alt

সম্পাদকীয়

বোরো চাষে জলাবদ্ধতার সংকট : খুলনাঞ্চলে কৃষির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

: মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

খুলনাঞ্চলের অন্তত ৬০টি বিল জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত। এর ফলে এই অঞ্চলের কৃষি, বিশেষত বোরো ধানের চাষ, চরম সংকটে পড়েছে। পলি জমে নদ-নদীর নাব্য কমে যাওয়া, অপরিকল্পিত খনন এবং জলকপাটের অকার্যকারিতা জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ সংকট কৃষকের জীবিকা, কৃষি উৎপাদন এবং সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

কৃষি পঞ্জিকানুযায়ী, নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বোরো মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু খুলনার বিভিন্ন উপজেলার বিলে জমে থাকা পানি এখনও সরছে না। যদি আসামি তিন সপ্তাহে এ জলাবদ্ধতা নিরসন না হয়, তবে বোরো মৌসুম হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ডুমুরিয়া, ফুলতলা, পাইকগাছা এবং যশোরের ভবদহসহ অন্যান্য এলাকায় ৯৬ হাজার হেক্টর জমি এখনও পানির নিচে। এর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বোরো ধানের জন্য নির্ধারিত।

জলাবদ্ধতার কারণে খুলনার প্রায় অর্ধ লাখ কৃষক তাদের জমিতে ধান চাষ করতে পারছেন না। ভবদহ অঞ্চলের ৩ লাখ মানুষ দীর্ঘ চার দশক ধরে জলাবদ্ধতায় ভুগছেন। চলতি মৌসুমে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। শুধু যশোরের ভবদহেই ২৮ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে চাষিরা একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন, তেমনি খাদ্য উৎপাদনেও বড় ধরনের ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২৫টি পাম্প স্থাপন করেছে এবং আরও ১৫টি পাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। পাইকগাছার বাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস মিলেছে। ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরও তা কার্যকর হয়নি।

জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। স্থানীয় নদ-নদীগুলোর ড্রেজিং ও খনন কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। খাল ও নদীর সংযোগ স্থাপন এবং জলকপাটগুলো মেরামত ও পুনঃস্থাপন জরুরি। ভবদহ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জন্য টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) দ্রুত কার্যকর করা উচিত।

খুলনাঞ্চলের কৃষি সংকট একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। এ সংকট নিরসনে সময়োচিত পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে, কৃষির পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের জীবনমানও ক্রমাগত অবনতির দিকে যাবে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, কৃষক, এবং স্থানীয় জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।

পাহাড়ে বৈষম্য দূর করতে শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দরকার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় তাহলে কার?

এইডস : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

ডেঙ্গুতে নভেম্বরে রেকর্ড মৃত্যু : সতর্কতার সময় এখনই

রাজধানীতে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি : দায় কার

সয়াবিন তেল সংকট : কারসাজি অভিযোগের সুরাহা করুন

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য

সাত কলেজের চতুর্থ বর্ষে ফাইনাল পরীক্ষায় সময় বিভ্রাট

রেলওয়ের জমির অপব্যবহার কাম্য নয়

গ্রাহক সেবায় কেন পিছিয়ে তিতাস গ্যাস

মহাসড়কে ময়লার ভাগাড় : পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের সংকট

নারীর প্রতি সহিংসতার শেষ কোথায়

জনস্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীনতা : চিকিৎসা যন্ত্রপাতির অপব্যবহার

অবৈধ রেলক্রসিং : মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জরুরি ব্যবস্থা

রক্তদহ বিল : পরিবেশ বিপর্যয়ের করুণ চিত্র

পোশাক শিল্পে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ কমছে কেন, প্রতিকার কী

পিপিআর নির্মূল ও ক্ষুরা রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

বাকু জলবায়ু সম্মেলন ও উন্নয়নশীল দেশের অধিকার

সেতুটি সংস্কার করুন

চট্টগ্রামে খাবার পানির নমুনায় টাইফয়েডের জীবাণু : জনস্বাস্থ্যের জন্য অশুভ বার্তা

কুকুরের কামড় : ভ্যাকসিনের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করুন

লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি : জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি

পরিযায়ী পাখি রক্ষা করতে হবে

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে উপকূল

সেতুগুলো চলাচল উপযোগী করুন

ব্যাটারিচালিত রিকশা : সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে

বীজ আলুর বাড়তি দামে কৃষকের হতাশা

টেকসই স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক সংকট দূর করা জরুরি

সাময়িকী কবিতা

ফলে রাসায়নিক ব্যবহার : জনস্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি

নারায়ণগঞ্জে লালন মেলা আয়োজনে বাধা, কেন?

গৌরীপুরের রেলস্টেশনের বেহাল দশা : পরিকল্পনার অভাবে হারাচ্ছে সম্ভাবনা

অযত্ন-অবহেলায় বেহাল রায়পুর উপজেলা প্রশাসন শিশুপার্ক

আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা কাম্য নয়

জলমহালে লোনা পানি, কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি

খাদ্যগুদামে অনিয়ম কাম্য নয়

tab

সম্পাদকীয়

বোরো চাষে জলাবদ্ধতার সংকট : খুলনাঞ্চলে কৃষির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

খুলনাঞ্চলের অন্তত ৬০টি বিল জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত। এর ফলে এই অঞ্চলের কৃষি, বিশেষত বোরো ধানের চাষ, চরম সংকটে পড়েছে। পলি জমে নদ-নদীর নাব্য কমে যাওয়া, অপরিকল্পিত খনন এবং জলকপাটের অকার্যকারিতা জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ সংকট কৃষকের জীবিকা, কৃষি উৎপাদন এবং সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

কৃষি পঞ্জিকানুযায়ী, নভেম্বরের শেষ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বোরো মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু খুলনার বিভিন্ন উপজেলার বিলে জমে থাকা পানি এখনও সরছে না। যদি আসামি তিন সপ্তাহে এ জলাবদ্ধতা নিরসন না হয়, তবে বোরো মৌসুম হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ডুমুরিয়া, ফুলতলা, পাইকগাছা এবং যশোরের ভবদহসহ অন্যান্য এলাকায় ৯৬ হাজার হেক্টর জমি এখনও পানির নিচে। এর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বোরো ধানের জন্য নির্ধারিত।

জলাবদ্ধতার কারণে খুলনার প্রায় অর্ধ লাখ কৃষক তাদের জমিতে ধান চাষ করতে পারছেন না। ভবদহ অঞ্চলের ৩ লাখ মানুষ দীর্ঘ চার দশক ধরে জলাবদ্ধতায় ভুগছেন। চলতি মৌসুমে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। শুধু যশোরের ভবদহেই ২৮ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে চাষিরা একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন, তেমনি খাদ্য উৎপাদনেও বড় ধরনের ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জলাবদ্ধতা নিরসনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২৫টি পাম্প স্থাপন করেছে এবং আরও ১৫টি পাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। পাইকগাছার বাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস মিলেছে। ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরও তা কার্যকর হয়নি।

জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। স্থানীয় নদ-নদীগুলোর ড্রেজিং ও খনন কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। খাল ও নদীর সংযোগ স্থাপন এবং জলকপাটগুলো মেরামত ও পুনঃস্থাপন জরুরি। ভবদহ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জন্য টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) দ্রুত কার্যকর করা উচিত।

খুলনাঞ্চলের কৃষি সংকট একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। এ সংকট নিরসনে সময়োচিত পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে, কৃষির পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের জীবনমানও ক্রমাগত অবনতির দিকে যাবে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, কৃষক, এবং স্থানীয় জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।

back to top