ব্রিটিশ ভিসা সংগ্রহ করতে হয়রানির চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। অভিয়োগ উঠেছে ঢাকাস্থ বিট্রিশ হাইকমিশনের অনুমোদিত ভিসা সেন্টার ভিএফএস গ্লোবালের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়ে ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো কাউকে না জানিয়ে। অথচ, তারা ভিসা প্রত্যাশীদের ই-মেইলে বা মোবাইলের মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়েছিলো তাদের ভিসা প্রস্তুত তারা যেন নিতে আসে। পরবর্তী দিনগুলোতেও ভিসা সংগ্রহ করতে আসা মানুষের হয়রানির শেষ নেই। উপরের ‘ওয়েটিং রুমে’ তীব্র গরম ও দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকার কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কেউ কথা বলেনি।
গতকাল রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গুলশানের ভিএফএস এজেন্সির সামনে সকাল থেকেই ভিসা প্রত্যাসীদের জটলা। তাদের সাঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এজেন্সির চরম অসহযোগিতা ও অব্যবস্থাপনার কথা। ওইদিন দুপুরের দিকে অফিসের গেটের সামনে বড় জটলার মধ্যে ভিসা প্রত্যাসীদের চিৎকার চেচামেচি দেখা গেছে। তখন এজেন্সির কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন নিচে এসে গেট বন্ধ করে গেটের সামনের জায়গা ফাঁকা করে দেয়। সেসময় ওই ব্যাক্তির সঙ্গে সংবাদের পক্ষ থেকে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
পরবর্তীতে ঘন্টা খানেক পর ভিএফএস এজেন্সির ভিতরে প্রবেশ করলেও পরিচয় দেওয়ার পরও গেট থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। তখন দেখা যায়, ভিসা নিতে উপরে ওঠা অনেকেই সিড়িতে, অফিসের পাশের রুমে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। গরমে ক্লান্ত অনেকেই ফ্লোরে বসে পড়েন। কারণ, রুমটিতে নেই কোন বসার জায়গা বা ফ্যান। এখানে অপেক্ষা করা অনেকেই প্রচন্ড গরমে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এতো কষ্ট ও অপেক্ষার পর ভিসার কাগজ হাতে পাওয়ার পর তৃপ্তির হাসির চেয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন অনেকে। সেখানে কর্তব্যরতদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
ভিএফএস এজেন্সি ব্যাবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এ্যার্বাডিন ইউনিভাসিটিতে পড়তে যাওয়া সরকারী কর্মকর্তা শফিকুর আলম। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘সকাল থেকে রোদে দাঁড়িয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ভিসার কাগজপত্র হাতে পেলাম। এতোক্ষাণ দাঁড়িয়ে থেকে ভিসা নিতে এসে আমি খুবই বিরক্ত। ভিএফএস এজেন্সি আমাদের নিদিষ্ট সময় উল্লেখ করে দিলে এতো হয়রানি হতে হতো না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এদের প্রোসেসিং ও ডেলিভ্যারির মধ্যেই ভেজাল। অথচ, আমি তাদের প্রিমিয়াম সেবা পাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা বেশি দিয়েছি, যাতে দ্রুত সেবাটা পাই। অথচ; দ্রুত সেবা তো পেলামই না, ইতোমধ্যে ওদের কারণে আমার একমাস ক্লাসে অনুপস্থিত থাকতে হল। যেটা আমার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি! কারণ ওখানে যাবার পর আমি মানুষিক চাপের মধ্যে পড়ে যাব।’
যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাবার জন্য ভিসা নিতে আসা অর্ণব বলেন, ‘ এই করোনোকালে যে ঘিঞ্জি পরিবেশে থেকে ভিসা নিতে হয় তাতে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। উপরে জায়গার সংকুলান এতো কম যে, মনে হয় নরকে আছি। অথচ, আমার এ সেবা পাবার জন্য তাদের পর্যাপ্ত টাকা দিয়েছি।’ ভিসা নিতে আসা মাদানী নামে একজন বলেন, ‘আমার ক্লাস শুরু হয়ে গেছে অথচ আমি যেতে পারছিনা। কয়েকদিন অনলাইনে ক্লাস করেছি। এখন যাবার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কি জবাব দিব জানিনা!’
