বিশ^জুড়ে সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত ‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি ২০২৩’-এর তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ নিহত হয় সড়ক দুর্ঘটনায় এবং ৫-২৯ বছর বয়সের মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা।
বাংলাদেশেও এই চিত্র ভিন্ন নয়। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির শিকার হচ্ছে বিভিন্ন পেশাজীবী ও বয়সের মানুষ। এর মধ্যে শিশুদের সংখ্যাও কম নয়। রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত বছরে (২০২৩) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৬ হাজার ৫২৪ জন, যেখানে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ১২৮ জন, যা মোট নিহতের ১৭ শতাংশের বেশি।
গবেষণায় দেখা যায়, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক নির্মাণ, অসতর্কতার সঙ্গে রাস্তা পারাপার, অনিয়ন্ত্রতি গতিতে গাড়ি চালনা, ফুটপাথ ও ওভার ব্রিজ ব্যাবহার না করা দুর্ঘটনা বাড়ছে।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ও সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ প্রণয়ন করা হলেও সড়কে দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়নি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান আইনে পরিবহন ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেয়া হলেও কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে যেমন- সড়ক ব্যবহারকারীদের জন্য ৫টি আচরণগত ঝুঁকি যথা- ১. গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ না করা, ২. সিট বেল্ট ব্যবহার না করা, ৩. মানসম্মত হেলমেট পরিধান না করা, ৪. মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং ৫. শিশুবান্ধব বিশেষায়িত আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থাগুলো উল্লেখ না থাকায় আইনটি কার্যকরী ফলাফল আনতে পারছে না।
বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনা জনসাধারনের ভিতরে এমন আতঙ্ক তৈরি করেছে যে, কোন দরকারী কাজে ঘরের বাইরে বের হয়ে নিরাপদে পৌঁছানো একটি উদ্বেগের বিষয়। দুর্ঘটনার সময় বাবা কিংবা মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে অনেক শিশু আহত এবং নিহত হয়। তাই পরিবারের সঙ্গে শিশুর ভ্রমনকালে শিশু নিরাপত্তা একটি জরুরি বিষয়। ২৭ ডিসেম্বর-২০২২ গেজেট আকারে প্রকাশিত বিধিমালায় শিশুদের জন্য যানবাহনে সিটবেল্ট বাঁধার নির্দেশনা থাকলেও শিশু আসনের বিষয়টি বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাই সড়কে দর্ঘটনা রোধে প্রয়োজন একটি সম্পূর্ণ পৃথক আইন যেখানে জাতিসংঘ ঘোষিত সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ অন্তর্ভুক্ত থাকা অত্যন্ত জরুরি।
সড়কে পথচারীদের নিরাপত্তায় একটি সম্পূর্ণ পৃথক সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণোয়নে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিভিন্ন উদ্যেগের মাধ্যমে সরকার ও নীতি-নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনায় শিশুর প্রাণনাশ হলে, তার ভবিষ্যৎ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশে তাদের চলাচল হওয়া উচিৎ নিরাপদ। এ নিরাপত্তার জন্যই যানবাহনে শিশু আসন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। এছাড়াও দরকার গাড়িচালক ও সাধারণ মানুষের সচেতনতা। তাই সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু প্রাণনাশ রক্ষায় নতুন আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই।
জেরিন আফরোজ
বুধবার, ০৬ মার্চ ২০২৪
বিশ^জুড়ে সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত ‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি ২০২৩’-এর তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ নিহত হয় সড়ক দুর্ঘটনায় এবং ৫-২৯ বছর বয়সের মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা।
বাংলাদেশেও এই চিত্র ভিন্ন নয়। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির শিকার হচ্ছে বিভিন্ন পেশাজীবী ও বয়সের মানুষ। এর মধ্যে শিশুদের সংখ্যাও কম নয়। রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত বছরে (২০২৩) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৬ হাজার ৫২৪ জন, যেখানে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ১২৮ জন, যা মোট নিহতের ১৭ শতাংশের বেশি।
গবেষণায় দেখা যায়, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক নির্মাণ, অসতর্কতার সঙ্গে রাস্তা পারাপার, অনিয়ন্ত্রতি গতিতে গাড়ি চালনা, ফুটপাথ ও ওভার ব্রিজ ব্যাবহার না করা দুর্ঘটনা বাড়ছে।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ও সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ প্রণয়ন করা হলেও সড়কে দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়নি বরং বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান আইনে পরিবহন ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেয়া হলেও কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে যেমন- সড়ক ব্যবহারকারীদের জন্য ৫টি আচরণগত ঝুঁকি যথা- ১. গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ না করা, ২. সিট বেল্ট ব্যবহার না করা, ৩. মানসম্মত হেলমেট পরিধান না করা, ৪. মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং ৫. শিশুবান্ধব বিশেষায়িত আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থাগুলো উল্লেখ না থাকায় আইনটি কার্যকরী ফলাফল আনতে পারছে না।
বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনা জনসাধারনের ভিতরে এমন আতঙ্ক তৈরি করেছে যে, কোন দরকারী কাজে ঘরের বাইরে বের হয়ে নিরাপদে পৌঁছানো একটি উদ্বেগের বিষয়। দুর্ঘটনার সময় বাবা কিংবা মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে অনেক শিশু আহত এবং নিহত হয়। তাই পরিবারের সঙ্গে শিশুর ভ্রমনকালে শিশু নিরাপত্তা একটি জরুরি বিষয়। ২৭ ডিসেম্বর-২০২২ গেজেট আকারে প্রকাশিত বিধিমালায় শিশুদের জন্য যানবাহনে সিটবেল্ট বাঁধার নির্দেশনা থাকলেও শিশু আসনের বিষয়টি বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাই সড়কে দর্ঘটনা রোধে প্রয়োজন একটি সম্পূর্ণ পৃথক আইন যেখানে জাতিসংঘ ঘোষিত সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ অন্তর্ভুক্ত থাকা অত্যন্ত জরুরি।
সড়কে পথচারীদের নিরাপত্তায় একটি সম্পূর্ণ পৃথক সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণোয়নে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিভিন্ন উদ্যেগের মাধ্যমে সরকার ও নীতি-নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনায় শিশুর প্রাণনাশ হলে, তার ভবিষ্যৎ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশে তাদের চলাচল হওয়া উচিৎ নিরাপদ। এ নিরাপত্তার জন্যই যানবাহনে শিশু আসন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। এছাড়াও দরকার গাড়িচালক ও সাধারণ মানুষের সচেতনতা। তাই সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু প্রাণনাশ রক্ষায় নতুন আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই।
জেরিন আফরোজ