মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শিশুদের মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখতে হবে
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শিশুদের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর শিশুদের সঠিক পরিচর্যার অন্যতম মাধ্যম হলো খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদন। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রযুক্তির এই আধুনিক যুগে শিশু-কিশোরদের মধ্যে খেলাধুলার প্রতি আকর্ষণ প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। তাদের খেলাধুলার জগতকে দখল করে নিয়েছে বিভিন্ন ধরণের ইলেকট্রনিক ডিভাইস। বিশেষ করে করোনার দুর্যোগ শিশু-কিশোরদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে অনেক। শিশুদের মনোজগৎ এমনিতেই বড় বেশি সংবেদনশীল কিংবা স্পর্শকাতর। শিশুদের স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার অন্যতম শর্ত হচ্ছে মুক্ত পরিবেশ। কিন্তু করোনার সময় বেশিরভাগ শিশুই ঘরে অবস্থান করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিশু-কিশোরদের মোবাইল-ফোনে আসক্তি বেড়েছে। অনেকে সারাক্ষণ মোবাইলে গেমস খেলছে; কেউ টিভি দেখে, ইউটিউব, টিকটক, লাইকি ভিডিও বা কার্টুন দেখে সময় কাটাচ্ছে। অনিহা বেড়েছে খেলাধুলার প্রতি। ফলে তাদের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক বিকাশ উভয়ই চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।
আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থা এর জন্য বহুলাংশে দায়ী, যে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নতুন করে নিষ্প্র্রয়োজন। বিদ্যমান পরিস্থিতি ভবিষ্যতে শিশুদের জন্য আরও কতটা প্রকট হয়ে ওঠে, তাও এখন চিন্তার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশুদের এই প্রতিকূলতার মুখোমুখি হওয়ার বিরূপ প্রভাব সমাজে যে আরও পড়বে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অনেক উন্নত দেশে এই বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বহুমুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের এ ব্যাপারে ভাবা প্রয়োজন।
অভিভাবকের উচিত শিশুদের প্রতি যত্নশীল হওয়া। শিশুদের মোবাইল ফোন বা আধুনিক ডিভাইস থেকে দুরে রাখতে হবে। বিভিন্ন খেলাধুলা, দৌড় ঝাপ এবং নির্মল বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকই সমৃদ্ধ হবে। অবসর সময়ে পরিবারে গল্পগুজব, কবিতা আবৃত্তি বা সংস্কৃতিচর্চা করার ব্যবস্থা করতে হবে। শিশু-কিশোরদের নৈতিক ও আদর্শিক শিক্ষায় বিকশিত করতে হবে।
মো. শাহিন হোসেন
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জনসম্মুখে ধূমপান নয়
সবাই জানে ধূমপান করলে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়। কিন্তু তারপরও জেনেশুনে মানুষ যেখানে সেখানে ধূমপান করে। সিগারেটের প্রতিটি প্যাকেটেও লেখা থাকে ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’, এসব সতর্কতা সত্ত্বেও ধূমপানের হার ক্রমাগত বেড়েই চলছে। অনেক জায়গায় লেখা থাকে যে ‘ধূমপান মুক্ত এলাকা’ কিংবা এখানে ধূমপান নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেকে তা খেয়াল করার পরও ইচ্ছাকৃতভাবে যেখানে সেখানে ধূমপান করে। কেউ এর প্রতিবাদ করলে মনে হয় যেন প্রতিবাদকারীই আসল অপরাধী।
জনসমক্ষে ধূমপান আমাদের দেশে হরহামেশাই দেখা যায়। পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও জনসমক্ষে ধূমপান নিষিদ্ধকরণ আইন প্রণয়ন হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগই এ আইন মানে না। এতে অধূমপায়ী ও শিশুরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে, প্রকাশ্য ধূমপানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয় শিশুরা। এদিকে, প্রকাশ্য ধূমপান নিষিদ্ধ আইনের ফলে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় ‘অকালজাত শিশু’ জন্মের হার প্রায় ১০ ভাগ কমে গেছে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
ধূমপান মানুষের অপমৃত্যু ঘটায়। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সমগ্র পৃথিবীতে ধূমপানের কারণে যত বেশি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটে, অন্য কোন রোগ-ব্যাধির কারণে তত ঘটে না। ধূমপানের কারণে শরীরে তাপ বৃদ্ধি, প্রদাহ, জ্বালাপোড়া ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি রোগ-ব্যাধি দেখা যায়। ধূমপানের কারণে রক্তনালিগুলো দুর্বল হয়ে যায় এবং অনেক সময় তার রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ধূমপানকারীর ফুসফুস, মুত্রথলি, ঠোঁট, মুখ, জিহবা ও কণ্ঠনালি, কিডনি ইত্যাদিতে ক্যান্সার হয়। ধূমপান স্মরণশক্তি কমিয়ে দেয় এবং মনোবল দুর্বল করে দেয়। ইন্দ্রিয় ক্ষমতা দুর্বল করে। বিশেষ করে ঘ্রাণ নেয়া এবং স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা লোপ পায়।
আইন অনুসারে জনসমক্ষে, বিশেষ করে গণপরিবহন, বার, রেস্তোরাঁ এবং কর্মক্ষেত্রে ধূমপান নিষিদ্ধ। ধূমপানে বিষপান, এ বিষয়টি অনুধাবন করে প্রকাশ্যে ধূমপান রোধের জন্য সবার আগে আমাদের নিজেদেরই সচেতন হতে হবে।
মো. জিল্লুর রহমান
সতিশ সরকার রোড,
গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১
