নিজেকে কখনো জেলা প্রশাসক (ডিসি), কখনো পুলিশ সুপার (এসপি), আবার কখনো বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিতেন। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্নজনের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে আসছিলেন তিনি। তবে শেষরক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার নওগাঁ সদর থানা পুলিশের একটি দল শহরের একটি অভিজাত হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। নওগাঁ সদর থানায় প্রতারণার মামলা হওয়ার পর আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম কামরুল হাসান ওরফে সাদ্দাম (৩২)। তাঁর বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার আটুলিয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম কাওছার আলী।
পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। সরকারি বিভিন্ন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়া, পদোন্নতিসহ নানা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি। এ ছাড়া ফেসবুকে একেক সময় একেক আইডি ব্যবহার করে এবং নিজেকে বিভিন্ন আকর্ষণীয় পেশার পরিচয় দিয়ে ধন্যাঢ্য পরিবারের মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন তিনি। বিদেশী পাঠানোর কথা বলে এসব মেয়েদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, নওগাঁ জেলার এক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছেলে মারা যাওয়ার পর তিনি মানসিক বিষন্নতায় ভুগছিলেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মোবাইলে প্রতারক কামরুল হাসান ওই ভাইস চেয়ারম্যানকে মা সম্পর্ক বানায় এবং তাঁর বাড়িতে যাতায়াত করতে শুরু করে। ওই ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে নিজেকে এএসপি পরিচয় দেন এবং বিশ্বাস করান যে তাঁর সাথে সরকারের উচ্চ মহলের ভালো সম্পর্ক আছে। কামরুল তাঁকে আগামী নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যানের টিকিট পাইয়ে দেয়ার কথা বলে গত বছরের নভেম্বরে ওই ভাইস চেয়ারম্যানের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
টাকা নেওয়ার পর তিনি ওই ভাইস চেয়ারম্যানকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। গতকাল ওই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জানতে পারেন, প্রতারক কামরুল নওগাঁ শহরের অভিজাত একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন। তিনি তৎক্ষণাৎ বিষয়টি নওগাঁ জেলা পুলিশকে জানান। নওগাঁ সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতারক কামরুলকে স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারের পর কামরুল প্রথমে পুলিশের কাছে নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে কামরুলের কাছ থেকে নানান চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কামরুল যশারের ঝিকরগাছার একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কামরুল অনালাইন ম্যারেজ মিডিয়াগুলোতে নিজেকে কখনো আমেরিকান সিটিজেন, কখনো অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী, কখনো ডিসি, কখনো এসপি, কখনো ডাক্তার পরিচয় দিয়ে পাত্রী খোঁজার বিজ্ঞপ্তি দেন।
এরপর বিয়ে করতে ইচ্ছুক ধনাঢ্য পরিবারের মেয়েদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাঁদের সাথে শারিরীক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে তাঁদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।
এসপি আরও বলেন, নওগাঁর আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার হওয়া কামরুলের স্ত্রী পরিচয়দানকারী ওই নারীও কামরুলের প্রতারণার শিকার হন। পুলিশের কাছে ওই নারী স্বীকার করেছেন, এক বছর আগে নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে মোবাইলে ওই নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাঁর সাথে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করেন। পরে মেয়েটির কাছ থেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে দেড় লাখ টাকা এবং স্বাক্ষরিত দুটি ফাঁকা নেন কামরুল। ফাঁকা ব্যাংক চেক ও শারীরিক সম্পর্কের ভিডিওর ভয় দেখিয়ে গত সোমবার মেয়েটিকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন কামরুল।
আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, প্রতারক কামরুলের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে নওগাঁ সদর থানায় একটি প্রতারণা করেছে। এ ছাড়া কামরুলের প্রতারণার স্বীকার হওয়া উল্লিখিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ চার-পাঁচজন ভুক্তভোগী তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম মামুন খান চিশতী, গাজিউর রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন, নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
মঙ্গলবার, ০৩ আগস্ট ২০২১
