alt

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

শরতের রাতে
সোহরাব পাশা

পাতা ঝরে

গোপন ফেরে না পুনর্বার,

অবেলার করুণ ছায়ায়

কথার বয়স বেড়ে গেলে

নানা রং ধরে দুপুর খসে পড়া বিকেলের পার্কে

সকালের স্নিগ্ধ নরম রোদের অনুবাদ করে

রাতে জ্যোৎস্নার শিউলি ঝরে জানালায়;

ইতিহাসের দীর্ঘপৃষ্ঠা খোলে দূরবর্তী হাওয়া

শরতের রাতে গীতাঞ্জলির বিনয়ী পাতা ওড়ে

দূরে কোথাও স্বপ্ন ওড়ে

দুঃখ বাড়ে ভুল মানুষের দীর্ঘ ভিড়ে

প্রিয় স্বরে ভুল বলে-

স্বপ্নসিঁড়িগুলি ডুবে যায় বিষাদের অন্ধজলে,

মানুষ কাঁদে কেবল মানুষের জন্যে

গতকাল খুলে দেখে পৃথিবীতে ঢের

রোদ ছিলো,

শরতের রাতে

সুন্দর গল্প ছিলো নিবিড় যাপনের।

নতুন সকাল এসেছে
খসরু পারভেজ

এই তো সেদিন মেঘের দরোজা খুলে দিয়েছিল আকাশ

বিষণœ পালকি চড়ে আমার মুগ্ধরা চলে গেছে বহুদূরে

অজ¯্র মৃত্যুর মেহেদি মেখে

লাল হয়ে আছে সাদা সাদা মেঘগুলো

একটি কবিতা লিখবো শরৎকে নিয়ে

রাত্রির নীরব খাতা মেলে বসে আছি

আমার সম্মুখে পড়ে আছে মৃত মেটাফর

বর্বর মানুষগুলো

চুরি করে নিয়ে গেছে উপমা-উৎপ্রেক্ষাগুলো

এমন কোনো সুহৃদ শব্দ নেই যা দিয়ে সাজাতে পারি

কবিতার সুবর্ণ শরীর

কোনো কাশফুল ফোটেনি এখনো

মুষল বিদ্রোহ মাখানো শরৎ মুখ ভার করে বসে আছে

ওহে শরৎ, মুখটি তোলো! নতুন সকাল এসেছে ওই...

একটি বিলোপবাদী কবিতা
আলী সিদ্দিকী

চেয়ে চেয়ে দেখলাম

আকাশ তার সব রঙ লুকিয়ে ফেললো

মেঘেরাও হয়ে গেলো শুধু অলীক ধোঁয়া

পাখিরা হারালো তাদের পাখা

রঙহীন জলের ঘুঙুর ভুলে গেলো গান

আলোহীন পাতারা ভুলে গেলো উষ্ণতা

তুমি ভুলে গেলে আমাকে

করে নিলে এক মুছে যাওয়া মুখের ফসিল

ক্ষীণ আভা রেখে হারিয়ে যাওয়া এক চাঁদ

চেয়ে চেয়ে দেখলাম

পৃথিবীর সব সবুজ হয়ে গেলো ফ্যাকাসে

থেমে গেলো বাতাসের চিরকেলে বয়ে চলা

কবিতার শব্দেরা বড্ড সিজোফ্রেনিক

খুঁটে খুঁটে খেয়ে ফেলে সব স্বপ্ন আর মগজ

শূন্যাবর্তে চিড়েচ্যাপটা হলুদের এক পৃথিবী

তুমি খেয়ে নিলে আমাকে

মাংসাশী বৃক্ষের মতো চুষে নিলে প্রাণরস

অনায়াসে তোমার মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেলাম।

আরেকটি শুরু
আরিফ মঈনুদ্দীন

জীবনের জাফরি কাটা অলিন্দে অদৃশ্য যা-কিছু-

কিছু তার টের পাই-অজানাই থেকে যায় বেশি

প্রকৃতি জানে নিয়তি তার সাথে বন্ধুতায় বাঁধা

আসা আর যাওয়ার যতটুকু মসৃণ পথ মাড়িয়ে

নিজস্ব দ্বীপে রাখি পা

অতঃপর মালিকানা একদিন-

উধাও অঞ্চলে নোঙর ফেলে অপেক্ষা করে

ন¤্র আর ভদ্রতার আচরণে কোনো কমতি নেই

উপায়হীন এই সময়ে ওসবের যদিও কোনো প্রাপ্তির

গৌরব অথবা উপভোগের বালাই নেই,

নেই বলেই অতটা আয়োজন-কাজে আসুক বা

না-আসুক তাঁর ধর্মই হলো ইতিবাচক-

নিরেট সত্যের কাছাকাছি থেকে অপেক্ষার শেষ সীমা

স্পর্শ করতে পারলে

অনুগ্রহের পরম আতিশয্যে অন্তর্বতœী সময় ঘুরে দাঁড়ালে

যদি কিছু হয়-সেখান থেকেই ভূমিষ্ঠ হবে ক্ষমার দরোজা,

এখানেই সমাপ্ত জীবন নয়, আরেকটি শুরু-

শুরুটা যেন ঝলমলে হয়।

পড়ন্ত বিকেল
শেখ মাসুম কামাল

দুটো তারা ঠিক মধ্য গগনে

যেন বর্ষাপীড়িত ফুল

পড়ন্ত বেলা উদাস পৃথিবী

সর্বাঙ্গ ভরা নীল

দংশনে

উজাড় অরণ্য নিঃস্ব তরঙ্গ

বৃষ্টি নেই বৃক্ষ নেই ঘুম নেই

মেঘের আড়ালে শুধু প্রবঞ্চনা

আর ঘৃণা

বাড়ছে বেলা

বাড়ছে পরিধি সূর্যাস্তের

অলস হাওয়ায় দুলছে

অবিশ^াসী দুটো হাত

পরাজয়ের গ্লানি ছুঁয়েছে গাঢ়

অন্ধকার

চারিদিকে শুধু হাহাকার আর

হাহাকার

দুটো তারা ঠিক মধ্য গগনে

যেন বর্ষাপীড়িত ফুল

লক্ষ্য
মুশাররাত

আমার সবটুকু সময়

তোর দখলে থাকে-

তোকে ভাবতে ভাবতে ভোর

খুলি দিনের প্রথম দোর-

পা বাড়াই তোর কাছে যেতেই

ফিরে আসি আবার তোর আঘাতেই

তবু বারবার অন্ধ দ্রোহে

কী যে প্রেম, যা শেষ হয় বিরহে!

তুই যেন এক বিশাল পাহাড়

ডিঙাতে পারি না কোনো কৌশলেই

তবু তোকে নিয়েই যাব চাঁদের পাহাড়

সূর্যটা ডুবলেই।

আমাদের যে সময় রয়েছে
ফারুক আফিনদী

[মাকে মনে পড়ে]

জগতের যে সময় রয়েছে, এরই ভেতর নিতান্ত সাধারণ,

একই সঙ্গে অ-সাধারণ এক পথ। সমান এবং সোজা- (চলে গেছে-)।

কিছু দূরে-

একটু ওপরে....

