বাবুল রবিদাস

আমরা কথায় কথায় বলে থাকি-পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া কোনো প্রাণই বাঁচতে পারে না। আসলেই কি তাই? আসুন, প্রথমে মানুষকে নিয়েই শুরু করি। আমাদের সমাজে কেউ উপবাস, কেউ অনশন করেন-অর্থাৎ খাদ্য ও পানি গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু পানির অভাবে কি সঙ্গে সঙ্গে অনশনকারী বা উপবাসকারীর মৃত্যু ঘটে? তা তো হয় না।
কিন্তু যদি বলি-‘বায়ুর অপর নাম জীবন’, তাহলে সেটিই হবে যথাযথ কথা। কারণ মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস কয়েক মিনিট বন্ধ থাকলেই মৃত্যু অবধারিত। শ্বাস-প্রশ্বাস-অর্থাৎ বিশুদ্ধ বায়ু গ্রহণ ও ত্যাগই জীবনের উপস্থিতি বা বেঁচে থাকার নিদর্শন। তাহলে আমরা কেন বলব না-“বায়ুর অপর নাম জীবন”? অথচ বইপুস্তকে পানিকেই জীবনের প্রতীক বলা হয়।
বায়ু ছাড়া মানুষ, এমনকি কোনো প্রাণীও, কয়েক মিনিটের বেশি বাঁচতে পারে না। বায়ু ছাড়া প্রাণের অস্তিত্বই নেই। অথচ প্রকৃতিতে বিনামূল্যে পাওয়া এই মূল্যবান উপাদানের যথার্থ মূল্য দিতে মানুষ চায় না। বরং সেটির অনাদর ও অপব্যবহার করে। পৃথিবীর অকৃতজ্ঞ মানুষ বিভিন্নভাবে বায়ু দূষণ করছে।
সত্যি কথা বলতে-বায়ু দূষণকারী নিজের আয়ু যেমন কমাচ্ছে, তেমনি অপরেরও আয়ু হ্রাস করছে। এক গবেষণায় জানা যায়, বায়ুদূষণজনিত কারণে প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়। বাতাসে ভাসমান অতি ক্ষুদ্র কণাকে এই মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলা হয়।
এখন আসা যাক বাংলাদেশ ও ভারতের বায়ু দূষণ প্রসঙ্গে। বেলজিয়ামভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিরো কার্বন অ্যানালাইটিকস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুদূষণের কারণে ২০২১ সালে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১৯ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় দুজন শিশুর মৃত্যু ঘটছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, গৃহস্থালি উৎস থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণই শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ। যদি জ্বালানি সম্পূর্ণভাবে পরিবেশবান্ধবভাবে রূপান্তর করা যায়, তাহলে প্রতিবছর প্রায় ১৬ হাজার ২৬৪টি শিশুমৃত্যু রোধ করা সম্ভব। ইটভাটাসহ শিল্প খাতের বায়ুদূষণের পাশাপাশি গৃহস্থালি দূষণও বাংলাদেশে ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছে।
দূষিত বাতাসে কঠিন ও তরল কণা উড়ে বেড়ায়-যার মধ্যে ধোঁয়া, ধুলা, ছাই ও বস্তুকণা উল্লেখযোগ্য। বায়ুদূষণের কারণে সারাদেশে মানুষের গড় আয়ু কমেছে প্রায় ৫ বছর ৪ মাস। ঢাকায় বসবাসরত মানুষের আয়ু কমেছে প্রায় ৭ বছর ৭ মাস।
লাইফ ইনডেক্স-এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণের ফলে মানুষের গড় আয়ু ২.২ বছর কমেছে। যদি বায়ুদূষণ বন্ধ করা যায়, তবে বৈশ্বিক গড় আয়ু ৭২ থেকে ৭৪ বছরে উন্নীত হতো-যা মোট হিসেবে প্রায় ১৭ বিলিয়ন জীবনবর্ষ সমান।
নির্মল বায়ুর জন্য স্থায়ী নীতি গ্রহণ প্রয়োজন। এজন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে। চীনের উদাহরণ উল্লেখযোগ্য-বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের একসময় দূষিত বায়ুর কারণে ঘর থেকে না বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হতো। কিন্তু ২০১১ সালে গৃহীত নীতির ফলে চীনে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে ২.৬ বছর।
অন্যদিকে ভারতের দিল্লিতে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে চগ ২.৫ কণার মাত্রা ১৫৩ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত পাওয়া যায়, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২৫ মাইক্রোগ্রামকে সহনীয় সীমা হিসেবে নির্ধারণ করেছে। দীপাবলির উৎসবে আতশবাজি ও পটকার ধোঁয়ার কারণে দিল্লির বায়ুর মান ভয়াবহ পর্যায়ে নেমে আসে।
ভারতের সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড দিল্লির বায়ুর মানকে জনস্বাস্থ্যের জন্য “অত্যন্ত ক্ষতিকর” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দিল্লিতে প্রায় তিন কোটি মানুষের বসবাস। শীতকালে ঘন ঠান্ডা বাতাস দূষণকারী উপাদানকে মাটির কাছাকাছি আটকে রাখে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় খড় পোড়ানো, কারখানার ধোঁয়া ও যানবাহনের নির্গমন। দীপাবলির সময় আতশবাজি এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।
