জামায়াতে ইসলামী মনে করে, একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে ‘জনআকাঙ্খা পূরণ হয়নি’। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর দলের তাৎক্ষণিক ব্রিফিংয়ে সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ মত প্রকাশ করেন।
বেলা আড়াইটায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে এক সঙ্গে আয়োজনের ঘোষণা দেন। একই দিনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করেন, যেখানে গণভোটের প্রশ্নগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
বেলা সাড়ে ৩টায় মগবাজারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জনগণের যে অভিপ্রায় ছিল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে কি কি বিষয়ে সংস্কার হল, নতুন প্রস্তাবিত জুলাই সনদ ভিত্তিতে সংবিধানের কি কি সংশোধনী প্রস্তাব যাচ্ছে যে ৪৮টি প্রস্তাবে আমরা সর্বসম্মত হয়েছি, সাংবিধানিক সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কার এগুলো জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জাতিকে জানাতে হবে…ভোটাররা জানবেন তার উপরে মাইন্ডসেট হবে তারপরে তার উপরে হ্যাঁ-না মতামত দেবেন।”
তিনি বলেন, “একই দিনে জাতীয় নির্বাচন, একই দিনে গণভোট হলে ভোটার তো সেই জুলাই সনদ সম্পর্কে অবহিত হয়ে তিনি হ্যাঁ-না ভোট দেওয়ার পূর্বে তিনি তো সেটা আগে বুঝবেন, মনস্থির করবেন। অথচ একই দিনেই তাকে ওই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আবার একটা প্রতীকে তার জাতীয় নির্বাচনের ভোটও দিতে হবে… এটা একটা সংকট তৈরি করবে। যে সংকটমুক্ত নির্বাচনের আশা আমরা করেছিলাম সেই সংকট রয়ে গেল।”
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট ও উভয়কক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতি চালুর দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে মঙ্গলবার জামায়াতসহ আটদল ঢাকায় সমাবেশ করেছে। রোববার প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যুমনার সমানে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলগুলো।
জামায়াত নেতা বলেন, ‘‘ আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, যুক্তি দিয়েছি…এটাও আমরা বলেছি যে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের ইতিহাসে কেয়ারটেকার হোক আর যত নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথাই আমরা বলি, প্রত্যেকটি নির্বাচনে কম বেশি কিছু ভোট কেন্দ্রে সহিংসতা হয়ে থাকে, বিশৃঙ্খলা হয়ে থাকে, দুই-পাঁচটা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেল, গোলাগুলি হল স্থগিত হয়ে গেল। একই দিনে ভোট হলে এমন ঘটনা তো যে কোন না কোন কেন্দ্রে ঘটতে পারে…পাঁচটা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেল। “তাহলে জাতীয় নির্বাচন প্রতীকের ভোট বন্ধ হল। সেইদিন গণভোটের দশাটা কি? এর কোনো জবাব নাই।”
তিনি বলেন, “আমরা সংকট নিরসনের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি ইসলামী এবং দেশপ্রেমিক সম্ভাবনা দল দাবি করে আসছি যে, এই ভোটটা জাতীয় নির্বাচনের আগে করতে হবে। তাহলে এটার আইনি ভিত্তিটা দৃঢ় হবে, এটা নিয়ে পরবর্তীতে আদালত এবং আইনি ভিত্তি নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠবে না। সেই সংকট কিন্তু রয়েই গেল। এ সংকটটা নিরসন হল না। এটা হচ্ছে আমাদের জামায়াতে ইসলামের আপাতত প্রতিক্রিয়া।”
পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত দলগুলো নিজেরা প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। সন্ধ্যা সর্বোচ্চ দলের ফোরাম নির্বাহী পরিষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে জানিয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, সন্ধ্যা ৬টায় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ পর্যালোচনা করে দলের পক্ষ থেকে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
‘তাৎক্ষণিক ব্রিফিংয়ে’ উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কর্ম পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
