alt

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

খুন এবং ক্ষমা
সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল

আজ একজন খুন হবো।

আরেক জন খুনী।

জীবন শেষে এসে দাঁড়িয়েছি দু’জন।

একজন ক্ষমা চাইবো, আরেক জন ক্ষমা করবো।

কে চাইবো, কে করবো? আমরা জানি না।

শুধু ভাবছি। প্রস্তুতি নিচ্ছি।

সুখের সমান দুঃখ
মাসুদুল হক

ভাবছি, পাতা হয়ে যাব।

শ্মশানে এতো পাতা

কবরে ও উঠানে;

পাতা পড়ে, পাতা পুড়ে

পায়ে ও ধুলায় পাতা মিশে যায়।

বর্ণে ও ধর্মে

পাতাদের লোভ নেই, ক্ষোভ নেই

কী নির্বিকার!

ভাবছি, পাতা হয়ে যাব।

তাহলে মানুষের মতো কেবলই

সুখী হতে চাইবো না আর

কেননা, মানুষ কখনও দুঃখ পেতে চায় না

অথচ মানুষের খুব কাছেই

বাড়তে থাকে সুখের সমান দুঃখ।

তাই ভাবছি, মৃত পাতা হয়ে যাব

বিজয় ’৭১
জাহিদ মুস্তাফা

উত্তুরে বাতাসে

লালবৃত্ত বুকে নিয়ে উড়ছে সবুজ!

আমার সোনার বাংলা

সেই কবে থেকে

তোকে ভালো বাসতে বাসতে

কতো প্রাণ গত হলো, আহত গ-ুষ বেয়ে

নেমে গেলো রক্ত আর অশ্রু প্রতিবেশী!

মাটির মানুষ নয়, পাকিদের লক্ষ্য ছিল পোড়ামাটি নেবে!

মিছিল বেড়েছে তাও- ভয়ডরহীন বাঙালির

ক্রমাগত শত থেকে হাজার হাজার

উত্তোলিত হাত, প্রতিবাদ- তুমুল স্লোগান

শাসকের পরোয়ানা, জেল ও জুলুমে জেরবার!

নিত্যদিন মৃত্যুশোক ছুঁয়ে যায় জনবিক্ষোভ,

প্রাণের ভিতরে অনপনেয় ডানায় রোদ,

জলজ জীবনে তবু জেগে থাকে আমাদের

মৃত্যুহীন মতিউর, শামসুজ্জোহা!

স্মৃতি ফুঁড়ে উড়ে আসে রক্তমাখা আসাদের শার্ট!

সে ছিল অবুঝকাল, ছেলেবেলা- যুদ্ধ চারদিক

বারুদে রোরুদ্যমান প্রকৃতি ও প্রাণি

ওষ্ঠাগত সময়ের শোক ঠেলে ফেলে

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কতো গ্রামেগঞ্জে চলে গেছে

আমাদের অনিশ্চিত শরণার্থীকাল।

অশ্রু আর রক্তমাখা ক্লেদ,

অভেদ বেদনা-দুঃখ-শোক ভেদ করে

মুক্তিযুদ্ধ, জয় বাংলা- মানুষের বিজয় উল্লাস!

হাতে হাতে পতাকার সাথে ছেলেবেলা ছুটে আসে-

আমার সোনার বাংলা মানচিত্র হয়ে!

