মহামারী করোনা চলাকালে হতদরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের ত্রাণ সহায়তা নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পিছু ছাড়ছে না। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঈদ উপলক্ষে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা থাকলেও তিনি ৮ কেজি করে বিতরণ করেন। বাকি চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশে গুদামে মজুদ করেন। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে প্রত্যেককে নির্ধরিত ১০ কেজি চালের কম দেয়া হয়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনির আওতায় ভিজিএফ-ভিজিডি, ওএমএসসহ হতদরিদ্র মানুষের জন্য দেয়া সরকারের এ ত্রাণ সহায়তায় প্রথম অনিয়ম শুরু হয় নাম দেয়ার সময়ই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের লোক, একই পরিবারের একাধিক লোক এবং দরিদ্র না হলেও তাদের নাম দেয়া হয়। যাদের নাম দেয়া হয়েছে তারা নিজেরাই জানেন না- বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামে চাল বিতরণ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
চাল কম দেয়ার ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিরা নানান কারণ দেখান। তারা কেউ বলেন, বরাদ্দের চেয়ে কম চাল পাওয়া যায়। আবার কেউ কেউ বলেন, বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে যে চাল পাওয়া যায় তাই বিতরণ করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিতিতে এমন অনিয়ম হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া এসব খাদ্যসহায়তা বিতরণ করার সময় তাদের উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে তারাও জড়িত আছেন কিনা, বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। বরাদ্দ কম পাওয়া এবং বিভিন্ন খরচের বিষয়টির তদন্ত করা দরকার। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়া এবং বাড়তি খরচ হওয়ার বিষয়টির সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ সত্য হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসনও এর দায় এড়াতে পারেন না বলে আমরা মনে করি।
ত্রাণ সহায়তা নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে। অনিয়ম-দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। কারণ এর আগেও দেখা গেছে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। ত্রাণের পণ্য আত্মসাৎ করে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও এগুলো থামানো যায়নি। এটি একটি অশনি সংকেত, কোন কিছুতেই অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না, দুর্নীতিবাজদের থামানো যাচ্ছে না।
মহামারী চলাকালে ত্রাণের পণ্য আত্মসাৎ বা এ নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোভাবে দমন করতে হবে। কারণ এর সঙ্গে সফলভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণের যোগসূত্র রয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালে সরকার নিম্ন আয়ের মানুষদের খাদ্যপণ্য এবং নগদ অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা ঘরে থাকবে। কিন্তু এ সহায়তা যদি সঠিক সময় ভুক্তভোগীদের হাতে না পৌঁছায় তারা ঘরে বসে থাকবে কী করে সেটা একটা প্রশ্ন।
এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ অসাধু জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা শুধু দরিদ্রদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে তা নয়, তারা দেশের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিচ্ছে। সুতরাং তাদের এ অনিয়ম ও দুর্নীতিকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। তাদের অপরাধকে গুরুতর হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১
মহামারী করোনা চলাকালে হতদরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের ত্রাণ সহায়তা নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পিছু ছাড়ছে না। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঈদ উপলক্ষে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা থাকলেও তিনি ৮ কেজি করে বিতরণ করেন। বাকি চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশে গুদামে মজুদ করেন। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে প্রত্যেককে নির্ধরিত ১০ কেজি চালের কম দেয়া হয়েছে।
সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনির আওতায় ভিজিএফ-ভিজিডি, ওএমএসসহ হতদরিদ্র মানুষের জন্য দেয়া সরকারের এ ত্রাণ সহায়তায় প্রথম অনিয়ম শুরু হয় নাম দেয়ার সময়ই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের লোক, একই পরিবারের একাধিক লোক এবং দরিদ্র না হলেও তাদের নাম দেয়া হয়। যাদের নাম দেয়া হয়েছে তারা নিজেরাই জানেন না- বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামে চাল বিতরণ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
চাল কম দেয়ার ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিরা নানান কারণ দেখান। তারা কেউ বলেন, বরাদ্দের চেয়ে কম চাল পাওয়া যায়। আবার কেউ কেউ বলেন, বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে যে চাল পাওয়া যায় তাই বিতরণ করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিতিতে এমন অনিয়ম হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া এসব খাদ্যসহায়তা বিতরণ করার সময় তাদের উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে তারাও জড়িত আছেন কিনা, বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। বরাদ্দ কম পাওয়া এবং বিভিন্ন খরচের বিষয়টির তদন্ত করা দরকার। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়া এবং বাড়তি খরচ হওয়ার বিষয়টির সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ সত্য হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসনও এর দায় এড়াতে পারেন না বলে আমরা মনে করি।
ত্রাণ সহায়তা নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে। অনিয়ম-দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। কারণ এর আগেও দেখা গেছে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। ত্রাণের পণ্য আত্মসাৎ করে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও এগুলো থামানো যায়নি। এটি একটি অশনি সংকেত, কোন কিছুতেই অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না, দুর্নীতিবাজদের থামানো যাচ্ছে না।
মহামারী চলাকালে ত্রাণের পণ্য আত্মসাৎ বা এ নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোভাবে দমন করতে হবে। কারণ এর সঙ্গে সফলভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণের যোগসূত্র রয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালে সরকার নিম্ন আয়ের মানুষদের খাদ্যপণ্য এবং নগদ অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা ঘরে থাকবে। কিন্তু এ সহায়তা যদি সঠিক সময় ভুক্তভোগীদের হাতে না পৌঁছায় তারা ঘরে বসে থাকবে কী করে সেটা একটা প্রশ্ন।
এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ অসাধু জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা শুধু দরিদ্রদের তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে তা নয়, তারা দেশের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিচ্ছে। সুতরাং তাদের এ অনিয়ম ও দুর্নীতিকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। তাদের অপরাধকে গুরুতর হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।