alt

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : দাদার জন্য অপেক্ষা

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

“ভাই বাড়ি চলেন, সেই ভোর রাত থেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন!! চলেন বাড়ি চলেন।”

“না ভাই, আর একটু দেখি, দাদা বলেছেন, উনি আসছেন। তাই আর একটু দেখি।”

“গতকালও নাকি আপনি ভোর রাত থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন? ভাবি দুশ্চিন্তা করছেন। চলেন ভাই বাড়ি চলেন। দাদা আসলে তো এতক্ষণে চলে আসতেন!”

“আরে না দাদা বলেছেন দাদা আসবেন।”

“হয়তো কোনো কাজে আটকে গেছেন, তাই আসতে পারছেন না। আপনি একটা ফোন করে জেনে নেন যে, দাদা আসবে কিনা?”

“কী করে ফোন করব, ইন্টারনেট তো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ!”

“ইন্টারনেট লাইন বন্ধ!! যাহ্, দু’হাজার চব্বিশ সালে, ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধÑ ধাৎ, এইটা হয় নাকি??”

“ও মা তুই শুনিসনি, মহাখালী মোড়ের, ডাটা সফটের বিল্ডিং কারা যেন পুড়িয়ে দিয়েছে, তাই সারা দেশের ইন্টারনেট বন্ধ।”

“কী বলেন মহাখালী মোড়ের একটা ডাটা সফটের অফিস পুড়েছে তাই বলে সারা দেশের ইন্টারনেট বন্ধ!! আপনি কি মিয়া গাঞ্জা খাইছেননি??”

“না রে ভাই আসলেই সারা দেশের ইন্টারনেট বন্ধ।”

“ও মা,তাহলে যেসব কর্মী “ওর্য়াক ফ্রম হোম” করে ওদের তো দারুণ অসুবিধা হবে।”

“ওরা কেন, ইন্টারনেট নেই বলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পর্যন্ত ক্যান্সেল করতে বাধ্য হয়েছে।”

“কী বলেন!! ওয়াইফাই, গুগুল, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ফেইসবুক, চড়–ইয়ের বুক, ওসমান কুক সবগুলাই বন্ধ?? তাহলে তো ঠিকই আছে, দাদা হয়তো ইন্টারনেট বন্ধ বলে, কোনো মেসেজ দিতে পারেননি। চলেন বাড়ি চলেন।”

“না রে সোনা, এত বড় রিস্ক আমি নিতে পারব না। যদি দাদা এসে পড়েন তখন?? না না ভাই আমাকে এই অনুরোধ করিস না। আমি দাদার জন্য অপেক্ষা করি।”

“আচ্ছা বলেন তো দাদার জন্য ভোর থেকে অপেক্ষা করছেন, গতকালও ভোর থেকে সারাদিন অপেক্ষা করেছেন, দাদা কি বড় কোনো ব্যবসা আনবে?”

“ব্যবসার জন্য কি কেউ এমনি ভোর থেকে দিনের পর দিন অপেক্ষা করে??”

“তাহলে, দাদা কী এমন আনবে যে আপনি নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দাদার জন্য অপেক্ষা করছেন??”

“দাদা বলেছেন, দাদা এসে আমাদের সমাজের সব ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করবেন।”

“দাদা আইসা আমাগো সমাজের সমস্যার সমাধান করবেন!! না ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না??”

“এই যে দ্যেখ, তুই বললি, সমাজের নাগরিকদের জান-মালের রক্ষার দায়িত্ব সরকারের...”

“এইডা আমি কমুক্যে, এ-তো একটা দশ বছরের পোলাও জানে যে, নাগরিকের জান-মালের রক্ষার দায়িত্ব সরকারের।”

“তাহলে কোটা আন্দোলনরত ইংরেজি সাহিত্যের শেষবর্ষের ছাত্রটি আইন রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে প্রায় একশত ফিট দূরে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ওর হাতে একটা ঢিলও নেই যে তোকে ছুড়ে আহত করবে, যা তুই পরে অ্যাটেম্পট-টু-মার্ডার বলে চালাতে পারিস, সেই বাঙালি ছাত্রকে তুই গুলি করে মারলিÑ তাহলে নাগরিকের জান রক্ষা কী করে হলো??”

“না ভাই আমরা তো তদন্ত কমিটি করে যে দোষী সাবস্ত্য হবে তাকে, সাজা দিব।”

“এই জলজ্যান্ত ভিডিও ফুটেজ দেখেও তোকে তদন্ত করে দেখতে হবে, যে, কে ওকে গুলি করে মারল??”