পাথরের চোখে জীবন্ত কবিতা
তাহমিনা শিল্পী

কোটর থেকে বেরিয়ে এসেছে যে চোখ

তা জীবন্ত নয়, পাথরের

মণি দুটো শান্ত, স্থির

পাথরের ভিতরে লুকিয়ে আছে কিছু জীবন্ত কবিতা

কাগজ-কলম খামচে ধরে ঠায় দাড়িয়ে আছে কবি

ডুব-সাঁতার খেলছে ভাব ও ভাবনা

ভেসে যাচ্ছে একের পর এক পঙ্ক্তি

এ কী আলোড়ন, কোন দুর্বিপাকে বাঁধা কবির মন

এদিকে অন্ধকার আড়াল করে দিচ্ছে ফুলের রঙ

শহর ভেসে যাচ্ছে স্বেচ্ছাচারী বৃষ্টিতে

নির্বিকার কবি, বারবার হারাচ্ছে অসহায় মন

অথচ, এমন সময়ে কবিতা লেখা বড় প্রয়োজন।

ডুব
চরু হক

আমাদের হাতের তালুতে

এখন দেশের মাটির গন্ধ।

সেই গন্ধে ডুবে যেতে থাকা

শুধু

ডুবে যেতে যেতে ফুটে উঠতে থাকবে

মহাকাশ, নীহারিকা

আলোর মেখলা।

আমাদের চোখ মিশে যায় ধ্রুবতারায়

এবং মাখনগলা নীল চাঁদ

জ্যোৎস্না ঝরায় চুপিসারে।

আমাদের হাতের তালুতে আজ

আঁতুড়ঘরের গন্ধ,

আর তোমার দু’চোখ যেনো

অজস্র মানুষের হৃদয়ের জানালা।

খ্যাপাটে বিমান
অনন্য কামরুল

খ্যাপাটে বিমানে চড়ে পাড়ি দিই কল্পচারু-পথ

ধেয়ে আসে ধূলিমেঘ- ঢেকে যায় চোখের ভূগোল;

গন্তব্য কেন্দ্রবিহীন- যাত্রীবৃন্দ তবে কি উন্মূল?

আগামীর কূল ঘেঁষে ভগ্ন দ্বীপে খেলে যাবে শ্লথ?

ইগলের বাসগৃহে হোলি চলে পিশাচের গানে

গুচ্ছ ভয় পুচ্ছ তুলে ছেয়ে যায় চারদিকে ভারি;

নিকুঞ্জের ন¤্র বুকে ফোটে থাকে নগ্ন তরবারি

হাওয়া সব হেঁটে যায় হাঁসফাঁস খর অপমানে।

সমুদ্রের আবাহনে যাত্রীদল ভুলে থাকে ভয়:

দিন শেষে জলই পারে দিতে যেন জীবনমহিমা

আশাঢেউ আন্দোলিত করে এ কী মনোপরিসীমা!

ক্ষয়ে যাক জড়চিহ্ন, ভেসে যাক বিমানবলয়...

জেগে থাক জলপাই পি-জুড়ে স্বপ্নের দ্রাঘিমা

নষ্ট ¯্রােত লুপ্ত হোক- প্রেতহাসির হোক বিলয়!

এইপথ চেনামুখ
এহসানুল ইয়াসিন

এইপথ চেনামুখ- এত অচেনা কেন?

চাঁদ তো উঠেছে- ধবধবে জোছনা

তবুও কেন আলো নেই আমাদের বারান্দায়?

অথচ পাতার ফাঁকে জোছনা ও বাতাসের

লুকোচুরি। অবিরত বাজছে জীবনের গান

আর অচেনা কণ্ঠে মধুর আহ্বান- চিরায়ত বাংলা

শুনতে পাচ্ছো কি?

শোনো, মানুষের পদধ্বনি!

রাজপথ, কানাগলি, ধুলোমাখা দিন

আনন্দঘন মুহূর্ত- সবখানে হাওয়ার গান!

কিংবা চেনা-অচেনার ফিসফাস লড়াই?

দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে- সত্যমিথ্যা

মুছে যাচ্ছে সভ্যতার ইতিহাস! উজ্জ্বল দিন

কোথাও কেউ নেই- ধবধবে জোছনা!

আলোহীন বারান্দায় পাশাপাশি দু’জন

অথচ পড়তে পারছি না কেন

আনন্দ-বেদনার ভাষা?

এখনও তো মানুষ আছে- ক্ষমা সুন্দর পৃথিবী!

তবুও কেন পরস্পর মুখোমুখি?

কী এমন বিষণœতা আমাদের দেহমনে!

নাকি এভাবেই মলিন হয় সন্দেহপ্রবণ দিন?

