বিশ্বজুড়েই নার্সদের স্বাস্থ্যসেবার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। ‘হেলথ ওয়াচ-বাংলাদেশ হিউম্যান রিসোর্সেস ফর হেলথ’-এর এক গবেষণায় জানা গেছে, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার একেবারে কমিয়ে আনতে হলে দক্ষ চিকিৎসকের পাশাপাশি দক্ষ নার্সও প্রয়োজন। দেশে দীর্ঘদিন ধরেই নার্স সংকট রয়েছে। এ সমস্যা সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন নার্স থাকার কথা। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) নিবন্ধিত চিকিৎসকের সংখ্যা কমবেশি ১ লাখ ৮ হাজার। নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন প্রায় তিন লাখ ২৫ হাজার নার্সের প্রয়োজন। অথচ দেশে নিবন্ধিত নার্স রয়েছেন মাত্র ৭৭ হাজার।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউওএইচও) মানদ- অনুযায়ী, একটি দেশের প্রতি দশ হাজার মানুষের বিপরীতে নার্স থাকতে হবে ২৩ জন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতি দশ হাজার মানুষের বিপরীতে নার্স আছেন মাত্র তিনজন। আর এই কারণে একজন নার্সের কাজে যতটুকু চাপ নেয়ার কথা তার থেকে তাকে ছয়গুণ বেশি চাপ নিতে হচ্ছে। কাজের অতিরিক্ত চাপে দেশের নার্সরা দ্রুতই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কাজের প্রতি উৎসাহও কমতে থাকে একসময়। এর প্রভাব পড়ে চিকিৎসা সেবায়। একজন রোগীকে যতটুকু সেবা দেয়ার কথা ততটুকু একজন নার্স দিতে পারছেন না বলে মনে করেন অনেকে।
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নার্সদের নানা সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। কাজের বাড়তি চাপ তো রয়েছেই। প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে কাজ করছেন নার্সরা। একদিকে পেশাগত জীবনে তাদের নানা চাপ নিতে হয়। অন্যদিকে সামাজিক ক্ষেত্রেও তাদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। তাদের কাছ থেকে যে সেবা নেয়া হয় তার বিপরীতে খুব কম বেতন দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৮৬ শতাংশ নার্স অনুপযুক্ত পরিবেশে কাজ করেন। কর্মজীবনে পদোন্নতি পান না ৭০ শতাংশ নার্স। অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক দ্বন্দ্বের কারণেও তারা মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, পেশাগত কাজ করতে গিয়ে অনেক নার্স মানসিক উদ্বেগে ভোগেন। কর্মক্ষেত্রে তাদের মানসিক চাপ কমানোর ব্যবস্থা করা, কর্মঘণ্টা হ্রাস করা দরকার।
সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানে নার্সিং প্রশিক্ষণ দেয়া হয় সেখানে আসন সংকট রয়েছে। নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে তবে সেখানে খরচ বেশি। ফলে এই পেশায় আসতে ইচ্ছুক অনেকের পক্ষেই প্রশিক্ষণ নেয়া সম্ভব হয় না। আমরা বলতে চাই, প্রয়োজন অনুযায়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং প্রশিক্ষণের ব্যয় মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখা দরকার। প্রশিক্ষণ শেষে তারা যখন কাজে যোগ দেবেন তখন তারা যেন জীবিকা নির্বাহের মতো বেতন-ভাতা পায় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। নার্সিং পেশা গ্রহণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
রোববার, ১৪ মে ২০২৩
বিশ্বজুড়েই নার্সদের স্বাস্থ্যসেবার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। ‘হেলথ ওয়াচ-বাংলাদেশ হিউম্যান রিসোর্সেস ফর হেলথ’-এর এক গবেষণায় জানা গেছে, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার একেবারে কমিয়ে আনতে হলে দক্ষ চিকিৎসকের পাশাপাশি দক্ষ নার্সও প্রয়োজন। দেশে দীর্ঘদিন ধরেই নার্স সংকট রয়েছে। এ সমস্যা সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন নার্স থাকার কথা। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) নিবন্ধিত চিকিৎসকের সংখ্যা কমবেশি ১ লাখ ৮ হাজার। নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন প্রায় তিন লাখ ২৫ হাজার নার্সের প্রয়োজন। অথচ দেশে নিবন্ধিত নার্স রয়েছেন মাত্র ৭৭ হাজার।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউওএইচও) মানদ- অনুযায়ী, একটি দেশের প্রতি দশ হাজার মানুষের বিপরীতে নার্স থাকতে হবে ২৩ জন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতি দশ হাজার মানুষের বিপরীতে নার্স আছেন মাত্র তিনজন। আর এই কারণে একজন নার্সের কাজে যতটুকু চাপ নেয়ার কথা তার থেকে তাকে ছয়গুণ বেশি চাপ নিতে হচ্ছে। কাজের অতিরিক্ত চাপে দেশের নার্সরা দ্রুতই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। কাজের প্রতি উৎসাহও কমতে থাকে একসময়। এর প্রভাব পড়ে চিকিৎসা সেবায়। একজন রোগীকে যতটুকু সেবা দেয়ার কথা ততটুকু একজন নার্স দিতে পারছেন না বলে মনে করেন অনেকে।
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নার্সদের নানা সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। কাজের বাড়তি চাপ তো রয়েছেই। প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে কাজ করছেন নার্সরা। একদিকে পেশাগত জীবনে তাদের নানা চাপ নিতে হয়। অন্যদিকে সামাজিক ক্ষেত্রেও তাদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। তাদের কাছ থেকে যে সেবা নেয়া হয় তার বিপরীতে খুব কম বেতন দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৮৬ শতাংশ নার্স অনুপযুক্ত পরিবেশে কাজ করেন। কর্মজীবনে পদোন্নতি পান না ৭০ শতাংশ নার্স। অনেক ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক দ্বন্দ্বের কারণেও তারা মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, পেশাগত কাজ করতে গিয়ে অনেক নার্স মানসিক উদ্বেগে ভোগেন। কর্মক্ষেত্রে তাদের মানসিক চাপ কমানোর ব্যবস্থা করা, কর্মঘণ্টা হ্রাস করা দরকার।
সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানে নার্সিং প্রশিক্ষণ দেয়া হয় সেখানে আসন সংকট রয়েছে। নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে তবে সেখানে খরচ বেশি। ফলে এই পেশায় আসতে ইচ্ছুক অনেকের পক্ষেই প্রশিক্ষণ নেয়া সম্ভব হয় না। আমরা বলতে চাই, প্রয়োজন অনুযায়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং প্রশিক্ষণের ব্যয় মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখা দরকার। প্রশিক্ষণ শেষে তারা যখন কাজে যোগ দেবেন তখন তারা যেন জীবিকা নির্বাহের মতো বেতন-ভাতা পায় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। নার্সিং পেশা গ্রহণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।