বৃহত্তর নওগাঁ, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার নিকটবর্তী রাজশাহী বিভাগের অধীন এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত ছোট্ট একটি জেলা শহর জয়পুরহাট। জেলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অনেক নান্দনিক ও ঐতিহাসিক স্থান। এ জেলার দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ফসলের মাঠ যেন যে কোন ভ্রমণ পিপাসুকেই মুগ্ধ করবে। এ ছাড়াও অষ্টম শতাব্দীর পাল বংশীয় রাজা ধর্ম পালের পাহারপুর ঐতিহাসিক বৌদ্ধ বিহার জয়পুরহাট জেলার অতি নিকটে নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত এবং বাংলাদেশের অন্যতম স্থলবন্দর হিলি জয়পুরহাট জেলার নিকটে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় অবস্থিত। তাই এ জেলায় পর্যটন শিল্প বিকাশে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্ত অদ্যাবধি এ জেলায় সরকারি উদ্যোগে কোন পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠেনি। এখানে দ্রূত সরকারিভাবে একটি পর্যটন মোটেল চালু করা আবশ্যক। জেলার কয়েকটি উলেখযোগ্য পর্যটন স্থান : আছরাঙ্গা দিঘী, হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ, নান্দাইল দিঘী, লকমা রাজবাড়ি, পাথরঘাটা নিমাই পীরের মাজার, গোপীনাথপুর মন্দির, বার শিবালয় মন্দির এবং দুয়ানী ঘাট। ঐতিহাসিক মনোমুগ্ধকর আছরাঙ্গা দিঘী: জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নে এই দিঘীটি অবস্থিত । এর মোট আয়তন ২৫.৫০ একর। ধারণা করা হয় প্রায় ১২০০ বছর পূর্বে ১১০০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১০৭০ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট এ দিঘীটি খনন করা হয়। অনেকের মতে তাহিরপুর রাজ পরিবারের সদস্য মনু ভট্ট এ দিঘীটি খনন করেছিলেন। ১৯৯২ সালে এ দিঘীটি পুনরায় খনন করা হয়। এ দিঘীটি খনন কালে ১২ টি মূর্তি পাওয়া গেছে যা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। বর্তমানে দিঘীটির চর্তুদিকের পাড়ে একটি পাকা রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। দিঘীটির চারদিকের অসংখ্য গাছ-পালা এবং এর স্বচ্ছ পানি এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে যা সকলকে আকৃষ্ট করে। প্রতি বছর অসংখ্য ভ্রমণ পিপাসু লোকের সমাগম ঘটে এখানে। আছরাঙ্গা দিঘী, ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট। ঐতিহাসিক ও ইসলামী স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শণ হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ। হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা গ্রামে অবস্থিত। হযরত আবদুল গফুর চিশতি (রাঃ) ইহার নকশা এবং নির্মাণ কাজ করেন। অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য এই মসজিদটি স্থানীয় এবং বাহির হতে আগত লোকজনের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় । হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ, ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
দৃষ্টি নন্দন ঐতিহাসিক নান্দাইল দিঘী: নান্দাইল দিঘীটি জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলাধীন পুনট ইউনিয়নে অবস্থিত। ইহা দৈর্ঘ্যে প্রায় ১ কি: মি কথিত আছে রাজা নন্দলাল ১৬১০ সালে এই ঐতিহাসিক দিঘীটি খনন করেন। দিঘীটির আয়তন ৫৯.৪০ একর। স্থানীয় জনগণের মতে দিঘীটি এক রাতের মধ্যেই খনন করা হয়েছে। এক সময়ে দিঘীটির পাড় অনেক উঁচু ছিল । শীত কালে এই দিঘীতে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্য বর্তমানে দিঘীটি পিকনিক স্পট হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। দিঘীটির পাড়ে নান্দাইল নামক একটি কলেজ স্থাপিত হয়েছে । নান্দাইল দিঘী, কালাই, জয়পুরহাট।
ঐতিহাসিক লকমা রাজবাড়ি: জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম কড়িয়া গ্রামে এই ঐতিহাসিক লকমা রাজবাড়ি অবস্থিত । বাড়িটি বর্তমানে লকমা চৌধুরীর পরনাতীসহ উত্তরাধিকারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সমিতি দেখাশুনা করে। লকমা চৌধুরীর পরনাতী জানান, প্রায় ২০০-৩০০ বছর পূর্বে বাড়িটি নির্মাণ করা হয় এবং বর্তমানে এখানে প্রায় ১৫ বিঘা জমি আছে । উক্ত জমিতে বিভিন্ন শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি ফল ও ফুলের বাগান দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন জানান, দালান দুটির একটি ঘোড়াশাল এবং অপরটি হাতীশাল ছিল। তার একটু সামনে মাটির একটি ঢিবি রয়েছে যেখানে ইউ আকৃতির বহু পুরাতন দ্বিতল ভবনের অবস্থান । জনশ্রুতি আছে যে, ভবনের কিছু অংশ মাটির নীচে ডেবে গেছে । লকমা রাজবাড়ির পূর্ব পার্শ্বে কবরস্থান ও কর্মচারীদের ঘর রয়েছে। এখনও প্রতিদিন অনেক লোক স্বচক্ষে রাজবাড়িটি দেখার জন্য আসে। লকমা রাজবাড়ি, পাঁচবিবি, জয়পুরহাট।
