মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
ইউনিসেফের তথ্যমতে, বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোতে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনেরও কিছু বেশি শিশুশ্রমে নিয়োজিত হয়। আর বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন শিশু শিশুশ্রমের শিকার হয়। শিশুশ্রম ও ঝরে পড়া কমাতে বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। শিক্ষার পরিবেশকে আনন্দমুখর করেছে। শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথম দিনেই রঙিন বই তুলে দেয়া, উপবৃত্তি কার্যক্রম, স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠন, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট করতে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হচ্ছে। তবুও শিশুশ্রম রোধ করা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ জাতীয় শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সি শিশুদের কাজ করানো হলে তা শিশুশ্রম হিসাবে গণ্য হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ভাষ্যমতে, শিশুদের দ্বারা করা সব কাজকে শিশু শ্রম হিসাবে গণ্য করা যাবে না। স্বাস্থ্য ও ব্যাক্তিগত বিকাশকে প্রভাবিত করে না, পড়ালেখায় হস্তক্ষেপ করে না, পারিবারিক ব্যবসায় সহায়তা, স্কুলের বাইরের সময় নিজেকে বিকশিত করে এমন কর্মকান্ডকে সরাসরি শিশুশ্রম হিসাবে গণ্য করা যাবে না। শিশুর মানসিক, শারীরিক, সামাজিক, বিপজ্জনক কাজ, স্কুলে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে কিংবা স্কুল ত্যাগ করতে বাধ্য করে অথবা তাদের সম্ভাবনা, মর্যাদা ও সুরক্ষা থেকে দূরে রাখে এমন সব কিছু শিশুশ্রমের আওতাভুক্ত। শিশুর বয়স, কাজের ধরণ, সময় ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে শিশুশ্রম।
কোভিড মহামারীর ব্যাপকহারে প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। অর্থনৈতিক টানাপোড়েনসহ দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে অনেক পরিবার তাদের শিশু সন্তানদের কাজে পাঠিয়েছেন। অল্প মজুরিতে বেশি কাজ আদায়ের লক্ষ্যে অনেক মালিকপক্ষ শিশু শ্রমিকদের সর্বোত্তম হিসাবে মনে করে। অনেক সময় শিশু শ্রমিকদের দিয়ে মাদক আদান-প্রদান, বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড ঘটিয়ে থাকে। সমাজে কিশোর গ্যাংয়ের যে আধিপত্য তারও পিছনে শিশু শ্রমের অনেকটাই দায়ী। অল্প বয়সে তাদের টাকা হাতে আসার কারণে পারিবারিক, সামাজিক যথাযথ অভিভাবক না থাকার কারণে শিশু বয়স থেকে মাদকাসক্তসহ নানাবিধ অপরাধ কর্মকান্ড ঘটিয়ে থাকে। অনেক কথিত বড় ভাইদের ছত্রছায়ায় বড় হয়ে একদিন বড় মাপের অপরাধী হয়।
শিশুদের যথাযথ নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে এবং সুন্দর, বাসযোগ্য, সুস্থ, মানসিক ও দৈহিক বিকাশে পুষ্টিকর খাদ্য ও চিকিৎসা, বিনোদন, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সোনার বাংলাদেশ গড়তে শিশুশ্রম রোধ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সামাজিক, রাজনৈতিক বিশেষভাবে পারিবারিক সচেতনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আইনের যথাযথ প্রয়োগসহ শিশুশ্রমে উৎসাহ, শিশু কর্মী নিয়োগদাতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
মাহবুবুর রহমান সুজন
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম আইন কলেজ
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ০৫ নভেম্বর ২০২২
ইউনিসেফের তথ্যমতে, বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোতে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনেরও কিছু বেশি শিশুশ্রমে নিয়োজিত হয়। আর বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন শিশু শিশুশ্রমের শিকার হয়। শিশুশ্রম ও ঝরে পড়া কমাতে বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে। শিক্ষার পরিবেশকে আনন্দমুখর করেছে। শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথম দিনেই রঙিন বই তুলে দেয়া, উপবৃত্তি কার্যক্রম, স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠন, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট করতে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হচ্ছে। তবুও শিশুশ্রম রোধ করা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ জাতীয় শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সি শিশুদের কাজ করানো হলে তা শিশুশ্রম হিসাবে গণ্য হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ভাষ্যমতে, শিশুদের দ্বারা করা সব কাজকে শিশু শ্রম হিসাবে গণ্য করা যাবে না। স্বাস্থ্য ও ব্যাক্তিগত বিকাশকে প্রভাবিত করে না, পড়ালেখায় হস্তক্ষেপ করে না, পারিবারিক ব্যবসায় সহায়তা, স্কুলের বাইরের সময় নিজেকে বিকশিত করে এমন কর্মকান্ডকে সরাসরি শিশুশ্রম হিসাবে গণ্য করা যাবে না। শিশুর মানসিক, শারীরিক, সামাজিক, বিপজ্জনক কাজ, স্কুলে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে কিংবা স্কুল ত্যাগ করতে বাধ্য করে অথবা তাদের সম্ভাবনা, মর্যাদা ও সুরক্ষা থেকে দূরে রাখে এমন সব কিছু শিশুশ্রমের আওতাভুক্ত। শিশুর বয়স, কাজের ধরণ, সময় ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে শিশুশ্রম।
কোভিড মহামারীর ব্যাপকহারে প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। অর্থনৈতিক টানাপোড়েনসহ দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে অনেক পরিবার তাদের শিশু সন্তানদের কাজে পাঠিয়েছেন। অল্প মজুরিতে বেশি কাজ আদায়ের লক্ষ্যে অনেক মালিকপক্ষ শিশু শ্রমিকদের সর্বোত্তম হিসাবে মনে করে। অনেক সময় শিশু শ্রমিকদের দিয়ে মাদক আদান-প্রদান, বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড ঘটিয়ে থাকে। সমাজে কিশোর গ্যাংয়ের যে আধিপত্য তারও পিছনে শিশু শ্রমের অনেকটাই দায়ী। অল্প বয়সে তাদের টাকা হাতে আসার কারণে পারিবারিক, সামাজিক যথাযথ অভিভাবক না থাকার কারণে শিশু বয়স থেকে মাদকাসক্তসহ নানাবিধ অপরাধ কর্মকান্ড ঘটিয়ে থাকে। অনেক কথিত বড় ভাইদের ছত্রছায়ায় বড় হয়ে একদিন বড় মাপের অপরাধী হয়।
শিশুদের যথাযথ নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে এবং সুন্দর, বাসযোগ্য, সুস্থ, মানসিক ও দৈহিক বিকাশে পুষ্টিকর খাদ্য ও চিকিৎসা, বিনোদন, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সোনার বাংলাদেশ গড়তে শিশুশ্রম রোধ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সামাজিক, রাজনৈতিক বিশেষভাবে পারিবারিক সচেতনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আইনের যথাযথ প্রয়োগসহ শিশুশ্রমে উৎসাহ, শিশু কর্মী নিয়োগদাতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
মাহবুবুর রহমান সুজন
শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম আইন কলেজ