জামায়াতে ইসলামী মনে করে, একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে ‘জনআকাঙ্খা পূরণ হয়নি’। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর দলের তাৎক্ষণিক ব্রিফিংয়ে সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ মত প্রকাশ করেন।
বেলা আড়াইটায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে এক সঙ্গে আয়োজনের ঘোষণা দেন। একই দিনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করেন, যেখানে গণভোটের প্রশ্নগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
বেলা সাড়ে ৩টায় মগবাজারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জনগণের যে অভিপ্রায় ছিল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে কি কি বিষয়ে সংস্কার হল, নতুন প্রস্তাবিত জুলাই সনদ ভিত্তিতে সংবিধানের কি কি সংশোধনী প্রস্তাব যাচ্ছে যে ৪৮টি প্রস্তাবে আমরা সর্বসম্মত হয়েছি, সাংবিধানিক সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কার এগুলো জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জাতিকে জানাতে হবে…ভোটাররা জানবেন তার উপরে মাইন্ডসেট হবে তারপরে তার উপরে হ্যাঁ-না মতামত দেবেন।”
তিনি বলেন, “একই দিনে জাতীয় নির্বাচন, একই দিনে গণভোট হলে ভোটার তো সেই জুলাই সনদ সম্পর্কে অবহিত হয়ে তিনি হ্যাঁ-না ভোট দেওয়ার পূর্বে তিনি তো সেটা আগে বুঝবেন, মনস্থির করবেন। অথচ একই দিনেই তাকে ওই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আবার একটা প্রতীকে তার জাতীয় নির্বাচনের ভোটও দিতে হবে… এটা একটা সংকট তৈরি করবে। যে সংকটমুক্ত নির্বাচনের আশা আমরা করেছিলাম সেই সংকট রয়ে গেল।”
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট ও উভয়কক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতি চালুর দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে মঙ্গলবার জামায়াতসহ আটদল ঢাকায় সমাবেশ করেছে। রোববার প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যুমনার সমানে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলগুলো।
জামায়াত নেতা বলেন, ‘‘ আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, যুক্তি দিয়েছি…এটাও আমরা বলেছি যে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের ইতিহাসে কেয়ারটেকার হোক আর যত নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথাই আমরা বলি, প্রত্যেকটি নির্বাচনে কম বেশি কিছু ভোট কেন্দ্রে সহিংসতা হয়ে থাকে, বিশৃঙ্খলা হয়ে থাকে, দুই-পাঁচটা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেল, গোলাগুলি হল স্থগিত হয়ে গেল। একই দিনে ভোট হলে এমন ঘটনা তো যে কোন না কোন কেন্দ্রে ঘটতে পারে…পাঁচটা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেল। “তাহলে জাতীয় নির্বাচন প্রতীকের ভোট বন্ধ হল। সেইদিন গণভোটের দশাটা কি? এর কোনো জবাব নাই।”
তিনি বলেন, “আমরা সংকট নিরসনের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি ইসলামী এবং দেশপ্রেমিক সম্ভাবনা দল দাবি করে আসছি যে, এই ভোটটা জাতীয় নির্বাচনের আগে করতে হবে। তাহলে এটার আইনি ভিত্তিটা দৃঢ় হবে, এটা নিয়ে পরবর্তীতে আদালত এবং আইনি ভিত্তি নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠবে না। সেই সংকট কিন্তু রয়েই গেল। এ সংকটটা নিরসন হল না। এটা হচ্ছে আমাদের জামায়াতে ইসলামের আপাতত প্রতিক্রিয়া।”
পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত দলগুলো নিজেরা প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। সন্ধ্যা সর্বোচ্চ দলের ফোরাম নির্বাহী পরিষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে জানিয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, সন্ধ্যা ৬টায় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ পর্যালোচনা করে দলের পক্ষ থেকে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
‘তাৎক্ষণিক ব্রিফিংয়ে’ উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কর্ম পরিষদের সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন।