alt

সারাদেশ

রোগ নিরাময়ে ওষুধ কেনা যেন বাড়তি গলার কাঁটা

প্রতিনিধি, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫

বেসরকারি কলেজের আয়া পদে চাকরিজীবী ফেরদৌসী বেগমের সব মিলিয়ে মাসে আয় ১২ হাজার ৪২০ টাকা। অথচ মাসে ওষুধের পেছনেই পাঁচ হাজারের ওপরে খরচ পড়ে যায় তার। বছর চারেক আগে তার শরীরে ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিম্নবিত্ত পরিবারের এই চতুর্থ শ্রেণির পদে চাকরিজীবী এই নারীকে ইনসুলিন নিতে হয় নিয়মিত।

একই সঙ্গে শরীরের নানাবিধ রোগব্যধি দেখা দেওয়ায় এজন্য প্রতিদিন সাত ধরনের ক্যাপসুল ও ট্যাবলেট খেতে হয়। এই নারীর নিজস্ব কোনো জমিজিরাত নেই। পৌর শহরের পশ্চিম কাঁটাবাড়ী গ্রামের পিতার বসতভিটার এক কোনে ঘর তুলে থাকেন। সংসারে দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে গেছে, তার সঙ্গে থাকে তার ছোট মেয়ে। ফেরদৌসী বেগমের ভাষ্য, অল্প বয়সেই এমন রোগ শরীরে ধরা পড়বে ভাবতেও পারেননি। স্বামী বেকার হওয়ায় তার (ফেরদৌসী বেগমের) আয় দিয়েই সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। এর ওপর ওষুধের খরচ। ৭ প্রকার ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলসহ ইনসুলিনের টাকা রাখার পর বাকি টাকা দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাতে হয়। ওষুধ কিনতে হয় না, ফুলবাড়ীতে এখন এমন পরিবার খুঁজে পাওয়াই কঠিন। বছরের সবসময় ওষুধ খেতে হয় এমন পরিবারের সংখ্যাও কম নয়। এদের বেশিরভাগই ভুগছেন গ্যাস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে। বহু মানুষ আছেন, যারা টাকার অভাবে নিয়মিত ওষুধ কিনতে পারেন না। ওষুধ কিনতে গিয়ে সংসার চালানোও কঠিন হয়ে যায় ফেরদৌসীর মতো এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি। উপজেলা পরিষদ সড়ক এলাকার বিদ্যুৎ মিস্ত্রি রকি প্রসাদের পায়ে ফোলা রোগ আছে। বছরের ৯ মাস ওষুধ খেতে হয় তাকে। রকি প্রসাদের ভাষ্য, মাসে গড়ে প্রায় দুই হাজার টাকার ওষুধ লাগে তার। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু কাজ করতে হলে তো দাঁড়িয়েই করতে হয়। কিছু করার নেই। সংসার চালাতে হলে কাজ তো করতেই হবে।

ফুলবাড়ী উপজেলার জনসংখ্যা ২ লাখ। যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র। দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। উপজেলার ৫০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে মাত্র একটি। এর বাইরে ২টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। জনবল কম থাকায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। এদিকে জেলায় ডায়াবেটিস ও রক্তচাপসহ বিভিন্ন জটিল রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এদের মধ্যে রক্তচাপসহ বেশকিছু রোগের চিকিৎসা উপজেলা হাসপাতালে দেওয়া হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসা নিতে যেতে হয় দিনাজপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালে। এজন্য অনেক নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন সুষ্ঠু চিকিৎসা করাতে না পেরে অকালেই মৃত্যুবরণ করছেন। উপজেলা হাসপাতালে ডায়াবেটিস চিকিৎসা জন্য একটি ইউনিট খোলা গেলে গরিব লোকজন চিকিৎসা সুবিধা পেতেন। ফুলবাড়ী শহরের ননী গোপাল মোড় এলাকার নিমাই ফার্মেসির মালিক নিমাই চন্দ্র জানান, তার দোকান থেকে ওষুধ কিনতে আসা বেশিরভাগ মানুষই গরিব। নুন আনতে পানতা ফুরোয় অবস্থা। একটু সুস্থতার জন্য তারা জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। অনেকেই টাকার অভাবে ওষুধ না কিনেই ফিরে যান।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমানের মতে, গ্যাস, রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ পুরোপুরি নিরাময় হওয়া খুবই কঠিন। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। বেশিরভাগ মানুষ খাদ্য ঠিকভাবে চিবিয়ে খান না। এজন্য গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। ধীরে-সুস্থে খেলে বা ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চললে এর থেকে মুক্তি মিলতে পারে। বংশগত কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে। তবে এসবের ওষুধ লম্বা সময় ধরে সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় ওষুধে ক্ষতি হতেই পারে। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ দেন তিনি।

