মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আজকের ডিজিটাল যুগে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। প্ল্যাটফর্মগুলো যেমন যোগাযোগ এবং তথ্য বিনিময়ের সহজ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে, তেমনই এটি বিনোদনেরও একটি শক্তিশালী উৎস। তবে এর পাশাপাশি একটি অন্ধকারময় দিকও রয়েছে, যা আমাদের সমাজে নতুন একটি বিভ্রান্তি কর ও ক্ষতিকর প্রবণতা সৃষ্টি করেছে। আজকাল ফান পোস্ট বা মজার ছলে বর্ণবৈষম্য এবং জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া ডিজিটাল সংস্কৃতির একটি গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন মিম, ছবি এবং ভিডিওর মাধ্যমে বর্ণবৈষম্যকে হাস্যরসাত্মক আকারে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা সমাজে বৈষম্যের শিকড়কে আরও গভীরভাবে রোপণ করছে।
বণবৈষম্যের মতো সংবেদনশীল বিষয়কে মজার পোস্টে রূপান্ত রিত করার মধ্যে নিহিত রয়েছে বড় সামাজিক সমস্যা। প্রথমত এটি নির্দিষ্ট জাতি বা বর্ণের মানুষের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর এবং মানসিকভাবে আঘাত হানে। বৈষম্যমূলক মনোভাব তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটি বিভেদপূর্ণ মানসিকতা গড়ে তুলছে। এছাড়া যখন এই ফান পোস্টগুলো সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে যায়, তখন এটি ভবিষ্যতের জন্য সমাজে একটি বিভেদপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং সাম্প্রদাযড়ক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
যে কোনো ফান পোস্ট সহজেই ভাইরাল হতে পারে এবং বর্ণ বৈষম্যমূলক মজা এই তালিকার ব্যতিক্রম নয়। বিভিন্ন মাধ্যমে এই ধরনের পোস্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। কিছু মানুষের কাছে এটি নিছক বিনোদন হলেও, অন্যদের জন্য তা কষ্টদায়ক এবং অপমানজনক। এ ধরনের পোস্টকে মজার অংশ হিসেবে গ্রহণ করার মাধ্যমে বৈষম্যমূলক মানসিকতা প্রচলিত হচ্ছে, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিভেদ সৃষ্টি করছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানবিক মূল্যবোধ ও বৈষম্যের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা উচিত। শিক্ষার্থীরা একটি অন্ত র্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন সমাজ গঙার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারবে। সরকারের উচিত সামাজিক মাধ্যমে বর্ণ বৈষম্যমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা অন্যান্য আইন দ্বারা ঘৃণামূলক বক্তব্য নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে রিপোর্টিং সিস্টেমের মাধ্যমে বৈষম্যমূলক পোস্ট দ্রুত সরিয়ে ফেলা এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সামাজিক মাধ্যমে কিছু পোস্ট করার সময় দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বিনোদনের আড়ালে কোনো ক্ষতিকর মানসিকতা প্রচারিত হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। বর্ণ বৈষম্যমূলক ফান পোস্টের মাধ্যমে আমরা সমাজে যে বিভ্রান্তি এবং নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করছি, তা রোধ করা এখন সময়ের দাবি। একটি সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে আমাদের উচিত সামাজিক মাধ্যমে দায়িত্বশীলতা বজায় রাখা এবং প্রতিটি মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।
হালিমা আক্তার হানি
দর্শন বিভাগ, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আজকের ডিজিটাল যুগে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। প্ল্যাটফর্মগুলো যেমন যোগাযোগ এবং তথ্য বিনিময়ের সহজ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে, তেমনই এটি বিনোদনেরও একটি শক্তিশালী উৎস। তবে এর পাশাপাশি একটি অন্ধকারময় দিকও রয়েছে, যা আমাদের সমাজে নতুন একটি বিভ্রান্তি কর ও ক্ষতিকর প্রবণতা সৃষ্টি করেছে। আজকাল ফান পোস্ট বা মজার ছলে বর্ণবৈষম্য এবং জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়া ডিজিটাল সংস্কৃতির একটি গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন মিম, ছবি এবং ভিডিওর মাধ্যমে বর্ণবৈষম্যকে হাস্যরসাত্মক আকারে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা সমাজে বৈষম্যের শিকড়কে আরও গভীরভাবে রোপণ করছে।
বণবৈষম্যের মতো সংবেদনশীল বিষয়কে মজার পোস্টে রূপান্ত রিত করার মধ্যে নিহিত রয়েছে বড় সামাজিক সমস্যা। প্রথমত এটি নির্দিষ্ট জাতি বা বর্ণের মানুষের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর এবং মানসিকভাবে আঘাত হানে। বৈষম্যমূলক মনোভাব তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটি বিভেদপূর্ণ মানসিকতা গড়ে তুলছে। এছাড়া যখন এই ফান পোস্টগুলো সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে যায়, তখন এটি ভবিষ্যতের জন্য সমাজে একটি বিভেদপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং সাম্প্রদাযড়ক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
যে কোনো ফান পোস্ট সহজেই ভাইরাল হতে পারে এবং বর্ণ বৈষম্যমূলক মজা এই তালিকার ব্যতিক্রম নয়। বিভিন্ন মাধ্যমে এই ধরনের পোস্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। কিছু মানুষের কাছে এটি নিছক বিনোদন হলেও, অন্যদের জন্য তা কষ্টদায়ক এবং অপমানজনক। এ ধরনের পোস্টকে মজার অংশ হিসেবে গ্রহণ করার মাধ্যমে বৈষম্যমূলক মানসিকতা প্রচলিত হচ্ছে, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিভেদ সৃষ্টি করছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানবিক মূল্যবোধ ও বৈষম্যের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা উচিত। শিক্ষার্থীরা একটি অন্ত র্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন সমাজ গঙার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারবে। সরকারের উচিত সামাজিক মাধ্যমে বর্ণ বৈষম্যমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা অন্যান্য আইন দ্বারা ঘৃণামূলক বক্তব্য নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে রিপোর্টিং সিস্টেমের মাধ্যমে বৈষম্যমূলক পোস্ট দ্রুত সরিয়ে ফেলা এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সামাজিক মাধ্যমে কিছু পোস্ট করার সময় দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বিনোদনের আড়ালে কোনো ক্ষতিকর মানসিকতা প্রচারিত হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। বর্ণ বৈষম্যমূলক ফান পোস্টের মাধ্যমে আমরা সমাজে যে বিভ্রান্তি এবং নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করছি, তা রোধ করা এখন সময়ের দাবি। একটি সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে আমাদের উচিত সামাজিক মাধ্যমে দায়িত্বশীলতা বজায় রাখা এবং প্রতিটি মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।
হালিমা আক্তার হানি
দর্শন বিভাগ, রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী।