alt

উপ-সম্পাদকীয়

‘ঘটনাচক্রে শিক্ষক’ কেন তৈরি হচ্ছে

এমএ কবীর

: রোববার, ১৭ অক্টোবর ২০২১

শিক্ষার অনেক মৌলিক প্রশ্নের সুরাহা না হলেও শিক্ষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষ নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের ‘উইশফুল থিংকিং’-এর গিনিপিগ হতে হয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে একটা বড় অংশ ঘটনাচক্রে শিক্ষক। যারা হয়তো অন্য কোনো পেশায় না গিয়ে এই পেশায় এসেছেন। তিনি আরও বলেছেন, আমাদের প্রশিক্ষিত শিক্ষক প্রয়োজন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পাবলিক বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে যে শিক্ষকেরা রয়েছেন, তাদের ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, প্রভাবশালীদের তদবিরে শিক্ষক নিয়োগ হয়। ‘অবাক লাগে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা শিক্ষার মূল দায়িত্বে আছেন, তারা সেখানকার প্রভাবশালী ছাত্রনেতাদের কথায় ওঠেন আর বসেন। এ ব্যক্তিত্বহীনতা শিক্ষকতার মর্যাদাকে ভীষণভাবে ক্ষুণœ করেছে।’

ঘটনাক্রমে ঘটে যাওয়া কদাচিৎ ঘটনা ছাড়া প্রায় সবটাই অপ্রত্যাশিত, অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়। এসব ঘটনা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কোন সুফল বয়ে আনে না। একজন ব্যবসায়ী যদি রাতারাতি, ঘটনাক্রমে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেন তাহলে তা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। একজন ডাক্তার যদি ঘটনাক্রমে ডাক্তারি পেশা বেছে নেন তাহলে তা স্বাস্থ্যসেবার জন্য ক্ষতিকর। একজন ইঞ্জিনিয়ার যদি ঘটনাক্রমে তার পেশা বেছে নিয়ে থাকেন তাহলেও তা ক্ষতিকর। একজন বিসিএস ক্যাডার যদি ঘটনাক্রমে পছন্দের তলানি থেকে তার শিক্ষকতা পেশা পেয়ে থাকেন তাহলেও তা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর যখন একজন শিক্ষক ঘটনাক্রমে ‘শিক্ষক’ হয়ে ওঠেন।

শিক্ষকতা কোন পেশা নয়, ব্রত। আর ১০টি সাধারণ ব্রতর মতো নয়, একটি অনন্য ব্রত। রাষ্ট্র তাকে যথাযথ সম্মান দেবে না, সমাজ তাকে যথাযথ সম্মান দেবে না, তাকে বিনা বেতনে চাকরি করতে হবে, তাকে এমপিওভুক্তির জন্য লড়তে হবে, তাকে অভাবের সঙ্গে লড়তে হবে, এটা জেনেও তিনি শিক্ষকতাকে ব্রত হিসেবে বেছে নেবেন, এবং সেই ব্রত যথাযথভাবে পালন করে যাবেন, এজন্যই এর নাম শিক্ষকতা! কথাটায় যুক্তি যত কম, হাস্যরসও তত বেশি।

অনেকে চলে গেছেন একই পদে চাকরি করে। নেই কোন পদোন্নতি। প্রধান শিক্ষকেরা আজও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। প্রধান শিক্ষকের পাশে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী দেখা চোখগুলো বুজে নয়, চেয়ে থেকেই অনুধাবন করা সম্ভব সহকারী শিক্ষক শ্রেণিহীন বৈকি।

একজন শিক্ষক শ্রেণীতে পাঠদান করবেন শিক্ষার্থীর মেধা-মনন, ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায়। কিন্তু সেখানেও বাঁধ সাধে বিভিন্ন পরিপত্র। নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত করে দেয়া হয় পাঠ, তথা পাঠদান পদ্ধতি। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করা হচ্ছে শিক্ষার নীতিমালা। শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত করা, বই বিতরণ, শিশু জরিপ, হোম ভিজিট, উপকরণ তৈরি, ফিডিং কার্যক্রম, উপবৃত্তি কার্যক্রম, ভোটার তথ্য সংগ্রহ, মা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক, ঠিকাদারি, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন রেজিস্ট্রার লেখা, স্বাস্থ্য দপ্তরকে সহযোগিতা করাসহ আরও নানা কাজ করতে হয় পাঠদানের পাশাপাশি। সরকারের অন্য সব দপ্তর শিক্ষা অফিসারের চেয়ে শ্রেণি বিবেচনায় উন্নত। বহু ক্যাডারের ভিড়ে ক্যাডারহীন শিক্ষা অফিসার শ্রীহীন। শ্রীহীনের অধস্তন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী শিক্ষক।

পরিবার দেখাশোনার পাশাপাশি বাড়তি রোজগার, শিক্ষার্থী থেকে স্যার/সালাম সম্মানের আশায় এলেও আসা যায়, কিন্তু ভালোবেসে এ পেশায় আসার কারণ কী হতে পারে? ভালোবেসে পেশা বাছাই, স্বপ্ন নিয়ে পেশায় আগমনের হেতু কী? অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে বেশিরভাগ শিক্ষকের চেক বন্ধক রেখে লোন নিতে হয়। পদে পদে আর্থিক অপমানের শিকার হতে হয়।

আমাদের এই দীর্ঘ পথচলায় আজও শিক্ষাকে ‘ঘটনাক্রমে শিক্ষক’ লজ্জামুক্ত করতে পারলাম না। আজও আমরা প্রশিক্ষিত শিক্ষকের ব্যবস্থা করতে পারলাম না। শিক্ষক নিয়োগকে তদবিরমুক্ত করতে পারলাম না! এমন ছাত্রনেতা নির্বাচন করতে পারলাম না, যারা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ওঠাবেন না, বসাবেন না। এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানও নিয়োগ দিতে পারলাম না, যারা ছাত্রনেতাদের কথায় উঠবেন না, বসবেন না। এই ব্যর্থতা কার? রাষ্ট্রের, নাকি শিক্ষকদের?

শিক্ষার মান বিশ্লেষণ বলছে, আন্তর্জাতিক মানদন্ডে বাংলাদেশের শিক্ষার মান ২ দশমিক ৮ শতাংশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় শিক্ষার মান ২০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং পাকিস্তানের শিক্ষার মান ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। কিন্তু কেন আমাদের শিক্ষার মানের এই বেহাল দশা? তাহলে কি ঘটনাক্রমে শিক্ষকদের জন্যই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই ভয়াবহতা নেমে এসেছে? কিন্তু কেন শিক্ষকতা আমাদের দেশে পছন্দ না হয়ে ঘটনাক্রমে ঘটে যাওয়া পেশা হলো?

দেশে শিক্ষকতা পেশার জন্য প্রকাশ্য ঘুষ প্রচলন আছে। সবাই জানে কিন্তু কেউ কিছু বলে না। এর নাম অনুদান। ক’টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা হয়, বাকিটা ভাগবাটোয়ারা। কয়েক লক্ষ টাকা ও একটি ফোনে জুটে যায় শিক্ষকতা পেশা। অনার্স কোর্স, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, মাদরাসা সুপার, অফিস সহায়কসহ নানা পদের নিয়োগে এই ব্যবস্থা এখনও বিদ্যমান।

কী নির্মম! অপেক্ষাকৃত কম মেধার ও কখনও কখনও বখাটে, সন্ত্রাসীদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি আমাদের প্রজন্ম বিনির্মাণের দায়িত্ব। একটি শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য আর অন্য কোনো পদক্ষেপ দরকার আছে কী?

এ দেশে শিক্ষকতা পছন্দের পেশা নয়, বরং ঘটনাক্রমে পেশা। সাধারণত কেউ এই পেশায় আসতে চান না। সে জন্য একসময় আমরা সবচেয়ে কম যোগ্যতাসম্পন্ন অনেক মানুষকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিয়োগ দিয়েছি। অথচ হওয়ার কথা ছিল উল্টো। কিন্তু কেন কেউ শিক্ষকতা পেশায় আসতে চান না? খুব সোজাসাপ্টা কথা,এই পেশায় আর্থিক সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত কম। কম মানে শুধু কম নয়, অতি নগণ্য। আমরা এক দুর্ভাগা জাতি, এজন্যই হয়তো শিক্ষকতা পেশার জন্য বরাদ্দ রেখেছি সর্বনিম্ন।

