alt

চিঠিপত্র

চিঠি : ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা

: বৃহস্পতিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৩

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

আধুনিক বিশ্বের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশীয় ঐতিহ্য। এসবের মধ্যে অন্যতম হলো ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা। খেলাগুলো যুগ যুগ ধরে গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব বহন করে আসছে; কিন্তু বর্তমান মোবাইল গেমস ও ইন্টারনেটের প্রভাবে দেশীয় খেলাগুলো কাউকে আর খেলতে দেখা যায় না। ফলে ঘটছে গ্রামীণ জনপ্রিয় খেলাগুলোর অপমৃত্যু। দেশীয় খেলাগুলোর নামও জানে না অনেকে।

এক সময় গ্রামের মানুষের প্রিয় ছিল হাডুডু, গোল্লাছুট, মোরগ লড়াই, বৌ-ছি, ইচিং বিচিং, কানামাছি ভোঁ ভোঁ, এক্কা-দোক্কা, কুত কুত, দড়িলাফ, বিস্কুট দৌড়, সুইসুতা দৌড়, তৈলাক্ত বাঁশ, কলাগাছে ওঠা, লাঠি খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, বালিশ যুদ্ধ, রশি টানাটানি ও ষাঁড়ের লড়াই খেলা। এসবের মধ্যে গোল্লাছুট সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিল। গ্রামের ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন বিকেলে এই খেলাটি অনেক বেশি খেলত। কিন্তু আজ এই চিত্র আর দেখতে পাওয়া যায় না।

তরুণ-তরুণীরা এসব খেলার নাম শুনে এখন অবাক হয়ে যায়। তারা দেখেনি এসব খেলা। সে কারণে বোঝে না এসব ঐতিহ্যবাহী খেলার কদর। বিকেলবেলা খেলার মাঠে কিংবা বাড়ির উঠানে ছেলেমেয়েদের ভিড় দেখা যেত। শোনা যেত খেলাধুলার আওয়াজ-‘কানামাছি ভোঁ ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ’; কিন্তু আজ এসব দেখাও যায়না শোনাও যায়না। মোবাইল গেমস জায়গা করে নিয়েছে এই ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলার। দিনেরপর দিন ঘন্টার পর ঘন্টা তরুণ-তরুণীরা মোবাইলে গেম খেলছে।

গ্রামের নদীর পাশে খোলা জায়গাতে বিকেলবেলা ছেলেমেয়েরা নানারকম দেশীয় খেলায় মেতে উঠত। আজ সেই মাঠে বিকেলে আর আওয়াজ ওঠে না- ‘ইচিং বিচিং, এক্কা-দোক্কা, কুত কুত, ইত্যাদি। মাঠে আজ ছেলেমেয়েরা বিকেল বেলায় বসে বসে হয়ত ফেইসবুক চালায়, ইউটিউবে ভিডিও দেখে, অথবা অনলাইনের বিভিন্ন আড্ডায় মেতে ওঠে। আধুনিক প্রযুক্তি এভাবে অনেক ঐতিহ্যকে কেড়ে নিচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি থেকে। গ্রামে আগের তুলনায় এখন ফাঁকা জায়গাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দিনদিন বিভিন্নভাবে। এই কারণেও বর্তমান কিশোর- কিশোরীরা ঝুঁকে পড়ছে টিভি, মোবাইল, ইত্যাদি যান্ত্রিক জিনিসগুলোর প্রতি।

পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলা শারীরিক বিকাশ ঘটাতে সক্ষম। শরীরিক বিকাশের জন্য আগের দিনের গ্রামের পরিবারের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের উপদেশ দিত এসব খেলাধুলা করার। এমনকি গ্রাম-গঞ্জে নানা রকম খেলাধুলার আয়োজন করা হতো বিভিন্ন মৌসুমে। আর এসব খেলা দেখার জন্য গ্রামের মানুষদের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকেও অনেকে আসত। উৎসবে মেতে উঠত আয়োজিত গ্রামটি। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগুলোতেও আয়োজন করা হতো এসব ঐতিহ্যবাহী খেলার; কিন্তু এখন অনেক স্কুলে প্রশস্ত কোন মাঠই নেই। ফলে খেলাধুলা না করতে পারার কারণে শারীরিক বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছেনা শিক্ষার্থীদের।

গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এসব ঐতিহ্যকে যথাযথ পুনরুদ্ধার করতে কাজ করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে কিছু উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে গ্রামবাংলার এসব ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য। গ্রামীণ খেলাগুলোকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে এসে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।

আব্দুল ওহাব

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের শেষ কোথায়?

টেকসই উন্নয়ন ও আদিবাসীদের অধিকার

শব্দদূষণ বন্ধ হবে কবে?

চট্টগ্রাম দোহাজারী অংশে রেল চালু হোক

দেশের প্রথম শহীদ মিনারের উপেক্ষিত ইতিহাস

তরুণদের হীনমন্যতা ও মত প্রকাশে অনীহা

বন সংরক্ষণ ও উন্নয়ন

শুধু ফেব্রুয়ারিতে ভাষার দরদ?

ভাষা ও সাহিত্যের মিলনমেলা

জমি দখলের ক্ষতিপূরণ চাই

পুরান ঢাকায় মশার উৎপাত

গুইমারায় স্বাস্থ্যসেবা সংকট : অবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু : একটি জাতীয় সংকট

নাম পাল্টে গেলে কত কী যে হয়

অনুপ্রেরণা হোক তুলনাহীন

দূষণ রোধে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা হ্রাস জরুরি

পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়ান

গণরুম প্রথার বিলুপ্তি কবে?

