alt

যেদিন সুবিমল মিশ্র চলে গেলেন

সৌম্য দাশগুপ্ত

: বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ ২০২৩

সুবিমল মিশ্র / জন্ম : ১৯৪৩; মৃত্যু : ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

যেদিন সুবিমল মিশ্র চলে গেলেন সেদিনও আটটা দশের বনগাঁ লোকাল পাক্কা কুড়ি মিনিট লেট, লাইনের পাশে চটের বস্তাগুলো শুকোচ্ছিল একই রকম, শুধু শেয়ালদায় জেরক্স গলিতে একটা ছোকড়া অসতর্কতায় গেলাস ভেঙে ফেলে মালিকের বেধড়ক মার খেল।

ঝাঁঝাঁ রোদে এম জি রোড ধরে একই রকম তেড়ে এসেছিল এল-দুশো আটত্রিশ কিন্তু সেন্ট্রাল আভিনিউয়ের মোড়ের হুমদো সার্জেন্টটার সামনে তার কম্যান্ডো ট্রেনিংপ্রাপ্ত কন্ডাকটারের সব জারিজুরি শেষ হয়ে যায়। ফোরম্যান লেট থাকায় বিবিদি বাগ মেট্রোর এই শিফটের কাজ সময়মত শুরু করা যায়নি। চাকরি প্রার্থীদের অনশন মঞ্চে একটা মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে পিজিতে নিয়ে যেতে হয় তড়িঘড়ি আর বেলা পড়ে এলে যাদবপুরের ছেলেমেয়েরা সেদিন একটা মিছিল বের করেছিল অবিলম্বে স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ইলেকশনের দাবিতে। তাদের সাথে চে-গেভারার ছবি আর কাগজের তৈরি মশাল ছিল।

মুখ্যমন্ত্রী সেদিন বিধানসভা থেকে বেরিয়ে পায়ের ধুলো দিয়েছিলেন রাজভবনে, আর রেডক্রস প্লেসের ধারে তটস্ত পুলিশ মোড়ের বাদামওয়ালাটাকে আগাম সতর্ক করে দিয়েছিল। অনেক মনকষাকষির পর ময়দানে একজোড়া ছেলেমেয়ে সিদ্ধান্ত নেয় পরশু নয় বরং আজই তারা বইমেলায় যাবে, আর গোয়ালিয়র ঘাটে একটা লাশ ভেসে এসেছিল- চোখদুটো কিসে যেন খুবলে খেয়েছে!

রোজকার মতো সেদিনও সন্ধ্যা নামতেই মায়ের কাশি শুরু হলো আর ধান্দায় শেফালির মন ছিল না মোটেই, তবুও কিছুটা দোনোমোনো করে শেষপর্যন্ত সে বেরিয়ে পড়ল।

যেদিন সুবিমল মিশ্র চলে গেলেন সেদিন রাতেও আকাশে চাঁদ উঠল উজ্জ্বল হয়ে, আর সবার অলক্ষ্যে একটা তারা ঝরে গেল। হাতেগোনা যে কজন পাঠক তার ছিল তাদেরই এক ছোকড়া ঠিক করে তাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখবে, কিন্তু শবযাত্রায় কজন লোক হয়েছিল ঠিক ঠিক জানা না থাকাতে শেষপর্যন্ত সে শুরু করতে পারেনি।

ছবি

মাহফুজ আল-হোসেন-এর দশটি কবিতা

ছবি

মনোজগতের অন্বেষায়

সাময়িকী কবিতা

ছবি

এক ঘর রোদ

ছবি

দ্রোহের রম্য পঙ্ক্তিমালা

ছবি

সংবেদী রঙে ও রেখায় প্রাণের উন্মোচন

ছবি

অলস দিনের হাওয়া

ছবি

লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের মর্মস্পর্শী ও দূরদর্শী সাহিত্যকর্ম

ছবি

‘ভাষার আরোপিত কারুকাজে খেই হারিয়ে ফেলি’

ছবি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জিন্দা লাশ কি প্রকৃত লাশ

ছবি

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শিক্ষা দর্শন ও অলস দিনের হাওয়া

ছবি

ধ্রুপদী বোধ ও ব্যাধির কবিতা

ছবি

সুকান্তর কবিতায় বিপ্লবী চেতনা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

মগ্নচৈতন্যে সৌন্দর্যধ্যান

ছবি

অধুনাবাদী নিরীক্ষার অগ্রসাধক

ছবি

‘বায়ান্নর আধুনিকতা ও প্রগতিশীল ধারাকে বহন করতে চেয়েছি’

