alt

অপরাধ ও দুর্নীতি

বাইরে তালা, ভেতরে লকার ভাঙা

ঢাকা কাস্টমস হাউসের গুদাম থেকে দামি মালামাল হাওয়া

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদাম থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনা ঘটেছে । চুরি হওয়া সোনার পরিমাণ নির্ধারণ করা না গেলে প্রাথমিকভাবে ৫০ কেজি সোনা চুরি হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। তবে কাস্টমস বলছে হিসেব করার পর কি পরিমাণ সোনা চুরি হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কীভাবে সোনা চুরির ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। পুলিশ মনে করছে, গোডাউনের দায়িত্বে থাকা কাস্টমসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ চুরির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এছাড়া অন্য কেউও জড়িত থাকতে পারে।

ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার একে এম নুরুল হুদা আজাদ বলেন, গুদাম থেকে সোনা চুরি হওয়ার বিষয়টি মোটামুটিভাবে আমরা নিশ্চিত। একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কাজ করছে বলে আমরা অনুমান করছি। কাস্টমস হাউস ও সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি টিম দোষীদের শনাক্ত করতে কাজ করছে। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাস্টমস হাউসের একাধিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই জব্দকৃত মালামাল গুদাম থেকে চুরি হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা কাস্টমস হাউস কাজ করছিল। গত শুক্রবার ও শনিবার কাস্টমস হাউজের আলাদা দুটি টিম গুদামের মালামালের তালিকা প্রস্তুত করা এবং গুদাম পরিষ্কারের কাজ শুরু করে। গত শনিবার একটি টিম দেখতে পায় যে, বাইরে থেকে তালা অক্ষত থাকলেও ভেতরের লকার ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। পরে তারা লকার থেকে স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনা জানতে পারে।

গুদামের মালামালের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। দ্রুতই চুরি হওয়া প্রকৃত মালামাল সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য বের করা সম্ভব হবে। আমাদের ধারণা চোর নিজেদের ভেতরেই রয়েছে। তাদের শনাক্তে কাজ করছে একটি যৌথ টিম।

পুলিশ জানিয়েছে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া ও খুঁজে পাওয়া পণ্য রাখার স্থানের পাশেই রয়েছে কাস্টমসের গুদাম। বিমানবন্দরে কাস্টমসহ বিভিন্ন এজেন্সির জব্দ করা মূল্যবান সামগ্রী জমা থাকে এই গুদামে। এছাড়া বিমানবন্দরে বিভিন্ন যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে আনা সোনা এবং বিমান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া সোনাও এ গোডাউনে রাখা হয়। ধারণা করা হচ্ছে যে বা যারা চুরির সঙ্গে জড়িত তারা আগে থেকে সবকিছু রেকি করে সোনা সরিয়েছে।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনার পর সিআইডির ক্রাইম সিন ঘটনাস্থল থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহসহ আলামত উদ্ধারের কার্যক্রম চালিয়েছে। ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে চোর শনাক্ত হবে।

জানতে চাইলে উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার তাওহীদ ইসলাম টেলিফোনে সংবাদকে জানান, কাস্টমস গোডাউন থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ দামি মালামাল চুরির ঘটনায় কর্তৃপক্ষ পুলিশকে মৌখিকভাবে জানিয়েছে। ঘটনা জানার পর পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানে তারা ৫০ কেজির বেশি স্বর্ণালঙ্কার চুরি যাওয়ার বিষয়ে ধারণা দিয়েছে। তবে জব্দ তালিকা হিসেব চূড়ান্ত হলে জানা যাবে কি পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার এবং অন্য মালামাল চুরি হয়েছে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে কোন মামলা করেনি। মামলা হলে পুলিশ প্রকৃত ঘটনা কি ঘটেছে সে বিষয়ে তদন্ত করবে।

কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের পদস্থ এক কর্মকর্তা টেলিফোনে সংবাদকে জানান, ওই গোডাউন ঢাকা কাসস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধায়নে থাকে। বিমানবন্দরে অবৈধভাবে আনা স্বর্ণালঙ্কার, বিদেশি মুদ্রা বা অন্য দামি মালামাল জব্দ হলে সেগুলো গোডউনে রাখা হয়। সেখানে একাধিক সংস্থার নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। আশেপাশে সিসি ক্যামেরাও থাকে। যদিও গোডউনের তত্ত্বাবধায়নে নির্দিষ্ট লোক থাকে। কয়েকদিন পর পর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়। গোডাউনে কাস্টমসের লোকজন ছাড়া অন্য কারো যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে কীভাবে চুরির ঘটনা ঘটেছে সেটি রহস্যজনক। এখানে গোডাউনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের যোগসূত্র থাকতে পারে।

কাস্টমসের আরেক কর্মকর্তা বলেন, তিনি বিমানবন্দর এলাকায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং ঢাকা কাস্টম হাউজের অধীনে দীর্ঘদিন চাকরি করেছে। ওই গোডাউনে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কাস্টমসের লোকজন ছাড়া গোডাউনে অন্য কারো প্রবেশ করার কোন সুযোগ নেই।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ২ থেকে ৩ কেজির বেশি স্বর্ণালঙ্কার জব্দ হওয়ার পরই তা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। পুলিশ স্টক দিয়ে জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কার জমা দেয়া হয়। জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কার গোডাউনে বেশিদিন রাখার কোন বিধান নেই। যদি ২৫ কেজি বা ৫০ কেজি স্বর্ণালঙ্কার হয়ে থাকে তাহলে এত স্বর্ণালঙ্কার কি কারণে এতদিন গোডাউনে রাখা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

একাধিক কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানবন্দরে গোডাউনের দায়িত্বে থাকা ঢাকা কাস্টমস হাউসের লোকজনই এ চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ তাদের। এর নেপথ্যে শক্তিশালী সিন্ডিকেট, অসাধু কর্মকর্তারাও যুক্ত থাকতে পারে।

ছবি

চুনারুঘাটে হামলা করে জমি দখলের চেষ্টায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার -৩

নোয়াখালীর শীর্ষ সন্ত্রাসী খালাসি সুমন গ্রেপ্তার.

যশোরে চাঞ্চল্যকর মিঠু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি গ্রেফতার

ছবি

সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি বিমানবন্দরে আটক

ছবি

শাহজালাল বিমানবন্দরে ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকার সোনাসহ দুই নারী আটক

ছবি

কারাগার থেকে পালানো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ‘গন্ডার’কে গ্রেফতার করল র‌্যাব

ছবি

চিকিৎসকদের ওপর হামলা, গাইবান্ধা থেকে সঞ্জয় পাল গ্রেপ্তার

প্রভাবশালীদের দখলে বটতলী খাল : বানের পানি নামছে না, ভোগান্তিতে হাজার হাজার পরিবার

নোয়াখালীতে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

যমুনা সার কারখানায় চাঁদাবাজি নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মারামারি, আহত -৭

শ্রীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত-৩

ফরিদপুরে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদন্ড

ছবি

গণহত্যায় উস্কানি : ৩০ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

যাত্রাবাড়ীতে অন্তঃসত্ত্বার পেটে ছুরিকাঘাত গর্ভের সন্তানসহ মৃত্যু

ওসমানীতে ১৬ কেজি স্বর্ণসহ দুবাই ফেরত যাত্রী আটক

মোংলায় ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

ছবি

র‍্যাবের ‘হেলিকপ্টার থেকে গুলি’ : সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকও হত্যা মামলার আসামি

ছবি

শেখ হাসিনার প্রশ্রয় না পেলে আনভীররা বেপরোয়া হতো না : মুনিয়ার বোন

ছবি

শেখ হাসিনার সঙ্গে এবার রেহানা, জয় এবং পুতুলও আসামি

নরসিংদীতে ডিম ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

সাবেক আইজিপি মামুনসহ ১৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ‘হত্যাচেষ্টা’ মামলা