আবার জমিন, অবনীর ঘাস-।

বোবা কবর, বাঁশের বেড়ার মধ্যে

মান্দারের গাছ, ছায়া হয়ে আছে।

বস্তুগত তোমার ভেতর
আহমদ জামাল জাফরী

তুমি স্বপ্নদেশের মন্দ্র আভার ফুল

আরক্তিম পুষ্পের মতো প্রেমের মুদ্রায় ডাকো,

শূন্যতার বাহিত সময় পূর্ণ করো

ঈশ্বরের ছায়ার মতো নিবিড় ঘনিষ্ঠতায়,

স্বর্গের বাগানে রূপকথার মুগ্ধতা নিয়ে

ধ্বনিত হও অঙ্কুরিত সুখলতা,

আমার অন্ধ চোখে স্বপ্নের ভেতর

তোমার লীলাময় উদ্ভাস,

অগণ্য নক্ষত্র দেশে ধূসর আলোর আকাশ

লতার মতো দোলে

শিহরিত ডানায় উড়ন্ত প্রাচীন জ্যোৎস্নার হলকা

হাওয়ায় উড়ে উড়ে যায়-

দূরের গানগুলো স্বপ্নের প্রবাহ জালে

স্তব্ধতার ধূসর সীমানা ধরে

পরে থাকে অস্তরাগে জলভাঙা নদীর ওপারে,

পৃথিবীতে ডানা মেলে আমার ছায়া-রাত্রি

স্বপ্নকে বিম্বিত করো তোমার অস্তিত্বে,

এই স্পন্দমান রাত্রি, ধাবমান সময়ের সব পরিপার্শ্ব

নুয়ে পড়া আকাশের সীমানার ভেতর

স্তব্ধতার ছায়া ফেলে,

সবকিছু কীর্ণ হয়ে শূন্যে মিলায়

বস্তুগত তোমার ভেতর।

জলপাই বনে কোনো প্রেম নেই আজ
আকন আবু বকর

খুঁজতে যেও না তুমি সম্পর্কের রসায়ন আর

বন্ডগুলো পুড়ে পুড়ে খাক্ হয়ে গেছে

ক্ষতবিক্ষত হয়েছে হৃদয়ের প্রতিটি প্রকোষ্ঠ

টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে এই মহাবিশ্বে আজ

নিথর নীরব দেহ শুয়ে আছে লাশ হয়ে বনের ভেতর

আসবেনা আফ্রোদিতি সেই কুঞ্জবনে

সোনালি ডানার চিল উড়বে না নক্ষত্রের তলে

অকাল বসন্তে সব ঝরে গেছে সুরমার জলে।

অথচ ঘাসফুলের সাথে ঝুলে থাকা শরত শিশির বলেছিল

হেমন্ত ও শীত পার হয়ে যেদিন ফুটবে ফুল চারিদিক

একটি পূর্ণাঙ্গ বসন্তের হবে আয়োজন

জোনাকি জোছনা আর দখিনা বাতাস মিলেমিশে হবে একাকার।

এক অকাল মেঘের জলে শহর তলিয়ে গেছে

জলপাই বনে কোনো প্রেম নেই আজ

উত্তরের হিমেল বাতাস আনবেনা চোখে ঘুম

আরামের দীর্ঘশ্বাস বইবেনা বুকের ভেতর।

তাই তুমি পুড়ে পুড়ে খাক্ হও আজ

আমি বেশ আছি অরণ্যের অন্ধকারে।

ছবি

সিলভিয়া প্লাথের মৃত্যু, নিঃসঙ্গতা ও আত্মবিনাশ

ছবি

সমসাময়িক মার্কিনি ‘সহস্রাব্দের কণ্ঠস্বর’

সাময়িকী কবিতা

ছবি

অন্য নিরিখে দেখা

ছবি

হেলাল হাফিজের চলে যাওয়া

ছবি

হেলাল হাফিজের কবিতা

ছবি

কেন এত পাঠকপ্রিয় হেলাল হাফিজ

ছবি

নারী শিক্ষাবিদ : বেগম রোকেয়া

ছবি

বাসার তাসাউফ

ছবি

‘জগদ্দল’-এর শক্তি ও সমরেশ বসু

ছবি

রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

ছবি

রুবেন দারিও-র কবিতা

‘অঘ্রানের অনুভূতিমালা’

ছবি

কবিতা পড়া, কবিতা লেখা

ছবি

‘ধুলোয় সব মলিন’, পাঠকের কথা

ছবি

মহত্ত্বর কবি সিকদার আমিনুল হক

ছবি

রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

ছবি

কয়েকটি অনুগল্প

সাময়িকী কবিতা

ছবি

যেভাবে লেখা হলো ‘শিকিবু’