আইকিউএয়ার-এর তথ্যমতে, দিল্লির কিছু এলাকায় চগ ২.৫ মাত্রা ২৪৮ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছায়-যা রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ভারত সরকার এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে “ক্লাউড সিডিং”-এর মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটিয়ে বায়ু পরিশুদ্ধ করার পরীক্ষা চালায়, কিন্তু তা সফল হয়নি। দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ-এর তথ্যানুসারে, ২০০৯-২০১৯ সালের মধ্যে ভারতে বায়ুদূষণজনিত কারণে প্রায় ৩৮ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এ অবস্থায় বলা যায়, দিল্লি প্রশাসন মূলত লোক দেখানো ব্যবস্থা নিচ্ছে। ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে তারা রাজধানীতে কিছু যানবাহনের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু মূল সমস্যা রয়ে গেছে অব্যাহত-দীপাবলির উৎসবে বিপুল পরিমাণ পটকা ফাটানো ও ধোঁয়া সৃষ্টি। দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীপাবলির সময় পটকা বিস্ফোরণে অন্তত ৬৪ জন শিশু ও কিশোর দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে।
পরিবেশদূষণ-তা পানি, বায়ু বা মাটি-সবই মানুষের সৃষ্টি। মানুষই একদিকে দূষণ ঘটাচ্ছে, অন্যদিকে সেটি রোধের চেষ্টা করছে। দার্শনিকভাবে এটি “সাপ হয়ে দংশন, আবার ওঝা হয়ে ঝাড়ফুঁক” করার মতো। সাহারা মরুভূমির উদাহরণই যথেষ্ট-দশ হাজার বছর আগে যা ছিল সবুজে পরিপূর্ণ, মানুষ সেই বন উজাড় করেই তাকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে।
মানুষের উচিত প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুত্ব করা। ক্ষণিকের আনন্দ যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতির কারণ না হয়। পরিবেশবাদীদের এখনই সতর্ক হতে হবে, যাতে বায়ুদূষণ সাহারার মতো নতুন কোনো বিপর্যয় ডেকে না আনে। নির্মল বায়ু ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব টিকে থাকা অসম্ভব। তাই আসুন, সবাই মিলে পৃথিবীকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে তুলি-ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।
[লেখক : আইনজীবী, জজ কোর্ট, জয়পুরহাট]
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বাবুল রবিদাস

রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
আমরা কথায় কথায় বলে থাকি-পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া কোনো প্রাণই বাঁচতে পারে না। আসলেই কি তাই? আসুন, প্রথমে মানুষকে নিয়েই শুরু করি। আমাদের সমাজে কেউ উপবাস, কেউ অনশন করেন-অর্থাৎ খাদ্য ও পানি গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু পানির অভাবে কি সঙ্গে সঙ্গে অনশনকারী বা উপবাসকারীর মৃত্যু ঘটে? তা তো হয় না।
কিন্তু যদি বলি-‘বায়ুর অপর নাম জীবন’, তাহলে সেটিই হবে যথাযথ কথা। কারণ মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস কয়েক মিনিট বন্ধ থাকলেই মৃত্যু অবধারিত। শ্বাস-প্রশ্বাস-অর্থাৎ বিশুদ্ধ বায়ু গ্রহণ ও ত্যাগই জীবনের উপস্থিতি বা বেঁচে থাকার নিদর্শন। তাহলে আমরা কেন বলব না-“বায়ুর অপর নাম জীবন”? অথচ বইপুস্তকে পানিকেই জীবনের প্রতীক বলা হয়।
বায়ু ছাড়া মানুষ, এমনকি কোনো প্রাণীও, কয়েক মিনিটের বেশি বাঁচতে পারে না। বায়ু ছাড়া প্রাণের অস্তিত্বই নেই। অথচ প্রকৃতিতে বিনামূল্যে পাওয়া এই মূল্যবান উপাদানের যথার্থ মূল্য দিতে মানুষ চায় না। বরং সেটির অনাদর ও অপব্যবহার করে। পৃথিবীর অকৃতজ্ঞ মানুষ বিভিন্নভাবে বায়ু দূষণ করছে।
সত্যি কথা বলতে-বায়ু দূষণকারী নিজের আয়ু যেমন কমাচ্ছে, তেমনি অপরেরও আয়ু হ্রাস করছে। এক গবেষণায় জানা যায়, বায়ুদূষণজনিত কারণে প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়। বাতাসে ভাসমান অতি ক্ষুদ্র কণাকে এই মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলা হয়।
এখন আসা যাক বাংলাদেশ ও ভারতের বায়ু দূষণ প্রসঙ্গে। বেলজিয়ামভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিরো কার্বন অ্যানালাইটিকস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুদূষণের কারণে ২০২১ সালে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১৯ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় দুজন শিশুর মৃত্যু ঘটছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, গৃহস্থালি উৎস থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণই শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ। যদি জ্বালানি সম্পূর্ণভাবে পরিবেশবান্ধবভাবে রূপান্তর করা যায়, তাহলে প্রতিবছর প্রায় ১৬ হাজার ২৬৪টি শিশুমৃত্যু রোধ করা সম্ভব। ইটভাটাসহ শিল্প খাতের বায়ুদূষণের পাশাপাশি গৃহস্থালি দূষণও বাংলাদেশে ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছে।
