ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা দেশে সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ। পাঁচ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের শিল্প-সংস্কৃতির ওপর হামলা-আক্রমণ ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঁচ আগস্টের পর দেশের অন্তত ২২ জেলা ও উপজেলার শিল্পকলা একাডেমিতে হামলা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এমন নয় যে, শিল্প-সংস্কৃতির ওপর অতীতে হামলা হয়নি। তবে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের শিল্প-সংস্কৃতি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নাগরিকদের বিচলিত করেছে। সব বৈষম্যের অবসান ঘটানোর আকাক্সক্ষা নিয়ে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে গুটিকয়েক লোকের কারণে শিল্প-সংস্কৃতি আক্রান্ত হচ্ছে। কয়েকজন লোক শিল্পকলায় গিয়ে নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়েছে। চট্টগ্রামে ‘ব্যবসায়ী ও তৌহিদি জনতা’র বাধায় একটি শোরুম উদ্বোধন করতে পারেননি অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। অথচ তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
এসব ঘটনা দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কোনো শুভ সংকেত দিচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, একটি গোষ্ঠী ধর্মের নামে জোরজবরদস্তি করছে। সমাজের সব অংশের সব মানুষ সমানভাবে সবকিছু পছন্দ করবে নাÑ সেটা স্বাভাবিক। তবে নিজেদের পছন্দ নয় বলে কোনো একটি গোষ্ঠী কারও সংস্কৃতিচর্চায় বিঘœ ঘটাবে, জোর করে সংস্কৃতিচর্চা বন্ধ করবে সেটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। এসবের জন্য একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। শিল্প-সংস্কৃতিবিরোধী কর্মকা-ের সঙ্গে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের চেতনাও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
শিল্পকলা একাডেমিতে নাটকের প্রদর্শনী বন্ধের ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার নিন্দা জানিয়েছে। সরকার বলেছে, তারা এ ধরনের ঘটনাকে সর্মথন করে না। আমরা বলতে চাই, কেবল মুখের কথায় দায় সারলে চলবে না। নাটক বন্ধের ঘটনা কেন ঘটেছে সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। শিল্প-সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের সব ঘটনার বিচার করতে হবে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
দেশে অবাধ সংস্কৃতিচর্চার পরিবেশ সরকারকেই সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো বাধা যেন না আসে সেটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। দেশে কোনো কারণে সংস্কৃতি চর্চা বা স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ সংকুচিত হোক সেটা আমরা চাই না।
মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪
ঢাকার শিল্পকলা একাডেমিতে ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা দেশে সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ। পাঁচ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের শিল্প-সংস্কৃতির ওপর হামলা-আক্রমণ ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঁচ আগস্টের পর দেশের অন্তত ২২ জেলা ও উপজেলার শিল্পকলা একাডেমিতে হামলা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এমন নয় যে, শিল্প-সংস্কৃতির ওপর অতীতে হামলা হয়নি। তবে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের শিল্প-সংস্কৃতি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নাগরিকদের বিচলিত করেছে। সব বৈষম্যের অবসান ঘটানোর আকাক্সক্ষা নিয়ে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে গুটিকয়েক লোকের কারণে শিল্প-সংস্কৃতি আক্রান্ত হচ্ছে। কয়েকজন লোক শিল্পকলায় গিয়ে নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ করে দিয়েছে। চট্টগ্রামে ‘ব্যবসায়ী ও তৌহিদি জনতা’র বাধায় একটি শোরুম উদ্বোধন করতে পারেননি অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। অথচ তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
এসব ঘটনা দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কোনো শুভ সংকেত দিচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, একটি গোষ্ঠী ধর্মের নামে জোরজবরদস্তি করছে। সমাজের সব অংশের সব মানুষ সমানভাবে সবকিছু পছন্দ করবে নাÑ সেটা স্বাভাবিক। তবে নিজেদের পছন্দ নয় বলে কোনো একটি গোষ্ঠী কারও সংস্কৃতিচর্চায় বিঘœ ঘটাবে, জোর করে সংস্কৃতিচর্চা বন্ধ করবে সেটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। এসবের জন্য একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। শিল্প-সংস্কৃতিবিরোধী কর্মকা-ের সঙ্গে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের চেতনাও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
শিল্পকলা একাডেমিতে নাটকের প্রদর্শনী বন্ধের ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার নিন্দা জানিয়েছে। সরকার বলেছে, তারা এ ধরনের ঘটনাকে সর্মথন করে না। আমরা বলতে চাই, কেবল মুখের কথায় দায় সারলে চলবে না। নাটক বন্ধের ঘটনা কেন ঘটেছে সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। শিল্প-সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের সব ঘটনার বিচার করতে হবে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
দেশে অবাধ সংস্কৃতিচর্চার পরিবেশ সরকারকেই সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো বাধা যেন না আসে সেটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। দেশে কোনো কারণে সংস্কৃতি চর্চা বা স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ সংকুচিত হোক সেটা আমরা চাই না।