ছবি

জাঁ জোসেফ রাবেয়ারিভেলোর কবিতা

ছবি

সিকদার আমিনুল হকের গদ্য

ছবি

সিকদার আমিনুল হককে লেখা অগ্রজ ও খ্যাতিমান লেখক-সম্পাদকের চিঠি

ছবি

ফিওদর দস্তয়েভস্কি: রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

একজন গফুর মল্লিক

ছবি

অগ্রবীজের ‘অনুবাদ সাহিত্য’ সংখ্যা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

গোপন কথা

ছবি

র’নবীর টোকাই-কথন

ছবি

শিল্পচর্চায় তরুণ প্রজন্ম অনেক বেশি ইনোভেটিভ

ছবি

শামসুর রাহমানের কবিতা বৈভব ও বহুমাত্রিকতা

ছবি

উইলিয়াম রাদিচের অধ্যয়নে অনন্য রবীন্দ্রনাথ

দিলারা হাফিজের কবিতা

ছবি

অবরুদ্ধ বর্ণমালার শৃঙ্খলমুক্তি

ছবি

আহমদুল কবির স্মরণে

ছবি

আহমদুল কবিরের সদাশয়তা

tab

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

শরতের রাতে
সোহরাব পাশা

পাতা ঝরে

গোপন ফেরে না পুনর্বার,

অবেলার করুণ ছায়ায়

কথার বয়স বেড়ে গেলে

নানা রং ধরে দুপুর খসে পড়া বিকেলের পার্কে

সকালের স্নিগ্ধ নরম রোদের অনুবাদ করে

রাতে জ্যোৎস্নার শিউলি ঝরে জানালায়;

ইতিহাসের দীর্ঘপৃষ্ঠা খোলে দূরবর্তী হাওয়া

শরতের রাতে গীতাঞ্জলির বিনয়ী পাতা ওড়ে

দূরে কোথাও স্বপ্ন ওড়ে

দুঃখ বাড়ে ভুল মানুষের দীর্ঘ ভিড়ে

প্রিয় স্বরে ভুল বলে-

স্বপ্নসিঁড়িগুলি ডুবে যায় বিষাদের অন্ধজলে,

মানুষ কাঁদে কেবল মানুষের জন্যে

গতকাল খুলে দেখে পৃথিবীতে ঢের

রোদ ছিলো,

শরতের রাতে

সুন্দর গল্প ছিলো নিবিড় যাপনের।

নতুন সকাল এসেছে
খসরু পারভেজ

এই তো সেদিন মেঘের দরোজা খুলে দিয়েছিল আকাশ

বিষণœ পালকি চড়ে আমার মুগ্ধরা চলে গেছে বহুদূরে

অজ¯্র মৃত্যুর মেহেদি মেখে

লাল হয়ে আছে সাদা সাদা মেঘগুলো

একটি কবিতা লিখবো শরৎকে নিয়ে

রাত্রির নীরব খাতা মেলে বসে আছি

আমার সম্মুখে পড়ে আছে মৃত মেটাফর

বর্বর মানুষগুলো

চুরি করে নিয়ে গেছে উপমা-উৎপ্রেক্ষাগুলো

এমন কোনো সুহৃদ শব্দ নেই যা দিয়ে সাজাতে পারি

কবিতার সুবর্ণ শরীর

কোনো কাশফুল ফোটেনি এখনো

মুষল বিদ্রোহ মাখানো শরৎ মুখ ভার করে বসে আছে

ওহে শরৎ, মুখটি তোলো! নতুন সকাল এসেছে ওই...

