বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার (২৩ মার্চ) দিনভর ছিল উত্তেজনা। ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অ্যাডহক নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) একাংশ। সকাল ৯টার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষও চলে।
বিক্ষোভ চলাকালে আন্দোলনকারীরা ভিসির ব্যক্তিগত সহকারী ডা. মো. রাসেলকে ভিসির কার্যালয় থেকে টেনে-হেঁচড়ে বের করে চড় থাপ্পড় দিয়ে ৩ নম্বর গেট দিয়ে বের করে দেন।
এই সময় ভিসি সমর্থক আরও ৮ থেকে ১০ জনকে মারধর করা হয়। ভিসি কার্যালয় থেকে শুরু করে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালসহ বিভিন্ন বিভাগে ঘটে এসব মারপিটের ঘটনা।
মারপিটের সময় ভার্সিটির সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ভিসির স্পেশাল অ্যাসান্টমেন্ট অফিসার আশিকুর রহমান বিপ্লবকে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ১৫ থেকে ২০ জন চিহ্নিত কর্মচারী তার রুম থেকে টেনে-হেঁচড়ে বের করে মারধর করতে করতে নিচে নামায়। পরে তাকে ভার্সিটির ২ নম্বর গেট দিয়ে বের করে দেয়। আর অফিসে গেলে তার হাত-পা ভেঙে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়েছে তাকে। তিনি বিষয়টি লিখিতভাবে প্রক্টরকে জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই কর্মস্থলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকে কান্নাকাটিও করেছেন বলেও জানা গেছে।
এ সময় ভিসি যাতে কোনোভাবে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট মিটিং করতে না পারে সেজন্য বিক্ষোভরত ডাক্তারদের একটি অংশ ভিসি অফিসের সামনে নিচে ডা. মিল্টন হলের সামনে অবস্থান নেন। তারা ভিসির দুর্নীতি, অনিয়মের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন।
স্বাচিপ সমর্থক ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের এই ত্রিমুখী সংঘর্ষে পরিস্থিতির চরমে ওঠার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ভিসির অনিয়মের বিরুদ্বে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার স্বাচিপের সদস্য সচিব ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, গত ১১ মার্চ মেডিকেল ভার্সিটিতে নতুন ভিসির প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। আগামী ২৯ মার্চ নতুন ভিসি দায়িত্ব নেবেন। প্রজ্ঞাপণ জারির পর বর্তমান ভিসির শুধু রুটিন কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ভিসি ডা. শারফুদ্দিন কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ভার্সিটিতে অ্যাডহক ভিত্তিতে ১০০ মতো ডাক্তার ছাড়াও কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ ও চাকরি স্থায়ী করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।
তিনি শেষ মুহূর্তে একাডেমি কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে তা কার্যকর চেষ্টা করছেন। আমরা তা না করতে বার বার অনুরোধ করছি। এরপর একটি অংশ বলছে, বাইরে থেকে কেন ভিসি আসবে। এটা ঠিক না। আমরা বলছি, প্রধানমন্ত্রী যাকেই ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তাকেই আমরা মেনে নেব।
এরপর ভিসি ডা. শারফুদ্দিন কারো কথা না শুনে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য করতে নানাভাবে চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এই জন্য শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ভিসি কার্যালয়ের নিচে মিল্টন হলে অবস্থান করছি। ওই সময় দোতলায় কর্মচারী ও নার্সরা বিক্ষোভ মিছিল করে।
এই স্বাচিপ নেতার দাবি, ভিসি শারফুদ্দিনের অনিয়মের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। তাই তার দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার তিনি জোর দাবি দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য শরফুদ্দিন আহমেদ সংবাদকে বলেছেন, তারা কয়েকজনকে মারধর করেছে। ভার্সিটিতে কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। তার মধ্যে একজন সুবিধা নিয়েছে। আরেকজন সুবিধা চেয়েছে। দিতে পারেনি। তারা সংঘর্ষ ও সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে।
ভার্সিটির রেজিস্ট্রার সংবাদকে বলেছেন, সংঘর্ষ চলাকালে ডা. রাসেল ও শিপন, আশিকসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা ভিসির রুমে ও ঢুকেছে বাইরেও ছিল। হৈ চৈ হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঝামেলা ছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
স্বাচিপের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন নেতার অভিযোগ, তার আমলের নিয়োগগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। শেষ মুহূর্তে আরও শতাধিক শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী অ্যাডহকের মাধ্যমে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ বাণিজ্যের এই অভিযোগের কারণেই স্বাচিপের নেতারা বিক্ষোভ করছেন।
ব্যক্তিগত সহকারী ডা. রাসেলকে মারধর সম্পর্কে বর্তমান ভিসি তার মতামত জানতে চাইলে তিনি টেলিফোনে কথা বলতে অস্বীকার করেন।
ভার্সিটির একজন প্রো-ভিসি সংবাদকে জানান, ভার্সিটিতে চরম অরাজকতা চলছে। একটি অংশ ভার্সিটিকে ডুবিয়েছে। এটাকে টেনে উঠানো কষ্টকর হবে। খুবই খারাপ অবস্থা চলছে।
শাহবাগ থানার ওসি সংবাদকে জানান, ভার্সিটির ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি প্রবীণ চিকিৎসক ডা. ইকবাল আর্সলান সংবাদকে জানায়, যে ঘটনা ঘটেছে-তাতে আমি সাবেক শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত।