যশোরে ইটভাটা শ্রমিক রওশনারা হত্যা মামলায় প্রেমিক আলাউদ্দিনের যাবজ্জীবন

ছবি

সাভারে সাবেক দুই এমপিসহ ১১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

ছবি

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ঘুষবাণিজ্যের তদন্তে দুদক

ছবি

র‍্যানসমওয়্যার হামলাকারীদের চুরি করা তথ্য ব্যবহার নিয়ে সফোসের প্রতিবেদন প্রকাশ

ছবি

কর্মীদের ওপর হামলা ও স্থাপনার ক্ষতিসাধনের বিচার দাবি সাইনোভিয়া ফার্মার

ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রীরা ও আওয়ামী লীগসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

‘গুলি করি, মরে একটা, আহত হয় একটা...’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা

ছবি

মতিঝিলে ইসলামী ব্যাংক দখলের চেষ্টা, গুলিতে আহত ৬

ছবি

ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা, গুলিবিদ্ধ ৬

ছবি

মোরেলগঞ্জে পুলিশসহ ১০ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হামলা-ভাঙচুর

হবিগঞ্জে সেনা সদস্য পরিচয়ে পুলিশ ফাঁড়ির মোটর সাইকেল চুরি, আটক ৩

সাতক্ষীরায় আ’লীগ নেতা ও হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন

ছবি

স্বেচ্ছায় অবসরে যাচ্ছেন ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর

প্রশ্নফাঁস : পিএসসির ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

ছবি

সেতু ভবনে হামলা : আসিফ মাহতাব ও সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ৬ দিনের রিমান্ডে

tab

অপরাধ ও দুর্নীতি

বাইরে তালা, ভেতরে লকার ভাঙা

ঢাকা কাস্টমস হাউসের গুদাম থেকে দামি মালামাল হাওয়া

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদাম থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনা ঘটেছে । চুরি হওয়া সোনার পরিমাণ নির্ধারণ করা না গেলে প্রাথমিকভাবে ৫০ কেজি সোনা চুরি হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। তবে কাস্টমস বলছে হিসেব করার পর কি পরিমাণ সোনা চুরি হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কীভাবে সোনা চুরির ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। পুলিশ মনে করছে, গোডাউনের দায়িত্বে থাকা কাস্টমসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ চুরির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এছাড়া অন্য কেউও জড়িত থাকতে পারে।

ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার একে এম নুরুল হুদা আজাদ বলেন, গুদাম থেকে সোনা চুরি হওয়ার বিষয়টি মোটামুটিভাবে আমরা নিশ্চিত। একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কাজ করছে বলে আমরা অনুমান করছি। কাস্টমস হাউস ও সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকটি টিম দোষীদের শনাক্ত করতে কাজ করছে। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাস্টমস হাউসের একাধিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই জব্দকৃত মালামাল গুদাম থেকে চুরি হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা কাস্টমস হাউস কাজ করছিল। গত শুক্রবার ও শনিবার কাস্টমস হাউজের আলাদা দুটি টিম গুদামের মালামালের তালিকা প্রস্তুত করা এবং গুদাম পরিষ্কারের কাজ শুরু করে। গত শনিবার একটি টিম দেখতে পায় যে, বাইরে থেকে তালা অক্ষত থাকলেও ভেতরের লকার ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। পরে তারা লকার থেকে স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনা জানতে পারে।

গুদামের মালামালের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। দ্রুতই চুরি হওয়া প্রকৃত মালামাল সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য বের করা সম্ভব হবে। আমাদের ধারণা চোর নিজেদের ভেতরেই রয়েছে। তাদের শনাক্তে কাজ করছে একটি যৌথ টিম।