একটি বিলোপবাদী কবিতা
আলী সিদ্দিকী

চেয়ে চেয়ে দেখলাম

আকাশ তার সব রঙ লুকিয়ে ফেললো

মেঘেরাও হয়ে গেলো শুধু অলীক ধোঁয়া

পাখিরা হারালো তাদের পাখা

রঙহীন জলের ঘুঙুর ভুলে গেলো গান

আলোহীন পাতারা ভুলে গেলো উষ্ণতা

তুমি ভুলে গেলে আমাকে

করে নিলে এক মুছে যাওয়া মুখের ফসিল

ক্ষীণ আভা রেখে হারিয়ে যাওয়া এক চাঁদ

চেয়ে চেয়ে দেখলাম

পৃথিবীর সব সবুজ হয়ে গেলো ফ্যাকাসে

থেমে গেলো বাতাসের চিরকেলে বয়ে চলা

কবিতার শব্দেরা বড্ড সিজোফ্রেনিক

খুঁটে খুঁটে খেয়ে ফেলে সব স্বপ্ন আর মগজ

শূন্যাবর্তে চিড়েচ্যাপটা হলুদের এক পৃথিবী

তুমি খেয়ে নিলে আমাকে

মাংসাশী বৃক্ষের মতো চুষে নিলে প্রাণরস

অনায়াসে তোমার মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেলাম।

আরেকটি শুরু
আরিফ মঈনুদ্দীন

জীবনের জাফরি কাটা অলিন্দে অদৃশ্য যা-কিছু-

কিছু তার টের পাই-অজানাই থেকে যায় বেশি

প্রকৃতি জানে নিয়তি তার সাথে বন্ধুতায় বাঁধা

আসা আর যাওয়ার যতটুকু মসৃণ পথ মাড়িয়ে

নিজস্ব দ্বীপে রাখি পা

অতঃপর মালিকানা একদিন-

উধাও অঞ্চলে নোঙর ফেলে অপেক্ষা করে

ন¤্র আর ভদ্রতার আচরণে কোনো কমতি নেই

উপায়হীন এই সময়ে ওসবের যদিও কোনো প্রাপ্তির

গৌরব অথবা উপভোগের বালাই নেই,

নেই বলেই অতটা আয়োজন-কাজে আসুক বা

না-আসুক তাঁর ধর্মই হলো ইতিবাচক-

নিরেট সত্যের কাছাকাছি থেকে অপেক্ষার শেষ সীমা

স্পর্শ করতে পারলে

অনুগ্রহের পরম আতিশয্যে অন্তর্বতœী সময় ঘুরে দাঁড়ালে

যদি কিছু হয়-সেখান থেকেই ভূমিষ্ঠ হবে ক্ষমার দরোজা,

এখানেই সমাপ্ত জীবন নয়, আরেকটি শুরু-

শুরুটা যেন ঝলমলে হয়।

পড়ন্ত বিকেল
শেখ মাসুম কামাল

দুটো তারা ঠিক মধ্য গগনে

যেন বর্ষাপীড়িত ফুল

পড়ন্ত বেলা উদাস পৃথিবী

সর্বাঙ্গ ভরা নীল

দংশনে

উজাড় অরণ্য নিঃস্ব তরঙ্গ

বৃষ্টি নেই বৃক্ষ নেই ঘুম নেই

মেঘের আড়ালে শুধু প্রবঞ্চনা

আর ঘৃণা

বাড়ছে বেলা

বাড়ছে পরিধি সূর্যাস্তের

অলস হাওয়ায় দুলছে

অবিশ^াসী দুটো হাত

পরাজয়ের গ্লানি ছুঁয়েছে গাঢ়

অন্ধকার

চারিদিকে শুধু হাহাকার আর

হাহাকার

দুটো তারা ঠিক মধ্য গগনে

যেন বর্ষাপীড়িত ফুল

লক্ষ্য
মুশাররাত

আমার সবটুকু সময়

তোর দখলে থাকে-

তোকে ভাবতে ভাবতে ভোর

খুলি দিনের প্রথম দোর-

পা বাড়াই তোর কাছে যেতেই

ফিরে আসি আবার তোর আঘাতেই

তবু বারবার অন্ধ দ্রোহে

কী যে প্রেম, যা শেষ হয় বিরহে!