পেশাগত ক্ষেত্রে আমাদের সর্বোচ্চ বরাদ্দ ক্যাডার পেশায়। তাও আবার সব ক্যাডারে নয়, কয়েকটি পেশায়। যেখানেও শিক্ষকতা পেশা অবহেলিত। ফলে প্রতিদিন মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, যা আমাদের পুরো রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থাকে এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

গবেষণা বলছে, আমাদের ৬৬ শতাংশ স্নাতক পাস মানুষ কর্মহীন। এ সত্য তৈরি হওয়ার পেছনে আরও নির্মম সত্য রয়েছে। শিক্ষকেরা আমাদের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির বাইরের কেউ নন। দলীয় রাজনৈতিক আনুগত্য, ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে যোগাযোগ, দুর্নীতি এ তিন সূত্র থেকে শিক্ষা, শিক্ষার্থী, শিক্ষকতাকে কতটা বাইরে রেখেছেন তারা?

২০১০ সালে শিক্ষানীতি পাস হওয়ার পর ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। শিক্ষানীতির আলোকে নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষাব্যবস্থাকে কতটা গড়ে তুলতে পেরেছেন? শিক্ষানীতির মুখবন্ধে বলা হয়, ‘মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। মানসম্মত শিক্ষা ও দক্ষ জনসম্পদ গড়ার প্রধান শক্তি দক্ষ নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক।’ তাহলে কেন এত দিনেও এমন একটি ব্যবস্থা দাঁড় করানো গেল না, যাতে ঘটনাচক্রে কেউ শিক্ষক না হয়ে যোগ্য, দক্ষ ও শিক্ষার প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিরাই শিক্ষক হতে পারেন।

শিক্ষানীতি সংস্কার না করেই নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কেন্দ্রে রেখে আগামী দিনের নাগরিকদের তৈরি করার চিন্তা করা হচ্ছে। এ জন্য কারিকুলাম ঢেলে সাজানো হচ্ছে। শিক্ষাবিদদের অনেকে মনে করেন, ‘নতুন এ শিক্ষাক্রমের যে ইনটেনশন, সেটা অনেক ক্ষেত্রেই ইতিবাচক। তবে আগের কারিকুলাম থেকে নতুন কারিকুলামে ফারাক বিস্তর। মাঠের বাস্তবতার চেয়ে এখানে প্রত্যাশার প্রতিফলন অনেক বেশি। যথেষ্ট আলাপ-আলোচনা না করেই শিক্ষাক্রম প্রস্তুত করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর যে অবকাঠামো এবং শিক্ষকদের যে মান, তাতে বড় ধরনের প্রস্তুতি ছাড়া তড়িঘড়ি করে এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক বড় একটা বিপর্যয় আসন্ন।’

২০১০ সালে শিক্ষানীতি পাস হওয়ার পর ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। শিক্ষানীতির আলোকে নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষাব্যবস্থাকে কতটা গড়ে তুলতে পেরেছেন?

যে কোনো দেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষা ক্ষেত্রে জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলা হয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিনির্মাণের জন্যই শিক্ষায় এ বিনিয়োগ জরুরি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে জিডিপির বিপরীতে শিক্ষায় বরাদ্দ বাংলাদেশে সবচেয়ে কম। ইউনেসকোর একটা গবেষণাপত্র থেকে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো গড়ে জিডিপির তিন দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যয় করে। তবে বাংলাদেশে এ ব্যয় মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ। বাংলাদেশের আগে রয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। দেশ দুটি জিডিপির ২ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যয় করে। ভারত ব্যয় করে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। জিডিপির বিপরীতে শিক্ষায় ব্যয় সবচেয়ে বেশি ভুটান ও নেপালে। দেশ দুটি যথাক্রমে ৭ দশমিক ১ এবং ৫ শতাংশ ব্যয় করে (সোশ্যাল স্পেন্ডিং ইন সাউথ এশিয়া-অ্যান ওভারভিউ অব গভর্নমেন্ট এক্সপেন্ডিচার অন হেলথ, এডুকেশন অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স; রচনা: ক্যারোলিনা ব্লচ)।

‘ঘটনাচক্রে শিক্ষক’ কিংবা ‘ব্যক্তিত্বহীন’ শিক্ষক কেন তৈরি হচ্ছে? সহজ এ প্রশ্নের উত্তরটা কে দেবে? তবে শিক্ষায় বিনিয়োগ, শিক্ষানীতি ও শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, মানসম্পন্ন ও মর্যাদাবান শিক্ষক তৈরি সব কটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। রাজনৈতিক দায়টা স্বীকার না করলে এগোনো কি যাবে?

