তিনটি জেলায় বিএনপি’র প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে অসন্তোষ ও বিক্ষোভ করতে দেখা গিয়েছে। বুধবার,(০৫ নভেম্বর ২০২৫) মাদারীপুর, রংপুর ও নাটোরে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন বা নির্দিষ্ট নেতাকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও মনোনয়নপ্রত্যাশী নেত্রীর সমর্থনে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে, আবার কোথাও মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই এসব এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা ও বিভক্তির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মাদারীপুরের নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান, মাদারীপুর-২ আসনে (রাজৈর উপজেলা ও সদরের একাংশ) বিএনপি’র সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খানকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে শরীয়তপুর-মাদারীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে স্থানীয় বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।
বুধবার, বিকেলে শহরের শকুনী লেকের স্বাধীনতা অঙ্গন থেকে ইটেরপুল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে এই সমাবেশ করে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর-২ আসনে (রাজৈর উপজেলা ও সদরের একাংশ) বিএনপি’র সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খানকে মনোনয়ন দেয়ার দাবীতে শহরের শকুনী লেকের স্বাধীনতা অঙ্গন থেকে শুরু করে একটি বিক্ষোভ মিছিল শরীয়তপুর-মাদারীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের ইটেরপুল এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়া নেতাকর্মীরা আঞ্চলিক মহাসড়কে বসে পড়ে সমাবেশ করেন। এসময় সড়কের একটি লেনের যান চলাচল প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে সমাবেশ শেষ হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- মাদারীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন হাওলাদার, যুগ্ম আহবায়ক এ্যাড.জামিনুর হোসেন মিঠু, সাবেক জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রুবায়েত হোসেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব অহিদুল ইসলাম খান, সদর থানা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি লাইজু আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক মুনমুন আহমেদসহ অন্যরা। সমাবেশে বক্তারা অতি দ্রুত মাদারীপুর-২ আসনে বিএনপি’র সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খানকে মনোনয়ন ঘোষণার দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
রংপুরের নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান, সদর ৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় বুধবার, দুপুরে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি নেত্রী রিতা রহমানের সমর্থকরা। সেই সঙ্গে রংপুর সদর ৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া তার হক ছিল তাকে না দেয়ায় তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেত্রী রীতা রহমান।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে রীতা রহমানের সমর্থকরা সমবেত হয়ে একটি বিক্ষোভ বের করে। মিছিলকারীরা রীতা রহমানের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। তবে মিছিলে বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী সমর্থক ছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরে নগরীর রাধাবল্লভ এলাকায় অবস্থিত বিএনপি নেত্রী রীতা রহমান দাবি করেন এর আগে দু’বার রংপুর ৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু জনগণ সে সময় ভোট দিতে পারে নাই। তবে এবার ভোট দেয়ার সুযোগ এসেছে আমাকে মনোনয়ন কেন দেয়া হবে না জানতে চান।
বিক্ষোভে রংপুর মহানগর বা জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী ছিল না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে রীতা রহমান বলেন, কেন সেখানে তো শতাধিক নেতাকর্মী ছিল এদের মধ্যে রংপুর সদর ৩ আসনের মমিনপুর এলাকার বেশ কয়েকজন নেতা ছিলেন বলে শুনেছিলাম। ৫০ জনের বেশি নেতাকর্মী ছিল না এমন প্রশ্নের উত্তরে রীতা রহমান হতবাক হয়ে জানান, কি বলেন আমি তো জানি অনেক বেশি লোকজন ছিল।
তিনি আরও বলেন আমি ২০১৮ সালের নির্বাচনে রংপুর সদর ৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছি। এরপর ২০১৯ সাল পর্যন্ত রংপুরেই ছিলাম দাবি করে বলেন, এরপর আমি আমেরিকাতে ছিলাম দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় না থাকলেও আমেরিকাতে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন বলে দাবি করেন। নিজেকে যোগ্য প্রার্থী দাবি করে তিনি বলেন, আমার থেকে যোগ্য কোনো প্রার্থী রংপুর সদর ৩ আসনে আছে বলে মনে করি না।
রীতা রহমান দাবি করেন, তার প্রয়াত বাবা মশিয়ার রহমান যাদু মিয়া ছিলেন বিএনপির কো-প্রতিষ্ঠাতা। মাওলানা হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুর পর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির চেয়ারম্যান হন তিনি। ১৯৭৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ জিয়াউর রহমানের তুলে দেন তার বাবা এবং বিএনপিতে যোগ দেন। তার বাবাই বিএনপির নাম তিনি দিয়েছিলেন। নিজেকে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির ছিলেন বলে দাবি করেন। এক পর্যায়ে বলেন, যদিও তিনি বেশ কিছুদিন সক্রিয় ছিলেন না রাজনীতিতে তারপরও তাকে সদর ৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে কোনো নেতাকর্মীকে সেখানে দেখা যায়নি।
