বছরজুড়েই বিভিন্ন সেবা সংস্থা রাজধানী ঢাকার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে। এক সংস্থা রাস্তা ঠিক করে যায়, অন্য সংস্থা আবার সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে। ফলে নগরজীবনে নিত্যসঙ্গী হয়ে থাকে ভোগান্তি। সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে ভিবিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে ২০১৯ সালের ‘ঢাকা মহানগরীর সড়ক খনন নীতিমালা’ প্রণীত হয়। দুই সিটি করপোরেশন ছাড়াও ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, ডেসকো, বিটিসিএলের মতামত ও সুপারিশ নিয়ে এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি থেকে মেরামত পর্যন্ত সমন্বয় ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা। যাতে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি না হয়।
নীতিমালায় আছে, রাজধানীতে দিনের বেলায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। বর্ষা মৌসুমে (মে-সেপ্টেম্বর) কোনো সড়ক মেরামত করা যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে খনন করতে হলে মূল ক্ষতিপূরণসহ অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ ফি দিতে হবে। আর কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে খোঁড়াখুঁড়ির জরিমানা দিতে হবে মূল খরচের পাঁচগুণ। তাছাড়া সড়কে কাজ করার কমপক্ষে সাত দিন আগে প্রচার-প্রচারণা, কাজের বিবরণের সাইনবোর্ড লাগানো, একসঙ্গে বা মাসের পর মাস কোন সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি না করা, নিয়মিত পানি ছিটানো, সড়কে মালামাল মজুত না করাসহ বিভিন্ন নিয়মকানুন নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে। নীতিমালার কোনো শর্তে ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার জরিমানা বা শাস্তি দেয়ারও বিধান রয়েছে। তবে নীতিমালা ভাঙার জন্য আজ পর্যন্ত কাউকে কোন জরিমানা করা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। শুধু কাগজে কলমেই এসব কথা বলা আছে।
নীতিমালাটি সেবা সংস্থা ও ঠিকাদাররা ঠিকমতো অনুসরণ করছে কিনা, তার তদারকি করতে দুই সিটি করপোরেশন গঠন করেছিল ওয়ান স্টপ সেল। কিন্তু তার সুফল মেলেনি। যার যখন খুশি উন্নয়নের নামে রাস্তা খোঁড়ে। বছরের পর বছর পার হয়ে যায় কিন্তু উন্নয়ন কাজ শেষ হয় না, নগরবাসীকে এর সুফলও ভোগ করতে দেখা যায় না। বরং নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বায়ুদূষণ আর যানজট নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বর্ষায় হচ্ছে জলাবদ্ধতা, ঘটছে দুর্ঘটনা। বারবার খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রাষ্ট্রের অর্থের শ্রাদ্ধ তো হচ্ছেই।
সমন্বয় করে কাজ করলে রাস্তা বারবার খুঁড়তে হতো না। এতে মানুষকে ভোগান্তিতে যেমন পড়তে হতো না, তেমনি রাষ্ট্রের অর্থেরও অপচয় হতো না। কিন্তু যারা খোঁড়াখুঁড়ি করে তাদের না আছে রাষ্ট্রের অর্থ বাঁচানোর চিন্তা, না আছে মনুষের ভোগান্তি লাঘব করার চেষ্টা। অভিযোগ আছে, খেয়াল-খুশি মতো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করলে একটি গোষ্ঠীর পকেট ভারী হয়।
আমরা বলতে চাই, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির যে নীতিমালা করা হয়েছে সেটা বাস্তবায়ন করা হোক। নীতিমালা মেনে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হোক। রাস্তা খুঁড়তে হবে নীতিমালা মেনে, সেটা যদি নাই হয়, আগের মতো বিভিন্ন সংস্থা যদি সমন্বয়হীনভাবে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে, তাহলে নীতিমালা বাতিল করা হোক। নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে না পারার ব্যর্থতা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিক।
শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১
