বোনের ছেলে ও তার বন্ধুসহ ৪ জন গ্রেফতার, স্বীকারোক্তি
স্বর্ণলংকার লুটে নিতেই খালা রওশন আরা বেগম রোশনীকে (৫৩) হত্যা করেন তার বোনের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম হৃদয়। ঘটনাটি ঘটে গত ২৯ আগস্ট সকালে যশোর কোতোয়ালি থানাধীন আশ্রমের মোড় এলাকায় রোশনীর বাসায়। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়। ঘটনার পর থানা পুলিশ ছাড়াও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই’র) টিম ঘটনাটি ছায়া তদন্তে নামে।
গত ১৩ সেপ্টম্বর গোপন খবরের ভিত্তিতে অভিযুক্ত আসামি বোরহানকে বাগেরহাট জেলার রামপালের ঝণঝনিয়া গ্রামে তার মামার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তার দেয়া তথ্য মতে, ১৩ সেপ্টম্বর সন্ধায় রাজধানীর ভাষানটেক ক্যাণ্টন গ্যারিসন এলাকার আত্নীয়ের বাসা থেকে ২ নম্বর আসামি রিয়াজুল আলম চৌধুরী ওরফে হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে, লুন্ঠিত স্বর্ণ রাখা ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারাও আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
পিবিআইয়ের মতে, ভিকটিম রওশন আরা ওরফে রোশনী (৫৩)। তার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘদিন (১৯ বছর) আগে মৃত্যুবরণ করেন। তার দুই সন্তান আছে। তার বড় ছেলে আমেরিকায় থাকে ও পিএইচডি লেখাপড়া করেন। আর মেয়ে ঢাকায় একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। মা রোশনী একাই যশোরের রেলরোডস্থ বাসায় থাকতেন।
তার বোনের ছেলে হৃদয় মাঝে মধ্যে খালার বাসায় বেড়াতে যেত। সে খালা একা থাকেন ও বাসার স্বর্ণ লংকার কোথায় কি ভাবে রাখেন সবই জানত। এই সব জিনিসের প্রতি বোনের ছেলের লোভ হয়। সে ওই সব স্বর্ণ লংকার লুট করার জন্য পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতে, তার বন্ধু বুরহানকে সঙ্গে নেয়।
অবশেষে গত ২৯ আগস্ট সকালে খালার বাসায় বন্ধুকে নিয়ে হৃদয় বেড়াতে যায়। কথা বার্তা বলার এক পর্যায়ে খালার কাছে পানি চায়। খালা পানি দিতে গেলে পেছন থেকে তাকে এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত খালাকে দুইজন মিলে এলোপাতাড়ি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে রক্তাক্ত লাশ বাসার ভিতরে বক্স খাটের ভিতর রেখে স্বর্ণলংকার সহ অন্যান্য সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।
ঘটনাটি কেউ যাতে কিছু বুঝতে না পারে তার জন্য দুই অভিযুক্ত কিলার স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করেন। ওই দিন বিকেলে রোশনীর মা সেবিকা বেগম তার মোবাইল ফোন থেকে মেয়েকে বার বার ফোন করার পরও তাকে না পেয়ে মেয়ের বাসায় যায়।
বাসার বাহির থেকে গেটের কলিংবেল দেয়। এরপরও ভিতর থেকে কোন সাড়া শব্দ পায়নি। গেটে তালা লাগানো দেখে পাশ্বের রান্না ঘরের জানালার ফাঁক দিয়ে দেখতে পায়, মেয়ের ঘরের আলমারী খোলা এবং বাসার সব কিছু এলোমেলো। তখন মা সেবিকা বেগম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যান।
ওই সময় পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে রওশন আরা বেগম রোশনীর রক্তাক্ত লাশ তার বেড রুমের বক্স খাটের চালের নিচ থেকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনার রোশনীর মা সেবিকা বেগম বাদি হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা (নং ৯২) দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআইয়ের টিম ছায়া তদন্ত শুরু করেন। তাদের তদন্ত ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে আসামি শনাক্ত ও পরে গ্রেফতার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করে বলেছে, হত্যাকান্ড ঘটনানোর পর বাসা থেকে ২টি মোবাইল ফোন, আলমারীতে থাকা স্বর্ণ ও ইমিটেশনের অলংকার বের করে নিয়ে পালিয়ে যায় বলে স্বীকার করেছে।
হত্যাকান্ড ঘটনার পর তারা হৃদয় তার খালার পরিবারের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা বার্তা ও চলাফেরা করত। এতে তাদের প্রতি যাতে কোন সন্দেহ না হয়। গ্রেফতারের পর তাদের দেয়া তথ্য মতে, লুন্ঠিত মালামাল ও হত্যাকান্ডে ব্যবহ্নত চাকু ও হত্যার সময় অভিযুক্ত হৃদয় ও বোরহান বুধবার যশোর আদালতে নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মামলাটি তদন্ত এখনো অব্যাহত আছে।
এছাড়াও লুটকৃত স্বর্ণলংকার নিজে হেফাজতে রাখা ও কেনার সঙ্গে জড়িত আরও ২জনকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার বিকেলে তারা আদালতে স্বেচ্ছায় নিজেদেরকে জড়িয়ে ঘটনার স্বীকারোক্তি মূলক বর্ণনা দিয়েছেন বলে সন্ধায় পিবিআইেেয়র পুলিশ সুপার নিশ্চিত করেছেন।
বোনের ছেলে ও তার বন্ধুসহ ৪ জন গ্রেফতার, স্বীকারোক্তি
বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
স্বর্ণলংকার লুটে নিতেই খালা রওশন আরা বেগম রোশনীকে (৫৩) হত্যা করেন তার বোনের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম হৃদয়। ঘটনাটি ঘটে গত ২৯ আগস্ট সকালে যশোর কোতোয়ালি থানাধীন আশ্রমের মোড় এলাকায় রোশনীর বাসায়। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়। ঘটনার পর থানা পুলিশ ছাড়াও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই’র) টিম ঘটনাটি ছায়া তদন্তে নামে।
গত ১৩ সেপ্টম্বর গোপন খবরের ভিত্তিতে অভিযুক্ত আসামি বোরহানকে বাগেরহাট জেলার রামপালের ঝণঝনিয়া গ্রামে তার মামার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তার দেয়া তথ্য মতে, ১৩ সেপ্টম্বর সন্ধায় রাজধানীর ভাষানটেক ক্যাণ্টন গ্যারিসন এলাকার আত্নীয়ের বাসা থেকে ২ নম্বর আসামি রিয়াজুল আলম চৌধুরী ওরফে হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে, লুন্ঠিত স্বর্ণ রাখা ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারাও আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
পিবিআইয়ের মতে, ভিকটিম রওশন আরা ওরফে রোশনী (৫৩)। তার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘদিন (১৯ বছর) আগে মৃত্যুবরণ করেন। তার দুই সন্তান আছে। তার বড় ছেলে আমেরিকায় থাকে ও পিএইচডি লেখাপড়া করেন। আর মেয়ে ঢাকায় একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। মা রোশনী একাই যশোরের রেলরোডস্থ বাসায় থাকতেন।
তার বোনের ছেলে হৃদয় মাঝে মধ্যে খালার বাসায় বেড়াতে যেত। সে খালা একা থাকেন ও বাসার স্বর্ণ লংকার কোথায় কি ভাবে রাখেন সবই জানত। এই সব জিনিসের প্রতি বোনের ছেলের লোভ হয়। সে ওই সব স্বর্ণ লংকার লুট করার জন্য পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতে, তার বন্ধু বুরহানকে সঙ্গে নেয়।
অবশেষে গত ২৯ আগস্ট সকালে খালার বাসায় বন্ধুকে নিয়ে হৃদয় বেড়াতে যায়। কথা বার্তা বলার এক পর্যায়ে খালার কাছে পানি চায়। খালা পানি দিতে গেলে পেছন থেকে তাকে এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত খালাকে দুইজন মিলে এলোপাতাড়ি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে রক্তাক্ত লাশ বাসার ভিতরে বক্স খাটের ভিতর রেখে স্বর্ণলংকার সহ অন্যান্য সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।
ঘটনাটি কেউ যাতে কিছু বুঝতে না পারে তার জন্য দুই অভিযুক্ত কিলার স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করেন। ওই দিন বিকেলে রোশনীর মা সেবিকা বেগম তার মোবাইল ফোন থেকে মেয়েকে বার বার ফোন করার পরও তাকে না পেয়ে মেয়ের বাসায় যায়।
বাসার বাহির থেকে গেটের কলিংবেল দেয়। এরপরও ভিতর থেকে কোন সাড়া শব্দ পায়নি। গেটে তালা লাগানো দেখে পাশ্বের রান্না ঘরের জানালার ফাঁক দিয়ে দেখতে পায়, মেয়ের ঘরের আলমারী খোলা এবং বাসার সব কিছু এলোমেলো। তখন মা সেবিকা বেগম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যান।
ওই সময় পিবিআইয়ের ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে রওশন আরা বেগম রোশনীর রক্তাক্ত লাশ তার বেড রুমের বক্স খাটের চালের নিচ থেকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনার রোশনীর মা সেবিকা বেগম বাদি হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা (নং ৯২) দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআইয়ের টিম ছায়া তদন্ত শুরু করেন। তাদের তদন্ত ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে আসামি শনাক্ত ও পরে গ্রেফতার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করে বলেছে, হত্যাকান্ড ঘটনানোর পর বাসা থেকে ২টি মোবাইল ফোন, আলমারীতে থাকা স্বর্ণ ও ইমিটেশনের অলংকার বের করে নিয়ে পালিয়ে যায় বলে স্বীকার করেছে।
হত্যাকান্ড ঘটনার পর তারা হৃদয় তার খালার পরিবারের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা বার্তা ও চলাফেরা করত। এতে তাদের প্রতি যাতে কোন সন্দেহ না হয়। গ্রেফতারের পর তাদের দেয়া তথ্য মতে, লুন্ঠিত মালামাল ও হত্যাকান্ডে ব্যবহ্নত চাকু ও হত্যার সময় অভিযুক্ত হৃদয় ও বোরহান বুধবার যশোর আদালতে নিজেদেরকে জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মামলাটি তদন্ত এখনো অব্যাহত আছে।
এছাড়াও লুটকৃত স্বর্ণলংকার নিজে হেফাজতে রাখা ও কেনার সঙ্গে জড়িত আরও ২জনকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার বিকেলে তারা আদালতে স্বেচ্ছায় নিজেদেরকে জড়িয়ে ঘটনার স্বীকারোক্তি মূলক বর্ণনা দিয়েছেন বলে সন্ধায় পিবিআইেেয়র পুলিশ সুপার নিশ্চিত করেছেন।