ঘটনাচক্রে শিক্ষক হলেও এ পেশায় আসতে দীর্ঘ বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। একসময় এ পেশায় দীর্ঘ পথ চলতে চলতে শিক্ষক ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়েছে। ভালোবেসে না এলেও আসার পরে ভালোবাসা হয়ে গেছে। আজ ভালোবেসে মনে-প্রাণে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি করতে যারপরনাই চেষ্টা করছে তারাই যারা ঘটনাচক্রে শিক্ষক।

[লেখক : সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি]

লোকসান কমাতে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানো কতটা যৌক্তিক?

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ ও আগামী বাজেট

স্মার্ট দেশ গড়তে চাই স্মার্ট বিশ্ববিদ্যালয়

নিরাপদ সড়ক কেন চাই

মধ্যপ্রাচ্যে আগ্রাসন ও সন্ত্রাস সৃষ্টির দায় কার

ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের কাছে দোষ স্বীকারে সাক্ষ্যগত মূল্য ও বাস্তবতা

সমস্যায় জর্জরিত সড়ক, প্রতিকার কী

বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস

শিক্ষক নিয়োগ : পর্বতসম দুর্নীতির সামান্য প্রকাশ

সব মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে

ছবি

চৌবাচ্চার ফুটো এবং আমাদের উন্নয়ন

কিশোর গ্যাং : নষ্ট রাজনীতির বিনষ্ট সংস্কৃতি

মন্ত্রণালয় ভাগ করে লাভবান হলো কারা?

রম্যগদ্য : মর্জিনার কলঙ্কিত দাগ

সোমালিয়ার গরিব জেলেরা কীভাবে জলদস্যু হলো

চিকিৎসা জগতের বাতিঘর জন হপকিনস বিশ^বিদ্যালয়

জলবায়ু পরিবর্তনের দৃশ্যমান প্রভাব

দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ও আজকের বাংলাদেশ

আবিষ্কারমূলক শিখন পদ্ধতি

টেকসই কৃষিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা

ছবি

জয়নুলের সাঁওতাল দম্পতি এবং সুমনের সৌন্দর্যপ্রিয়তা

এরপরও কি গাছ লাগাবেন না, বন রক্ষা করবেন না?

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

খুব জানতে ইচ্ছে করে

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

কৃষিগুচ্ছ : ভর্তির আবেদনের নূ্যূনতম যোগ্যতা ও ফলাফল প্রস্তুতিতে বৈষম্য

ছবি

গণপরিবহনে নৈরাজ্যের শেষ কোথায়

ছাত্র রাজনীতি : পক্ষে-বিপক্ষে

ছবি

বি আর আম্বেদকর : নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিনিধি

চেকের মামলায় আসামির মুক্তির পথ কী

রাম-নবমী : হিন্দুত্বের নয়া গবেষণাগার

‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ উদ্যোগ কি সফল হবে

কিশোর গ্যাং : সমস্যার মূলে যেতে হবে

গীতি চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’ : সুস্থধারার চলচ্চিত্র বিকাশ ঘটুক

tab

উপ-সম্পাদকীয়

‘ঘটনাচক্রে শিক্ষক’ কেন তৈরি হচ্ছে

এমএ কবীর

রোববার, ১৭ অক্টোবর ২০২১

শিক্ষার অনেক মৌলিক প্রশ্নের সুরাহা না হলেও শিক্ষা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষ নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের ‘উইশফুল থিংকিং’-এর গিনিপিগ হতে হয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে একটা বড় অংশ ঘটনাচক্রে শিক্ষক। যারা হয়তো অন্য কোনো পেশায় না গিয়ে এই পেশায় এসেছেন। তিনি আরও বলেছেন, আমাদের প্রশিক্ষিত শিক্ষক প্রয়োজন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পাবলিক বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে যে শিক্ষকেরা রয়েছেন, তাদের ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, প্রভাবশালীদের তদবিরে শিক্ষক নিয়োগ হয়। ‘অবাক লাগে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা শিক্ষার মূল দায়িত্বে আছেন, তারা সেখানকার প্রভাবশালী ছাত্রনেতাদের কথায় ওঠেন আর বসেন। এ ব্যক্তিত্বহীনতা শিক্ষকতার মর্যাদাকে ভীষণভাবে ক্ষুণœ করেছে।’

