alt

সংস্কৃতি

নববর্ষের কবিতা

: শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২

শার্লের জন্য একটি সনেট
জাহিদুল হক

জেনেছিলে শিল্প দীর্ঘ, আয়ু ততো নয়- খুবই ক্ষুদ্র;
দিনান্তে গোধূলি শুধু দেখো; ওড়ে ব্যর্থতারই ধুলো।
কীভাবে ফুরিয়ে যাচ্ছে পঞ্জিকার ঝরাপাতাগুলো,
স্মৃতি কি বিস্মৃতিজুড়ে হাহাকার জাগালো সমুদ্র!
একই যাত্রা, ভিন্ন ফল হবে কেন তোমারও ভ্রমণে:
যদিও অজস্র স্মৃতি-মনিরত্ন বুকে জমে ওঠে,
কোদাল কি খন্তাদের শব্দকে ছাপিয়ে সম্মোহনে
নির্জনতা দিয়ে গাঁথে কারুকার্য, দুঃখে ফুল ফোটে।
স্মৃতি কি গন্তব্য খোঁজে? কবরের নৈঃশব্দ্যে, সন্দর্ভে?
আমি যাচ্ছি ভিন্ন কোনো বাড়িঘরে, বাড়ির ওপারে।
পথে দেখা: বলি, ‘শার্ল, যাচ্ছো বুঝি? স্মৃতির র?্যাপারে
ঢাকা সারা অঙ্গ, স্নায়ু; অজানা তোমাকে ডাকে গর্ভে
তার, দেয় নূতনতা’। আমিও পথের অসংসারে
লিপ্ত হই ষড়যন্ত্রে নিজেরই বিরুদ্ধে, অন্ধকারে!

বিনিদ্র কলমে জলমগ্ন আঙুল
হাসান কল্লোল

একদিন আপনাকে নিয়ে কবিতা লিখবো,
যেদিন আমার কলম স্বাধীন হবে!
আনন্দ বাগানে ফুটবে হাস্নাহেনার মতো
চাঁদের কোমল পাপড়ি!
আমার বেঁচে থাকার জন্য
কারো কাছে করুনা চাইতে হবে না,
সেইদিন ঝুম বৃষ্টি হবে।
সমস্ত গ্রাম ভিজবে রাতে জোৎস্নায়,
সৌন্দর্য আর ভালোবাসার ছায়া
হেঁটে যাবে হাত ধরে:
আপনি অপলক দেখবেন!
শুধু আমি থাকবো না।

বসুধা
মঈনউদ্দিন মুনশী

মনেতে যে উন্মুখ জোয়ার লেগেছে সে বসুধার প্রবাহ ধারা,
প্রভাত দুচোখে এঁকেছে গান, আনন্দ ভরা বীণা
বিচিত্র মাটির মায়া, সোনালি আভা ভোরের চোখে,
নীলাকাশে জীবনের চেনা গন্ধ, পল্লবিত স্বপ্ন ফুলের পালকে
মনে হয়, এ যেন প্রেম এক প্রাণের আনন্দ স্রোতে
এতো ক্ষীণ ধারা নয়, ছোট ছোট মর্মরিত গানের মালা
ছুটে যায় বিশাল অবধি, তার ছোঁয়া লাগা ক্ষণ আরক্ত বাসনা
ভোরের আকাশে, যেন বহুদিনের কথা বিচিত্র আভাসে।
ধরে রাখো তাকে, বিলিয়ে প্রাণে প্রাণে অপার ভালবাসা।
জীবনের রঙ তুচ্ছ নয়, উদ্ভাসিত আনন্দ ভরা রৌদ্রচ্ছটা
সবুজ বৃক্ষে তার তীব্র প্রাণের লতা বেঁধেছে মায়াডোরে,
এ তুচ্ছ নয়, এ জোয়ার অন্তহীন মাটির গান, নিয়ে যাবে পৃথিবীর ওপারে।