রেলসেবার মান বাড়ান

নওগাঁ সরকারি কলেজের সংকট

টিকিটের দাম আকাশচুম্বী

জকিগঞ্জে গ্রামীণ সড়কের দুরবস্থা

রেলে দুর্নীতি

নবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প নেই

পথশিশুদের ভয়ঙ্কর নেশাদ্রব্য থেকে রক্ষা করুন

ঢাকা-ময়মনসিংহ ননস্টপ ট্রেন ও ডাবল লাইন নির্মাণের দাবি

শিশুদের প্রতি প্রতিহিংসা বন্ধ করুন

চরবাসীর নদী পারাপারে নিরাপত্তার প্রয়োজন

জন্মনিবন্ধন সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় : ব্যবস্থা নিন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্পিডব্রেকার চাই

উন্নয়নের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান কারিগরি শিক্ষা

পোস্তগোলায় নিম্নমানের ড্রেন নির্মাণ

দিনমজুর সংকটে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত

পানাম সেতু : ঐতিহ্য রক্ষায় অবহেলা নয়

যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা থেকে ধোলাইখাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার দুরবস্থা

tab

চিঠিপত্র

চিঠি : ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বৃহস্পতিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৩

আধুনিক বিশ্বের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশীয় ঐতিহ্য। এসবের মধ্যে অন্যতম হলো ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা। খেলাগুলো যুগ যুগ ধরে গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব বহন করে আসছে; কিন্তু বর্তমান মোবাইল গেমস ও ইন্টারনেটের প্রভাবে দেশীয় খেলাগুলো কাউকে আর খেলতে দেখা যায় না। ফলে ঘটছে গ্রামীণ জনপ্রিয় খেলাগুলোর অপমৃত্যু। দেশীয় খেলাগুলোর নামও জানে না অনেকে।

এক সময় গ্রামের মানুষের প্রিয় ছিল হাডুডু, গোল্লাছুট, মোরগ লড়াই, বৌ-ছি, ইচিং বিচিং, কানামাছি ভোঁ ভোঁ, এক্কা-দোক্কা, কুত কুত, দড়িলাফ, বিস্কুট দৌড়, সুইসুতা দৌড়, তৈলাক্ত বাঁশ, কলাগাছে ওঠা, লাঠি খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, বালিশ যুদ্ধ, রশি টানাটানি ও ষাঁড়ের লড়াই খেলা। এসবের মধ্যে গোল্লাছুট সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিল। গ্রামের ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন বিকেলে এই খেলাটি অনেক বেশি খেলত। কিন্তু আজ এই চিত্র আর দেখতে পাওয়া যায় না।

তরুণ-তরুণীরা এসব খেলার নাম শুনে এখন অবাক হয়ে যায়। তারা দেখেনি এসব খেলা। সে কারণে বোঝে না এসব ঐতিহ্যবাহী খেলার কদর। বিকেলবেলা খেলার মাঠে কিংবা বাড়ির উঠানে ছেলেমেয়েদের ভিড় দেখা যেত। শোনা যেত খেলাধুলার আওয়াজ-‘কানামাছি ভোঁ ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ’; কিন্তু আজ এসব দেখাও যায়না শোনাও যায়না। মোবাইল গেমস জায়গা করে নিয়েছে এই ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলার। দিনেরপর দিন ঘন্টার পর ঘন্টা তরুণ-তরুণীরা মোবাইলে গেম খেলছে।

গ্রামের নদীর পাশে খোলা জায়গাতে বিকেলবেলা ছেলেমেয়েরা নানারকম দেশীয় খেলায় মেতে উঠত। আজ সেই মাঠে বিকেলে আর আওয়াজ ওঠে না- ‘ইচিং বিচিং, এক্কা-দোক্কা, কুত কুত, ইত্যাদি। মাঠে আজ ছেলেমেয়েরা বিকেল বেলায় বসে বসে হয়ত ফেইসবুক চালায়, ইউটিউবে ভিডিও দেখে, অথবা অনলাইনের বিভিন্ন আড্ডায় মেতে ওঠে। আধুনিক প্রযুক্তি এভাবে অনেক ঐতিহ্যকে কেড়ে নিচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি থেকে। গ্রামে আগের তুলনায় এখন ফাঁকা জায়গাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দিনদিন বিভিন্নভাবে। এই কারণেও বর্তমান কিশোর- কিশোরীরা ঝুঁকে পড়ছে টিভি, মোবাইল, ইত্যাদি যান্ত্রিক জিনিসগুলোর প্রতি।

পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলা শারীরিক বিকাশ ঘটাতে সক্ষম। শরীরিক বিকাশের জন্য আগের দিনের গ্রামের পরিবারের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের উপদেশ দিত এসব খেলাধুলা করার। এমনকি গ্রাম-গঞ্জে নানা রকম খেলাধুলার আয়োজন করা হতো বিভিন্ন মৌসুমে। আর এসব খেলা দেখার জন্য গ্রামের মানুষদের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকেও অনেকে আসত। উৎসবে মেতে উঠত আয়োজিত গ্রামটি। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগুলোতেও আয়োজন করা হতো এসব ঐতিহ্যবাহী খেলার; কিন্তু এখন অনেক স্কুলে প্রশস্ত কোন মাঠই নেই। ফলে খেলাধুলা না করতে পারার কারণে শারীরিক বিকাশ ঠিকমতো হচ্ছেনা শিক্ষার্থীদের।

গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এসব ঐতিহ্যকে যথাযথ পুনরুদ্ধার করতে কাজ করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে কিছু উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে গ্রামবাংলার এসব ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য। গ্রামীণ খেলাগুলোকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে এসে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে।

আব্দুল ওহাব

back to top