পুলিশ জানিয়েছে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া ও খুঁজে পাওয়া পণ্য রাখার স্থানের পাশেই রয়েছে কাস্টমসের গুদাম। বিমানবন্দরে কাস্টমসহ বিভিন্ন এজেন্সির জব্দ করা মূল্যবান সামগ্রী জমা থাকে এই গুদামে। এছাড়া বিমানবন্দরে বিভিন্ন যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে আনা সোনা এবং বিমান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া সোনাও এ গোডাউনে রাখা হয়। ধারণা করা হচ্ছে যে বা যারা চুরির সঙ্গে জড়িত তারা আগে থেকে সবকিছু রেকি করে সোনা সরিয়েছে।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনার পর সিআইডির ক্রাইম সিন ঘটনাস্থল থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহসহ আলামত উদ্ধারের কার্যক্রম চালিয়েছে। ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে চোর শনাক্ত হবে।

জানতে চাইলে উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার তাওহীদ ইসলাম টেলিফোনে সংবাদকে জানান, কাস্টমস গোডাউন থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ দামি মালামাল চুরির ঘটনায় কর্তৃপক্ষ পুলিশকে মৌখিকভাবে জানিয়েছে। ঘটনা জানার পর পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানে তারা ৫০ কেজির বেশি স্বর্ণালঙ্কার চুরি যাওয়ার বিষয়ে ধারণা দিয়েছে। তবে জব্দ তালিকা হিসেব চূড়ান্ত হলে জানা যাবে কি পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার এবং অন্য মালামাল চুরি হয়েছে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে কোন মামলা করেনি। মামলা হলে পুলিশ প্রকৃত ঘটনা কি ঘটেছে সে বিষয়ে তদন্ত করবে।

কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের পদস্থ এক কর্মকর্তা টেলিফোনে সংবাদকে জানান, ওই গোডাউন ঢাকা কাসস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধায়নে থাকে। বিমানবন্দরে অবৈধভাবে আনা স্বর্ণালঙ্কার, বিদেশি মুদ্রা বা অন্য দামি মালামাল জব্দ হলে সেগুলো গোডউনে রাখা হয়। সেখানে একাধিক সংস্থার নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। আশেপাশে সিসি ক্যামেরাও থাকে। যদিও গোডউনের তত্ত্বাবধায়নে নির্দিষ্ট লোক থাকে। কয়েকদিন পর পর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়। গোডাউনে কাস্টমসের লোকজন ছাড়া অন্য কারো যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে কীভাবে চুরির ঘটনা ঘটেছে সেটি রহস্যজনক। এখানে গোডাউনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের যোগসূত্র থাকতে পারে।

কাস্টমসের আরেক কর্মকর্তা বলেন, তিনি বিমানবন্দর এলাকায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং ঢাকা কাস্টম হাউজের অধীনে দীর্ঘদিন চাকরি করেছে। ওই গোডাউনে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কাস্টমসের লোকজন ছাড়া গোডাউনে অন্য কারো প্রবেশ করার কোন সুযোগ নেই।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ২ থেকে ৩ কেজির বেশি স্বর্ণালঙ্কার জব্দ হওয়ার পরই তা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। পুলিশ স্টক দিয়ে জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কার জমা দেয়া হয়। জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কার গোডাউনে বেশিদিন রাখার কোন বিধান নেই। যদি ২৫ কেজি বা ৫০ কেজি স্বর্ণালঙ্কার হয়ে থাকে তাহলে এত স্বর্ণালঙ্কার কি কারণে এতদিন গোডাউনে রাখা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

একাধিক কর্মকর্তারা বলছেন, বিমানবন্দরে গোডাউনের দায়িত্বে থাকা ঢাকা কাস্টমস হাউসের লোকজনই এ চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ তাদের। এর নেপথ্যে শক্তিশালী সিন্ডিকেট, অসাধু কর্মকর্তারাও যুক্ত থাকতে পারে।

back to top