নড়াইলে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। গণপিটুনি আমাদের সমাজে একটি মামুলি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এ অপসংস্কৃতি আইনের শাসনের ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গরু চুরি কিংবা অন্য কোনো অপরাধের জন্য মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করার মানসিকতা একদিকে যেমন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন, তেমনি আইনের শাসনের প্রতি অনাস্থাও প্রকাশ করে।
এবারের ঘটনায় দেখা যাচ্ছেÑ দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী গরু চুরির সমস্যায় ভুগছিলেন। এজন্য তারা রাত জেগে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। চুরি ঠেকাতে কেউ স্বেচ্ছায় পাহারা দিতে পারেন, তবে কুকুর ডাকার শব্দে চোর সন্দেহে তিন ব্যক্তিকে ধাওয়া করে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অপরাধীর বিচার ও শাস্তি নির্ধারণের জন্য দেশে আইন-আদালত রয়েছে। সন্দেহের বশবর্তী হয়ে বা রাগ ও উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অপসংস্কৃতি দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
আমাদের সমাজে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থার অভাব একটি উদ্বেগজনক বিষয়। গণপিটুনির ঘটনা কেন ঘটে সেটা একটা প্রশ্ন। নানান কারণে মানুষ আইনি সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে সংশয়ে থাকে। আইন-আদালতের দ্বারস্থ হলে ন্যায়বিচার মিলবে না- এমন ধারণা পোষণ করা মানুষের সংখ্যা কম নয়। এ ধারণা অনেককে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে প্ররোচিত করে। আমরা বলতে চাই, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনো সমাধান নয়; বরং এটি সমাজে আরো বেশি সহিংসতা ও অরাজকতা সৃষ্টি করে।
কোথাও কোনো অপরাধ ঘটলে সেক্ষেত্রে নাগরিকদের দায়িত্ব হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করা, যাতে অপরাধীকে যথাযথ আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার করা যায়। একজন অপরাধীরও আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার আছে। গণপিটুনির মতো বর্বরোচিত ঘটনা মানবাধিকারের মৌলিক ধারণাগুলোর পরিপন্থি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অপরাধীদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারের সম্মুখীন করা সমাজের সব মানুষের দায়িত্ব।
আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার। জনগণকে আইন মেনে চলার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। এজন্য দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। জনগণ তখন আইন মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ হবে যখন তারা দেখবে যে, দেশের আইন-আদালত ঠিকঠাক কাজ করছে।
শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪
নড়াইলে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। গণপিটুনি আমাদের সমাজে একটি মামুলি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এ অপসংস্কৃতি আইনের শাসনের ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গরু চুরি কিংবা অন্য কোনো অপরাধের জন্য মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করার মানসিকতা একদিকে যেমন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন, তেমনি আইনের শাসনের প্রতি অনাস্থাও প্রকাশ করে।
এবারের ঘটনায় দেখা যাচ্ছেÑ দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী গরু চুরির সমস্যায় ভুগছিলেন। এজন্য তারা রাত জেগে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। চুরি ঠেকাতে কেউ স্বেচ্ছায় পাহারা দিতে পারেন, তবে কুকুর ডাকার শব্দে চোর সন্দেহে তিন ব্যক্তিকে ধাওয়া করে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অপরাধীর বিচার ও শাস্তি নির্ধারণের জন্য দেশে আইন-আদালত রয়েছে। সন্দেহের বশবর্তী হয়ে বা রাগ ও উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অপসংস্কৃতি দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
আমাদের সমাজে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থার অভাব একটি উদ্বেগজনক বিষয়। গণপিটুনির ঘটনা কেন ঘটে সেটা একটা প্রশ্ন। নানান কারণে মানুষ আইনি সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে সংশয়ে থাকে। আইন-আদালতের দ্বারস্থ হলে ন্যায়বিচার মিলবে না- এমন ধারণা পোষণ করা মানুষের সংখ্যা কম নয়। এ ধারণা অনেককে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে প্ররোচিত করে। আমরা বলতে চাই, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনো সমাধান নয়; বরং এটি সমাজে আরো বেশি সহিংসতা ও অরাজকতা সৃষ্টি করে।
কোথাও কোনো অপরাধ ঘটলে সেক্ষেত্রে নাগরিকদের দায়িত্ব হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করা, যাতে অপরাধীকে যথাযথ আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার করা যায়। একজন অপরাধীরও আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার আছে। গণপিটুনির মতো বর্বরোচিত ঘটনা মানবাধিকারের মৌলিক ধারণাগুলোর পরিপন্থি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে অপরাধীদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারের সম্মুখীন করা সমাজের সব মানুষের দায়িত্ব।
আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার। জনগণকে আইন মেনে চলার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। এজন্য দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। জনগণ তখন আইন মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ হবে যখন তারা দেখবে যে, দেশের আইন-আদালত ঠিকঠাক কাজ করছে।