মাছের বাজারে চিংড়ির দাম বেশি। তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের জন্য চিংড়ির ওজন বাড়াতে বিষাক্ত জেলি পুশ করছে। প্রতি কেজি চিংড়িতে কমপক্ষে ২০০ থেকে আড়াইশ’ গ্রাম জেলি পুশ করা হয়। বাগদা ও গলদা চিংড়ির দাম কেজি এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা। সেখানে এক কেজিতে ২০০ গ্রামই থাকে জেলি। জেলি পুশ করেতে ১০ টাকা খরচ হলে কেজিতে বাড়তি লাভ ২০০ টাকা। ওজন বাড়ানো ছাড়াও পচন রোধক ব্যবহার করা হয়। এ চিংড়ি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। বিশেষ করে কিডনি সমস্যা ও ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিও হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।
একজন মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, চলতি মাসে শুধু কেরানীগঞ্জের ধলেশ্বরী ব্রিজ এলাকায় ৪টি অভিযানে প্রায় ৩ কোটি টাকার চিংড়ি জব্দ করা হয়েছে। ওই সব চিংড়িতে বিষাক্ত জেলি পুশ করা হয়েছে। যা পুশ করার পর চিংড়ির মাথা ও শরীরে জমে শক্ত হয়ে যায়। এমনকি রান্নার জন্য কাটার পর পানি দিয়ে পরিষ্কার করলেও তাতে ক্ষতিকর পদার্থ থেকে যায়। ফলে এই ক্ষতিকর পদার্থসহ চিংড়ি কিে খেলে তা শিশুসহ নানা বয়সের মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে কর্মকর্তারা জানান।
কেরানীগঞ্জের সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, এক একটি গাড়িতে ৫০টির বেশি চিংড়ির বক্স থাকে। তারা মাছগুলোতে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে নিদিষ্ট স্থানে নামিয়ে দিতে বলে। সেখানে লোক থাকে। যার কারণে মূল অভিযুক্তদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকৃত জেলি পুশ করা চিংড়ি ক্ষতিকর হওয়ায় তা মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। একের পর এক অভিযানের পরও চিংড়িতে জেলি পুশ করা থামছে না।
কোস্ট গার্ডের লে. কমান্ডার খন্দকার মুনিক তকি দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, বুধবার (১৭ আগস্ট) ধলেশ্বরী ব্রিজের উপর তিনটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে ৯ হাজার কেজি বা ২২৫ মণ জেলি পুশকৃত চিংড়ি জব্দ করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৮ লাখ টাকা। অভিযানের সময় মালিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে জব্দকৃত চিংড়ি মাটিতে পুতে নষ্ট করা হয়।
দেশের মাছ বাজারে চিংড়ির চাহিদা বেশি। দামও বেশি। এ সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আসায় এই অবৈধ ব্যবসা করছেন।
এ দিকে আমাদের বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত ও র্যাবের অভিযানের পর চিংড়িতে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে জেলি পুশ করা থামছে না। মূলত চিংড়ি মাছের আড়তে এ জেলি পুশ করা হয়। কিছুদিন আগেও খুলনার রূপসায় ৭ জনকে সাজা দেয়া হয়েছে।
বাগদা ও গলদা চিংড়িতে ওজন বাড়াতে জেলি পুশ করা হয়। দেশের বাজার ছাড়াও বিদেশে জেলি পুশ করা চিংড়ি রপ্তানি করলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। অসাধু আড়তদাররা রাতে দিনে চিংড়িতে জেলি পুশ করে। সেখানে নজরদারি নেই। খবর পেলে শুধু অভিযান চালানো হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বনিক বলেন, কেমিক্যাল মিশ্রিত জেলি পুশ করা চিংড়ি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ মাছ খেলে কিডনিতে সমস্যা দেয়া দেয়।এ ছাড়া ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে তিনি মনে করেন। মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি মৎস্য অধিপ্তরের মাছের মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি থাকলেও তা শুধু বিদেশে রপ্তানি করা মাছই কিছু পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু দেশের মাছ বাজারগুলোর জালিয়াতি, মাছে রং লাগিয়ে বিক্রি, মাছে ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে জেলি পুশ করে ওজন বাড়িয়ে বিক্রিসহ নানা অনিয়ম তদারকিতে গাফিলতি রয়েছে।
শুক্রবার, ১৯ আগস্ট ২০২২