গোপন মানুষ
আসাদ কাজল

আমার নিজস্ব নদীর ভিতর নদী

অশ্রুজল সাক্ষী রেখে- নদী নিরবধি।

মোহিত সৌন্দর্যে বিভোর থেকেছি আমি

শুকনো নদীর ছায়া নগ্ন মরুভূমি।

বিবাগী মনে কীসের লুকোচুরি খেলা

স্বপ্নে বয়ে চলে জীবন-নদীর ভেলা।

বিরহে মেঘ ও বৃষ্টি স্রোতের ধারায়

রহস্যে জীবন-নদী কোথায় হারায়?

নিঃশব্দে মানুষ কাঁদে! কেঁদে কেঁদে হাসে

অতঃপর এ নদীর জল ভালবাসে।

মানুষ কাঁদতে শিখেছে নদীর কাছে

এ চোখ ও নদী সম্পর্কের জলাশয়

তবু কেন যে মানুষ জল নিতে আসে

জল তৃষ্ণায় মানুষ গোপন নিশ্চয়?

ছবি

সিলভিয়া প্লাথের মৃত্যু, নিঃসঙ্গতা ও আত্মবিনাশ

ছবি

সমসাময়িক মার্কিনি ‘সহস্রাব্দের কণ্ঠস্বর’

ছবি

অন্য নিরিখে দেখা

ছবি

হেলাল হাফিজের চলে যাওয়া

ছবি

হেলাল হাফিজের কবিতা

ছবি

কেন এত পাঠকপ্রিয় হেলাল হাফিজ

ছবি

নারী শিক্ষাবিদ : বেগম রোকেয়া

ছবি

বাসার তাসাউফ

ছবি

‘জগদ্দল’-এর শক্তি ও সমরেশ বসু

ছবি

রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

ছবি

রুবেন দারিও-র কবিতা

‘অঘ্রানের অনুভূতিমালা’

ছবি

কবিতা পড়া, কবিতা লেখা

ছবি

‘ধুলোয় সব মলিন’, পাঠকের কথা

ছবি

মহত্ত্বর কবি সিকদার আমিনুল হক

ছবি

রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

ছবি

কয়েকটি অনুগল্প

সাময়িকী কবিতা

ছবি

যেভাবে লেখা হলো ‘শিকিবু’

ছবি

জাঁ জোসেফ রাবেয়ারিভেলোর কবিতা

ছবি

সিকদার আমিনুল হকের গদ্য

ছবি

সিকদার আমিনুল হককে লেখা অগ্রজ ও খ্যাতিমান লেখক-সম্পাদকের চিঠি

ছবি

ফিওদর দস্তয়েভস্কি: রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

একজন গফুর মল্লিক

ছবি

অগ্রবীজের ‘অনুবাদ সাহিত্য’ সংখ্যা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

গোপন কথা

ছবি

র’নবীর টোকাই-কথন

ছবি

শিল্পচর্চায় তরুণ প্রজন্ম অনেক বেশি ইনোভেটিভ

ছবি

শামসুর রাহমানের কবিতা বৈভব ও বহুমাত্রিকতা

ছবি

উইলিয়াম রাদিচের অধ্যয়নে অনন্য রবীন্দ্রনাথ

দিলারা হাফিজের কবিতা

ছবি

অবরুদ্ধ বর্ণমালার শৃঙ্খলমুক্তি

ছবি

আহমদুল কবির স্মরণে

ছবি

আহমদুল কবিরের সদাশয়তা

ছবি

রবীন্দ্রসংগীতের অপাপভূমি

tab

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

খুন এবং ক্ষমা
সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল

আজ একজন খুন হবো।

আরেক জন খুনী।

জীবন শেষে এসে দাঁড়িয়েছি দু’জন।

একজন ক্ষমা চাইবো, আরেক জন ক্ষমা করবো।

কে চাইবো, কে করবো? আমরা জানি না।

শুধু ভাবছি। প্রস্তুতি নিচ্ছি।

সুখের সমান দুঃখ
মাসুদুল হক

ভাবছি, পাতা হয়ে যাব।

শ্মশানে এতো পাতা

কবরে ও উঠানে;

পাতা পড়ে, পাতা পুড়ে

পায়ে ও ধুলায় পাতা মিশে যায়।

বর্ণে ও ধর্মে

পাতাদের লোভ নেই, ক্ষোভ নেই

কী নির্বিকার!