“না ভাই এটা আপনি ঠিক বললেন না, তদন্ত কমিটি হয়তো প্রমাণ করল যে, ও বুলেটের আঘাতে মারা যায়নি, মারা গেছে, ¯্রফে হার্ট অ্যাটাকে। কারণ বুলেটটা ছিল খেলনা বুলেট, বন্দুকটাও খেলনা বন্দুক, আর যাকে ভিডিওতে গুলি করতে দেখেছেন ও তো আইন রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যই না! ও তো পুলিশের পোশাকে একটা ভুয়া পুলিশ। ও পলাতক। ওকে আমরা ধরার জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছি, ইন্টারনেট চালু হলেই ইন্টারপোলেও খবর দিব।”

“কিন্তু প্রথমিক চিকিৎসার সময় ডাক্তার যে বলল বুলেট ইনজুরি, বডিতে রক্তের দাগও ছিল।”

“আরে ও-তো প্রাথমিক চিকিৎসক, ওর কথার কোনো বেইল আছে নাকি!! আমরা তো তিন সদস্যের বিলেত ফেরত চিকিৎসকের রিপোর্ট দেখে তারপর বলছি, ইট ওয়াজ ¯্রফে, হার্ট অ্যাটাক। তাছাড়া পরিবারকে তো আর্থিক অনুদানও দিচ্ছি। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য দাদাকে লাগবে না আমরা নিজেরাই পারব। দেখেন না আমাদের সবাইকে খুশি করার জন্য হাসি-খুশি সব সব সময় বলে চল নিজেরা করি!! না না ভাই দাদাকে লাগবে না, আমাদের সমস্যা, আমরাই সমাধা করতে পারব।”

“কিন্তু উনিশ’শ ছিআশি সালে তোদের সিলেটের হরিরামপুরে যে পেট্রোল আবিষ্কার করলি, সেটা তো আজও উত্তোলন করতে পারলি না। তারপর কোনো কোনো কার্টুনিস্ট নিজের নামে কার্টুন ছাপতে পারে না, মোস্তাকের কান চাপাতিতে এমন চড় মারলি যে, শালা মরে ভূত।”

“আপনি কী ভাবছেন, গৃহভৃত্যের চারশ কোটি, প্রহরীর সাতশ কোটি, ড্রাইভারের ধর্মের রাস্তায় সাত কোটি, পিকে হালদারের তিনহাজার কোটি। এইসব দুর্নীতি দাদা আসলে সলভ হবে??”

“আরে দাদা তো আমাকে তাই বললেন, যে দাদা এলে আমাদের সমাজের সব সমস্যার সমাধান উনি করবেন।”

“সত্যি দাদা বলেছেন যে, উনি এসে আমাদের নৈতিকতা, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সমাজের সব অসঙ্গতি উনি ঠিক করবেন??”

“হ্যাঁ রে ভাই হ্যাঁ, দাদা এলে, আমাদের সমাজের পাঁচ হাজার টাকার বালিশ, তারপর বৈজ্ঞানিকের মিটফোর্টে কেমিক্যাল বিক্রি সব অসঙ্গতি দূর করবেন। শিক্ষা-দীক্ষা সব সুস্থ হয়ে উঠবে। তাই দাদার জন্য অপেক্ষা করছি।”

“কন কী!! দাঁড়ান দাঁড়ান, আমি তাহলে এক দৌড়ে সব সৎ-সুন্দর জনগণরে ডাইক্কা আনি, আমরা সবাই মিল্লা দাদার জন্য অপেক্ষা করমু। দাদা এসে আমাদের গরিবদের সব সমস্যার সমাধান করবেন। উই অল উইল ওয়েটিং ফর দাদা।”

(সাহিত্যে নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত স্যামুয়েল বেকেটের ‘ওয়েটিং ফর

গোডো’ অবলম্বনে)

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

আকস্মিক বন্যা প্রতিরোধ ও প্রস্তুতির কৌশল

পতিতাবৃত্তি কি অপরাধ?

বন্যা-পরবর্তী কৃষকের সুরক্ষা করণীয়

নদী সংস্কার : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

নিজের চরকায় তেল দেবার নাম দেশপ্রেম

রম্যগদ্য : ডাক্তারি যখন আইসিইউতে

ডায়াবেটিস ও মুখের স্বাস্থ্য

বাঙালির ইলিশচর্চা

এসডিজি অর্জনে চ্যালেঞ্জ হতে পারে কুষ্ঠ রোগ

প্রসঙ্গ : পরিসংখ্যানের তথ্য বিকৃতি

বোরো ধান বিষয়ে কিছু সতর্কতা এবং সার ব্যবস্থাপনা

বন্যার জন্য ভারত কতটুকু দায়ী

গ্রাফিতিতে আদিবাসীদের বঞ্চনার চিত্র

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা

পুলিশের সংস্কার হোক জনগণের কল্যাণে

জলবায়ু পরিবর্তন ও আমাদের মনস্তত্ত্ব

উন্নয়নের সুফল সবার কাছে পৌঁছাতে হবে

বন্যার বিভিন্ন ঝুঁকি ও করণীয়

প্রশ্নে জর্জরিত মানুষ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবির্ভাব

রম্যগদ্য : এ-পাস, না ও-পাস?

