alt

সম্পাদকীয়

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

: বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

আজ মে দিবস। ১৮৮৬ সালের ১ মে শিকাগোর রাস্তায় রক্তের বিনিময়ে উচ্চারিত হয়েছিল এক ঐতিহাসিক দাবিÑ ‘৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম, ৮ ঘণ্টা নিজের জন্য সময়’। হে মার্কেটের সেই বিক্ষোভ ও পরবর্তী সহিংস দমন-পীড়ন একদিকে যেমন বিশ্বব্যাপী শ্রমিক আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করে, অন্যদিকে শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিকে দেয় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তারই ধারাবাহিকতায় ১৮৯০ সাল থেকে বিশ্বের সব প্রান্তে পালিত হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মে দিবস শুধুই অতীতের ঐতিহাসিক স্মরণ নয়, এটি বর্তমানের জরুরি বাস্তবতার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। দেশের অনেক শ্রমজীবী মানুষ এখনো আইনি সুরক্ষা ও শ্রম অধিকার থেকে বঞ্চিত। গৃহকর্মী, দিনমজুর, চা-শ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক কিংবা পোশাক কারখানার শ্রমিকÑবহু ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের জন্য নেই যথোপযুক্ত মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার কিংবা নিরাপদ কর্মপরিবেশ। নারী শ্রমিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানিমুক্ত পরিবেশ ও মর্যাদাপূর্ণ ভাষা ব্যবহারের দাবিও আজও বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।

মে দিবসে আমরা উচ্চারণ করি : ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’। কিন্তু আজ এই ঐক্যের স্লোগান অনেকাংশে শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। শ্রমিক আন্দোলনের ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছে রাজনৈতিক দলনির্ভর সুবিধাবাদী শক্তি, যা আন্দোলনকে দুর্বল ও বিভক্ত করেছে। এর বাইরে গড়ে উঠেছে মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণী, যারা মালিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় থেকে শ্রমিক স্বার্থকে করেছে জিম্মি। শ্রমিক সংগঠনগুলোকে এই সংকট থেকে মুক্ত করা এবং সত্যিকার প্রতিনিধিত্বশীল, জবাবদিহিমূলক ও দূরদর্শী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাই হতে হবে মে দিবসের বাস্তব প্রতিশ্রুতি।

রানা প্লাজা ট্র‍্যাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শ্রমিক ক্ষতিপূরণ পাননি, অনেক পরিবার আজো পুনর্বাসনের আশায় দিন গুনছে। অনেক ক্ষেত্রেই ‘নিরাপদ কর্মপরিবেশ’ এখনো কাগুজে প্রতিশ্রুতি মাত্র। শিশু শ্রম, জবরদস্তিমূলক শ্রম, বৈষম্যপূর্ণ মজুরি ও শ্রমিকদের প্রতি অবমাননাকর আচরণÑ সব মিলিয়ে বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন এখনো সংকটে।

শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, বৈষম্যহীন মজুরি নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ ও মর্যাদাসম্পন্ন কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার লড়াইয়ের নতুন যাত্রা হোক আজ। রাষ্ট্র, মালিক ও শ্রমিকÑ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই তৈরি হতে পারে সেই কাক্সিক্ষত ভবিষ্যৎ যেখানে শ্রমিক থাকবে না করুণার আশায়, থাকবে সম্মানিত এক সহকর্মীর মর্যাদায়।

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

বালু সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা জরুরি

হিমাগার সংকট : কৃষকের দুর্ভোগ আর কতদিন?

স্বাধীনতা দিবস : একাত্তরের স্বপ্ন পুনর্জাগরণের প্রত্যয়

আজ সেই কালরাত্রি

হাওরের বুকে সড়ক : উন্নয়ন না ধ্বংস?

সুন্দরবনে আবার অগ্নিকাণ্ড

চাল-সয়াবিনের দামে অস্থিরতা, সবজিতে স্বস্তি

সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে হবে

tab

সম্পাদকীয়

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

আজ মে দিবস। ১৮৮৬ সালের ১ মে শিকাগোর রাস্তায় রক্তের বিনিময়ে উচ্চারিত হয়েছিল এক ঐতিহাসিক দাবিÑ ‘৮ ঘণ্টা কাজ, ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম, ৮ ঘণ্টা নিজের জন্য সময়’। হে মার্কেটের সেই বিক্ষোভ ও পরবর্তী সহিংস দমন-পীড়ন একদিকে যেমন বিশ্বব্যাপী শ্রমিক আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করে, অন্যদিকে শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিকে দেয় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। তারই ধারাবাহিকতায় ১৮৯০ সাল থেকে বিশ্বের সব প্রান্তে পালিত হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মে দিবস শুধুই অতীতের ঐতিহাসিক স্মরণ নয়, এটি বর্তমানের জরুরি বাস্তবতার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। দেশের অনেক শ্রমজীবী মানুষ এখনো আইনি সুরক্ষা ও শ্রম অধিকার থেকে বঞ্চিত। গৃহকর্মী, দিনমজুর, চা-শ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক কিংবা পোশাক কারখানার শ্রমিকÑবহু ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের জন্য নেই যথোপযুক্ত মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার কিংবা নিরাপদ কর্মপরিবেশ। নারী শ্রমিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানিমুক্ত পরিবেশ ও মর্যাদাপূর্ণ ভাষা ব্যবহারের দাবিও আজও বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।

মে দিবসে আমরা উচ্চারণ করি : ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’। কিন্তু আজ এই ঐক্যের স্লোগান অনেকাংশে শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। শ্রমিক আন্দোলনের ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছে রাজনৈতিক দলনির্ভর সুবিধাবাদী শক্তি, যা আন্দোলনকে দুর্বল ও বিভক্ত করেছে। এর বাইরে গড়ে উঠেছে মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণী, যারা মালিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় থেকে শ্রমিক স্বার্থকে করেছে জিম্মি। শ্রমিক সংগঠনগুলোকে এই সংকট থেকে মুক্ত করা এবং সত্যিকার প্রতিনিধিত্বশীল, জবাবদিহিমূলক ও দূরদর্শী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাই হতে হবে মে দিবসের বাস্তব প্রতিশ্রুতি।

রানা প্লাজা ট্র‍্যাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শ্রমিক ক্ষতিপূরণ পাননি, অনেক পরিবার আজো পুনর্বাসনের আশায় দিন গুনছে। অনেক ক্ষেত্রেই ‘নিরাপদ কর্মপরিবেশ’ এখনো কাগুজে প্রতিশ্রুতি মাত্র। শিশু শ্রম, জবরদস্তিমূলক শ্রম, বৈষম্যপূর্ণ মজুরি ও শ্রমিকদের প্রতি অবমাননাকর আচরণÑ সব মিলিয়ে বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন এখনো সংকটে।

শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, বৈষম্যহীন মজুরি নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ ও মর্যাদাসম্পন্ন কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার লড়াইয়ের নতুন যাত্রা হোক আজ। রাষ্ট্র, মালিক ও শ্রমিকÑ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই তৈরি হতে পারে সেই কাক্সিক্ষত ভবিষ্যৎ যেখানে শ্রমিক থাকবে না করুণার আশায়, থাকবে সম্মানিত এক সহকর্মীর মর্যাদায়।

back to top