তেলের ট্যাংকে ইয়াবার চালান
মাদক পাচারকারী চক্র ট্রাকের তেলের ট্যাংকের ভেতর অভিনব কৌশলে গোপন বক্স তৈরি করে সেই বক্সে ইয়াবার চালান ঢুকিয়ে টেকনাফ থেকে গাজীপুরে নিয়ে বিক্রি করে। গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে এই চক্র পরিবহনের আড়ালে মাদক ব্যবসা করছে। এ চক্রের সদস্য সংখ্যা ৭ থেকে ৮ জন। তাদের মধ্যে ট্রাকের মালিকও জড়িত। র্যাবের অনুসন্ধানে চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছে। র্যাব হেডকোয়াটার্স থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত মাদক ব্যবসায়ীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে বলেছে, তারা টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান ঢাকা ও গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলেসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়। ট্রাকের মালিক সোহেলের নেতৃত্বে গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে চক্রটি পরিবহন ব্যবসার আড়ালে টেকনাফ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবার চালান পাচার করত।
চক্রটি পণ্যবাহী পরিবহনের চালক ও সহকারীকে মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের গাড়িতে ইয়াবা পরিবহনের জন্য প্রলুদ্ধ করে। ট্রাক মালিক সোহেল ও গ্রেপ্তারকৃত আমিনুল টেকনাফের মাদক সিন্ডিকেট থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে। ইয়াবা সংগ্রহের পর অভিযুক্ত সোহেলের নির্দেশে গ্রেপ্তারকৃত আমিনুল দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় একটি গাড়ির গ্যারেজ থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে তেলের ট্যাংকের ভেতর আলাদা বক্স তৈরি করে তার মধ্যে ইয়াবার চালান লুকিয়ে রেখে পরিবহন করে। তেলের ট্যাংকে ইয়াবার চালান রাখার পর অভিযুক্ত সোহেল, আমিনুল ও নুরুল ইসলাম প্রথমে ট্রাক নিয়ে টেকনাফে থেকে চট্টগ্রাম যায়। চট্টগ্রামে পৌঁছার পর অভিযুক্ত সোহেল গাড়ি থেকে নেমে যায়। এরপর আমিনুল, নুরুল ইসলাম ও হেদায়েতকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে সীতাকুণ্ড ও কুমিল্লায় ট্রাকটি যাত্রা বিরতি নিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। ইয়াবার চালানটি গাজীপুরে যাওয়ার সময় ট্রাকটিতে অন্য কোন মালামাল ছিল না। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন চেকপোস্টে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, গাজীপুর থেকে মালামাল লোড করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাবে। এজন্য খালি ট্রাক নিয়ে গাজীপুর যাচ্ছিল। ট্রাকের তেলের বক্সে (ট্যাংক) গোপন বক্সে ইয়াবাগুলো লুকিয়ে রাখায় তারা নিশ্চিত ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশিতে ইয়াবার চালানের সন্ধান পাওয়া যাবে না।
র্যাবের ভাষ্য মতে, মায়ানমার থেকে ইয়াবার চালান প্রথমে টেকনাফের ডিলারের কাছে পৌঁছে। টেকনাফের ডিলার ও ঢাকার ডিলারের পরিকল্পনা মতো ইয়াবা বিভিন্ন সংখ্যায় চাহিদা অনুযায়ী প্রতিটি প্যাকেটের গায়ে বিশেষ কোড নম্বর দিয়ে প্যাকেটজাত করে থাকে। এই কোড নম্বর দেখেই ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের ডিলাররা বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী চালান পৌঁছে দেয়। এভাবে এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে মাদক বেচাকেনা করছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, র্যাব-৩ এর একটি টিম গোপন খবরের ভিত্তিতে গত শনিবার গভীর রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি ট্রাকের তেলের বক্সের ভিতর অভিনব কৌশলে তৈরি করা আরেকটি বক্স থেকে এক লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবা ও ট্রাকটি আটক করে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, হেদায়েত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধারকৃত মাদকের মূল্য ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এছাড়া উদ্ধারকরা হয় ৪টি মোবাইল ফোন ও মাদক বিক্রির নগদ ৩১ হাজার ৭০০ টাকা।