তুই যেন এক বিশাল পাহাড়

ডিঙাতে পারি না কোনো কৌশলেই

তবু তোকে নিয়েই যাব চাঁদের পাহাড়

সূর্যটা ডুবলেই।

আমাদের যে সময় রয়েছে
ফারুক আফিনদী

[মাকে মনে পড়ে]

জগতের যে সময় রয়েছে, এরই ভেতর নিতান্ত সাধারণ,

একই সঙ্গে অ-সাধারণ এক পথ। সমান এবং সোজা- (চলে গেছে-)।

কিছু দূরে-

একটু ওপরে....

আবার জমিন, অবনীর ঘাস-।

বোবা কবর, বাঁশের বেড়ার মধ্যে

মান্দারের গাছ, ছায়া হয়ে আছে।

বস্তুগত তোমার ভেতর
আহমদ জামাল জাফরী

তুমি স্বপ্নদেশের মন্দ্র আভার ফুল

আরক্তিম পুষ্পের মতো প্রেমের মুদ্রায় ডাকো,

শূন্যতার বাহিত সময় পূর্ণ করো

ঈশ্বরের ছায়ার মতো নিবিড় ঘনিষ্ঠতায়,

স্বর্গের বাগানে রূপকথার মুগ্ধতা নিয়ে

ধ্বনিত হও অঙ্কুরিত সুখলতা,

আমার অন্ধ চোখে স্বপ্নের ভেতর

তোমার লীলাময় উদ্ভাস,

অগণ্য নক্ষত্র দেশে ধূসর আলোর আকাশ

লতার মতো দোলে

শিহরিত ডানায় উড়ন্ত প্রাচীন জ্যোৎস্নার হলকা

হাওয়ায় উড়ে উড়ে যায়-

দূরের গানগুলো স্বপ্নের প্রবাহ জালে

স্তব্ধতার ধূসর সীমানা ধরে

পরে থাকে অস্তরাগে জলভাঙা নদীর ওপারে,

পৃথিবীতে ডানা মেলে আমার ছায়া-রাত্রি

স্বপ্নকে বিম্বিত করো তোমার অস্তিত্বে,

এই স্পন্দমান রাত্রি, ধাবমান সময়ের সব পরিপার্শ্ব

নুয়ে পড়া আকাশের সীমানার ভেতর

স্তব্ধতার ছায়া ফেলে,

সবকিছু কীর্ণ হয়ে শূন্যে মিলায়

বস্তুগত তোমার ভেতর।

জলপাই বনে কোনো প্রেম নেই আজ
আকন আবু বকর

খুঁজতে যেও না তুমি সম্পর্কের রসায়ন আর

বন্ডগুলো পুড়ে পুড়ে খাক্ হয়ে গেছে

ক্ষতবিক্ষত হয়েছে হৃদয়ের প্রতিটি প্রকোষ্ঠ

টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে এই মহাবিশ্বে আজ

নিথর নীরব দেহ শুয়ে আছে লাশ হয়ে বনের ভেতর

আসবেনা আফ্রোদিতি সেই কুঞ্জবনে

সোনালি ডানার চিল উড়বে না নক্ষত্রের তলে

অকাল বসন্তে সব ঝরে গেছে সুরমার জলে।

অথচ ঘাসফুলের সাথে ঝুলে থাকা শরত শিশির বলেছিল

হেমন্ত ও শীত পার হয়ে যেদিন ফুটবে ফুল চারিদিক

একটি পূর্ণাঙ্গ বসন্তের হবে আয়োজন

জোনাকি জোছনা আর দখিনা বাতাস মিলেমিশে হবে একাকার।

এক অকাল মেঘের জলে শহর তলিয়ে গেছে

জলপাই বনে কোনো প্রেম নেই আজ

উত্তরের হিমেল বাতাস আনবেনা চোখে ঘুম

আরামের দীর্ঘশ্বাস বইবেনা বুকের ভেতর।

তাই তুমি পুড়ে পুড়ে খাক্ হও আজ

আমি বেশ আছি অরণ্যের অন্ধকারে।

back to top