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি, উত্তরণের উপায়

গৃহকর্মী নির্যাতনের অবসান হোক

মাঙ্কিপক্স : সতর্কতা ও সচেতনতা

সবার আগে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে

শিক্ষাক্ষেত্রে দ্রুত যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে

বাদী কিংবা বিবাদীর মৃত্যুতে আইনি ফলাফল কী?

নদ-নদীর সংজ্ঞার্থ ও সংখ্যা : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

রাষ্ট্র সংস্কার ও পরিবেশ ন্যায়বিচার

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য কি দূর হবে

আইনের শাসন, গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা

অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তহীন কাজ

নিষ্ঠার সাথে নিজের কাজটুকু করাই দেশপ্রেম

দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে

ছবি

ইসমাইল হানিয়ের করুণ মৃত্যু

ক্যাপিটল : মার্কিনিদের গণতন্ত্রের প্রতীক

হাওর উন্নয়নে চাই সমন্বিত উদ্যোগ

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : দাদার জন্য অপেক্ষা

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

“ভাই বাড়ি চলেন, সেই ভোর রাত থেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন!! চলেন বাড়ি চলেন।”

“না ভাই, আর একটু দেখি, দাদা বলেছেন, উনি আসছেন। তাই আর একটু দেখি।”

“গতকালও নাকি আপনি ভোর রাত থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন? ভাবি দুশ্চিন্তা করছেন। চলেন ভাই বাড়ি চলেন। দাদা আসলে তো এতক্ষণে চলে আসতেন!”

“আরে না দাদা বলেছেন দাদা আসবেন।”

“হয়তো কোনো কাজে আটকে গেছেন, তাই আসতে পারছেন না। আপনি একটা ফোন করে জেনে নেন যে, দাদা আসবে কিনা?”

“কী করে ফোন করব, ইন্টারনেট তো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ!”

“ইন্টারনেট লাইন বন্ধ!! যাহ্, দু’হাজার চব্বিশ সালে, ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধÑ ধাৎ, এইটা হয় নাকি??”

“ও মা তুই শুনিসনি, মহাখালী মোড়ের, ডাটা সফটের বিল্ডিং কারা যেন পুড়িয়ে দিয়েছে, তাই সারা দেশের ইন্টারনেট বন্ধ।”

“কী বলেন মহাখালী মোড়ের একটা ডাটা সফটের অফিস পুড়েছে তাই বলে সারা দেশের ইন্টারনেট বন্ধ!! আপনি কি মিয়া গাঞ্জা খাইছেননি??”

“না রে ভাই আসলেই সারা দেশের ইন্টারনেট বন্ধ।”

“ও মা,তাহলে যেসব কর্মী “ওর্য়াক ফ্রম হোম” করে ওদের তো দারুণ অসুবিধা হবে।”

“ওরা কেন, ইন্টারনেট নেই বলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পর্যন্ত ক্যান্সেল করতে বাধ্য হয়েছে।”

“কী বলেন!! ওয়াইফাই, গুগুল, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ফেইসবুক, চড়–ইয়ের বুক, ওসমান কুক সবগুলাই বন্ধ?? তাহলে তো ঠিকই আছে, দাদা হয়তো ইন্টারনেট বন্ধ বলে, কোনো মেসেজ দিতে পারেননি। চলেন বাড়ি চলেন।”

“না রে সোনা, এত বড় রিস্ক আমি নিতে পারব না। যদি দাদা এসে পড়েন তখন?? না না ভাই আমাকে এই অনুরোধ করিস না। আমি দাদার জন্য অপেক্ষা করি।”

“আচ্ছা বলেন তো দাদার জন্য ভোর থেকে অপেক্ষা করছেন, গতকালও ভোর থেকে সারাদিন অপেক্ষা করেছেন, দাদা কি বড় কোনো ব্যবসা আনবে?”

“ব্যবসার জন্য কি কেউ এমনি ভোর থেকে দিনের পর দিন অপেক্ষা করে??”

“তাহলে, দাদা কী এমন আনবে যে আপনি নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দাদার জন্য অপেক্ষা করছেন??”

“দাদা বলেছেন, দাদা এসে আমাদের সমাজের সব ছোটখাটো সমস্যার সমাধান করবেন।”

“দাদা আইসা আমাগো সমাজের সমস্যার সমাধান করবেন!! না ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না??”

“এই যে দ্যেখ, তুই বললি, সমাজের নাগরিকদের জান-মালের রক্ষার দায়িত্ব সরকারের...”