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম ট্রাকের হেলপার। সে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। চট্টগ্রামে ট্রাকস্ট্যান্ডে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্য ট্রাক মালিক সোহেলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। বেশি লাভ করতে সোহেলের প্ররোচনায় সে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী ট্রাকে হেলপারের কাজ শুরু করে। সে গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে ইয়াবা পাচার চক্রের সঙ্গে কাজ করে। সে মূলত সোহেলের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে ইয়াবা পৌঁছে দেয়। মাদকের চালান নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারলে আমিনুল প্রতি চালানে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পেত। সে ইতোমধ্যে একাধিক মামলায় দুইবার বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত ট্রাকচালক নুরুল গাড়ি চালানোর কোন প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেই। এমনকি তার ভারী যানবাহন চালানোর কোন বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। ট্রাকের হেলপার হিসেবে মালামাল লোড আনলোড করতে গিয়ে গাড়ি স্বল্প দূরত্বে স্থানান্তর করার মাধ্যমে ড্রাইভিং শিখেছে। মাদকের একটি চালান পৌঁছাতে পারলে সে ৫০ হাজার টাকা পেত বলে জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে। আর গ্রেপ্তারকৃত হেদায়েত প্রথমে টেম্পো চালক ছিল। তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তারও যানবাহন চালানোর কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। সে হেলপারের কাজ করতে গিয়ে গাড়ি চালানো শিখেছে। একটি মাদকের চালান পৌঁছে দিলে ১৫ থেকে ২০ টাকা পেত। এভাবে এই চক্র মাদক পাচার করত। সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের ধরতে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে।
তেলের ট্যাংকে ইয়াবার চালান
সোমবার, ০৮ আগস্ট ২০২২
মাদক পাচারকারী চক্র ট্রাকের তেলের ট্যাংকের ভেতর অভিনব কৌশলে গোপন বক্স তৈরি করে সেই বক্সে ইয়াবার চালান ঢুকিয়ে টেকনাফ থেকে গাজীপুরে নিয়ে বিক্রি করে। গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে এই চক্র পরিবহনের আড়ালে মাদক ব্যবসা করছে। এ চক্রের সদস্য সংখ্যা ৭ থেকে ৮ জন। তাদের মধ্যে ট্রাকের মালিকও জড়িত। র্যাবের অনুসন্ধানে চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছে। র্যাব হেডকোয়াটার্স থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত মাদক ব্যবসায়ীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে বলেছে, তারা টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান ঢাকা ও গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলেসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়। ট্রাকের মালিক সোহেলের নেতৃত্বে গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে চক্রটি পরিবহন ব্যবসার আড়ালে টেকনাফ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবার চালান পাচার করত।
চক্রটি পণ্যবাহী পরিবহনের চালক ও সহকারীকে মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের গাড়িতে ইয়াবা পরিবহনের জন্য প্রলুদ্ধ করে। ট্রাক মালিক সোহেল ও গ্রেপ্তারকৃত আমিনুল টেকনাফের মাদক সিন্ডিকেট থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে। ইয়াবা সংগ্রহের পর অভিযুক্ত সোহেলের নির্দেশে গ্রেপ্তারকৃত আমিনুল দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় একটি গাড়ির গ্যারেজ থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে তেলের ট্যাংকের ভেতর আলাদা বক্স তৈরি করে তার মধ্যে ইয়াবার চালান লুকিয়ে রেখে পরিবহন করে। তেলের ট্যাংকে ইয়াবার চালান রাখার পর অভিযুক্ত সোহেল, আমিনুল ও নুরুল ইসলাম প্রথমে ট্রাক নিয়ে টেকনাফে থেকে চট্টগ্রাম যায়। চট্টগ্রামে