ডাকাতির ঘটনা এই সংকটের গভীরতা প্রকাশ করে। পুলিশ দাবি করেছে, পরিসংখ্যানে ডাকাতি বাড়েনি। কিন্তু সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন তার বিপরীত চিত্র দেখাচ্ছে। পুলিশের থানা-ফাঁড়ি ধ্বংস, অস্ত্র লুট এবং মনোবল হারানোর কথা বলে হাইওয়ে পুলিশ দায় এড়াতে চাইলেও, এটি জনগণের জন্য কোনো সমাধান নয়।
আরও উদ্বেগজনক হলো, এই মামলার এজাহারে ধর্ষণের কথা উল্লেখ না থাকা, যদিও যাত্রীরা বারবার এমন ঘটনার কথা বলেছেন। পুলিশের দাবি, তারা ধর্ষণের প্রমাণ পায়নি। কিন্তু যাত্রীদের চিৎকার শোনা এবং নারীদের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা এই দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি কি পুলিশের তদন্তে শৈথিল্য, নাকি সংবেদনশীলতার অভাব? নারী যাত্রীদের মানসিক আঘাত এবং সমাজে তাদের অবস্থান বিবেচনা করে এই বিষয়ে আরও গভীর তদন্তের প্রয়োজন ছিল।
এই ঘটনায় বড়াইগ্রাম থানার ওসি প্রত্যাহার একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ হলেও, এটি সমস্যার মূল সমাধান নয়। মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানো, থানাগুলোর মধ্যে সমন্বয় স্থাপন এবং দ্রুত মামলা গ্রহণ ও তদন্তের ব্যবস্থা করা জরুরি। জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।