ঘটনাক্রমে ঘটে যাওয়া কদাচিৎ ঘটনা ছাড়া প্রায় সবটাই অপ্রত্যাশিত, অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়। এসব ঘটনা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কোন সুফল বয়ে আনে না। একজন ব্যবসায়ী যদি রাতারাতি, ঘটনাক্রমে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠেন তাহলে তা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। একজন ডাক্তার যদি ঘটনাক্রমে ডাক্তারি পেশা বেছে নেন তাহলে তা স্বাস্থ্যসেবার জন্য ক্ষতিকর। একজন ইঞ্জিনিয়ার যদি ঘটনাক্রমে তার পেশা বেছে নিয়ে থাকেন তাহলেও তা ক্ষতিকর। একজন বিসিএস ক্যাডার যদি ঘটনাক্রমে পছন্দের তলানি থেকে তার শিক্ষকতা পেশা পেয়ে থাকেন তাহলেও তা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর যখন একজন শিক্ষক ঘটনাক্রমে ‘শিক্ষক’ হয়ে ওঠেন।

শিক্ষকতা কোন পেশা নয়, ব্রত। আর ১০টি সাধারণ ব্রতর মতো নয়, একটি অনন্য ব্রত। রাষ্ট্র তাকে যথাযথ সম্মান দেবে না, সমাজ তাকে যথাযথ সম্মান দেবে না, তাকে বিনা বেতনে চাকরি করতে হবে, তাকে এমপিওভুক্তির জন্য লড়তে হবে, তাকে অভাবের সঙ্গে লড়তে হবে, এটা জেনেও তিনি শিক্ষকতাকে ব্রত হিসেবে বেছে নেবেন, এবং সেই ব্রত যথাযথভাবে পালন করে যাবেন, এজন্যই এর নাম শিক্ষকতা! কথাটায় যুক্তি যত কম, হাস্যরসও তত বেশি।

অনেকে চলে গেছেন একই পদে চাকরি করে। নেই কোন পদোন্নতি। প্রধান শিক্ষকেরা আজও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। প্রধান শিক্ষকের পাশে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী দেখা চোখগুলো বুজে নয়, চেয়ে থেকেই অনুধাবন করা সম্ভব সহকারী শিক্ষক শ্রেণিহীন বৈকি।

একজন শিক্ষক শ্রেণীতে পাঠদান করবেন শিক্ষার্থীর মেধা-মনন, ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায়। কিন্তু সেখানেও বাঁধ সাধে বিভিন্ন পরিপত্র। নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত করে দেয়া হয় পাঠ, তথা পাঠদান পদ্ধতি। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করা হচ্ছে শিক্ষার নীতিমালা। শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত করা, বই বিতরণ, শিশু জরিপ, হোম ভিজিট, উপকরণ তৈরি, ফিডিং কার্যক্রম, উপবৃত্তি কার্যক্রম, ভোটার তথ্য সংগ্রহ, মা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক, ঠিকাদারি, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন রেজিস্ট্রার লেখা, স্বাস্থ্য দপ্তরকে সহযোগিতা করাসহ আরও নানা কাজ করতে হয় পাঠদানের পাশাপাশি। সরকারের অন্য সব দপ্তর শিক্ষা অফিসারের চেয়ে শ্রেণি বিবেচনায় উন্নত। বহু ক্যাডারের ভিড়ে ক্যাডারহীন শিক্ষা অফিসার শ্রীহীন। শ্রীহীনের অধস্তন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী শিক্ষক।

পরিবার দেখাশোনার পাশাপাশি বাড়তি রোজগার, শিক্ষার্থী থেকে স্যার/সালাম সম্মানের আশায় এলেও আসা যায়, কিন্তু ভালোবেসে এ পেশায় আসার কারণ কী হতে পারে? ভালোবেসে পেশা বাছাই, স্বপ্ন নিয়ে পেশায় আগমনের হেতু কী? অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে বেশিরভাগ শিক্ষকের চেক বন্ধক রেখে লোন নিতে হয়। পদে পদে আর্থিক অপমানের শিকার হতে হয়।