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সমর্থকরা। এই আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কর্তৃক ফারজানা শারমিন পুতুলকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই পুতুলের প্রার্থিতা বাতিল করতে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীরা দফায় দফায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেন।
বুধবার, বিকেলে পুতুলের প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে লালপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ চত্বর থেকে তাইফুল ইসলাম টিপুর সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি গোপালপুর বাজার হয়ে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে তারা রেলগেট এলাকায় রেললাইনে অবস্থান নিয়ে রেলপথ অবরোধ করে প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে গোপালপুর পৌর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রানা, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুজ্জামান সরকার, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আরিফুর রহমান আরিফসহ উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কয়েকশ’ নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, নাটোর-১ আসনে তৃণমূলের মতামতের বিরুদ্ধে ফারজানা শারমিন পুতুলকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তাই এই আসনে বিজয় নিশ্চিত করতে হলে তাইফুল ইসলাম টিপুকেই মনোনয়ন দিতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, পুতুল মনোনয়ন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রদলের এক কর্মীকে মারধর ও রক্তাক্ত করা হয়েছে। আমরা এ মনোনয়ন মানি না। তাইফুল ইসলাম টিপু লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনের সবচেয়ে ত্যাগী নেতা। তাই এই আসনে টিপুকে প্রার্থী করতে তারা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
উল্লেখ্য, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নাটোর জেলার চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে নাটোর-১ আসনে ফারজানা শারমিন পুতুলের নাম ঘোষণা করলে তৃণমূল পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
তিনটি জেলায় বিএনপি’র প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে অসন্তোষ ও বিক্ষোভ করতে দেখা গিয়েছে। বুধবার,(০৫ নভেম্বর ২০২৫) মাদারীপুর, রংপুর ও নাটোরে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন বা নির্দিষ্ট নেতাকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও মনোনয়নপ্রত্যাশী নেত্রীর সমর্থনে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে, আবার কোথাও মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই এসব এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা ও বিভক্তির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
মাদারীপুরের নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান, মাদারীপুর-২ আসনে (রাজৈর উপজেলা ও সদরের একাংশ) বিএনপি’র সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খানকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে শরীয়তপুর-মাদারীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে স্থানীয় বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।
বুধবার, বিকেলে শহরের শকুনী লেকের স্বাধীনতা অঙ্গন থেকে ইটেরপুল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে এই সমাবেশ করে তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর-২ আসনে (রাজৈর উপজেলা ও সদরের একাংশ) বিএনপি’র সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খানকে মনোনয়ন দেয়ার দাবীতে শহরের শকুনী লেকের স্বাধীনতা অঙ্গন থেকে শুরু করে একটি বিক্ষোভ মিছিল শরীয়তপুর-মাদারীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের ইটেরপুল এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়া নেতাকর্মীরা আঞ্চলিক মহাসড়কে বসে পড়ে সমাবেশ করেন। এসময় সড়কের একটি লেনের যান চলাচল প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে সমাবেশ শেষ হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- মাদারীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন হাওলাদার, যুগ্ম আহবায়ক এ্যাড.জামিনুর হোসেন মিঠু, সাবেক জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রুবায়েত হোসেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব অহিদুল ইসলাম খান, সদর থানা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি লাইজু আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক মুনমুন আহমেদসহ অন্যরা। সমাবেশে বক্তারা অতি দ্রুত মাদারীপুর-২ আসনে বিএনপি’র সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খানকে মনোনয়ন ঘোষণার দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
