সম্মান জানিয়ে খালেদা জিয়ার আসনগুলোতে এনসিপি প্রার্থী দেবে না
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি শুরু করায় রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। আর এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
ইতোমধ্যে এনসিপির পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। বুধবার,(০৫ নভেম্বর ২০২৫) নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, এনসিপি এককভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনে শাপলা কলি প্রতীকে প্রার্থী দিতে প্রস্তুত। জোট তখনই হবে, যখন নীতিগত অবস্থান ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমঝোতা তৈরি হবে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যাদের টাকা আছে, গডফাদারগিরি করে তারাই প্রার্থী হয়, এই সংস্কৃতি আমরা ভাঙতে চাই। এলাকার খেটে খাওয়া, সৎ ও গ্রহণযোগ্য মানুষদের প্রতিনিধিত্ব দেখতে চাই।’
এনসিপি রাজনীতিতে আসার পর থেকেই একাধিক জোটে যাওয়ার গুঞ্জন ছিল। সে গুঞ্জন প্রবল হয়েছে শেষ কিছুদিনে। তবে সেসব গুঞ্জনও উড়িয়ে দেননি নাহিদ। তিনি বলেন, ‘সমঝোতা বা জোটের বিষয়টি কেবল আদর্শিক অবস্থান থেকে হতে পারে। জুলাই সনদে আমাদের যে সংস্কারের দাবিগুলো রয়েছে, কোনো দল যদি সেই দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে, তখন আমরা জোটে যাওয়ার বিষয়ে ভাববো।’
বিএনপি-জামায়াতের প্রভাবশালী প্রার্থীর মুখে এনসিপি
এনসিপির প্রার্থীরা বিভিন্ন আসনে বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মুখোমুখি হবেন। এর মধ্যে ঢাকা-১১ আসনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম লড়বেন বিএনপির এম এ কাইয়ুম ও জামায়াতের আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। পঞ্চগড়-১ আসনে সারজিস আলমের প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন বিএনপির ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ও জামায়াতের অধ্যাপক ইকবাল হোসেন।
কুমিল্লা-৪ আসনে হাসনাত আব্দুল্লাহ মুখোমুখি হবেন বিএনপির ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী ও জামায়াতের সাইফুল ইসলাম শহীদের। রংপুর-৪ আসনে এনসিপির আখতার হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এমদাদুল হক ভরসা ও জামায়াতের এটিএম আজম খান। ঢাকা-৯ আসনে ডা. তাসনিম জারা লড়বেন জামায়াতের কবির আহমদের বিরুদ্ধে।
নরসিংদী-২ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। সেখানে যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষারের প্রাথমিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে এনসিপি। এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আমজাদ হোসাইন।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। আসনটিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। আর জামায়াতের প্রার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ এবং ফেনী-১ এই তিন আসনে এনসিপি প্রার্থী দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। তবে এসব আসনে জামায়াতের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছে।
এদিকে জোট গঠনের সম্ভাবনা নাকচ না করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদে আমাদের যে সংস্কারের দাবি আছে, কোনো দল যদি সেই দাবির সঙ্গে একমত হয়, তখন আমরা জোটের বিষয়টি বিবেচনা করবো।’
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘এই ঐতিহাসিক নির্বাচন এনসিপি নিজস্ব সক্ষমতায় লড়বে, কোনো সমঝোতা করা হবে না।’
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে একাধিক আসনে সরাসরি ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠছে। জোট গঠনের সম্ভাবনা না থাকলে এনসিপি এককভাবে লড়াইয়ের পথে হাঁটছে এমন ইঙ্গিতই স্পষ্ট।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সম্মান জানিয়ে খালেদা জিয়ার আসনগুলোতে এনসিপি প্রার্থী দেবে না
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি শুরু করায় রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নির্বাচনী হাওয়া। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। আর এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
ইতোমধ্যে এনসিপির পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। বুধবার,(০৫ নভেম্বর ২০২৫) নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, এনসিপি এককভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনে শাপলা কলি প্রতীকে প্রার্থী দিতে প্রস্তুত। জোট তখনই হবে, যখন নীতিগত অবস্থান ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমঝোতা তৈরি হবে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যাদের টাকা আছে, গডফাদারগিরি করে তারাই প্রার্থী হয়, এই সংস্কৃতি আমরা ভাঙতে চাই। এলাকার খেটে খাওয়া, সৎ ও গ্রহণযোগ্য মানুষদের প্রতিনিধিত্ব দেখতে চাই।’
এনসিপি রাজনীতিতে আসার পর থেকেই একাধিক জোটে যাওয়ার গুঞ্জন ছিল। সে গুঞ্জন প্রবল হয়েছে শেষ কিছুদিনে। তবে সেসব গুঞ্জনও উড়িয়ে দেননি নাহিদ। তিনি বলেন, ‘সমঝোতা বা জোটের বিষয়টি কেবল আদর্শিক অবস্থান থেকে হতে পারে। জুলাই সনদে আমাদের যে সংস্কারের দাবিগুলো রয়েছে, কোনো দল যদি সেই দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে, তখন আমরা জোটে যাওয়ার বিষয়ে ভাববো।’
বিএনপি-জামায়াতের প্রভাবশালী প্রার্থীর মুখে এনসিপি
এনসিপির প্রার্থীরা বিভিন্ন আসনে বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মুখোমুখি হবেন। এর মধ্যে ঢাকা-১১ আসনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম লড়বেন বিএনপির এম এ কাইয়ুম ও জামায়াতের আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। পঞ্চগড়-১ আসনে সারজিস আলমের প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন বিএনপির ব্যারিস্টার নওশাদ জমির ও জামায়াতের অধ্যাপক ইকবাল হোসেন।
কুমিল্লা-৪ আসনে হাসনাত আব্দুল্লাহ মুখোমুখি হবেন বিএনপির ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী ও জামায়াতের সাইফুল ইসলাম শহীদের। রংপুর-৪ আসনে এনসিপির আখতার হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এমদাদুল হক ভরসা ও জামায়াতের এটিএম আজম খান। ঢাকা-৯ আসনে ডা. তাসনিম জারা লড়বেন জামায়াতের কবির আহমদের বিরুদ্ধে।
নরসিংদী-২ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। সেখানে যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষারের প্রাথমিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে এনসিপি। এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আমজাদ হোসাইন।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ আসন থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। আসনটিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। আর জামায়াতের প্রার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ এবং ফেনী-১ এই তিন আসনে এনসিপি প্রার্থী দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। তবে এসব আসনে জামায়াতের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছে।
এদিকে জোট গঠনের সম্ভাবনা নাকচ না করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদে আমাদের যে সংস্কারের দাবি আছে, কোনো দল যদি সেই দাবির সঙ্গে একমত হয়, তখন আমরা জোটের বিষয়টি বিবেচনা করবো।’
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘এই ঐতিহাসিক নির্বাচন এনসিপি নিজস্ব সক্ষমতায় লড়বে, কোনো সমঝোতা করা হবে না।’
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে একাধিক আসনে সরাসরি ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে উঠছে। জোট গঠনের সম্ভাবনা না থাকলে এনসিপি এককভাবে লড়াইয়ের পথে হাঁটছে এমন ইঙ্গিতই স্পষ্ট।