আমাদের এই দীর্ঘ পথচলায় আজও শিক্ষাকে ‘ঘটনাক্রমে শিক্ষক’ লজ্জামুক্ত করতে পারলাম না। আজও আমরা প্রশিক্ষিত শিক্ষকের ব্যবস্থা করতে পারলাম না। শিক্ষক নিয়োগকে তদবিরমুক্ত করতে পারলাম না! এমন ছাত্রনেতা নির্বাচন করতে পারলাম না, যারা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ওঠাবেন না, বসাবেন না। এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানও নিয়োগ দিতে পারলাম না, যারা ছাত্রনেতাদের কথায় উঠবেন না, বসবেন না। এই ব্যর্থতা কার? রাষ্ট্রের, নাকি শিক্ষকদের?

শিক্ষার মান বিশ্লেষণ বলছে, আন্তর্জাতিক মানদন্ডে বাংলাদেশের শিক্ষার মান ২ দশমিক ৮ শতাংশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কায় শিক্ষার মান ২০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং পাকিস্তানের শিক্ষার মান ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। কিন্তু কেন আমাদের শিক্ষার মানের এই বেহাল দশা? তাহলে কি ঘটনাক্রমে শিক্ষকদের জন্যই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই ভয়াবহতা নেমে এসেছে? কিন্তু কেন শিক্ষকতা আমাদের দেশে পছন্দ না হয়ে ঘটনাক্রমে ঘটে যাওয়া পেশা হলো?

দেশে শিক্ষকতা পেশার জন্য প্রকাশ্য ঘুষ প্রচলন আছে। সবাই জানে কিন্তু কেউ কিছু বলে না। এর নাম অনুদান। ক’টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা হয়, বাকিটা ভাগবাটোয়ারা। কয়েক লক্ষ টাকা ও একটি ফোনে জুটে যায় শিক্ষকতা পেশা। অনার্স কোর্স, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, মাদরাসা সুপার, অফিস সহায়কসহ নানা পদের নিয়োগে এই ব্যবস্থা এখনও বিদ্যমান।

কী নির্মম! অপেক্ষাকৃত কম মেধার ও কখনও কখনও বখাটে, সন্ত্রাসীদের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি আমাদের প্রজন্ম বিনির্মাণের দায়িত্ব। একটি শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য আর অন্য কোনো পদক্ষেপ দরকার আছে কী?

এ দেশে শিক্ষকতা পছন্দের পেশা নয়, বরং ঘটনাক্রমে পেশা। সাধারণত কেউ এই পেশায় আসতে চান না। সে জন্য একসময় আমরা সবচেয়ে কম যোগ্যতাসম্পন্ন অনেক মানুষকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিয়োগ দিয়েছি। অথচ হওয়ার কথা ছিল উল্টো। কিন্তু কেন কেউ শিক্ষকতা পেশায় আসতে চান না? খুব সোজাসাপ্টা কথা,এই পেশায় আর্থিক সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত কম। কম মানে শুধু কম নয়, অতি নগণ্য। আমরা এক দুর্ভাগা জাতি, এজন্যই হয়তো শিক্ষকতা পেশার জন্য বরাদ্দ রেখেছি সর্বনিম্ন।

পেশাগত ক্ষেত্রে আমাদের সর্বোচ্চ বরাদ্দ ক্যাডার পেশায়। তাও আবার সব ক্যাডারে নয়, কয়েকটি পেশায়। যেখানেও শিক্ষকতা পেশা অবহেলিত। ফলে প্রতিদিন মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, যা আমাদের পুরো রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থাকে এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

গবেষণা বলছে, আমাদের ৬৬ শতাংশ স্নাতক পাস মানুষ কর্মহীন। এ সত্য তৈরি হওয়ার পেছনে আরও নির্মম সত্য রয়েছে। শিক্ষকেরা আমাদের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির বাইরের কেউ নন। দলীয় রাজনৈতিক আনুগত্য, ক্ষমতা কাঠামোর সঙ্গে যোগাযোগ, দুর্নীতি এ তিন সূত্র থেকে শিক্ষা, শিক্ষার্থী, শিক্ষকতাকে কতটা বাইরে রেখেছেন তারা?