ভাবছি, পাতা হয়ে যাব।

তাহলে মানুষের মতো কেবলই

সুখী হতে চাইবো না আর

কেননা, মানুষ কখনও দুঃখ পেতে চায় না

অথচ মানুষের খুব কাছেই

বাড়তে থাকে সুখের সমান দুঃখ।

তাই ভাবছি, মৃত পাতা হয়ে যাব

বিজয় ’৭১
জাহিদ মুস্তাফা

উত্তুরে বাতাসে

লালবৃত্ত বুকে নিয়ে উড়ছে সবুজ!

আমার সোনার বাংলা

সেই কবে থেকে

তোকে ভালো বাসতে বাসতে

কতো প্রাণ গত হলো, আহত গ-ুষ বেয়ে

নেমে গেলো রক্ত আর অশ্রু প্রতিবেশী!

মাটির মানুষ নয়, পাকিদের লক্ষ্য ছিল পোড়ামাটি নেবে!

মিছিল বেড়েছে তাও- ভয়ডরহীন বাঙালির

ক্রমাগত শত থেকে হাজার হাজার

উত্তোলিত হাত, প্রতিবাদ- তুমুল স্লোগান

শাসকের পরোয়ানা, জেল ও জুলুমে জেরবার!

নিত্যদিন মৃত্যুশোক ছুঁয়ে যায় জনবিক্ষোভ,

প্রাণের ভিতরে অনপনেয় ডানায় রোদ,

জলজ জীবনে তবু জেগে থাকে আমাদের

মৃত্যুহীন মতিউর, শামসুজ্জোহা!

স্মৃতি ফুঁড়ে উড়ে আসে রক্তমাখা আসাদের শার্ট!

সে ছিল অবুঝকাল, ছেলেবেলা- যুদ্ধ চারদিক

বারুদে রোরুদ্যমান প্রকৃতি ও প্রাণি

ওষ্ঠাগত সময়ের শোক ঠেলে ফেলে

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কতো গ্রামেগঞ্জে চলে গেছে

আমাদের অনিশ্চিত শরণার্থীকাল।

অশ্রু আর রক্তমাখা ক্লেদ,

অভেদ বেদনা-দুঃখ-শোক ভেদ করে

মুক্তিযুদ্ধ, জয় বাংলা- মানুষের বিজয় উল্লাস!

হাতে হাতে পতাকার সাথে ছেলেবেলা ছুটে আসে-

আমার সোনার বাংলা মানচিত্র হয়ে!

পাথরের চোখে জীবন্ত কবিতা
তাহমিনা শিল্পী

কোটর থেকে বেরিয়ে এসেছে যে চোখ

তা জীবন্ত নয়, পাথরের

মণি দুটো শান্ত, স্থির

পাথরের ভিতরে লুকিয়ে আছে কিছু জীবন্ত কবিতা

কাগজ-কলম খামচে ধরে ঠায় দাড়িয়ে আছে কবি

ডুব-সাঁতার খেলছে ভাব ও ভাবনা

ভেসে যাচ্ছে একের পর এক পঙ্ক্তি

এ কী আলোড়ন, কোন দুর্বিপাকে বাঁধা কবির মন

এদিকে অন্ধকার আড়াল করে দিচ্ছে ফুলের রঙ

শহর ভেসে যাচ্ছে স্বেচ্ছাচারী বৃষ্টিতে

নির্বিকার কবি, বারবার হারাচ্ছে অসহায় মন

অথচ, এমন সময়ে কবিতা লেখা বড় প্রয়োজন।

ডুব
চরু হক

আমাদের হাতের তালুতে

এখন দেশের মাটির গন্ধ।

সেই গন্ধে ডুবে যেতে থাকা

শুধু

ডুবে যেতে যেতে ফুটে উঠতে থাকবে

মহাকাশ, নীহারিকা

আলোর মেখলা।

আমাদের চোখ মিশে যায় ধ্রুবতারায়

এবং মাখনগলা নীল চাঁদ

জ্যোৎস্না ঝরায় চুপিসারে।

আমাদের হাতের তালুতে আজ

আঁতুড়ঘরের গন্ধ,

আর তোমার দু’চোখ যেনো

অজস্র মানুষের হৃদয়ের জানালা।

খ্যাপাটে বিমান
অনন্য কামরুল

খ্যাপাটে বিমানে চড়ে পাড়ি দিই কল্পচারু-পথ

ধেয়ে আসে ধূলিমেঘ- ঢেকে যায় চোখের ভূগোল;

গন্তব্য কেন্দ্রবিহীন- যাত্রীবৃন্দ তবে কি উন্মূল?