আলোখেকো কৃষ্ণবিবর
চয়ন শায়েরী

শেষমেশ ছবি-টবি সব হাতের নাগালে
রেডিও টেলিস্কোপের ক্যারিসমা,
কারসাজি বলা যেতে পারে কম্পিউটারের;
স্টিফেন হকিং দেখে যেতে পারলেন না,
তার বিমূর্ত প্রেমিকা বিম্বিতা হয়েছে
মূর্ত প্রেমিকার আদলে প্রতিবিম্ব তৈরি করেছে কেমন;
আসলে একদিন না একদিন সবাই ধরা পড়ে
শক্তি বস্তুতে বস্তুতে বসবাস করে
বিমূর্ত প্রেমও কোনোদিন মূর্ত হয়ে ওঠে;
কৌতুকী নিয়তি মুচকি হেসে বলে:
‘সবাই নোবেল পায় না’
আকাক্সক্ষার আলো খেয়ে ফেলে নিয়তির কৃষ্ণবিবর;
এদিকে দানব নক্ষত্রটা মরেও শান্তি দেয় না
আশেপাশের নক্ষত্রসকল
আন্তঃনাক্ষত্রিক ধুলোবালিসব গিলে গিলে
আরও সংকুচিত হয়,
আরও বেশি অভিকর্ষীয় টান-
আলোখেকো কালো গর্তে টেনে নেয় সবকিছুসব;
আমাদের মৃত সমাজের ভেতরেও
এক অলঙ্ঘ্য কৃষ্ণবিবর তৈরি হয়েছে,
ধীরে ধীরে গ্রাস করছে
আমাদের অর্জনসকল;
খেয়ে ফেলছে বোধ হয় বোধ-সহ
নৈতিকতার আলোও,
এই অবক্ষয় অলক্ষ্যে এক বিমূর্ত দানবে পরিণত হয়েছে-
দানবনক্ষত্রের সহোদরা;
এর ক্ষুধার্ত পেটে ধীরে ধীরে ঢুকে যাচ্ছে
আমাদের সন্ততিরা আর আমাদের ভবিষ্যতের আলোও!

বৈশাখের অটোগ্রাফ
আদিত্য নজরুল

একরোখা চৈত্রের দুপুর;
জলের তৃষ্ণায়
লেজ নাড়াতে নাড়াতে
পুকুরের ঘাটে এসে বসে দুপুরের রোদ!
শুকনো পুকুর, জলহীন
বেদেনির ঠোঁটের মতো কালো ঘাটের নিচে
সাপের মণির উজ্জ্বল রঙে
ফুটে আছে হেলেঞ্চা শাকের ফুল।
পুকুরের পাড়েই
ছেলে মেয়েরা খেলছে,
গাইছে-
‘কালামেঘি, ধলামেঘি বৃষ্টির গান...
গান গাইতে গাইতে
চৈত্র শেষ হয়ে গেলে
ছুঁটতে ছুঁটতে আসে দৌড়বাজ বৃষ্টি...

উৎসমূল
পারভেজ আহসান

চিকেনফ্রাই, বিফসিজলিং ও ফ্রাইডরাইসের ঘ্রাণ
ভেসে যায় চৈত্রের আগুন হাওয়ায়
খাবারের তীব্র গন্ধে পাশের বাড়ির
শিশুরা ছুটে আসে
তারা ইয়াম্মি ইয়াম্মি বলে গায়
জাস্টিন বিবারের গান
অতঃপর রান্না ঘরে গিয়ে দেখে
এক বৃদ্ধা রান্না করছে গিমা শাক,
চালকুমড়োর শুক্ত, সজনের চচ্চড়ি ও আমডাল।

নববর্ষের চিঠি
মহাদেব সাহা

এবারও তেমনি শেষ চৈত্রের খর নিশ্বাসে
নতুন বছর আসবে হয়তো; কিন্তু তুমি কি জানো
এদেশে কখন আসবে নতুন দিন? কখন উদ্দীপনা
অবসাদ আর ব্যর্থতাকেই দেবে নিদারুণ হানা।
ছড়াবে হৃদয়ে আগামীর গাঢ় রঙে, ভাসাবে
মেঘের দূর নীলিমায় স্বপ্নের সাম্পান?
বলো না কখন এই ক্ষীণ হাতে ঘুরবে যুগের চাকা
কখন সত্যি নতুন বছরে আসবে নতুন দিন,
তুলবে তাদের গর্বিত মাথা আজ যারা নতজানু
এই প্রাসাদে ও অট্টালিকায় উড়বে তাদেরই নাম?
বলো না কখন ফুটবে গোলাপ গোলাপের চেয়ে বড়ো
কখন মানুষ পাবে এই দেশে শস্যের অধিকার
নতুন বছরে সেই অনাগত নতুনের প্রত্যাশা
বন্ধু, তোমাকে নববর্ষের সাদর সম্ভাষণ!