মাছের বাজারে চিংড়ির দাম বেশি। তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের জন্য চিংড়ির ওজন বাড়াতে বিষাক্ত জেলি পুশ করছে। প্রতি কেজি চিংড়িতে কমপক্ষে ২০০ থেকে আড়াইশ’ গ্রাম জেলি পুশ করা হয়। বাগদা ও গলদা চিংড়ির দাম কেজি এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা। সেখানে এক কেজিতে ২০০ গ্রামই থাকে জেলি। জেলি পুশ করেতে ১০ টাকা খরচ হলে কেজিতে বাড়তি লাভ ২০০ টাকা। ওজন বাড়ানো ছাড়াও পচন রোধক ব্যবহার করা হয়। এ চিংড়ি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। বিশেষ করে কিডনি সমস্যা ও ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিও হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।
একজন মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, চলতি মাসে শুধু কেরানীগঞ্জের ধলেশ্বরী ব্রিজ এলাকায় ৪টি অভিযানে প্রায় ৩ কোটি টাকার চিংড়ি জব্দ করা হয়েছে। ওই সব চিংড়িতে বিষাক্ত জেলি পুশ করা হয়েছে। যা পুশ করার পর চিংড়ির মাথা ও শরীরে জমে শক্ত হয়ে যায়। এমনকি রান্নার জন্য কাটার পর পানি দিয়ে পরিষ্কার করলেও তাতে ক্ষতিকর পদার্থ থেকে যায়। ফলে এই ক্ষতিকর পদার্থসহ চিংড়ি কিে খেলে তা শিশুসহ নানা বয়সের মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে কর্মকর্তারা জানান।
কেরানীগঞ্জের সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, এক একটি গাড়িতে ৫০টির বেশি চিংড়ির বক্স থাকে। তারা মাছগুলোতে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে নিদিষ্ট স্থানে নামিয়ে দিতে বলে। সেখানে লোক থাকে। যার কারণে মূল অভিযুক্তদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকৃত জেলি পুশ করা চিংড়ি ক্ষতিকর হওয়ায় তা মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। একের পর এক অভিযানের পরও চিংড়িতে জেলি পুশ করা থামছে না।
কোস্ট গার্ডের লে. কমান্ডার খন্দকার মুনিক তকি দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, বুধবার (১৭ আগস্ট) ধলেশ্বরী ব্রিজের উপর তিনটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে ৯ হাজার কেজি বা ২২৫ মণ জেলি পুশকৃত চিংড়ি জব্দ করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৮ লাখ টাকা। অভিযানের সময় মালিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে জব্দকৃত চিংড়ি মাটিতে পুতে নষ্ট করা হয়।
দেশের মাছ বাজারে চিংড়ির চাহিদা বেশি। দামও বেশি। এ সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আসায় এই অবৈধ ব্যবসা করছেন।
এ দিকে আমাদের বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত ও র্যাবের অভিযানের পর চিংড়িতে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে জেলি পুশ করা থামছে না। মূলত চিংড়ি মাছের আড়তে এ জেলি পুশ করা হয়। কিছুদিন আগেও খুলনার রূপসায় ৭ জনকে সাজা দেয়া হয়েছে।
বাগদা ও গলদা চিংড়িতে ওজন বাড়াতে জেলি পুশ করা হয়। দেশের বাজার ছাড়াও বিদেশে জেলি পুশ করা চিংড়ি রপ্তানি করলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। অসাধু আড়তদাররা রাতে দিনে চিংড়িতে জেলি পুশ করে। সেখানে নজরদারি নেই। খবর পেলে শুধু অভিযান চালানো হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বনিক বলেন, কেমিক্যাল মিশ্রিত জেলি পুশ করা চিংড়ি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ মাছ খেলে কিডনিতে সমস্যা দেয়া দেয়।এ ছাড়া ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে তিনি মনে করেন। মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি মৎস্য অধিপ্তরের মাছের মান নিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি থাকলেও তা শুধু বিদেশে রপ্তানি করা মাছই কিছু পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু দেশের মাছ বাজারগুলোর জালিয়াতি, মাছে রং লাগিয়ে বিক্রি, মাছে ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে জেলি পুশ করে ওজন বাড়িয়ে বিক্রিসহ নানা অনিয়ম তদারকিতে গাফিলতি রয়েছে।