alt

মতামত » সম্পাদকীয়

আশ্রয়ণ প্রকল্প : দুর্নীতি, অসামঞ্জস্যতা এবং সেবা নিয়ে প্রশ্ন

: বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

গাজীপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পে যে অনিয়ম এবং দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে, তা শুধু দেশের একটি স্থানেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং, দেশের অনেক অঞ্চলে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যÑগৃহহীন এবং ভূমিহীন মানুষদের পুনর্বাসন। কিন্তু গাজীপুরে এই প্রকল্প পরিণত হয়েছে বিত্তবানদের হাতের খেলনায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল দেশব্যাপী গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য বাসস্থান তৈরি করা, তবে বাস্তবে এটি প্রভাবশালী, রাজনৈতিক সহায়তাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সেকেন্ড হোমে পরিণত হয়েছে। এখানে ঘর বরাদ্দ থেকে শুরু করে বিক্রি, ভাড়া দেয়া, এমনকি ঘরগুলোকে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা পর্যন্ত নানা অভিযোগ উঠেছে।

দেশের অনেক এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পেও একই ধরনের ঘটনা ঘটছে, যেখানে বিত্তশালীরা ঘর বিক্রি বা ভাড়া দিয়ে দখল টিকিয়ে রাখছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগসাজশের কারণে এসব ঘর বিতরণ প্রক্রিয়া দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। গাজীপুরের মধ্যপাড়া ইউনিয়নের প্রকল্পের ক্ষেত্রে, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি স্বজনপ্রীতি ও অর্থনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন। এতে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে গিয়ে ঘর বিতরণের প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া, ঘরের অবকাঠামোও অনেক ক্ষেত্রেই মানহীন। সিমেন্টের পলেস্তারা খসে পড়ছে, এবং কিছু ঘরের অবস্থাও জরজীর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ সংযোগের বিল পরিশোধে অবহেলা হওয়ায় অনেক ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যেভাবে এই ঘরগুলো বিক্রি বা ভাড়া দিচ্ছেন, তা প্রকল্পটির কার্যকারিতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দকৃত ঘরগুলোতে যারা বাস করেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশই গরিব নন। অনেক বিত্তবান ব্যক্তি এসব ঘর পেয়েও সেখানে বসবাস করেন না, বরং বিক্রি করে দেন বা ভাড়া দেন। এ কারণে, প্রকল্পের ঘরগুলোতে মানুষের বসবাস না থাকার ফলে, সেই ঘরগুলো খালি পড়ে থাকে, এবং অনেক সময় তা গরু-ছাগল রাখার স্থানে পরিণত হয়ে যায়।

সরকারের উচিত এই প্রকল্পের সঠিক তদারকি করা। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ওপর যথাযথ মনিটরিং এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রকল্পটি প্রকৃত গৃহহীনদের কাছে পৌঁছায় এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য ঘর তৈরি করা, কিন্তু যদি এই উদ্দেশ্যই পালিত না হয়, তবে প্রকল্পটি বাস্তবে একটি ব্যর্থ উদ্যোগে পরিণত হবে। তাই, এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব ও প্রকৃত গৃহহীনদের সঠিকভাবে সহায়তা প্রদান করার দায়িত্ব সরকারের।

কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস: লাভ সাময়িক, ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী

খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল চালু হতে আর কত অপেক্ষা

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

আশ্রয়ণ প্রকল্প : দুর্নীতি, অসামঞ্জস্যতা এবং সেবা নিয়ে প্রশ্ন

বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

গাজীপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্পে যে অনিয়ম এবং দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে, তা শুধু দেশের একটি স্থানেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং, দেশের অনেক অঞ্চলে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যÑগৃহহীন এবং ভূমিহীন মানুষদের পুনর্বাসন। কিন্তু গাজীপুরে এই প্রকল্প পরিণত হয়েছে বিত্তবানদের হাতের খেলনায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল দেশব্যাপী গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য বাসস্থান তৈরি করা, তবে বাস্তবে এটি প্রভাবশালী, রাজনৈতিক সহায়তাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সেকেন্ড হোমে পরিণত হয়েছে। এখানে ঘর বরাদ্দ থেকে শুরু করে বিক্রি, ভাড়া দেয়া, এমনকি ঘরগুলোকে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা পর্যন্ত নানা অভিযোগ উঠেছে।

দেশের অনেক এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পেও একই ধরনের ঘটনা ঘটছে, যেখানে বিত্তশালীরা ঘর বিক্রি বা ভাড়া দিয়ে দখল টিকিয়ে রাখছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগসাজশের কারণে এসব ঘর বিতরণ প্রক্রিয়া দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। গাজীপুরের মধ্যপাড়া ইউনিয়নের প্রকল্পের ক্ষেত্রে, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি স্বজনপ্রীতি ও অর্থনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন। এতে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে গিয়ে ঘর বিতরণের প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া, ঘরের অবকাঠামোও অনেক ক্ষেত্রেই মানহীন। সিমেন্টের পলেস্তারা খসে পড়ছে, এবং কিছু ঘরের অবস্থাও জরজীর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ সংযোগের বিল পরিশোধে অবহেলা হওয়ায় অনেক ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যেভাবে এই ঘরগুলো বিক্রি বা ভাড়া দিচ্ছেন, তা প্রকল্পটির কার্যকারিতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দকৃত ঘরগুলোতে যারা বাস করেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশই গরিব নন। অনেক বিত্তবান ব্যক্তি এসব ঘর পেয়েও সেখানে বসবাস করেন না, বরং বিক্রি করে দেন বা ভাড়া দেন। এ কারণে, প্রকল্পের ঘরগুলোতে মানুষের বসবাস না থাকার ফলে, সেই ঘরগুলো খালি পড়ে থাকে, এবং অনেক সময় তা গরু-ছাগল রাখার স্থানে পরিণত হয়ে যায়।

সরকারের উচিত এই প্রকল্পের সঠিক তদারকি করা। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ওপর যথাযথ মনিটরিং এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে প্রকল্পটি প্রকৃত গৃহহীনদের কাছে পৌঁছায় এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য ঘর তৈরি করা, কিন্তু যদি এই উদ্দেশ্যই পালিত না হয়, তবে প্রকল্পটি বাস্তবে একটি ব্যর্থ উদ্যোগে পরিণত হবে। তাই, এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব ও প্রকৃত গৃহহীনদের সঠিকভাবে সহায়তা প্রদান করার দায়িত্ব সরকারের।

back to top