পৌঁছার পর অভিযুক্ত সোহেল গাড়ি থেকে নেমে যায়। এরপর আমিনুল, নুরুল ইসলাম ও হেদায়েতকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে সীতাকুণ্ড ও কুমিল্লায় ট্রাকটি যাত্রা বিরতি নিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। ইয়াবার চালানটি গাজীপুরে যাওয়ার সময় ট্রাকটিতে অন্য কোন মালামাল ছিল না। যার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন চেকপোস্টে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানায়, গাজীপুর থেকে মালামাল লোড করে চট্টগ্রামে নিয়ে যাবে। এজন্য খালি ট্রাক নিয়ে গাজীপুর যাচ্ছিল। ট্রাকের তেলের বক্সে (ট্যাংক) গোপন বক্সে ইয়াবাগুলো লুকিয়ে রাখায় তারা নিশ্চিত ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশিতে ইয়াবার চালানের সন্ধান পাওয়া যাবে না।
র্যাবের ভাষ্য মতে, মায়ানমার থেকে ইয়াবার চালান প্রথমে টেকনাফের ডিলারের কাছে পৌঁছে। টেকনাফের ডিলার ও ঢাকার ডিলারের পরিকল্পনা মতো ইয়াবা বিভিন্ন সংখ্যায় চাহিদা অনুযায়ী প্রতিটি প্যাকেটের গায়ে বিশেষ কোড নম্বর দিয়ে প্যাকেটজাত করে থাকে। এই কোড নম্বর দেখেই ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের ডিলাররা বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী চালান পৌঁছে দেয়। এভাবে এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে মাদক বেচাকেনা করছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, র্যাব-৩ এর একটি টিম গোপন খবরের ভিত্তিতে গত শনিবার গভীর রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি ট্রাকের তেলের বক্সের ভিতর অভিনব কৌশলে তৈরি করা আরেকটি বক্স থেকে এক লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবা ও ট্রাকটি আটক করে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, হেদায়েত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধারকৃত মাদকের মূল্য ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এছাড়া উদ্ধারকরা হয় ৪টি মোবাইল ফোন ও মাদক বিক্রির নগদ ৩১ হাজার ৭০০ টাকা।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম ট্রাকের হেলপার। সে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। চট্টগ্রামে ট্রাকস্ট্যান্ডে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্য ট্রাক মালিক সোহেলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। বেশি লাভ করতে সোহেলের প্ররোচনায় সে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী ট্রাকে হেলপারের কাজ শুরু করে। সে গত ৪ থেকে ৫ বছর ধরে ইয়াবা পাচার চক্রের সঙ্গে কাজ করে। সে মূলত সোহেলের নির্দেশে দেশের বিভিন্ন পয়েন্টে ইয়াবা পৌঁছে দেয়। মাদকের চালান নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারলে আমিনুল প্রতি চালানে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পেত। সে ইতোমধ্যে একাধিক মামলায় দুইবার বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত ট্রাকচালক নুরুল গাড়ি চালানোর কোন প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নেই। এমনকি তার ভারী যানবাহন চালানোর কোন বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। ট্রাকের হেলপার হিসেবে মালামাল লোড আনলোড করতে গিয়ে গাড়ি স্বল্প দূরত্বে স্থানান্তর করার মাধ্যমে ড্রাইভিং শিখেছে। মাদকের একটি চালান পৌঁছাতে পারলে সে ৫০ হাজার টাকা পেত বলে জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে। আর গ্রেপ্তারকৃত হেদায়েত প্রথমে টেম্পো চালক ছিল। তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তারও যানবাহন চালানোর কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। সে হেলপারের কাজ করতে গিয়ে গাড়ি চালানো শিখেছে। একটি মাদকের চালান পৌঁছে দিলে ১৫ থেকে ২০ টাকা পেত। এভাবে এই চক্র মাদক পাচার করত। সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের ধরতে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে।