‘দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’Ñ সরকার মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে এমন ঘোষণা দেয়। সরকারি নীতিমালায় বলা হয়Ñ ভূমিহীন ও গৃহহীন যে কোনো বয়সের মানুষই এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবে। তবে যদি কেউ প্রতিবন্ধী, বিধবা, প্রবীণ ও স্বামী পরিত্যক্তা হনÑ তাহলে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এক্ষেত্রে বিনামূল্যে দুই শতাংশ জমি ও ঘর তৈরি করে দেয়া হবে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে আওতায় ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে কিন্তু কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর কামাত আঙ্গারীয়া ছড়ারপাড় এলাকার বাসিন্দা ভূমিহীন বিধবা ছালেহা বেগমের ভাগ্যে আজও জোটেনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর।
ছালেহা বেগম স্বামী হারিয়েছেন তা-ও তিন যুগ পেরিয়ে গেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী এখন তার বয়স ৬৮ বছর। তার কোনো জমি নেই। অন্যের জমিতে বাঁশের বেড়ার তৈরি ঝুপড়ি ঘরে থাকেন। এর-ওর জমির আনাচে-কানাচেই জীবন পার করে দিলেও ছালেহা বেগমের কোনো আক্ষেপ নেই। তার দুশ্চিন্তা প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে। তিনি মারা গেলে প্রতিবন্ধী মেয়েটি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? তাই মৃত্যুর আগে তিনি প্রতিবন্ধী মেয়েটির মাথা গোঁজার জন্য নিজের একখ- জমি ও একটি ঘর দেখে যেতে চান।
শুধু ভূরঙ্গামারীর কামাত আঙ্গারীয়া ছড়ারপাড়ের ছালেহা বেগম একা নন। সারাদেশে এরকম অসহায় ছালেহা বেগম আরও আছেন। এদের কথা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশিতও হয়। যারা ঘর পাওয়ার যোগ্য তারা ঘর পাননি। আবার যারা ঘর পাওয়ার যোগ্য নন এমন অনেক মানুষও ঘর পান। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের তালিকা তৈরি করার সময়ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অর্থ নিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের নামও তালিকায় দেন। আবার তারা প্রকৃত ভূমিহীনদের নাম না দিয়ে তাদের পছন্দের লোকদের নাম দেন তালিকায়। এক্ষেত্রে প্রশাসনের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকার অভিযোগের কথাও বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে দেখা গেছে।
আর প্রশাসনের একশ্রেণির অসাধু কর্তাব্যক্তি ও দুর্নীতিগ্রস্ত একশ্রেণীর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই ছালেহা বেগমদের মতো প্রকৃত দুর্দশাগ্রস্তরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে অনেক সচ্ছল ব্যক্তি আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে ভাড়াও দিচ্ছেন। নীতিমালা অনুযায়ী আশ্রয়ণের ঘর বিক্রি করা যায় না। কিন্তু বিক্রি করার অভিযোগের খবরও শোনা গেছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ছালেহা বেগমকে ঘর দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছে। আমরা আশা করব, এই আশ্বাস বাস্তব রূপ পাবে। বিধবা ছালেহা বেগমের দুঃস্বপ্নের দিন শেষ হয়েছে, তিনি এক খ- জমি ও ঘর পেয়েছেন, প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে তার চোখেমুখে নিশ্চিত জীবনের হাসির ঝিলিকÑ এমন সুখের দৃশ্য আমরাও দেখতে চাই।
শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
‘দেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’Ñ সরকার মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে এমন ঘোষণা দেয়। সরকারি নীতিমালায় বলা হয়Ñ ভূমিহীন ও গৃহহীন যে কোনো বয়সের মানুষই এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবে। তবে যদি কেউ প্রতিবন্ধী, বিধবা, প্রবীণ ও স্বামী পরিত্যক্তা হনÑ তাহলে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এক্ষেত্রে বিনামূল্যে দুই শতাংশ জমি ও ঘর তৈরি করে দেয়া হবে।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে আওতায় ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে কিন্তু কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর কামাত আঙ্গারীয়া ছড়ারপাড় এলাকার বাসিন্দা ভূমিহীন বিধবা ছালেহা বেগমের ভাগ্যে আজও জোটেনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর।
ছালেহা বেগম স্বামী হারিয়েছেন তা-ও তিন যুগ পেরিয়ে গেছে। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী এখন তার বয়স ৬৮ বছর। তার কোনো জমি নেই। অন্যের জমিতে বাঁশের বেড়ার তৈরি ঝুপড়ি ঘরে থাকেন। এর-ওর জমির আনাচে-কানাচেই জীবন পার করে দিলেও ছালেহা বেগমের কোনো আক্ষেপ নেই। তার দুশ্চিন্তা প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে। তিনি মারা গেলে প্রতিবন্ধী মেয়েটি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? তাই মৃত্যুর আগে তিনি প্রতিবন্ধী মেয়েটির মাথা গোঁজার জন্য নিজের একখ- জমি ও একটি ঘর দেখে যেতে চান।
শুধু ভূরঙ্গামারীর কামাত আঙ্গারীয়া ছড়ারপাড়ের ছালেহা বেগম একা নন। সারাদেশে এরকম অসহায় ছালেহা বেগম আরও আছেন। এদের কথা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশিতও হয়। যারা ঘর পাওয়ার যোগ্য তারা ঘর পাননি। আবার যারা ঘর পাওয়ার যোগ্য নন এমন অনেক মানুষও ঘর পান। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের তালিকা তৈরি করার সময়ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অর্থ নিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের নামও তালিকায় দেন। আবার তারা প্রকৃত ভূমিহীনদের নাম না দিয়ে তাদের পছন্দের লোকদের নাম দেন তালিকায়। এক্ষেত্রে প্রশাসনের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকার অভিযোগের কথাও বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে দেখা গেছে।
আর প্রশাসনের একশ্রেণির অসাধু কর্তাব্যক্তি ও দুর্নীতিগ্রস্ত একশ্রেণীর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই ছালেহা বেগমদের মতো প্রকৃত দুর্দশাগ্রস্তরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে অনেক সচ্ছল ব্যক্তি আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে ভাড়াও দিচ্ছেন। নীতিমালা অনুযায়ী আশ্রয়ণের ঘর বিক্রি করা যায় না। কিন্তু বিক্রি করার অভিযোগের খবরও শোনা গেছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ছালেহা বেগমকে ঘর দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছে। আমরা আশা করব, এই আশ্বাস বাস্তব রূপ পাবে। বিধবা ছালেহা বেগমের দুঃস্বপ্নের দিন শেষ হয়েছে, তিনি এক খ- জমি ও ঘর পেয়েছেন, প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে তার চোখেমুখে নিশ্চিত জীবনের হাসির ঝিলিকÑ এমন সুখের দৃশ্য আমরাও দেখতে চাই।