২০১০ সালে শিক্ষানীতি পাস হওয়ার পর ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। শিক্ষানীতির আলোকে নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষাব্যবস্থাকে কতটা গড়ে তুলতে পেরেছেন? শিক্ষানীতির মুখবন্ধে বলা হয়, ‘মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। মানসম্মত শিক্ষা ও দক্ষ জনসম্পদ গড়ার প্রধান শক্তি দক্ষ নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক।’ তাহলে কেন এত দিনেও এমন একটি ব্যবস্থা দাঁড় করানো গেল না, যাতে ঘটনাচক্রে কেউ শিক্ষক না হয়ে যোগ্য, দক্ষ ও শিক্ষার প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিরাই শিক্ষক হতে পারেন।

শিক্ষানীতি সংস্কার না করেই নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কেন্দ্রে রেখে আগামী দিনের নাগরিকদের তৈরি করার চিন্তা করা হচ্ছে। এ জন্য কারিকুলাম ঢেলে সাজানো হচ্ছে। শিক্ষাবিদদের অনেকে মনে করেন, ‘নতুন এ শিক্ষাক্রমের যে ইনটেনশন, সেটা অনেক ক্ষেত্রেই ইতিবাচক। তবে আগের কারিকুলাম থেকে নতুন কারিকুলামে ফারাক বিস্তর। মাঠের বাস্তবতার চেয়ে এখানে প্রত্যাশার প্রতিফলন অনেক বেশি। যথেষ্ট আলাপ-আলোচনা না করেই শিক্ষাক্রম প্রস্তুত করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর যে অবকাঠামো এবং শিক্ষকদের যে মান, তাতে বড় ধরনের প্রস্তুতি ছাড়া তড়িঘড়ি করে এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হলে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক বড় একটা বিপর্যয় আসন্ন।’

২০১০ সালে শিক্ষানীতি পাস হওয়ার পর ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। শিক্ষানীতির আলোকে নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষাব্যবস্থাকে কতটা গড়ে তুলতে পেরেছেন?

যে কোনো দেশে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষা ক্ষেত্রে জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলা হয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিনির্মাণের জন্যই শিক্ষায় এ বিনিয়োগ জরুরি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে জিডিপির বিপরীতে শিক্ষায় বরাদ্দ বাংলাদেশে সবচেয়ে কম। ইউনেসকোর একটা গবেষণাপত্র থেকে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো গড়ে জিডিপির তিন দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যয় করে। তবে বাংলাদেশে এ ব্যয় মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ। বাংলাদেশের আগে রয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। দেশ দুটি জিডিপির ২ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যয় করে। ভারত ব্যয় করে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। জিডিপির বিপরীতে শিক্ষায় ব্যয় সবচেয়ে বেশি ভুটান ও নেপালে। দেশ দুটি যথাক্রমে ৭ দশমিক ১ এবং ৫ শতাংশ ব্যয় করে (সোশ্যাল স্পেন্ডিং ইন সাউথ এশিয়া-অ্যান ওভারভিউ অব গভর্নমেন্ট এক্সপেন্ডিচার অন হেলথ, এডুকেশন অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স; রচনা: ক্যারোলিনা ব্লচ)।

‘ঘটনাচক্রে শিক্ষক’ কিংবা ‘ব্যক্তিত্বহীন’ শিক্ষক কেন তৈরি হচ্ছে? সহজ এ প্রশ্নের উত্তরটা কে দেবে? তবে শিক্ষায় বিনিয়োগ, শিক্ষানীতি ও শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, মানসম্পন্ন ও মর্যাদাবান শিক্ষক তৈরি সব কটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। রাজনৈতিক দায়টা স্বীকার না করলে এগোনো কি যাবে?

ঘটনাচক্রে শিক্ষক হলেও এ পেশায় আসতে দীর্ঘ বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। একসময় এ পেশায় দীর্ঘ পথ চলতে চলতে শিক্ষক ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়েছে। ভালোবেসে না এলেও আসার পরে ভালোবাসা হয়ে গেছে। আজ ভালোবেসে মনে-প্রাণে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি করতে যারপরনাই চেষ্টা করছে তারাই যারা ঘটনাচক্রে শিক্ষক।

[লেখক : সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি]

back to top