এই সম্পর্কে শনিবার রাতে ভার্সিটির প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার (২৩ মার্চ) দিনভর ছিল উত্তেজনা। ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অ্যাডহক নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) একাংশ। সকাল ৯টার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষও চলে।
বিক্ষোভ চলাকালে আন্দোলনকারীরা ভিসির ব্যক্তিগত সহকারী ডা. মো. রাসেলকে ভিসির কার্যালয় থেকে টেনে-হেঁচড়ে বের করে চড় থাপ্পড় দিয়ে ৩ নম্বর গেট দিয়ে বের করে দেন।
এই সময় ভিসি সমর্থক আরও ৮ থেকে ১০ জনকে মারধর করা হয়। ভিসি কার্যালয় থেকে শুরু করে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালসহ বিভিন্ন বিভাগে ঘটে এসব মারপিটের ঘটনা।
মারপিটের সময় ভার্সিটির সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও ভিসির স্পেশাল অ্যাসান্টমেন্ট অফিসার আশিকুর রহমান বিপ্লবকে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ১৫ থেকে ২০ জন চিহ্নিত কর্মচারী তার রুম থেকে টেনে-হেঁচড়ে বের করে মারধর করতে করতে নিচে নামায়। পরে তাকে ভার্সিটির ২ নম্বর গেট দিয়ে বের করে দেয়। আর অফিসে গেলে তার হাত-পা ভেঙে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়েছে তাকে। তিনি বিষয়টি লিখিতভাবে প্রক্টরকে জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই কর্মস্থলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকে কান্নাকাটিও করেছেন বলেও জানা গেছে।
এ সময় ভিসি যাতে কোনোভাবে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট মিটিং করতে না পারে সেজন্য বিক্ষোভরত ডাক্তারদের একটি অংশ ভিসি অফিসের সামনে নিচে ডা. মিল্টন হলের সামনে অবস্থান নেন। তারা ভিসির দুর্নীতি, অনিয়মের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন।
স্বাচিপ সমর্থক ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের এই ত্রিমুখী সংঘর্ষে পরিস্থিতির চরমে ওঠার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ভিসির অনিয়মের বিরুদ্বে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার স্বাচিপের সদস্য সচিব ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, গত ১১ মার্চ মেডিকেল ভার্সিটিতে নতুন ভিসির প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। আগামী ২৯ মার্চ নতুন ভিসি দায়িত্ব নেবেন। প্রজ্ঞাপণ জারির পর বর্তমান ভিসির শুধু রুটিন কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ভিসি ডা. শারফুদ্দিন কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ভার্সিটিতে অ্যাডহক ভিত্তিতে ১০০ মতো ডাক্তার ছাড়াও কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ ও চাকরি স্থায়ী করার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।
তিনি শেষ মুহূর্তে একাডেমি কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে তা কার্যকর চেষ্টা করছেন। আমরা তা না করতে বার বার অনুরোধ করছি। এরপর একটি অংশ বলছে, বাইরে থেকে কেন ভিসি আসবে। এটা ঠিক না। আমরা বলছি, প্রধানমন্ত্রী যাকেই ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তাকেই আমরা মেনে নেব।
এরপর ভিসি ডা. শারফুদ্দিন কারো কথা না শুনে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য করতে নানাভাবে চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এই জন্য শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ভিসি কার্যালয়ের নিচে মিল্টন হলে অবস্থান করছি। ওই সময় দোতলায় কর্মচারী ও নার্সরা বিক্ষোভ মিছিল করে।
এই স্বাচিপ নেতার দাবি, ভিসি শারফুদ্দিনের অনিয়মের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। তাই তার দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার তিনি জোর দাবি দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপাচার্য শরফুদ্দিন আহমেদ সংবাদকে বলেছেন, তারা কয়েকজনকে মারধর করেছে। ভার্সিটিতে কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। তার মধ্যে একজন সুবিধা নিয়েছে। আরেকজন সুবিধা চেয়েছে। দিতে পারেনি। তারা সংঘর্ষ ও সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে।
ভার্সিটির রেজিস্ট্রার সংবাদকে বলেছেন, সংঘর্ষ চলাকালে ডা. রাসেল ও শিপন, আশিকসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা ভিসির রুমে ও ঢুকেছে বাইরেও ছিল। হৈ চৈ হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঝামেলা ছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
স্বাচিপের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন নেতার অভিযোগ, তার আমলের নিয়োগগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। শেষ মুহূর্তে আরও শতাধিক শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারী অ্যাডহকের মাধ্যমে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ বাণিজ্যের এই অভিযোগের কারণেই স্বাচিপের নেতারা বিক্ষোভ করছেন।
ব্যক্তিগত সহকারী ডা. রাসেলকে মারধর সম্পর্কে বর্তমান ভিসি তার মতামত জানতে চাইলে তিনি টেলিফোনে কথা বলতে অস্বীকার করেন।
ভার্সিটির একজন প্রো-ভিসি সংবাদকে জানান, ভার্সিটিতে চরম অরাজকতা চলছে। একটি অংশ ভার্সিটিকে ডুবিয়েছে। এটাকে টেনে উঠানো কষ্টকর হবে। খুবই খারাপ অবস্থা চলছে।
শাহবাগ থানার ওসি সংবাদকে জানান, ভার্সিটির ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি প্রবীণ চিকিৎসক ডা. ইকবাল আর্সলান সংবাদকে জানায়, যে ঘটনা ঘটেছে-তাতে আমি সাবেক শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত।
এই সম্পর্কে শনিবার রাতে ভার্সিটির প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।