রংপুরের নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান, সদর ৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় বুধবার, দুপুরে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি নেত্রী রিতা রহমানের সমর্থকরা। সেই সঙ্গে রংপুর সদর ৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া তার হক ছিল তাকে না দেয়ায় তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেত্রী রীতা রহমান।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে রীতা রহমানের সমর্থকরা সমবেত হয়ে একটি বিক্ষোভ বের করে। মিছিলকারীরা রীতা রহমানের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। তবে মিছিলে বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী সমর্থক ছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরে নগরীর রাধাবল্লভ এলাকায় অবস্থিত বিএনপি নেত্রী রীতা রহমান দাবি করেন এর আগে দু’বার রংপুর ৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু জনগণ সে সময় ভোট দিতে পারে নাই। তবে এবার ভোট দেয়ার সুযোগ এসেছে আমাকে মনোনয়ন কেন দেয়া হবে না জানতে চান।
বিক্ষোভে রংপুর মহানগর বা জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী ছিল না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে রীতা রহমান বলেন, কেন সেখানে তো শতাধিক নেতাকর্মী ছিল এদের মধ্যে রংপুর সদর ৩ আসনের মমিনপুর এলাকার বেশ কয়েকজন নেতা ছিলেন বলে শুনেছিলাম। ৫০ জনের বেশি নেতাকর্মী ছিল না এমন প্রশ্নের উত্তরে রীতা রহমান হতবাক হয়ে জানান, কি বলেন আমি তো জানি অনেক বেশি লোকজন ছিল।
তিনি আরও বলেন আমি ২০১৮ সালের নির্বাচনে রংপুর সদর ৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছি। এরপর ২০১৯ সাল পর্যন্ত রংপুরেই ছিলাম দাবি করে বলেন, এরপর আমি আমেরিকাতে ছিলাম দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় না থাকলেও আমেরিকাতে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন বলে দাবি করেন। নিজেকে যোগ্য প্রার্থী দাবি করে তিনি বলেন, আমার থেকে যোগ্য কোনো প্রার্থী রংপুর সদর ৩ আসনে আছে বলে মনে করি না।
রীতা রহমান দাবি করেন, তার প্রয়াত বাবা মশিয়ার রহমান যাদু মিয়া ছিলেন বিএনপির কো-প্রতিষ্ঠাতা। মাওলানা হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুর পর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির চেয়ারম্যান হন তিনি। ১৯৭৭ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ জিয়াউর রহমানের তুলে দেন তার বাবা এবং বিএনপিতে যোগ দেন। তার বাবাই বিএনপির নাম তিনি দিয়েছিলেন। নিজেকে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটির ছিলেন বলে দাবি করেন। এক পর্যায়ে বলেন, যদিও তিনি বেশ কিছুদিন সক্রিয় ছিলেন না রাজনীতিতে তারপরও তাকে সদর ৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে কোনো নেতাকর্মীকে সেখানে দেখা যায়নি।
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সমর্থকরা। এই আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কর্তৃক ফারজানা শারমিন পুতুলকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই পুতুলের প্রার্থিতা বাতিল করতে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীরা দফায় দফায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেন।
বুধবার, বিকেলে পুতুলের প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে লালপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ চত্বর থেকে তাইফুল ইসলাম টিপুর সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি গোপালপুর বাজার হয়ে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে তারা রেলগেট এলাকায় রেললাইনে অবস্থান নিয়ে রেলপথ অবরোধ করে প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে গোপালপুর পৌর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রানা, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুজ্জামান সরকার, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আরিফুর রহমান আরিফসহ উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কয়েকশ’ নেতাকর্মী অংশ নেন। এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, নাটোর-১ আসনে তৃণমূলের মতামতের বিরুদ্ধে ফারজানা শারমিন পুতুলকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তাই এই আসনে বিজয় নিশ্চিত করতে হলে তাইফুল ইসলাম টিপুকেই মনোনয়ন দিতে হবে। বক্তারা আরও বলেন, পুতুল মনোনয়ন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রদলের এক কর্মীকে মারধর ও রক্তাক্ত করা হয়েছে। আমরা এ মনোনয়ন মানি না। তাইফুল ইসলাম টিপু লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনের সবচেয়ে ত্যাগী নেতা। তাই এই আসনে টিপুকে প্রার্থী করতে তারা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
উল্লেখ্য, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নাটোর জেলার চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে নাটোর-১ আসনে ফারজানা শারমিন পুতুলের নাম ঘোষণা করলে তৃণমূল পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।