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
বৃহত্তর নওগাঁ, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার নিকটবর্তী রাজশাহী বিভাগের অধীন এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত ছোট্ট একটি জেলা শহর জয়পুরহাট। জেলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অনেক নান্দনিক ও ঐতিহাসিক স্থান। এ জেলার দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ফসলের মাঠ যেন যে কোন ভ্রমণ পিপাসুকেই মুগ্ধ করবে। এ ছাড়াও অষ্টম শতাব্দীর পাল বংশীয় রাজা ধর্ম পালের পাহারপুর ঐতিহাসিক বৌদ্ধ বিহার জয়পুরহাট জেলার অতি নিকটে নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত এবং বাংলাদেশের অন্যতম স্থলবন্দর হিলি জয়পুরহাট জেলার নিকটে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় অবস্থিত। তাই এ জেলায় পর্যটন শিল্প বিকাশে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্ত অদ্যাবধি এ জেলায় সরকারি উদ্যোগে কোন পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠেনি। এখানে দ্রূত সরকারিভাবে একটি পর্যটন মোটেল চালু করা আবশ্যক। জেলার কয়েকটি উলেখযোগ্য পর্যটন স্থান : আছরাঙ্গা দিঘী, হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ, নান্দাইল দিঘী, লকমা রাজবাড়ি, পাথরঘাটা নিমাই পীরের মাজার, গোপীনাথপুর মন্দির, বার শিবালয় মন্দির এবং দুয়ানী ঘাট। ঐতিহাসিক মনোমুগ্ধকর আছরাঙ্গা দিঘী: জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নে এই দিঘীটি অবস্থিত । এর মোট আয়তন ২৫.৫০ একর। ধারণা করা হয় প্রায় ১২০০ বছর পূর্বে ১১০০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১০৭০ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট এ দিঘীটি খনন করা হয়। অনেকের মতে তাহিরপুর রাজ পরিবারের সদস্য মনু ভট্ট এ দিঘীটি খনন করেছিলেন। ১৯৯২ সালে এ দিঘীটি পুনরায় খনন করা হয়। এ দিঘীটি খনন কালে ১২ টি মূর্তি পাওয়া গেছে যা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। বর্তমানে দিঘীটির চর্তুদিকের পাড়ে একটি পাকা রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। দিঘীটির চারদিকের অসংখ্য গাছ-পালা এবং এর স্বচ্ছ পানি এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে যা সকলকে আকৃষ্ট করে। প্রতি বছর অসংখ্য ভ্রমণ পিপাসু লোকের সমাগম ঘটে এখানে। আছরাঙ্গা দিঘী, ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট। ঐতিহাসিক ও ইসলামী স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শণ হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ। হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা গ্রামে অবস্থিত। হযরত আবদুল গফুর চিশতি (রাঃ) ইহার নকশা এবং নির্মাণ কাজ করেন। অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য এই মসজিদটি স্থানীয় এবং বাহির হতে আগত লোকজনের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় । হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ, ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
দৃষ্টি নন্দন ঐতিহাসিক নান্দাইল দিঘী: নান্দাইল দিঘীটি জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলাধীন পুনট ইউনিয়নে অবস্থিত। ইহা দৈর্ঘ্যে প্রায় ১ কি: মি কথিত আছে রাজা নন্দলাল ১৬১০ সালে এই ঐতিহাসিক দিঘীটি খনন করেন। দিঘীটির আয়তন ৫৯.৪০ একর। স্থানীয় জনগণের মতে দিঘীটি এক রাতের মধ্যেই খনন করা হয়েছে। এক সময়ে দিঘীটির পাড় অনেক উঁচু ছিল । শীত কালে এই দিঘীতে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্য বর্তমানে দিঘীটি পিকনিক স্পট হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। দিঘীটির পাড়ে নান্দাইল নামক একটি কলেজ স্থাপিত হয়েছে । নান্দাইল দিঘী, কালাই, জয়পুরহাট।
ঐতিহাসিক লকমা রাজবাড়ি: জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম কড়িয়া গ্রামে এই ঐতিহাসিক লকমা রাজবাড়ি অবস্থিত । বাড়িটি বর্তমানে লকমা চৌধুরীর পরনাতীসহ উত্তরাধিকারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সমিতি দেখাশুনা করে। লকমা চৌধুরীর পরনাতী জানান, প্রায় ২০০-৩০০ বছর পূর্বে বাড়িটি নির্মাণ করা হয় এবং বর্তমানে এখানে প্রায় ১৫ বিঘা জমি আছে । উক্ত জমিতে বিভিন্ন শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি ফল ও ফুলের বাগান দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন জানান, দালান দুটির একটি ঘোড়াশাল এবং অপরটি হাতীশাল ছিল। তার একটু সামনে মাটির একটি ঢিবি রয়েছে যেখানে ইউ আকৃতির বহু পুরাতন দ্বিতল ভবনের অবস্থান । জনশ্রুতি আছে যে, ভবনের কিছু অংশ মাটির নীচে ডেবে গেছে । লকমা রাজবাড়ির পূর্ব পার্শ্বে কবরস্থান ও কর্মচারীদের ঘর রয়েছে। এখনও প্রতিদিন অনেক লোক স্বচক্ষে রাজবাড়িটি দেখার জন্য আসে। লকমা রাজবাড়ি, পাঁচবিবি, জয়পুরহাট।