শুক্রবার থেকে ৩ দিনব্যাপী চতুর্থ জাতীয় গণসঙ্গীত উৎসব

ছবি

‘রোড টু বালুরঘাট’, মুক্তিযুদ্ধে শরণার্থীদের চিত্র প্রদর্শন

ছবি

পাবলিশহার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন বাংলাদেশের মিতিয়া ওসমান

ছবি

চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে বর্ষ বরন সম্পন্ন

ছবি

জামালপুরে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত

ছবি

বনাঢ্য নানান আয়োজনে বিভাগীয় নগরী রংপুরে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ

ছবি

আজ চৈত্র সংক্রান্তি

ছবি

বর্ষবরণে সময়ের বিধি-নিষেধ মানবে না সাংস্কৃতিক জোট

ছবি

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার গুণীজন সংবর্ধনা

ছবি

স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রায় সকল প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে হবে : ড. কামাল চৌধুরী

ছবি

এলাকাবাসীর সঙ্গে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের নতুন কমিটি, ড. সনজীদা খাতুন সভাপতি, ড. আতিউর রহমান নির্বাহী সভাপতি,লিলি ইসলাম সাধারণ সম্পাদক

ছবি

এবার বইমেলায় ৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি

ছবি

আজ শেষ হচ্ছে মহান একুশের বইমেলা, বিক্রি বেড়েছে শেষ মুহুর্তে

ছবি

আগামী বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার জায়গা বরাদ্দ নাওদিতে পারে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

ছবি

বইমেলা, মেয়াদ বাড়ায় খুশি সবাই

ছবি

বইমেলায় ফ্রান্স প্রবাসী কাজী এনায়েত উল্লাহর দুই বই

ছবি

নারী লেখকদের বই কম, বিক্রিও কম

ছবি

বইমেলায় বিদায়ের সুর

ছবি

শিশুদের আনন্দ উচ্ছ্বাসে জমজমাট বইমেলার শিশু প্রহর

ছবি

বইমেলায় শিশুদের চোখে মুখে ছিল আনন্দ উচ্ছ্বাস

ছবি

বই মেলায় খুদে লেখকদের গল্প সংকলন ‘কিশোর রূপাবলি’

ছবি

`বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশিত উন্নত শিরের বাঙালি জাতি চাই’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

ছবি

বইমেলায় সরোজ মেহেদীর ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’

ছবি

বইমেলায় মাহবুবুর রহমান তুহিনের ‘চেকবই’

বইমেলায় প্রকাশিত হলো সাংবাদিক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের ‘যাপিত জীবনের গল্প’

ছবি

সমাজসেবায় একুশে পদকঃ এখনও ফেরি করে দই বিক্রি করেন জিয়াউল হক

ছবি

বইমেলায় পন্নী নিয়োগীর নতুন গ্রল্পগ্রন্থ আতশবাজি

ছবি

ভাষার শক্তি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সুদৃঢ় করে: উপাচার্য ড. মশিউর রহমান

ছবি

রুবেলের গ্রন্থ শিশির ঝরা কবিতা

ঢাবিতে পাঁচ দিনব্যাপী ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র’ উৎসব শুরু