ছবি

ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের দোয়া মাহফিল

ছবি

বিলাসপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের মুক্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

ছবি

মধুপুরে জৌলুস হারাচ্ছে মৃৎশিল্প

ছবি

কটিয়াদীর মাঠে মাঠে সবুজ ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

আশুলিয়ায় রাস্তার গর্তে লেগুনা, নিহত ২

কসবায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

ছবি

তিতাসে লতিকচু চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন কৃষক পলাশের

বিয়ানীবাজারে নিজস্ব ঠিকানায় বসতে অনীহা মুক্তিযোদ্ধাদের

ছবি

মুজিবনগর দিবস পালিত

১৬ বছর পর ফের চালু হচ্ছে রাজশাহীর দামকুড়া পশুহাট

সৌদিতে গ্যাস বিস্ফোরণে রামুর দুই যুবকের মৃত্যু স্বজনদের আহাজারি

মানিকগঞ্জে চিত্রশিল্পীর বাড়িতে আগুনের ঘটনায় আটক ৬

ছবি

নাজিরের ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল, সাময়িক বরখাস্ত

পবিপ্রবি শিক্ষার্থীর হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসক ওএসডি, প্রত্যাহার দাবি

কাপাসিয়ায় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

ছবি

গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ী পশুর হাটের ইজারা জটিলতা

ধানমন্ডিতে চাঁদাবাজির ভিডিওর ভাইরাল যুবক তিন দিনের রিমান্ডে

সাবেক এমপি ওমর ফারুক ও স্ত্রীর জমি জব্দ, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

সালিশে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে তালাক, ভুক্তভোগী পেলেন মাত্র ৮০ হাজার

ছবি

রাজবাড়ীতে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা

শেরপুরে কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

করিমগঞ্জে বিদ্যালয় মাঠের মাটি ভরাট উদ্বোধন

যশোরে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

পাঁচগাঁওয়ের ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হারিয়ে যাচ্ছে

নোয়াখালীতে চোলাই মদসহ যুবলীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ

চীনা হাসপাতাল তিস্তার ব্যারেজ এলাকায় নির্মাণের দাবি

কালিয়াকৈরে প্রবাসীর ১৪ লাখ টাকা ছিনতাই

ছবি

বাংলাদেশি কাঠুরিয়াকে মায়ানমারে ধরে নেয়ার ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে উত্তেজনা

সাটুরিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ আ’লীগের ৬ নেতা আটক

স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীসহ দুজনের ফাঁসির আদেশ

মৎস্য ও পোল্ট্রি খামারের মাছ ধরায় বাধা, অভিযোগ চাঁদা দাবির

ছবি

চাঁদপুরের বিষ্ণুপুরে ধনাগোদা নদীর গ্রাসে রাস্তা বিলীন, দাঁড়িয়ে বেইলি ব্রিজ

কুলাউড়ায় ভূমি অফিসের বেদখলকৃত ২ কোটি টাকা মূল্যের জমি উদ্ধার

গাজীপুরে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু

ছবি

নেপালের তুষারপ্রবণ অন্নপূর্ণা-১ জয়ী বাবর আলী নিজভূমে

সিরাজগঞ্জ জেলা যুবদল সভাপতি-সম্পাদককে শোকজ

tab

সারাদেশ

রোগ নিরাময়ে ওষুধ কেনা যেন বাড়তি গলার কাঁটা

প্রতিনিধি, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫

বেসরকারি কলেজের আয়া পদে চাকরিজীবী ফেরদৌসী বেগমের সব মিলিয়ে মাসে আয় ১২ হাজার ৪২০ টাকা। অথচ মাসে ওষুধের পেছনেই পাঁচ হাজারের ওপরে খরচ পড়ে যায় তার। বছর চারেক আগে তার শরীরে ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিম্নবিত্ত পরিবারের এই চতুর্থ শ্রেণির পদে চাকরিজীবী এই নারীকে ইনসুলিন নিতে হয় নিয়মিত।