বছরজুড়েই বিভিন্ন সেবা সংস্থা রাজধানী ঢাকার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে। এক সংস্থা রাস্তা ঠিক করে যায়, অন্য সংস্থা আবার সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে। ফলে নগরজীবনে নিত্যসঙ্গী হয়ে থাকে ভোগান্তি। সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে ভিবিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে ২০১৯ সালের ‘ঢাকা মহানগরীর সড়ক খনন নীতিমালা’ প্রণীত হয়। দুই সিটি করপোরেশন ছাড়াও ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, ডেসকো, বিটিসিএলের মতামত ও সুপারিশ নিয়ে এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি থেকে মেরামত পর্যন্ত সমন্বয় ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা। যাতে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি না হয়।
নীতিমালায় আছে, রাজধানীতে দিনের বেলায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না। বর্ষা মৌসুমে (মে-সেপ্টেম্বর) কোনো সড়ক মেরামত করা যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে খনন করতে হলে মূল ক্ষতিপূরণসহ অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ ফি দিতে হবে। আর কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে খোঁড়াখুঁড়ির জরিমানা দিতে হবে মূল খরচের পাঁচগুণ। তাছাড়া সড়কে কাজ করার কমপক্ষে সাত দিন আগে প্রচার-প্রচারণা, কাজের বিবরণের সাইনবোর্ড লাগানো, একসঙ্গে বা মাসের পর মাস কোন সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি না করা, নিয়মিত পানি ছিটানো, সড়কে মালামাল মজুত না করাসহ বিভিন্ন নিয়মকানুন নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে। নীতিমালার কোনো শর্তে ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার জরিমানা বা শাস্তি দেয়ারও বিধান রয়েছে। তবে নীতিমালা ভাঙার জন্য আজ পর্যন্ত কাউকে কোন জরিমানা করা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। শুধু কাগজে কলমেই এসব কথা বলা আছে।
নীতিমালাটি সেবা সংস্থা ও ঠিকাদাররা ঠিকমতো অনুসরণ করছে কিনা, তার তদারকি করতে দুই সিটি করপোরেশন গঠন করেছিল ওয়ান স্টপ সেল। কিন্তু তার সুফল মেলেনি। যার যখন খুশি উন্নয়নের নামে রাস্তা খোঁড়ে। বছরের পর বছর পার হয়ে যায় কিন্তু উন্নয়ন কাজ শেষ হয় না, নগরবাসীকে এর সুফলও ভোগ করতে দেখা যায় না। বরং নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বায়ুদূষণ আর যানজট নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বর্ষায় হচ্ছে জলাবদ্ধতা, ঘটছে দুর্ঘটনা। বারবার খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রাষ্ট্রের অর্থের শ্রাদ্ধ তো হচ্ছেই।
সমন্বয় করে কাজ করলে রাস্তা বারবার খুঁড়তে হতো না। এতে মানুষকে ভোগান্তিতে যেমন পড়তে হতো না, তেমনি রাষ্ট্রের অর্থেরও অপচয় হতো না। কিন্তু যারা খোঁড়াখুঁড়ি করে তাদের না আছে রাষ্ট্রের অর্থ বাঁচানোর চিন্তা, না আছে মনুষের ভোগান্তি লাঘব করার চেষ্টা। অভিযোগ আছে, খেয়াল-খুশি মতো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করলে একটি গোষ্ঠীর পকেট ভারী হয়।
আমরা বলতে চাই, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির যে নীতিমালা করা হয়েছে সেটা বাস্তবায়ন করা হোক। নীতিমালা মেনে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হোক। রাস্তা খুঁড়তে হবে নীতিমালা মেনে, সেটা যদি নাই হয়, আগের মতো বিভিন্ন সংস্থা যদি সমন্বয়হীনভাবে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে, তাহলে নীতিমালা বাতিল করা হোক। নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে না পারার ব্যর্থতা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিক।