alt

সম্পাদকীয়

কন্যাশিশু নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র

: শনিবার, ০১ অক্টোবর ২০২২

দেশে কন্যাশিশু নির্যাতনের হার বরাবরই উদ্বেগজনক। বিভিন্ন সংগঠন প্রায়ই কন্যাশিশু নির্যাতনের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে তেমনি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করল, কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। ‘কন্যাশিশু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন-২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গতকাল শুক্রবার প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ১৮৬ জন কন্যশিশু হত্যার শিকার হয়েছে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৩ জন এবং হত্যা করা হয়েছে ৫ জনকে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৭৪ জন কন্যাশিশু।

কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ২৭২ জন কন্যাশিশু পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনসহ নানা কারণে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। আর ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১ হাজার ১১৭ জন। অনেক নির্যাতনের ঘটনাই ভুক্তভোগী প্রকাশ করে না বা প্রকাশ করলেও সামাজিক অবস্থানের কারণে পরিবার তা আড়াল করে। এসব নির্যাতনের ঘটনা গণমাধ্যম বা জনসম্মুখে প্রকাশ পায় না। তাহলে এর সংখ্যা হয়তো আরও বেড়ে যেত।

পরিবার ও সমাজে অসহিষ্ণুতা বেড়ে যাওয়ায় কন্যাশিশুর ওপর নির্যাতন বেড়েইে চলছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ধর্ষণ, পারিবারিক সহিংসতা, যৌন নির্যাতন, পাচার, অপহরণ, বাল্যবিয়ে, তালাক ও যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটেছে। এর বাইরে দেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থাও নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী।

নির্যাতনের পর অভিযোগ দায়ের থেকে শুরু করে মামলা, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগীকেই নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনেকে অভিযোগই করে না, মামলা তো দূরের কথা। তাছাড়া কন্যাশিশু নির্যাতনের ঘটনার পর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হলেও অনেকেই জামিনে মুক্ত হয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত শাস্তির খুব কম তথ্যই পাওয়া যায়। একজন ভুক্তভোগীকে বিচার পাইয়ে দিতে হলে তার জন্য কিছু সুরক্ষামূলক ব্যবস্থাও নিতে হয়। সরকার সে ক্ষেত্রে কতটুকু ব্যবস্থা নিতে পারছে, সেটা একটা প্রশ্ন।

দেশে অনেক ভালো ভালো আইন থাকলেও যথাযথভাবে এগুলোর প্রয়োগ না হওয়ায় নির্যাতনের ঘটনা কমছে না বলে অভিযোগ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ অনুযায়ী, বিচারের জন্য ধর্ষণ মামলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে কাজ শেষ করার কথা বলা হয়েছে। আইনে এমন বাধ্যবাধকতা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছে না।

উচ্চ আদালতের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের ৯৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন ৪৩ হাজার ১১৪টি মামলা রয়েছে। এসব আদালতে মোট বিচারাধীন মামলা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৩১টি। অর্থাৎ বিচারাধীন ২৪ শতাংশের বেশি মামলার বিচার পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে।

কন্যাশিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হলে মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য মামলার তদন্ত রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপমুক্ত করতে হবে। অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চার করতে হবে। নির্যাতনের ঘটনা ঘটার পর গণমাধ্যমকর্মীসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কাছে তা প্রকাশ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীকে জানাতে হবে। কন্যশিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

টাঙ্গাইলে জলাশয় দখলের অভিযোগের সুরাহা করুন

অবৈধ বালু তোলা বন্ধে ব্যবস্থা নিন

টিসিবির পণ্য : ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ আমলে নিন

ভৈরব নদে সেতু নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

ডায়রিয়া প্রতিরোধে চাই জনসচেতনতা

ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন সড়কে চলছে কীভাবে

গোবিন্দগঞ্জে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গাছ কাটার অভিযোগ আমলে নিন

নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জরুরি

অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম ব্যবহারে চাই সচেতনতা

অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

ভোলাডুবা হাওরের বোরো খেতের পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা নিন

কিশোর গ্যাংয়ের প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে

আদমজী ইপিজেড সড়ক মেরামতে আর কত কালক্ষেপণ

নদ-নদীর নাব্য রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিন

চকরিয়ায় পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

গরমে দুর্বিষহ জনজীবন

ভালুকায় খাবার পানির সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নিন

সড়কে চাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা

লঞ্চ চালাতে হবে নিয়ম মেনে

নতুন বছররে শুভচ্ছো

বিষ ঢেলে মাছ নিধনের অভিযোগ আমলে নিন

ঈদের আনন্দ স্পর্শ করুক সবার জীবন

মীরসরাইয়ের বন রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া জরুরি

স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি

কৃষকরা কেন তামাক চাষে ঝুঁকছে

রেলক্রসিংয়ে প্রাণহানির দায় কার

আর কত অপেক্ষার পর সেতু পাবে রানিশংকৈলের মানুষ^

পাহাড়ে ব্যাংক হামলা কেন

সিসা দূষণ রোধে আইনের কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি

হার্টের রিংয়ের নির্ধারিত দর বাস্তবায়নে মনিটরিং জরুরি

রইচপুর খালে সেতু নির্মাণে আর কত অপেক্ষা

রাজধানীকে যানজটমুক্ত করা যাচ্ছে না কেন

জেলেরা কেন বরাদ্দকৃত চাল পাচ্ছে না

নিয়মতান্ত্রিক সংগঠনের সুযোগ থাকা জরুরি, বন্ধ করতে হবে অপরাজনীতি

ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে সংস্কার করুন

শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে

tab

সম্পাদকীয়

কন্যাশিশু নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র

শনিবার, ০১ অক্টোবর ২০২২

দেশে কন্যাশিশু নির্যাতনের হার বরাবরই উদ্বেগজনক। বিভিন্ন সংগঠন প্রায়ই কন্যাশিশু নির্যাতনের ওপর প্রতিবেদন প্রকাশ করে। জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে তেমনি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করল, কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। ‘কন্যাশিশু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন-২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গতকাল শুক্রবার প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ১৮৬ জন কন্যশিশু হত্যার শিকার হয়েছে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৩ জন এবং হত্যা করা হয়েছে ৫ জনকে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৭৪ জন কন্যাশিশু।

কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ২৭২ জন কন্যাশিশু পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনসহ নানা কারণে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। আর ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১ হাজার ১১৭ জন। অনেক নির্যাতনের ঘটনাই ভুক্তভোগী প্রকাশ করে না বা প্রকাশ করলেও সামাজিক অবস্থানের কারণে পরিবার তা আড়াল করে। এসব নির্যাতনের ঘটনা গণমাধ্যম বা জনসম্মুখে প্রকাশ পায় না। তাহলে এর সংখ্যা হয়তো আরও বেড়ে যেত।

পরিবার ও সমাজে অসহিষ্ণুতা বেড়ে যাওয়ায় কন্যাশিশুর ওপর নির্যাতন বেড়েইে চলছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ধর্ষণ, পারিবারিক সহিংসতা, যৌন নির্যাতন, পাচার, অপহরণ, বাল্যবিয়ে, তালাক ও যৌতুকের জন্য নির্যাতনের ঘটনা বেশি ঘটেছে। এর বাইরে দেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থাও নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী।

নির্যাতনের পর অভিযোগ দায়ের থেকে শুরু করে মামলা, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগীকেই নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনেকে অভিযোগই করে না, মামলা তো দূরের কথা। তাছাড়া কন্যাশিশু নির্যাতনের ঘটনার পর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হলেও অনেকেই জামিনে মুক্ত হয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত শাস্তির খুব কম তথ্যই পাওয়া যায়। একজন ভুক্তভোগীকে বিচার পাইয়ে দিতে হলে তার জন্য কিছু সুরক্ষামূলক ব্যবস্থাও নিতে হয়। সরকার সে ক্ষেত্রে কতটুকু ব্যবস্থা নিতে পারছে, সেটা একটা প্রশ্ন।

দেশে অনেক ভালো ভালো আইন থাকলেও যথাযথভাবে এগুলোর প্রয়োগ না হওয়ায় নির্যাতনের ঘটনা কমছে না বলে অভিযোগ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ অনুযায়ী, বিচারের জন্য ধর্ষণ মামলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে কাজ শেষ করার কথা বলা হয়েছে। আইনে এমন বাধ্যবাধকতা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছে না।

উচ্চ আদালতের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের ৯৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন ৪৩ হাজার ১১৪টি মামলা রয়েছে। এসব আদালতে মোট বিচারাধীন মামলা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৩১টি। অর্থাৎ বিচারাধীন ২৪ শতাংশের বেশি মামলার বিচার পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে।

কন্যাশিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হলে মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য মামলার তদন্ত রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপমুক্ত করতে হবে। অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চার করতে হবে। নির্যাতনের ঘটনা ঘটার পর গণমাধ্যমকর্মীসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কাছে তা প্রকাশ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীকে জানাতে হবে। কন্যশিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

back to top