দূষিত বাতাসে কঠিন ও তরল কণা উড়ে বেড়ায়-যার মধ্যে ধোঁয়া, ধুলা, ছাই ও বস্তুকণা উল্লেখযোগ্য। বায়ুদূষণের কারণে সারাদেশে মানুষের গড় আয়ু কমেছে প্রায় ৫ বছর ৪ মাস। ঢাকায় বসবাসরত মানুষের আয়ু কমেছে প্রায় ৭ বছর ৭ মাস।
লাইফ ইনডেক্স-এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণের ফলে মানুষের গড় আয়ু ২.২ বছর কমেছে। যদি বায়ুদূষণ বন্ধ করা যায়, তবে বৈশ্বিক গড় আয়ু ৭২ থেকে ৭৪ বছরে উন্নীত হতো-যা মোট হিসেবে প্রায় ১৭ বিলিয়ন জীবনবর্ষ সমান।
নির্মল বায়ুর জন্য স্থায়ী নীতি গ্রহণ প্রয়োজন। এজন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে। চীনের উদাহরণ উল্লেখযোগ্য-বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের একসময় দূষিত বায়ুর কারণে ঘর থেকে না বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হতো। কিন্তু ২০১১ সালে গৃহীত নীতির ফলে চীনে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে ২.৬ বছর।
অন্যদিকে ভারতের দিল্লিতে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে চগ ২.৫ কণার মাত্রা ১৫৩ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত পাওয়া যায়, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২৫ মাইক্রোগ্রামকে সহনীয় সীমা হিসেবে নির্ধারণ করেছে। দীপাবলির উৎসবে আতশবাজি ও পটকার ধোঁয়ার কারণে দিল্লির বায়ুর মান ভয়াবহ পর্যায়ে নেমে আসে।
ভারতের সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড দিল্লির বায়ুর মানকে জনস্বাস্থ্যের জন্য “অত্যন্ত ক্ষতিকর” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। দিল্লিতে প্রায় তিন কোটি মানুষের বসবাস। শীতকালে ঘন ঠান্ডা বাতাস দূষণকারী উপাদানকে মাটির কাছাকাছি আটকে রাখে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় খড় পোড়ানো, কারখানার ধোঁয়া ও যানবাহনের নির্গমন। দীপাবলির সময় আতশবাজি এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।
আইকিউএয়ার-এর তথ্যমতে, দিল্লির কিছু এলাকায় চগ ২.৫ মাত্রা ২৪৮ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছায়-যা রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ভারত সরকার এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে “ক্লাউড সিডিং”-এর মাধ্যমে কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটিয়ে বায়ু পরিশুদ্ধ করার পরীক্ষা চালায়, কিন্তু তা সফল হয়নি। দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ-এর তথ্যানুসারে, ২০০৯-২০১৯ সালের মধ্যে ভারতে বায়ুদূষণজনিত কারণে প্রায় ৩৮ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এ অবস্থায় বলা যায়, দিল্লি প্রশাসন মূলত লোক দেখানো ব্যবস্থা নিচ্ছে। ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে তারা রাজধানীতে কিছু যানবাহনের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু মূল সমস্যা রয়ে গেছে অব্যাহত-দীপাবলির উৎসবে বিপুল পরিমাণ পটকা ফাটানো ও ধোঁয়া সৃষ্টি। দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীপাবলির সময় পটকা বিস্ফোরণে অন্তত ৬৪ জন শিশু ও কিশোর দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে।
পরিবেশদূষণ-তা পানি, বায়ু বা মাটি-সবই মানুষের সৃষ্টি। মানুষই একদিকে দূষণ ঘটাচ্ছে, অন্যদিকে সেটি রোধের চেষ্টা করছে। দার্শনিকভাবে এটি “সাপ হয়ে দংশন, আবার ওঝা হয়ে ঝাড়ফুঁক” করার মতো। সাহারা মরুভূমির উদাহরণই যথেষ্ট-দশ হাজার বছর আগে যা ছিল সবুজে পরিপূর্ণ, মানুষ সেই বন উজাড় করেই তাকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে।
মানুষের উচিত প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুত্ব করা। ক্ষণিকের আনন্দ যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতির কারণ না হয়। পরিবেশবাদীদের এখনই সতর্ক হতে হবে, যাতে বায়ুদূষণ সাহারার মতো নতুন কোনো বিপর্যয় ডেকে না আনে। নির্মল বায়ু ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব টিকে থাকা অসম্ভব। তাই আসুন, সবাই মিলে পৃথিবীকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে তুলি-ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।
[লেখক : আইনজীবী, জজ কোর্ট, জয়পুরহাট]