সিসার বিষক্রিয়ার প্রভাবে প্রতিবন্ধিতার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। সম্প্রতি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালিত ‘লেড পয়জনিং ইন বাংলাদেশ, রিসার্চ এভিডেন্স ফর আর্জেন্ট অ্যাকশন’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে-দেশে সাড়ে তিন কোটি শিশু সিসা বিষক্রিয়ার শিকার। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ শিশুরই রক্তে সিসার মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নির্ধারিত মাত্রার (৩ দশমিক ৫ মাইক্রো গ্রামের) চেয়ে বেশি। ২৪ থেকে ৪৮ মাস বয়সী শিশুদের শতভাগের শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
গবেষকদের মতে, সিসা একটি স্লো পয়জনিং বা ধীরগতির বিষক্রিয়া। এটা দীর্ঘদিন শরীরে অবস্থান করলে বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো হয়ে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে সিসা প্রথমেই মস্তিস্কে আক্রমণ করে। শিশুর শরীর ও শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারের বিভিন্ন পণ্য পরীক্ষা করে ৩৬৭টি পণ্যের মধ্যে ৯৬টিতে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ইউনিসেফের তথ্যমতে, সিসাদূষণে আক্রান্তের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। অতীতে সিসার ব্যবহার কম ছিল; কিন্তু বর্তমানে দেশে ও বৈশ্বিকভাবে সিসার ব্যবহার বাড়ছে।
প্রশ্ন হলো, সিসা কিভাবে মানবদেহে প্রবেশ করে। গবেষকদের মতে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সবকিছুর সঙ্গেই সিসা রয়েছে। খাবার, শ্বাস-প্রশ্বাস ও গর্ভবতী মায়ের মাধ্যমে শিশুদের দেহে সিসা প্রবেশ করে। বয়স্ক লোকেরাও একইভাবে আক্রান্ত হন। দীর্ঘদিন আক্রান্ত থাকলে হৃৎপি-, যকৃৎ, পরিপাক ও প্রজননতন্ত্রের ক্ষতি হয়। ফলে মাথা ঘোরানো ও গ্রন্থিতে ব্যথা দেখা দেয়। এমনকি এর প্রভাবে মৃত্যুও হয়। দেশে বছরে সিসা বিষক্রিয়ায় ৩১ হাজার মানুষ মারা যায়।
বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। সিসা ঝুঁকির জায়গাগুলো চিহ্নিত করে তা রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে। না হয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর মাশুল গুনতে হবে। মসলা, খাদ্যদ্রব্য ও গহনায় সিসার ব্যবহার বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। মানব শরীরে সিসাদূষণ নিয়ে দেশে কোনো সুনির্দিষ্ট গবেষণা নেই।
তাই সিসা নিয়ন্ত্রণে জরুরিভিত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে বড় ধরনের গবেষণা দরকার। এছাড়া সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সংস্থাসমূহকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে মানুষকে সচেতন করতে হবে। সিসার সুদূরপ্রসারি ক্ষতিকর দিকগুলো তাদের বোঝাতে হবে।
সোমবার, ১৪ নভেম্বর ২০২২
সিসার বিষক্রিয়ার প্রভাবে প্রতিবন্ধিতার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। সম্প্রতি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালিত ‘লেড পয়জনিং ইন বাংলাদেশ, রিসার্চ এভিডেন্স ফর আর্জেন্ট অ্যাকশন’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে-দেশে সাড়ে তিন কোটি শিশু সিসা বিষক্রিয়ার শিকার। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ শিশুরই রক্তে সিসার মাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি নির্ধারিত মাত্রার (৩ দশমিক ৫ মাইক্রো গ্রামের) চেয়ে বেশি। ২৪ থেকে ৪৮ মাস বয়সী শিশুদের শতভাগের শরীরেই সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
গবেষকদের মতে, সিসা একটি স্লো পয়জনিং বা ধীরগতির বিষক্রিয়া। এটা দীর্ঘদিন শরীরে অবস্থান করলে বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো হয়ে যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে সিসা প্রথমেই মস্তিস্কে আক্রমণ করে। শিশুর শরীর ও শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারের বিভিন্ন পণ্য পরীক্ষা করে ৩৬৭টি পণ্যের মধ্যে ৯৬টিতে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ইউনিসেফের তথ্যমতে, সিসাদূষণে আক্রান্তের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। অতীতে সিসার ব্যবহার কম ছিল; কিন্তু বর্তমানে দেশে ও বৈশ্বিকভাবে সিসার ব্যবহার বাড়ছে।
প্রশ্ন হলো, সিসা কিভাবে মানবদেহে প্রবেশ করে। গবেষকদের মতে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সবকিছুর সঙ্গেই সিসা রয়েছে। খাবার, শ্বাস-প্রশ্বাস ও গর্ভবতী মায়ের মাধ্যমে শিশুদের দেহে সিসা প্রবেশ করে। বয়স্ক লোকেরাও একইভাবে আক্রান্ত হন। দীর্ঘদিন আক্রান্ত থাকলে হৃৎপি-, যকৃৎ, পরিপাক ও প্রজননতন্ত্রের ক্ষতি হয়। ফলে মাথা ঘোরানো ও গ্রন্থিতে ব্যথা দেখা দেয়। এমনকি এর প্রভাবে মৃত্যুও হয়। দেশে বছরে সিসা বিষক্রিয়ায় ৩১ হাজার মানুষ মারা যায়।
বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। সিসা ঝুঁকির জায়গাগুলো চিহ্নিত করে তা রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে। না হয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এর মাশুল গুনতে হবে। মসলা, খাদ্যদ্রব্য ও গহনায় সিসার ব্যবহার বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। মানব শরীরে সিসাদূষণ নিয়ে দেশে কোনো সুনির্দিষ্ট গবেষণা নেই।
তাই সিসা নিয়ন্ত্রণে জরুরিভিত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে বড় ধরনের গবেষণা দরকার। এছাড়া সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সংস্থাসমূহকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে মানুষকে সচেতন করতে হবে। সিসার সুদূরপ্রসারি ক্ষতিকর দিকগুলো তাদের বোঝাতে হবে।