“এইডা আমি কমুক্যে, এ-তো একটা দশ বছরের পোলাও জানে যে, নাগরিকের জান-মালের রক্ষার দায়িত্ব সরকারের।”

“তাহলে কোটা আন্দোলনরত ইংরেজি সাহিত্যের শেষবর্ষের ছাত্রটি আইন রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে প্রায় একশত ফিট দূরে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ওর হাতে একটা ঢিলও নেই যে তোকে ছুড়ে আহত করবে, যা তুই পরে অ্যাটেম্পট-টু-মার্ডার বলে চালাতে পারিস, সেই বাঙালি ছাত্রকে তুই গুলি করে মারলিÑ তাহলে নাগরিকের জান রক্ষা কী করে হলো??”

“না ভাই আমরা তো তদন্ত কমিটি করে যে দোষী সাবস্ত্য হবে তাকে, সাজা দিব।”

“এই জলজ্যান্ত ভিডিও ফুটেজ দেখেও তোকে তদন্ত করে দেখতে হবে, যে, কে ওকে গুলি করে মারল??”

“না ভাই এটা আপনি ঠিক বললেন না, তদন্ত কমিটি হয়তো প্রমাণ করল যে, ও বুলেটের আঘাতে মারা যায়নি, মারা গেছে, ¯্রফে হার্ট অ্যাটাকে। কারণ বুলেটটা ছিল খেলনা বুলেট, বন্দুকটাও খেলনা বন্দুক, আর যাকে ভিডিওতে গুলি করতে দেখেছেন ও তো আইন রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যই না! ও তো পুলিশের পোশাকে একটা ভুয়া পুলিশ। ও পলাতক। ওকে আমরা ধরার জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছি, ইন্টারনেট চালু হলেই ইন্টারপোলেও খবর দিব।”

“কিন্তু প্রথমিক চিকিৎসার সময় ডাক্তার যে বলল বুলেট ইনজুরি, বডিতে রক্তের দাগও ছিল।”

“আরে ও-তো প্রাথমিক চিকিৎসক, ওর কথার কোনো বেইল আছে নাকি!! আমরা তো তিন সদস্যের বিলেত ফেরত চিকিৎসকের রিপোর্ট দেখে তারপর বলছি, ইট ওয়াজ ¯্রফে, হার্ট অ্যাটাক। তাছাড়া পরিবারকে তো আর্থিক অনুদানও দিচ্ছি। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য দাদাকে লাগবে না আমরা নিজেরাই পারব। দেখেন না আমাদের সবাইকে খুশি করার জন্য হাসি-খুশি সব সব সময় বলে চল নিজেরা করি!! না না ভাই দাদাকে লাগবে না, আমাদের সমস্যা, আমরাই সমাধা করতে পারব।”

“কিন্তু উনিশ’শ ছিআশি সালে তোদের সিলেটের হরিরামপুরে যে পেট্রোল আবিষ্কার করলি, সেটা তো আজও উত্তোলন করতে পারলি না। তারপর কোনো কোনো কার্টুনিস্ট নিজের নামে কার্টুন ছাপতে পারে না, মোস্তাকের কান চাপাতিতে এমন চড় মারলি যে, শালা মরে ভূত।”

“আপনি কী ভাবছেন, গৃহভৃত্যের চারশ কোটি, প্রহরীর সাতশ কোটি, ড্রাইভারের ধর্মের রাস্তায় সাত কোটি, পিকে হালদারের তিনহাজার কোটি। এইসব দুর্নীতি দাদা আসলে সলভ হবে??”

“আরে দাদা তো আমাকে তাই বললেন, যে দাদা এলে আমাদের সমাজের সব সমস্যার সমাধান উনি করবেন।”

“সত্যি দাদা বলেছেন যে, উনি এসে আমাদের নৈতিকতা, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সমাজের সব অসঙ্গতি উনি ঠিক করবেন??”

“হ্যাঁ রে ভাই হ্যাঁ, দাদা এলে, আমাদের সমাজের পাঁচ হাজার টাকার বালিশ, তারপর বৈজ্ঞানিকের মিটফোর্টে কেমিক্যাল বিক্রি সব অসঙ্গতি দূর করবেন। শিক্ষা-দীক্ষা সব সুস্থ হয়ে উঠবে। তাই দাদার জন্য অপেক্ষা করছি।”

“কন কী!! দাঁড়ান দাঁড়ান, আমি তাহলে এক দৌড়ে সব সৎ-সুন্দর জনগণরে ডাইক্কা আনি, আমরা সবাই মিল্লা দাদার জন্য অপেক্ষা করমু। দাদা এসে আমাদের গরিবদের সব সমস্যার সমাধান করবেন। উই অল উইল ওয়েটিং ফর দাদা।”

(সাহিত্যে নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত স্যামুয়েল বেকেটের ‘ওয়েটিং ফর

গোডো’ অবলম্বনে)

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top