রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধীনে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীদের খাবার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা রোগীদের তিনবেলা পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দেয়ার জন্য জনপ্রতি বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩০০ টাকা। কিন্তু সেখানে গড়ে ১০০ থেকে ১২৫ টাকা মূল্যের খাবার দেওয়া হয়। তাছাড়া ‘পুষ্টিসমৃদ্ধ’ খাবারের পরিবর্তে নিম্নমানের এবং খাওয়ার অযোগ্য খাবার দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, করোনা রোগীদের জন্য খাবার বরাদ্দের এ টাকা তাহলে খরচ হচ্ছে কোথায়। শুধু রংপুর নয় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য খাতের যে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি তার আরেকটি নজির হচ্ছে খাবার সরবরাহের এ অনিয়ম।
মাথায় পচন ধরলে যে সেটা সর্বত্র বিস্তৃত হবে- তা সবার জানা কথা। করোনার শুরু থেকেই স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। আর দেশের মানুষ বিশেষ করে, করোনা আক্রান্ত রোগী ও স্বজনরা প্রতি পদে পদে এর খেসারত দিয়ে যাচ্ছে। করোনা টেস্ট করতে গেলে হয়রানি, রিপোর্ট পেতে ভোগান্তি, রিপোর্টের ফল নিয়ে সংশয়, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও শয্যা সংকট এর মধ্যে অন্যতম। করোনা আক্রান্ত হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে ছুটতে হয় জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে। কিন্তু সেখানে গেলে সরকারি হাসপাতালের শয্যা খালি পাওয়া যায় না। তাদের জায়গা হয় হাসপাতালের মেঝে বা বারান্দায়। চিকিৎসক, সেবক, আইসিইউ, অক্সিজেন এবং বিনামূল্যে ওষুধপত্রের অভাব তো রয়েছেই।
এরপর অনেক কাঠখড় পুরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়ার সৌভাগ্য যাদের হয় তাদের শুরু হয় খাবারের ভোগান্তি। একে তো রোগীর খাবার কম দেওয়া হয়, আবার যা দেওয়া হয় তার মান ভালো না। দেশে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের সংকট রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে শয্যা, আইসিইউ, অক্সিজেন, চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটের কারণ বোঝা যায়। কিন্তু খাবার কম দেয়ার কারণ কী? দেশে কি খাদ্য সংকট আছে? খাবারের জন্য বরাদ্দ জনপ্রতি ৩০০ টাকা। অথচ খরচ করা হয় ১০০ থেকে ১২৫ টাকা। কোথাও কোথাও তার চেয়েও কম মাত্র ৬০ থেকে ৭০ টাকা! বাকি টাকা তাহলে যায় কোথায়?
রংপুরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা হাসপাতালে সাধারণত ২০-২৫ রোগীকে আইসিইউ সাপোর্ট এবং অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। তাদের খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। নিম্নমানের খাবার দেওয়ায় অনেকে হাসপাতালের খাবার নেন না। সেখানে একদিনে সর্বোচ্চ ১০-১৫ জনের খাবার সরবরাহ করা হয় বলে জানা গেছে। কিন্তু প্রতিদিন ১০০ জনের খাবারের বরাদ্দ নেওয়া হয়। এখানেও রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। অভিযোগ আছে ওই টাকা খাদ্যসরবরাহকরী এবং হাসপাতালের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা হয়।
এ শুধু একটি বা দুটি হাসপাতালের চিত্র নয়। প্রায় সব সরকারি হাসপাতালেরই একই অবস্থা। রোগীর খাবার নিয়ে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর পাওয়া গেছে সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। যথাযথভাবে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বরাদ্দ অনুযায়ী মানসম্মত খাবার রোগীরা পাচ্ছে কিনা- সেটা মনিটর করতে হবে।
শুক্রবার, ০৯ জুলাই ২০২১
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধীনে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীদের খাবার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা রোগীদের তিনবেলা পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দেয়ার জন্য জনপ্রতি বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩০০ টাকা। কিন্তু সেখানে গড়ে ১০০ থেকে ১২৫ টাকা মূল্যের খাবার দেওয়া হয়। তাছাড়া ‘পুষ্টিসমৃদ্ধ’ খাবারের পরিবর্তে নিম্নমানের এবং খাওয়ার অযোগ্য খাবার দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, করোনা রোগীদের জন্য খাবার বরাদ্দের এ টাকা তাহলে খরচ হচ্ছে কোথায়। শুধু রংপুর নয় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য খাতের যে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি তার আরেকটি নজির হচ্ছে খাবার সরবরাহের এ অনিয়ম।
মাথায় পচন ধরলে যে সেটা সর্বত্র বিস্তৃত হবে- তা সবার জানা কথা। করোনার শুরু থেকেই স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। আর দেশের মানুষ বিশেষ করে, করোনা আক্রান্ত রোগী ও স্বজনরা প্রতি পদে পদে এর খেসারত দিয়ে যাচ্ছে। করোনা টেস্ট করতে গেলে হয়রানি, রিপোর্ট পেতে ভোগান্তি, রিপোর্টের ফল নিয়ে সংশয়, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও শয্যা সংকট এর মধ্যে অন্যতম। করোনা আক্রান্ত হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে ছুটতে হয় জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে। কিন্তু সেখানে গেলে সরকারি হাসপাতালের শয্যা খালি পাওয়া যায় না। তাদের জায়গা হয় হাসপাতালের মেঝে বা বারান্দায়। চিকিৎসক, সেবক, আইসিইউ, অক্সিজেন এবং বিনামূল্যে ওষুধপত্রের অভাব তো রয়েছেই।
এরপর অনেক কাঠখড় পুরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়ার সৌভাগ্য যাদের হয় তাদের শুরু হয় খাবারের ভোগান্তি। একে তো রোগীর খাবার কম দেওয়া হয়, আবার যা দেওয়া হয় তার মান ভালো না। দেশে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের সংকট রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে শয্যা, আইসিইউ, অক্সিজেন, চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটের কারণ বোঝা যায়। কিন্তু খাবার কম দেয়ার কারণ কী? দেশে কি খাদ্য সংকট আছে? খাবারের জন্য বরাদ্দ জনপ্রতি ৩০০ টাকা। অথচ খরচ করা হয় ১০০ থেকে ১২৫ টাকা। কোথাও কোথাও তার চেয়েও কম মাত্র ৬০ থেকে ৭০ টাকা! বাকি টাকা তাহলে যায় কোথায়?
রংপুরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা হাসপাতালে সাধারণত ২০-২৫ রোগীকে আইসিইউ সাপোর্ট এবং অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। তাদের খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। নিম্নমানের খাবার দেওয়ায় অনেকে হাসপাতালের খাবার নেন না। সেখানে একদিনে সর্বোচ্চ ১০-১৫ জনের খাবার সরবরাহ করা হয় বলে জানা গেছে। কিন্তু প্রতিদিন ১০০ জনের খাবারের বরাদ্দ নেওয়া হয়। এখানেও রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। অভিযোগ আছে ওই টাকা খাদ্যসরবরাহকরী এবং হাসপাতালের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাঝে ভাগ-বাটোয়ারা হয়।
এ শুধু একটি বা দুটি হাসপাতালের চিত্র নয়। প্রায় সব সরকারি হাসপাতালেরই একই অবস্থা। রোগীর খাবার নিয়ে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর পাওয়া গেছে সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। যথাযথভাবে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বরাদ্দ অনুযায়ী মানসম্মত খাবার রোগীরা পাচ্ছে কিনা- সেটা মনিটর করতে হবে।