নিজেকে কখনো জেলা প্রশাসক (ডিসি), কখনো পুলিশ সুপার (এসপি), আবার কখনো বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিতেন। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্নজনের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে আসছিলেন তিনি। তবে শেষরক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার নওগাঁ সদর থানা পুলিশের একটি দল শহরের একটি অভিজাত হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। নওগাঁ সদর থানায় প্রতারণার মামলা হওয়ার পর আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম কামরুল হাসান ওরফে সাদ্দাম (৩২)। তাঁর বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার আটুলিয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম কাওছার আলী।
পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। সরকারি বিভিন্ন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়া, পদোন্নতিসহ নানা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি। এ ছাড়া ফেসবুকে একেক সময় একেক আইডি ব্যবহার করে এবং নিজেকে বিভিন্ন আকর্ষণীয় পেশার পরিচয় দিয়ে ধন্যাঢ্য পরিবারের মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন তিনি। বিদেশী পাঠানোর কথা বলে এসব মেয়েদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, নওগাঁ জেলার এক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছেলে মারা যাওয়ার পর তিনি মানসিক বিষন্নতায় ভুগছিলেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মোবাইলে প্রতারক কামরুল হাসান ওই ভাইস চেয়ারম্যানকে মা সম্পর্ক বানায় এবং তাঁর বাড়িতে যাতায়াত করতে শুরু করে। ওই ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে নিজেকে এএসপি পরিচয় দেন এবং বিশ্বাস করান যে তাঁর সাথে সরকারের উচ্চ মহলের ভালো সম্পর্ক আছে। কামরুল তাঁকে আগামী নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যানের টিকিট পাইয়ে দেয়ার কথা বলে গত বছরের নভেম্বরে ওই ভাইস চেয়ারম্যানের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
টাকা নেওয়ার পর তিনি ওই ভাইস চেয়ারম্যানকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। গতকাল ওই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জানতে পারেন, প্রতারক কামরুল নওগাঁ শহরের অভিজাত একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছেন। তিনি তৎক্ষণাৎ বিষয়টি নওগাঁ জেলা পুলিশকে জানান। নওগাঁ সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতারক কামরুলকে স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তারের পর কামরুল প্রথমে পুলিশের কাছে নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে কামরুলের কাছ থেকে নানান চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কামরুল যশারের ঝিকরগাছার একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কামরুল অনালাইন ম্যারেজ মিডিয়াগুলোতে নিজেকে কখনো আমেরিকান সিটিজেন, কখনো অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী, কখনো ডিসি, কখনো এসপি, কখনো ডাক্তার পরিচয় দিয়ে পাত্রী খোঁজার বিজ্ঞপ্তি দেন।
এরপর বিয়ে করতে ইচ্ছুক ধনাঢ্য পরিবারের মেয়েদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাঁদের সাথে শারিরীক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে তাঁদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।
এসপি আরও বলেন, নওগাঁর আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার হওয়া কামরুলের স্ত্রী পরিচয়দানকারী ওই নারীও কামরুলের প্রতারণার শিকার হন। পুলিশের কাছে ওই নারী স্বীকার করেছেন, এক বছর আগে নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে মোবাইলে ওই নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাঁর সাথে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করেন। পরে মেয়েটির কাছ থেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে দেড় লাখ টাকা এবং স্বাক্ষরিত দুটি ফাঁকা নেন কামরুল। ফাঁকা ব্যাংক চেক ও শারীরিক সম্পর্কের ভিডিওর ভয় দেখিয়ে গত সোমবার মেয়েটিকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন কামরুল।
আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, প্রতারক কামরুলের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে নওগাঁ সদর থানায় একটি প্রতারণা করেছে। এ ছাড়া কামরুলের প্রতারণার স্বীকার হওয়া উল্লিখিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ চার-পাঁচজন ভুক্তভোগী তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম মামুন খান চিশতী, গাজিউর রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন, নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম প্রমুখ।