ছবি

জাতীয় চেতনার অমলিন ধারক

ছবি

নক্ষত্রের অনন্ত যাত্রা

ছবি

আহমদ রফিক ও ভাষামুক্তি সাধনা

ছবি

কবি আসাদ চৌধুরী : ঘরে ফেরা হলো না তাঁর

ছবি

জীবনবোধের অনবদ্য চিত্ররূপ ‘স্বপ্নছোঁয়ার পদযাত্রা’

ছবি

অনালোকিত ইতিহাসের সন্ধানে

ছবি

কবিরের দোঁহা

ছবি

আকবর হোসেন ও ‘যৌবনটাই জীবন নয়’

ছবি

স্বোপার্জিত

ছবি

সংগ্রামের অগ্নিশিখা থেকে হেলাল হাফিজ

ছবি

কোনো এক শরৎসন্ধ্যা : কোথায় পাব তারে

শারদ পদাবলি

ছবি

লক্ষীপুর-হ

ছবি

যে জীবন ফড়িংয়ের

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বিশাল ডানাওলা এক থুত্থুরে বুড়ো মানুষ

ছবি

খুদে গল্পের যাদুকর ওসামা অ্যালোমার

ছবি

নিমগ্ন লালন সাধক ফরিদা পারভীন

ছবি

কেন তিনি লালনকন্যা

tab

যেদিন সুবিমল মিশ্র চলে গেলেন

সৌম্য দাশগুপ্ত

সুবিমল মিশ্র / জন্ম : ১৯৪৩; মৃত্যু : ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ ২০২৩

যেদিন সুবিমল মিশ্র চলে গেলেন সেদিনও আটটা দশের বনগাঁ লোকাল পাক্কা কুড়ি মিনিট লেট, লাইনের পাশে চটের বস্তাগুলো শুকোচ্ছিল একই রকম, শুধু শেয়ালদায় জেরক্স গলিতে একটা ছোকড়া অসতর্কতায় গেলাস ভেঙে ফেলে মালিকের বেধড়ক মার খেল।

ঝাঁঝাঁ রোদে এম জি রোড ধরে একই রকম তেড়ে এসেছিল এল-দুশো আটত্রিশ কিন্তু সেন্ট্রাল আভিনিউয়ের মোড়ের হুমদো সার্জেন্টটার সামনে তার কম্যান্ডো ট্রেনিংপ্রাপ্ত কন্ডাকটারের সব জারিজুরি শেষ হয়ে যায়। ফোরম্যান লেট থাকায় বিবিদি বাগ মেট্রোর এই শিফটের কাজ সময়মত শুরু করা যায়নি। চাকরি প্রার্থীদের অনশন মঞ্চে একটা মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে পিজিতে নিয়ে যেতে হয় তড়িঘড়ি আর বেলা পড়ে এলে যাদবপুরের ছেলেমেয়েরা সেদিন একটা মিছিল বের করেছিল অবিলম্বে স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ইলেকশনের দাবিতে। তাদের সাথে চে-গেভারার ছবি আর কাগজের তৈরি মশাল ছিল।

মুখ্যমন্ত্রী সেদিন বিধানসভা থেকে বেরিয়ে পায়ের ধুলো দিয়েছিলেন রাজভবনে, আর রেডক্রস প্লেসের ধারে তটস্ত পুলিশ মোড়ের বাদামওয়ালাটাকে আগাম সতর্ক করে দিয়েছিল। অনেক মনকষাকষির পর ময়দানে একজোড়া ছেলেমেয়ে সিদ্ধান্ত নেয় পরশু নয় বরং আজই তারা বইমেলায় যাবে, আর গোয়ালিয়র ঘাটে একটা লাশ ভেসে এসেছিল- চোখদুটো কিসে যেন খুবলে খেয়েছে!

রোজকার মতো সেদিনও সন্ধ্যা নামতেই মায়ের কাশি শুরু হলো আর ধান্দায় শেফালির মন ছিল না মোটেই, তবুও কিছুটা দোনোমোনো করে শেষপর্যন্ত সে বেরিয়ে পড়ল।

যেদিন সুবিমল মিশ্র চলে গেলেন সেদিন রাতেও আকাশে চাঁদ উঠল উজ্জ্বল হয়ে, আর সবার অলক্ষ্যে একটা তারা ঝরে গেল। হাতেগোনা যে কজন পাঠক তার ছিল তাদেরই এক ছোকড়া ঠিক করে তাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখবে, কিন্তু শবযাত্রায় কজন লোক হয়েছিল ঠিক ঠিক জানা না থাকাতে শেষপর্যন্ত সে শুরু করতে পারেনি।

back to top