বগুড়া থেকে ভিসা নিতে আসা সাজেদুর রহমান বলেন, ‘রাতে বগুড়া থেকে রওনা দিয়ে সকালে ঢাকায় পৌঁছেছি। সকালে এসে ভিএফএস গ্লোবালের অফিসের সামনে ভিসার জন্য লাইনে দাঁডিয়েছি, এখনো ভিতরে ঢুকতে পারিনাই। জানিনা, আজকে পাবো কিনা। পাশেই দাঁড়ানো কামরুল হাসান নামের একজন বলেন, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়ালেও এখানে কোন নিয়ম-কানুন নাই। ভিএফএস এজেন্সির কেউ নিচে এসে খোঁজ নেয়নি। প্রচন্ড রোদে, গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দেখার কেউ নেই। তিনি আরো বলেন, স্বজনপ্রীতিও হচ্ছে। অনেকেই গাড়ীতে এসে লাইনে না দাঁড়িয়েও ভিতরে গিয়ে ভিসা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে।
রাসেল নামের একজন বলেন, আমাদেরকে শুধু মেইল দিয়েই ভিএফএস এজেন্সি দায়সারা গোছের কাজ করেছে। তারা সময় উল্লেখ করে টোকেন দিয়ে দিতে পারতো, তাতে আমাদের হয়রানি কমতো।
ভিসা প্রর্থীদের অভিযোগের বিষয়ে ভিএফএস এজেন্সি’র অফিসে যোগযোগ করা হলেও তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সোমবার, ১৮ অক্টোবর ২০২১
ব্রিটিশ ভিসা সংগ্রহ করতে হয়রানির চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। অভিয়োগ উঠেছে ঢাকাস্থ বিট্রিশ হাইকমিশনের অনুমোদিত ভিসা সেন্টার ভিএফএস গ্লোবালের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়ে ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো কাউকে না জানিয়ে। অথচ, তারা ভিসা প্রত্যাশীদের ই-মেইলে বা মোবাইলের মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়েছিলো তাদের ভিসা প্রস্তুত তারা যেন নিতে আসে। পরবর্তী দিনগুলোতেও ভিসা সংগ্রহ করতে আসা মানুষের হয়রানির শেষ নেই। উপরের ‘ওয়েটিং রুমে’ তীব্র গরম ও দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে থাকার কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কেউ কথা বলেনি।
গতকাল রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গুলশানের ভিএফএস এজেন্সির সামনে সকাল থেকেই ভিসা প্রত্যাসীদের জটলা। তাদের সাঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এজেন্সির চরম অসহযোগিতা ও অব্যবস্থাপনার কথা। ওইদিন দুপুরের দিকে অফিসের গেটের সামনে বড় জটলার মধ্যে ভিসা প্রত্যাসীদের চিৎকার চেচামেচি দেখা গেছে। তখন এজেন্সির কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন নিচে এসে গেট বন্ধ করে গেটের সামনের জায়গা ফাঁকা করে দেয়। সেসময় ওই ব্যাক্তির সঙ্গে সংবাদের পক্ষ থেকে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
পরবর্তীতে ঘন্টা খানেক পর ভিএফএস এজেন্সির ভিতরে প্রবেশ করলেও পরিচয় দেওয়ার পরও গেট থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। তখন দেখা যায়, ভিসা নিতে উপরে ওঠা অনেকেই সিড়িতে, অফিসের পাশের রুমে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। গরমে ক্লান্ত অনেকেই ফ্লোরে বসে পড়েন। কারণ, রুমটিতে নেই কোন বসার জায়গা বা ফ্যান। এখানে অপেক্ষা করা অনেকেই প্রচন্ড গরমে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এতো কষ্ট ও অপেক্ষার পর ভিসার কাগজ হাতে পাওয়ার পর তৃপ্তির হাসির চেয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন অনেকে। সেখানে কর্তব্যরতদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
ভিএফএস এজেন্সি ব্যাবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এ্যার্বাডিন ইউনিভাসিটিতে পড়তে যাওয়া সরকারী কর্মকর্তা শফিকুর আলম। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘সকাল থেকে রোদে দাঁড়িয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ভিসার কাগজপত্র হাতে পেলাম। এতোক্ষাণ দাঁড়িয়ে থেকে ভিসা নিতে এসে আমি খুবই বিরক্ত। ভিএফএস এজেন্সি আমাদের নিদিষ্ট সময় উল্লেখ করে দিলে এতো হয়রানি হতে হতো না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এদের প্রোসেসিং ও ডেলিভ্যারির মধ্যেই ভেজাল। অথচ, আমি তাদের প্রিমিয়াম সেবা পাওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা বেশি দিয়েছি, যাতে দ্রুত সেবাটা পাই। অথচ; দ্রুত সেবা তো পেলামই না, ইতোমধ্যে ওদের কারণে আমার একমাস ক্লাসে অনুপস্থিত থাকতে হল। যেটা আমার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি! কারণ ওখানে যাবার পর আমি মানুষিক চাপের মধ্যে পড়ে যাব।’
যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাবার জন্য ভিসা নিতে আসা অর্ণব বলেন, ‘ এই করোনোকালে যে ঘিঞ্জি পরিবেশে থেকে ভিসা নিতে হয় তাতে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। উপরে জায়গার সংকুলান এতো কম যে, মনে হয় নরকে আছি। অথচ, আমার এ সেবা পাবার জন্য তাদের পর্যাপ্ত টাকা দিয়েছি।’ ভিসা নিতে আসা মাদানী নামে একজন বলেন, ‘আমার ক্লাস শুরু হয়ে গেছে অথচ আমি যেতে পারছিনা। কয়েকদিন অনলাইনে ক্লাস করেছি। এখন যাবার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কি জবাব দিব জানিনা!’
বগুড়া থেকে ভিসা নিতে আসা সাজেদুর রহমান বলেন, ‘রাতে বগুড়া থেকে রওনা দিয়ে সকালে ঢাকায় পৌঁছেছি। সকালে এসে ভিএফএস গ্লোবালের অফিসের সামনে ভিসার জন্য লাইনে দাঁডিয়েছি, এখনো ভিতরে ঢুকতে পারিনাই। জানিনা, আজকে পাবো কিনা। পাশেই দাঁড়ানো কামরুল হাসান নামের একজন বলেন, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়ালেও এখানে কোন নিয়ম-কানুন নাই। ভিএফএস এজেন্সির কেউ নিচে এসে খোঁজ নেয়নি। প্রচন্ড রোদে, গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দেখার কেউ নেই। তিনি আরো বলেন, স্বজনপ্রীতিও হচ্ছে। অনেকেই গাড়ীতে এসে লাইনে না দাঁড়িয়েও ভিতরে গিয়ে ভিসা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে।
রাসেল নামের একজন বলেন, আমাদেরকে শুধু মেইল দিয়েই ভিএফএস এজেন্সি দায়সারা গোছের কাজ করেছে। তারা সময় উল্লেখ করে টোকেন দিয়ে দিতে পারতো, তাতে আমাদের হয়রানি কমতো।
ভিসা প্রর্থীদের অভিযোগের বিষয়ে ভিএফএস এজেন্সি’র অফিসে যোগযোগ করা হলেও তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।