একই সঙ্গে শরীরের নানাবিধ রোগব্যধি দেখা দেওয়ায় এজন্য প্রতিদিন সাত ধরনের ক্যাপসুল ও ট্যাবলেট খেতে হয়। এই নারীর নিজস্ব কোনো জমিজিরাত নেই। পৌর শহরের পশ্চিম কাঁটাবাড়ী গ্রামের পিতার বসতভিটার এক কোনে ঘর তুলে থাকেন। সংসারে দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে গেছে, তার সঙ্গে থাকে তার ছোট মেয়ে। ফেরদৌসী বেগমের ভাষ্য, অল্প বয়সেই এমন রোগ শরীরে ধরা পড়বে ভাবতেও পারেননি। স্বামী বেকার হওয়ায় তার (ফেরদৌসী বেগমের) আয় দিয়েই সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। এর ওপর ওষুধের খরচ। ৭ প্রকার ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলসহ ইনসুলিনের টাকা রাখার পর বাকি টাকা দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাতে হয়। ওষুধ কিনতে হয় না, ফুলবাড়ীতে এখন এমন পরিবার খুঁজে পাওয়াই কঠিন। বছরের সবসময় ওষুধ খেতে হয় এমন পরিবারের সংখ্যাও কম নয়। এদের বেশিরভাগই ভুগছেন গ্যাস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে। বহু মানুষ আছেন, যারা টাকার অভাবে নিয়মিত ওষুধ কিনতে পারেন না। ওষুধ কিনতে গিয়ে সংসার চালানোও কঠিন হয়ে যায় ফেরদৌসীর মতো এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি। উপজেলা পরিষদ সড়ক এলাকার বিদ্যুৎ মিস্ত্রি রকি প্রসাদের পায়ে ফোলা রোগ আছে। বছরের ৯ মাস ওষুধ খেতে হয় তাকে। রকি প্রসাদের ভাষ্য, মাসে গড়ে প্রায় দুই হাজার টাকার ওষুধ লাগে তার। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু কাজ করতে হলে তো দাঁড়িয়েই করতে হয়। কিছু করার নেই। সংসার চালাতে হলে কাজ তো করতেই হবে।

ফুলবাড়ী উপজেলার জনসংখ্যা ২ লাখ। যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র। দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। উপজেলার ৫০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে মাত্র একটি। এর বাইরে ২টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। জনবল কম থাকায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। এদিকে জেলায় ডায়াবেটিস ও রক্তচাপসহ বিভিন্ন জটিল রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এদের মধ্যে রক্তচাপসহ বেশকিছু রোগের চিকিৎসা উপজেলা হাসপাতালে দেওয়া হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসা নিতে যেতে হয় দিনাজপুর ডায়াবেটিস হাসপাতালে। এজন্য অনেক নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন সুষ্ঠু চিকিৎসা করাতে না পেরে অকালেই মৃত্যুবরণ করছেন। উপজেলা হাসপাতালে ডায়াবেটিস চিকিৎসা জন্য একটি ইউনিট খোলা গেলে গরিব লোকজন চিকিৎসা সুবিধা পেতেন। ফুলবাড়ী শহরের ননী গোপাল মোড় এলাকার নিমাই ফার্মেসির মালিক নিমাই চন্দ্র জানান, তার দোকান থেকে ওষুধ কিনতে আসা বেশিরভাগ মানুষই গরিব। নুন আনতে পানতা ফুরোয় অবস্থা। একটু সুস্থতার জন্য তারা জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। অনেকেই টাকার অভাবে ওষুধ না কিনেই ফিরে যান।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমানের মতে, গ্যাস, রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ পুরোপুরি নিরাময় হওয়া খুবই কঠিন। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। বেশিরভাগ মানুষ খাদ্য ঠিকভাবে চিবিয়ে খান না। এজন্য গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। ধীরে-সুস্থে খেলে বা ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চললে এর থেকে মুক্তি মিলতে পারে। বংশগত কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে। তবে এসবের ওষুধ লম্বা সময় ধরে সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় ওষুধে ক্ষতি হতেই পারে। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ দেন তিনি।

back to top