ছবি

সোনারগাঁয়ে লোকজ উৎসবে খেলাঘরের নাচ-গান পরিবেশন

ছবি

বাংলা একাডেমি পুরস্কার ফেরত দিলেন জাকির তালুকদার

ছবি

রংতুলির মাধ্যমে নিরাপদ সড়কের দাবি শিশুদের

ছবি

জাতীয় প্রেস ক্লাবে পিঠা উৎসব ও লোকগানের আসর

ফরিদপুরে ২ ফেব্রূয়ারি থেকে ঐতিহ্যবাহী জসীম পল্লী মেলা

tab

সংস্কৃতি

নববর্ষের কবিতা

শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২২

শার্লের জন্য একটি সনেট
জাহিদুল হক

জেনেছিলে শিল্প দীর্ঘ, আয়ু ততো নয়- খুবই ক্ষুদ্র;
দিনান্তে গোধূলি শুধু দেখো; ওড়ে ব্যর্থতারই ধুলো।
কীভাবে ফুরিয়ে যাচ্ছে পঞ্জিকার ঝরাপাতাগুলো,
স্মৃতি কি বিস্মৃতিজুড়ে হাহাকার জাগালো সমুদ্র!
একই যাত্রা, ভিন্ন ফল হবে কেন তোমারও ভ্রমণে:
যদিও অজস্র স্মৃতি-মনিরত্ন বুকে জমে ওঠে,
কোদাল কি খন্তাদের শব্দকে ছাপিয়ে সম্মোহনে
নির্জনতা দিয়ে গাঁথে কারুকার্য, দুঃখে ফুল ফোটে।
স্মৃতি কি গন্তব্য খোঁজে? কবরের নৈঃশব্দ্যে, সন্দর্ভে?
আমি যাচ্ছি ভিন্ন কোনো বাড়িঘরে, বাড়ির ওপারে।
পথে দেখা: বলি, ‘শার্ল, যাচ্ছো বুঝি? স্মৃতির র?্যাপারে
ঢাকা সারা অঙ্গ, স্নায়ু; অজানা তোমাকে ডাকে গর্ভে
তার, দেয় নূতনতা’। আমিও পথের অসংসারে
লিপ্ত হই ষড়যন্ত্রে নিজেরই বিরুদ্ধে, অন্ধকারে!

বিনিদ্র কলমে জলমগ্ন আঙুল
হাসান কল্লোল

একদিন আপনাকে নিয়ে কবিতা লিখবো,
যেদিন আমার কলম স্বাধীন হবে!
আনন্দ বাগানে ফুটবে হাস্নাহেনার মতো
চাঁদের কোমল পাপড়ি!
আমার বেঁচে থাকার জন্য
কারো কাছে করুনা চাইতে হবে না,
সেইদিন ঝুম বৃষ্টি হবে।
সমস্ত গ্রাম ভিজবে রাতে জোৎস্নায়,
সৌন্দর্য আর ভালোবাসার ছায়া
হেঁটে যাবে হাত ধরে:
আপনি অপলক দেখবেন!
শুধু আমি থাকবো না।

বসুধা
মঈনউদ্দিন মুনশী

মনেতে যে উন্মুখ জোয়ার লেগেছে সে বসুধার প্রবাহ ধারা,
প্রভাত দুচোখে এঁকেছে গান, আনন্দ ভরা বীণা
বিচিত্র মাটির মায়া, সোনালি আভা ভোরের চোখে,
নীলাকাশে জীবনের চেনা গন্ধ, পল্লবিত স্বপ্ন ফুলের পালকে
মনে হয়, এ যেন প্রেম এক প্রাণের আনন্দ স্রোতে
এতো ক্ষীণ ধারা নয়, ছোট ছোট মর্মরিত গানের মালা
ছুটে যায় বিশাল অবধি, তার ছোঁয়া লাগা ক্ষণ আরক্ত বাসনা
ভোরের আকাশে, যেন বহুদিনের কথা বিচিত্র আভাসে।
ধরে রাখো তাকে, বিলিয়ে প্রাণে প্রাণে অপার ভালবাসা।
জীবনের রঙ তুচ্ছ নয়, উদ্ভাসিত আনন্দ ভরা রৌদ্রচ্ছটা
সবুজ বৃক্ষে তার তীব্র প্রাণের লতা বেঁধেছে মায়াডোরে,
এ তুচ্ছ নয়, এ জোয়ার অন্তহীন মাটির গান, নিয়ে যাবে পৃথিবীর ওপারে।

