মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
সিলেটের জকিগঞ্জে ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক বিধ্বস্ত হয়। পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতি হয় অর্ধ শতাধিক ব্রিজ ও কালভার্টের। এছাড়া ২০২৩ ও ২০২৪ সালে সিলেট অঞ্চলে বছরে একাধিকবারের বন্যায় অনেক ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি সহ যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক অবনতি হয়। উপজেলার বেশ কয়েকটি ছোট-বড় গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল দশা জনমনে অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে। জনসাধারণের দৈনন্দিন চলাচল ও পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। কোথাও পাকা রাস্তা ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, রাস্তার পিচ উঠে গেছে। আবার অনেক জায়গায় রাস্তার পুরো অংশ ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।
এমতাবস্থায় বেশিরভাগ সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য সহ দৈনন্দিন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এসব সমস্যা সমাধানে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। আমি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের আরসিআইপি প্রকল্পে সার্ভেয়ার হিসেবে কাজ করার সুবাদে এলজিইডির অন্তর্ভুক্ত সবকটি সড়ক পরিদর্শনের সুযোগ হয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে এলজিইডি এর আওতাভুক্ত ছোট-বড় মোট ৩২৬টি সড়ক রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ সড়ক এখনো কাঁচা।
বিগত ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের উপর্যুপরি বন্যায় উপজেলার অধিকাংশ কাঁচা ও পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা সদর ইউনিয়ন, সুলতানপুর ও কশকনকপুর ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। সুলতানপুর ইউনিয়নের থানাবাজার-বিলপার সড়ক ও ইলাবাজ-তিরাশি সড়ক সহ গ্রামীণ মোট পাকা সড়কের অধিকাংশই ভেঙ্গে চুরমার। উপজেলার দুটি অন্যতম প্রধান সড়ক জকিগঞ্জ-জিরো পয়েন্ট সড়ক ও জকিগঞ্জ-পল্লীশ্রী-কালিগঞ্জ বাজার সড়ক পানির তীব্র স্রোতে একইবারে বিধ্বস্ত। সড়কের বাজার-বৈরাগী বাজার-বরইতল সড়কের মধ্যবর্তী যশা এলাকায় প্রায় ৩০ মিটার রাস্তা ভেঙ্গে দুই দিকের হাওড়ের পানি চলাচল করে। ঐ স্থানে স্থানীয় জনসাধারণ বাশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করে থাকে।
বর্ষা মৌসুমে উক্ত এলাকার মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একটি ব্রিজের অভাবে বর্ষা মৌসুমে এলাকার মানুষকে উল্টো রাস্তা ধরে প্রায় ২৫ কিলোমিটার ঘুরে আটগ্রাম সড়ক হয়ে জকিগঞ্জ আসতে হয়। এতে মানুষের আর্থিক ব্যয় ও ভোগান্তি দুটোই বেড়েছে সমান তালে।
দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে উপজেলার বড় একটি সড়ক জকিগঞ্জ-জিরো পয়েন্ট সড়কের কিছু অংশের গর্তগুলো সংস্কারের জন্য কাজ শুরু হলেও গ্রামীণ ছোট বড় অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর কোথাও এখনো সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি। এমতাবস্থায় জকিগঞ্জের মানুষের দুর্ভোগ লাগব করার লক্ষ্যে নদী ও খালের পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থানের বাঁধ, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট সংস্কার ও ব্রিজ মেরামত করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা প্রয়োজন। আমি মনে করি জনস্বার্থে সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে স্থানিয় জনসাধারণের সহযোগিতা নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
আব্দুর রশিদ
সিলেট।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সিলেটের জকিগঞ্জে ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক বিধ্বস্ত হয়। পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতি হয় অর্ধ শতাধিক ব্রিজ ও কালভার্টের। এছাড়া ২০২৩ ও ২০২৪ সালে সিলেট অঞ্চলে বছরে একাধিকবারের বন্যায় অনেক ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি সহ যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক অবনতি হয়। উপজেলার বেশ কয়েকটি ছোট-বড় গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল দশা জনমনে অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে। জনসাধারণের দৈনন্দিন চলাচল ও পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। কোথাও পাকা রাস্তা ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, রাস্তার পিচ উঠে গেছে। আবার অনেক জায়গায় রাস্তার পুরো অংশ ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।
এমতাবস্থায় বেশিরভাগ সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য সহ দৈনন্দিন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এসব সমস্যা সমাধানে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। আমি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের আরসিআইপি প্রকল্পে সার্ভেয়ার হিসেবে কাজ করার সুবাদে এলজিইডির অন্তর্ভুক্ত সবকটি সড়ক পরিদর্শনের সুযোগ হয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে এলজিইডি এর আওতাভুক্ত ছোট-বড় মোট ৩২৬টি সড়ক রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ সড়ক এখনো কাঁচা।
বিগত ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের উপর্যুপরি বন্যায় উপজেলার অধিকাংশ কাঁচা ও পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা সদর ইউনিয়ন, সুলতানপুর ও কশকনকপুর ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। সুলতানপুর ইউনিয়নের থানাবাজার-বিলপার সড়ক ও ইলাবাজ-তিরাশি সড়ক সহ গ্রামীণ মোট পাকা সড়কের অধিকাংশই ভেঙ্গে চুরমার। উপজেলার দুটি অন্যতম প্রধান সড়ক জকিগঞ্জ-জিরো পয়েন্ট সড়ক ও জকিগঞ্জ-পল্লীশ্রী-কালিগঞ্জ বাজার সড়ক পানির তীব্র স্রোতে একইবারে বিধ্বস্ত। সড়কের বাজার-বৈরাগী বাজার-বরইতল সড়কের মধ্যবর্তী যশা এলাকায় প্রায় ৩০ মিটার রাস্তা ভেঙ্গে দুই দিকের হাওড়ের পানি চলাচল করে। ঐ স্থানে স্থানীয় জনসাধারণ বাশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করে থাকে।
বর্ষা মৌসুমে উক্ত এলাকার মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একটি ব্রিজের অভাবে বর্ষা মৌসুমে এলাকার মানুষকে উল্টো রাস্তা ধরে প্রায় ২৫ কিলোমিটার ঘুরে আটগ্রাম সড়ক হয়ে জকিগঞ্জ আসতে হয়। এতে মানুষের আর্থিক ব্যয় ও ভোগান্তি দুটোই বেড়েছে সমান তালে।
দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে উপজেলার বড় একটি সড়ক জকিগঞ্জ-জিরো পয়েন্ট সড়কের কিছু অংশের গর্তগুলো সংস্কারের জন্য কাজ শুরু হলেও গ্রামীণ ছোট বড় অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর কোথাও এখনো সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি। এমতাবস্থায় জকিগঞ্জের মানুষের দুর্ভোগ লাগব করার লক্ষ্যে নদী ও খালের পার্শ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ স্থানের বাঁধ, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট সংস্কার ও ব্রিজ মেরামত করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা প্রয়োজন। আমি মনে করি জনস্বার্থে সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে স্থানিয় জনসাধারণের সহযোগিতা নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
আব্দুর রশিদ
সিলেট।