নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হলে সড়কের সঙ্গে জড়িত যানবাহন, পরিবহন মালিক, চালক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন ট্রাফিক পুলিশ, আইন প্রয়োগ ও জনগণকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। জবাবদিহিতাই পারে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। অনিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার হাত থেকে মুক্তি পেতে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার শিকলে আসতে গেলে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। তা নিশ্চিত করতে পারলে সড়কে যেমন চলাচলের ঝুঁকি কমে যাবে তেমনি কমে যাবে দুর্ঘটনা।
দেশের বর্তমান সড়ক ব্যবস্থা বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যে ভরপুর নিয়মের কোন বালাই নেই। সুষ্ঠুভাবে ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে। যে যেদিক দিয়ে পারে সে সেদিক দিয়ে যত্রতত্র গাড়ি চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ এড়াতে পারলেই যেন বেঁচে গেল। গাড়ি পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট জায়গা নেই। গণপরিবহনে যাত্রী ওঠানামা ক্ষেত্রে নিয়মশৃঙ্খলা নেই। অধিকাংশ গাড়ি চালানোর উপযুক্ততা নেই।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন। সেগুলো হলোÑ চালক ও সহকারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, দূরপাল্লার বাসের বিকল্প চালক রাখা, ৫ ঘণ্টা পরপর চালক পরিবর্তন করা, চালক ও যাত্রীদের সিট বেল্ট বাঁধা বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা ও চালকদের জন্য মহাসড়কে বিশ্রামাগার নির্মাণ করা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, সড়কপথে এ নির্দেশনাগুলো আমরা নিশ্চিত করতে পারেনি।
দিনের পর দিন সড়কে প্রাণহানির মহোৎসব চলছে অথচ জনগণ সতর্ক হচ্ছে না। তাহলে সড়কে নিহত হওয়ার কারণ কি আমাদের অসতর্কতা? নাকি নিজে বেঁচে গেলাম এমন মতাদর্শ লালন করে সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে উদাসীনতা?
সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশন’-এর তথ্য মতেÑ ২০২৩ সালে ৫ হাজার ৩৭১টি দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫২৪ জন নিহত হয়েছে; আহত হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৮ জন।
সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ মারা যায় মোটরসাইকেলে আরোহণ করে। এছাড়া ২০২৩ সালে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলারে আরোহী কিংবা চালক নিহত হয় মোট মৃত্যুর ৫৭ শতাংশ; যা প্রতিদিনকার গড়ে ১৭ জন সড়কে নিহত হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কাগজে-কলমে সড়ক আইন থাকলেও বাস্তবে তার লক্ষণ নেই। যার ফলে সড়কে মৃত্যুর ঝুঁকি কমছে না বরং বাড়ছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যে কাজগুলো করা প্রয়োজনÑ সড়ক নিরাপত্তার জন্য বাজেট বাড়ানো ও তা প্রয়োজনে ব্যবহার করা, রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন, জেব্রাক্রসিং অঙ্কন, গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করা, অনিয়ম চাঁদাবাজি রোধ, ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রেনিং একাডেমি স্থাপন করা।
‘একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না’Ñ এই সেøøাগানকে ধারণ করে আমরা প্রতিজ্ঞা করি- আমাদের সবার সতর্কতায় বাঁচে যদি পরিবার, সমাজ, জাতি বা দেশের প্রাণ, তাহলে আমরা রাস্তা-ঘাটে সর্বোচ্চ সতর্কতা করবো দান। আসুন রাস্তাঘাটে রক্তযুক্ত মহোৎসব বন্ধ করি, জীবনের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করি।
রাসেল হোসেন সাকিব
বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হলে সড়কের সঙ্গে জড়িত যানবাহন, পরিবহন মালিক, চালক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন ট্রাফিক পুলিশ, আইন প্রয়োগ ও জনগণকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। জবাবদিহিতাই পারে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। অনিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার হাত থেকে মুক্তি পেতে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার শিকলে আসতে গেলে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। তা নিশ্চিত করতে পারলে সড়কে যেমন চলাচলের ঝুঁকি কমে যাবে তেমনি কমে যাবে দুর্ঘটনা।
দেশের বর্তমান সড়ক ব্যবস্থা বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যে ভরপুর নিয়মের কোন বালাই নেই। সুষ্ঠুভাবে ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে। যে যেদিক দিয়ে পারে সে সেদিক দিয়ে যত্রতত্র গাড়ি চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ এড়াতে পারলেই যেন বেঁচে গেল। গাড়ি পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট জায়গা নেই। গণপরিবহনে যাত্রী ওঠানামা ক্ষেত্রে নিয়মশৃঙ্খলা নেই। অধিকাংশ গাড়ি চালানোর উপযুক্ততা নেই।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন। সেগুলো হলোÑ চালক ও সহকারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, দূরপাল্লার বাসের বিকল্প চালক রাখা, ৫ ঘণ্টা পরপর চালক পরিবর্তন করা, চালক ও যাত্রীদের সিট বেল্ট বাঁধা বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা ও চালকদের জন্য মহাসড়কে বিশ্রামাগার নির্মাণ করা। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, সড়কপথে এ নির্দেশনাগুলো আমরা নিশ্চিত করতে পারেনি।
দিনের পর দিন সড়কে প্রাণহানির মহোৎসব চলছে অথচ জনগণ সতর্ক হচ্ছে না। তাহলে সড়কে নিহত হওয়ার কারণ কি আমাদের অসতর্কতা? নাকি নিজে বেঁচে গেলাম এমন মতাদর্শ লালন করে সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে উদাসীনতা?
সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রোড সেফটি ফাউন্ডেশন’-এর তথ্য মতেÑ ২০২৩ সালে ৫ হাজার ৩৭১টি দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫২৪ জন নিহত হয়েছে; আহত হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৮ জন।
সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ মারা যায় মোটরসাইকেলে আরোহণ করে। এছাড়া ২০২৩ সালে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলারে আরোহী কিংবা চালক নিহত হয় মোট মৃত্যুর ৫৭ শতাংশ; যা প্রতিদিনকার গড়ে ১৭ জন সড়কে নিহত হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কাগজে-কলমে সড়ক আইন থাকলেও বাস্তবে তার লক্ষণ নেই। যার ফলে সড়কে মৃত্যুর ঝুঁকি কমছে না বরং বাড়ছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যে কাজগুলো করা প্রয়োজনÑ সড়ক নিরাপত্তার জন্য বাজেট বাড়ানো ও তা প্রয়োজনে ব্যবহার করা, রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন, জেব্রাক্রসিং অঙ্কন, গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করা, অনিয়ম চাঁদাবাজি রোধ, ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রেনিং একাডেমি স্থাপন করা।
‘একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না’Ñ এই সেøøাগানকে ধারণ করে আমরা প্রতিজ্ঞা করি- আমাদের সবার সতর্কতায় বাঁচে যদি পরিবার, সমাজ, জাতি বা দেশের প্রাণ, তাহলে আমরা রাস্তা-ঘাটে সর্বোচ্চ সতর্কতা করবো দান। আসুন রাস্তাঘাটে রক্তযুক্ত মহোৎসব বন্ধ করি, জীবনের সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করি।
রাসেল হোসেন সাকিব