আলোখেকো কৃষ্ণবিবর
চয়ন শায়েরী

শেষমেশ ছবি-টবি সব হাতের নাগালে
রেডিও টেলিস্কোপের ক্যারিসমা,
কারসাজি বলা যেতে পারে কম্পিউটারের;
স্টিফেন হকিং দেখে যেতে পারলেন না,
তার বিমূর্ত প্রেমিকা বিম্বিতা হয়েছে
মূর্ত প্রেমিকার আদলে প্রতিবিম্ব তৈরি করেছে কেমন;
আসলে একদিন না একদিন সবাই ধরা পড়ে
শক্তি বস্তুতে বস্তুতে বসবাস করে
বিমূর্ত প্রেমও কোনোদিন মূর্ত হয়ে ওঠে;
কৌতুকী নিয়তি মুচকি হেসে বলে:
‘সবাই নোবেল পায় না’
আকাক্সক্ষার আলো খেয়ে ফেলে নিয়তির কৃষ্ণবিবর;
এদিকে দানব নক্ষত্রটা মরেও শান্তি দেয় না
আশেপাশের নক্ষত্রসকল
আন্তঃনাক্ষত্রিক ধুলোবালিসব গিলে গিলে
আরও সংকুচিত হয়,
আরও বেশি অভিকর্ষীয় টান-
আলোখেকো কালো গর্তে টেনে নেয় সবকিছুসব;
আমাদের মৃত সমাজের ভেতরেও
এক অলঙ্ঘ্য কৃষ্ণবিবর তৈরি হয়েছে,
ধীরে ধীরে গ্রাস করছে
আমাদের অর্জনসকল;
খেয়ে ফেলছে বোধ হয় বোধ-সহ
নৈতিকতার আলোও,
এই অবক্ষয় অলক্ষ্যে এক বিমূর্ত দানবে পরিণত হয়েছে-
দানবনক্ষত্রের সহোদরা;
এর ক্ষুধার্ত পেটে ধীরে ধীরে ঢুকে যাচ্ছে
আমাদের সন্ততিরা আর আমাদের ভবিষ্যতের আলোও!

বৈশাখের অটোগ্রাফ
আদিত্য নজরুল

একরোখা চৈত্রের দুপুর;
জলের তৃষ্ণায়
লেজ নাড়াতে নাড়াতে
পুকুরের ঘাটে এসে বসে দুপুরের রোদ!
শুকনো পুকুর, জলহীন
বেদেনির ঠোঁটের মতো কালো ঘাটের নিচে
সাপের মণির উজ্জ্বল রঙে
ফুটে আছে হেলেঞ্চা শাকের ফুল।
পুকুরের পাড়েই
ছেলে মেয়েরা খেলছে,
গাইছে-
‘কালামেঘি, ধলামেঘি বৃষ্টির গান...
গান গাইতে গাইতে
চৈত্র শেষ হয়ে গেলে
ছুঁটতে ছুঁটতে আসে দৌড়বাজ বৃষ্টি...

উৎসমূল
পারভেজ আহসান

চিকেনফ্রাই, বিফসিজলিং ও ফ্রাইডরাইসের ঘ্রাণ
ভেসে যায় চৈত্রের আগুন হাওয়ায়
খাবারের তীব্র গন্ধে পাশের বাড়ির
শিশুরা ছুটে আসে
তারা ইয়াম্মি ইয়াম্মি বলে গায়
জাস্টিন বিবারের গান
অতঃপর রান্না ঘরে গিয়ে দেখে
এক বৃদ্ধা রান্না করছে গিমা শাক,
চালকুমড়োর শুক্ত, সজনের চচ্চড়ি ও আমডাল।

নববর্ষের চিঠি
মহাদেব সাহা

এবারও তেমনি শেষ চৈত্রের খর নিশ্বাসে
নতুন বছর আসবে হয়তো; কিন্তু তুমি কি জানো
এদেশে কখন আসবে নতুন দিন? কখন উদ্দীপনা
অবসাদ আর ব্যর্থতাকেই দেবে নিদারুণ হানা।
ছড়াবে হৃদয়ে আগামীর গাঢ় রঙে, ভাসাবে
মেঘের দূর নীলিমায় স্বপ্নের সাম্পান?
বলো না কখন এই ক্ষীণ হাতে ঘুরবে যুগের চাকা
কখন সত্যি নতুন বছরে আসবে নতুন দিন,
তুলবে তাদের গর্বিত মাথা আজ যারা নতজানু
এই প্রাসাদে ও অট্টালিকায় উড়বে তাদেরই নাম?
বলো না কখন ফুটবে গোলাপ গোলাপের চেয়ে বড়ো
কখন মানুষ পাবে এই দেশে শস্যের অধিকার
নতুন বছরে সেই অনাগত নতুনের প্রত্যাশা
বন্ধু, তোমাকে নববর্ষের সাদর সম্ভাষণ!

back to top