শিশুদের মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখতে হবে
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শিশুদের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর শিশুদের সঠিক পরিচর্যার অন্যতম মাধ্যম হলো খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদন। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রযুক্তির এই আধুনিক যুগে শিশু-কিশোরদের মধ্যে খেলাধুলার প্রতি আকর্ষণ প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। তাদের খেলাধুলার জগতকে দখল করে নিয়েছে বিভিন্ন ধরণের ইলেকট্রনিক ডিভাইস। বিশেষ করে করোনার দুর্যোগ শিশু-কিশোরদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে অনেক। শিশুদের মনোজগৎ এমনিতেই বড় বেশি সংবেদনশীল কিংবা স্পর্শকাতর। শিশুদের স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার অন্যতম শর্ত হচ্ছে মুক্ত পরিবেশ। কিন্তু করোনার সময় বেশিরভাগ শিশুই ঘরে অবস্থান করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিশু-কিশোরদের মোবাইল-ফোনে আসক্তি বেড়েছে। অনেকে সারাক্ষণ মোবাইলে গেমস খেলছে; কেউ টিভি দেখে, ইউটিউব, টিকটক, লাইকি ভিডিও বা কার্টুন দেখে সময় কাটাচ্ছে। অনিহা বেড়েছে খেলাধুলার প্রতি। ফলে তাদের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক বিকাশ উভয়ই চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।
আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থা এর জন্য বহুলাংশে দায়ী, যে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নতুন করে নিষ্প্র্রয়োজন। বিদ্যমান পরিস্থিতি ভবিষ্যতে শিশুদের জন্য আরও কতটা প্রকট হয়ে ওঠে, তাও এখন চিন্তার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশুদের এই প্রতিকূলতার মুখোমুখি হওয়ার বিরূপ প্রভাব সমাজে যে আরও পড়বে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অনেক উন্নত দেশে এই বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বহুমুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের এ ব্যাপারে ভাবা প্রয়োজন।
অভিভাবকের উচিত শিশুদের প্রতি যত্নশীল হওয়া। শিশুদের মোবাইল ফোন বা আধুনিক ডিভাইস থেকে দুরে রাখতে হবে। বিভিন্ন খেলাধুলা, দৌড় ঝাপ এবং নির্মল বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে শিশুর শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকই সমৃদ্ধ হবে। অবসর সময়ে পরিবারে গল্পগুজব, কবিতা আবৃত্তি বা সংস্কৃতিচর্চা করার ব্যবস্থা করতে হবে। শিশু-কিশোরদের নৈতিক ও আদর্শিক শিক্ষায় বিকশিত করতে হবে।
মো. শাহিন হোসেন
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জনসম্মুখে ধূমপান নয়
সবাই জানে ধূমপান করলে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়। কিন্তু তারপরও জেনেশুনে মানুষ যেখানে সেখানে ধূমপান করে। সিগারেটের প্রতিটি প্যাকেটেও লেখা থাকে ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’, এসব সতর্কতা সত্ত্বেও ধূমপানের হার ক্রমাগত বেড়েই চলছে। অনেক জায়গায় লেখা থাকে যে ‘ধূমপান মুক্ত এলাকা’ কিংবা এখানে ধূমপান নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেকে তা খেয়াল করার পরও ইচ্ছাকৃতভাবে যেখানে সেখানে ধূমপান করে। কেউ এর প্রতিবাদ করলে মনে হয় যেন প্রতিবাদকারীই আসল অপরাধী।
জনসমক্ষে ধূমপান আমাদের দেশে হরহামেশাই দেখা যায়। পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও জনসমক্ষে ধূমপান নিষিদ্ধকরণ আইন প্রণয়ন হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগই এ আইন মানে না। এতে অধূমপায়ী ও শিশুরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে, প্রকাশ্য ধূমপানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয় শিশুরা। এদিকে, প্রকাশ্য ধূমপান নিষিদ্ধ আইনের ফলে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় ‘অকালজাত শিশু’ জন্মের হার প্রায় ১০ ভাগ কমে গেছে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
ধূমপান মানুষের অপমৃত্যু ঘটায়। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সমগ্র পৃথিবীতে ধূমপানের কারণে যত বেশি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটে, অন্য কোন রোগ-ব্যাধির কারণে তত ঘটে না। ধূমপানের কারণে শরীরে তাপ বৃদ্ধি, প্রদাহ, জ্বালাপোড়া ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি রোগ-ব্যাধি দেখা যায়। ধূমপানের কারণে রক্তনালিগুলো দুর্বল হয়ে যায় এবং অনেক সময় তার রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ধূমপানকারীর ফুসফুস, মুত্রথলি, ঠোঁট, মুখ, জিহবা ও কণ্ঠনালি, কিডনি ইত্যাদিতে ক্যান্সার হয়। ধূমপান স্মরণশক্তি কমিয়ে দেয় এবং মনোবল দুর্বল করে দেয়। ইন্দ্রিয় ক্ষমতা দুর্বল করে। বিশেষ করে ঘ্রাণ নেয়া এবং স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা লোপ পায়।
আইন অনুসারে জনসমক্ষে, বিশেষ করে গণপরিবহন, বার, রেস্তোরাঁ এবং কর্মক্ষেত্রে ধূমপান নিষিদ্ধ। ধূমপানে বিষপান, এ বিষয়টি অনুধাবন করে প্রকাশ্যে ধূমপান রোধের জন্য সবার আগে আমাদের নিজেদেরই সচেতন হতে হবে।
মো. জিল্লুর রহমান
সতিশ সরকার রোড,
গেন্ডারিয়া, ঢাকা।