যেসব জমিতে এক সময় প্রচুর ধান, পাট ও অন্যান্য ফসল ফলত, সেখানে এখন লোনা পানির চিংড়ি ঘের। এসব চিংড়ি ঘের ফসলি জমি গ্রাস করছে। ফলে কমতে শুরু করেছে কৃষিজমি। অন্যদিকে, অবৈধভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ছিদ্র করে লবণ পানি প্রবেশ করাচ্ছেন চিংড়ি ঘের মালিকরা। এতে নদ-নদীও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে পরিবেশ ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে। আর এসব অপকর্ম প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটছে। কিন্তু এটা বন্ধ করার ব্যাপারে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।
চিত্রটি দেখা গেছে সাতক্ষীরা জেলার ছয়টি উপজেলায়। সেখানে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে লবণ পানির চিংড়ি চাষ করছেন ঘের মালিকরা। শুধু লবণ পানির চিংড়ি চাষ না। আরও ১০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করছেন গলদা চিংড়ির চাষ। এসব ঘের তৈরিতে তারা নদী শাসন ব্যবস্থার নিয়মের কোনোরূপ তোয়াক্কা করেননি। অধিক মুনাফার লোভে চাষের জমিতে পরিকল্পনা ছাড়াই একের পর এক চিংড়ি ঘের তৈরি করেছেন।
ফলে গত ৪০ বছরে এখানে ৬০ হাজার হেক্টর চাষের জমি কমে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে না পারে, তাহলে অচিরেই এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।
নদী শাসন ব্যবস্থা অমান্য করে যদি চিংড়ি ঘের তৈরি করা হয়, তাহলে জমির লবণ পানি কমে যায়। এতে জমি তার উর্বর শক্তি হারিয়ে ফেলে। অন্যদিকে কৃষকেরা যে জমিতে বছরে তিনটা ফসল উৎপাদন করতেন, সে জমিতে অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি ঘের তৈরি করার কারণে তাদের ফসল উৎপাদনও দিন দিন কমে যাচ্ছে। জমি থেকে অতিরিক্ত লবণ পানি তোলার কারণে জমিগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। এতে প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন কৃষকরা বড় ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে পারে। তাই এটা দ্রুত নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। এমন পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষিবিদরা।
চিংড়ি চাষ করা যাবে না তা না। কিন্তু সেটা আইন মেনে পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। দেশের আইনে রয়েছে কেউ নদীর বাঁধের ৫০ গজের মধ্যে কোনো চিংড়ি ঘের তৈরি করতে পারবেন না। করলে সেটা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে। কিন্তু সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলায় ঘের মালিকরা কিভাবে এসব অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন, সেটা একটা প্রশ্ন।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য বিভাগকে পরিকল্পিত উপায়ে লবণ পানির ঘের করা এবং পানি উত্তোলনে একটি স্থায়ী নিয়মনীতি তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
শুধু সাতক্ষীরায় নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও এভাবে যত্রতত্র আইন অমান্য করে চিংড়ি ঘের তৈরির হিড়িক পড়ে-এসব খবর গণমাধ্যমে দেখা যায়। সাতক্ষীরাসহ দেশের যেসব জায়গায় অবৈধভাবে চিংড়ি ঘের তৈরি করা হচ্ছে তা দ্রুত বন্ধ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এভাবে ফসলি জমি কমতে শুরু হলে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়বে। তারা কর্মহীন হয়ে পড়বেন। তাই দেশের কৃষকদের বাঁচাতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কৃষি জমি ও নদীগুলোকে বাঁচানোর স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
রোববার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪
যেসব জমিতে এক সময় প্রচুর ধান, পাট ও অন্যান্য ফসল ফলত, সেখানে এখন লোনা পানির চিংড়ি ঘের। এসব চিংড়ি ঘের ফসলি জমি গ্রাস করছে। ফলে কমতে শুরু করেছে কৃষিজমি। অন্যদিকে, অবৈধভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ছিদ্র করে লবণ পানি প্রবেশ করাচ্ছেন চিংড়ি ঘের মালিকরা। এতে নদ-নদীও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে পরিবেশ ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে। আর এসব অপকর্ম প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘটছে। কিন্তু এটা বন্ধ করার ব্যাপারে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।
চিত্রটি দেখা গেছে সাতক্ষীরা জেলার ছয়টি উপজেলায়। সেখানে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে লবণ পানির চিংড়ি চাষ করছেন ঘের মালিকরা। শুধু লবণ পানির চিংড়ি চাষ না। আরও ১০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করছেন গলদা চিংড়ির চাষ। এসব ঘের তৈরিতে তারা নদী শাসন ব্যবস্থার নিয়মের কোনোরূপ তোয়াক্কা করেননি। অধিক মুনাফার লোভে চাষের জমিতে পরিকল্পনা ছাড়াই একের পর এক চিংড়ি ঘের তৈরি করেছেন।
ফলে গত ৪০ বছরে এখানে ৬০ হাজার হেক্টর চাষের জমি কমে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে না পারে, তাহলে অচিরেই এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।
নদী শাসন ব্যবস্থা অমান্য করে যদি চিংড়ি ঘের তৈরি করা হয়, তাহলে জমির লবণ পানি কমে যায়। এতে জমি তার উর্বর শক্তি হারিয়ে ফেলে। অন্যদিকে কৃষকেরা যে জমিতে বছরে তিনটা ফসল উৎপাদন করতেন, সে জমিতে অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি ঘের তৈরি করার কারণে তাদের ফসল উৎপাদনও দিন দিন কমে যাচ্ছে। জমি থেকে অতিরিক্ত লবণ পানি তোলার কারণে জমিগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। এতে প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন কৃষকরা বড় ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে পারে। তাই এটা দ্রুত নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। এমন পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষিবিদরা।
চিংড়ি চাষ করা যাবে না তা না। কিন্তু সেটা আইন মেনে পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। দেশের আইনে রয়েছে কেউ নদীর বাঁধের ৫০ গজের মধ্যে কোনো চিংড়ি ঘের তৈরি করতে পারবেন না। করলে সেটা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে। কিন্তু সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলায় ঘের মালিকরা কিভাবে এসব অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন, সেটা একটা প্রশ্ন।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য বিভাগকে পরিকল্পিত উপায়ে লবণ পানির ঘের করা এবং পানি উত্তোলনে একটি স্থায়ী নিয়মনীতি তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
শুধু সাতক্ষীরায় নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও এভাবে যত্রতত্র আইন অমান্য করে চিংড়ি ঘের তৈরির হিড়িক পড়ে-এসব খবর গণমাধ্যমে দেখা যায়। সাতক্ষীরাসহ দেশের যেসব জায়গায় অবৈধভাবে চিংড়ি ঘের তৈরি করা হচ্ছে তা দ্রুত বন্ধ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এভাবে ফসলি জমি কমতে শুরু হলে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়বে। তারা কর্মহীন হয়ে পড়বেন। তাই দেশের কৃষকদের বাঁচাতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কৃষি জমি ও নদীগুলোকে বাঁচানোর স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।