আগামীর কূল ঘেঁষে ভগ্ন দ্বীপে খেলে যাবে শ্লথ?

ইগলের বাসগৃহে হোলি চলে পিশাচের গানে

গুচ্ছ ভয় পুচ্ছ তুলে ছেয়ে যায় চারদিকে ভারি;

নিকুঞ্জের ন¤্র বুকে ফোটে থাকে নগ্ন তরবারি

হাওয়া সব হেঁটে যায় হাঁসফাঁস খর অপমানে।

সমুদ্রের আবাহনে যাত্রীদল ভুলে থাকে ভয়:

দিন শেষে জলই পারে দিতে যেন জীবনমহিমা

আশাঢেউ আন্দোলিত করে এ কী মনোপরিসীমা!

ক্ষয়ে যাক জড়চিহ্ন, ভেসে যাক বিমানবলয়...

জেগে থাক জলপাই পি-জুড়ে স্বপ্নের দ্রাঘিমা

নষ্ট ¯্রােত লুপ্ত হোক- প্রেতহাসির হোক বিলয়!

এইপথ চেনামুখ
এহসানুল ইয়াসিন

এইপথ চেনামুখ- এত অচেনা কেন?

চাঁদ তো উঠেছে- ধবধবে জোছনা

তবুও কেন আলো নেই আমাদের বারান্দায়?

অথচ পাতার ফাঁকে জোছনা ও বাতাসের

লুকোচুরি। অবিরত বাজছে জীবনের গান

আর অচেনা কণ্ঠে মধুর আহ্বান- চিরায়ত বাংলা

শুনতে পাচ্ছো কি?

শোনো, মানুষের পদধ্বনি!

রাজপথ, কানাগলি, ধুলোমাখা দিন

আনন্দঘন মুহূর্ত- সবখানে হাওয়ার গান!

কিংবা চেনা-অচেনার ফিসফাস লড়াই?

দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে- সত্যমিথ্যা

মুছে যাচ্ছে সভ্যতার ইতিহাস! উজ্জ্বল দিন

কোথাও কেউ নেই- ধবধবে জোছনা!

আলোহীন বারান্দায় পাশাপাশি দু’জন

অথচ পড়তে পারছি না কেন

আনন্দ-বেদনার ভাষা?

এখনও তো মানুষ আছে- ক্ষমা সুন্দর পৃথিবী!

তবুও কেন পরস্পর মুখোমুখি?

কী এমন বিষণœতা আমাদের দেহমনে!

নাকি এভাবেই মলিন হয় সন্দেহপ্রবণ দিন?

গোপন মানুষ
আসাদ কাজল

আমার নিজস্ব নদীর ভিতর নদী

অশ্রুজল সাক্ষী রেখে- নদী নিরবধি।

মোহিত সৌন্দর্যে বিভোর থেকেছি আমি

শুকনো নদীর ছায়া নগ্ন মরুভূমি।

বিবাগী মনে কীসের লুকোচুরি খেলা

স্বপ্নে বয়ে চলে জীবন-নদীর ভেলা।

বিরহে মেঘ ও বৃষ্টি স্রোতের ধারায়

রহস্যে জীবন-নদী কোথায় হারায়?

নিঃশব্দে মানুষ কাঁদে! কেঁদে কেঁদে হাসে

অতঃপর এ নদীর জল ভালবাসে।

মানুষ কাঁদতে শিখেছে নদীর কাছে

এ চোখ ও নদী সম্পর্কের জলাশয়

তবু কেন যে মানুষ জল নিতে আসে

জল তৃষ্ণায় মানুষ গোপন নিশ্চয়?

back to top