alt

উপ-সম্পাদকীয়

অগ্নিদুর্ঘটনা : মায়াকান্না আর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করাই কি যথেষ্ট

ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

: শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

আগুন হলো মানব সভ্যতার একটি উপকরণ। আগুন আজ যানবাহন চলাচলে, ইলেকট্রিসিটি উৎপাদনে এবং আরও অনেক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। আগুন ছাড়া বর্তমান সভ্য জগত চলতে পারে না। অথচ এ আগুন প্রতি বছর প্রচুর জানমালের ক্ষতির কারণ হচ্ছে। এর কারণ যদি আমরা খুঁজি তবে দেখতে পাব আমাদের অজ্ঞতা ও অসর্তকতা এই ক্ষতির জন্য দায়ী। আগুন দুর্ঘটনা আমাদের একটি নাগরিক ভাবনায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দুর্যোগের মধ্যে অগ্নি দুর্যোগ একটি মারাত্মক দুর্যোগ। ঘন ঘন মহড়া, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথ চিহ্নিত করে রাখার পরামর্শ দেন দমকল কর্মীরা। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে অগ্নি দুর্ঘটনার সংখ্যা লক্ষাধিক; যাতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তাদের তথ্যমতে অগ্নিকা-ের প্রধান কারণ তিনটিÑ বৈদ্যুতিক গোলযোগ, চুলা থেকে লাগা আগুন এবং সিগারেটের আগুন। যত অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে তার ৮০ শতাংশই ঘটে এ তিনটি কারণে। অনেক সময়ই অবহেলা ও অবজ্ঞার ভাব নিয়ে মানুষ কিছু কিছু ভুল করে থাকেন। আর এহেন কতিপয় তুচ্ছ ভাবনা থেকে এমন কিছু অঘটন ঘটে থাকে যার পরিণতি ভয়াবহ ও মারাত্মক। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা অনুসারে, নিয়ম লঙ্ঘন করে পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের ব্যবসা চালিয়ে নিতে ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়। টিআইবির গবেষণা থেকে দেখা যায়, আনুষ্ঠানিকভাবে রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা স্থাপনে লাইসেন্স প্রদান বা নবায়ন বন্ধ থাকলেও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে এবং রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে লাইসেন্স বের করা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের অসাধু কর্মকর্তাদের পরামর্শে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে রাসায়নিক শব্দটি বাদ দিয়ে এন্টারপ্রাইজ হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স বের করে নেয়। রাসায়নিকের ব্যবসায় অনাপত্তিপত্র, লাইসেন্স, ছাড়পত্র নেয়া বা নবায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরকে বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে।

দেশে একের পর এক কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থজনিত কারণে বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণ দুর্ঘটনায় মানবিক বিপর্যয়সহ ধনসম্পদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হলেও ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি, পরিদর্শন ও নজরদারির অভাব রয়েছে। তাছাড়া দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া এবং কলকারখানা মালিকপক্ষের উদাসীনতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং ফায়ার সেফটি গাইডলাইন মেনে না চলা সর্বোপরি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়ার কারণে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ভিকটিম হচ্ছে সাধারণ নাগরিক। দেশে বিভিন্ন সময়ে বারবার মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলেও সরকারি কর্তৃপক্ষ ও মালিকপক্ষের উদাসীনতা, অবহেলা এবং দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে দুর্ঘটনা যেন সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে। অথচ দুর্ঘটনা রোধে তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও সুনির্দিষ্ট কিছু কাঠামোগত পদক্ষেপ নিলে সেইসব দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু নানা কারণে এই অতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো না নেয়ার কারণে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে।

বাংলাদেশে খুব কম ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার জন্য কোনো কারখানা, যানবাহন, কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যবস্থাপক থেকে শুরু করে অনুমোদন ও তদারককারী প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহি ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়! বিশ্বের যেসব দেশে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রতিটি দুর্ঘটনার জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় সেসব দেশে দুর্ঘটনার হার অনেক কম। বাংলাদেশে এমন কোনো জবাবদিহিতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বা সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি বলেই দুর্ঘটনার কাঠামোগত ভিত্তিগুলো দিনের পর দিন দুর্বল হয়েছে। যে কোনো দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হলো দুর্ঘটনার পূর্বশর্ত ও অন্তর্নিহিত কারণগুলোকে নির্মূল করা, যেন দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে। আর যদি কোনো কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেই যায়, সে ক্ষেত্রে যথাযথ তদন্ত করে তার পেছনের কারণগুলোকে উন্মোচন করা এবং ভবিষ্যতে আর যেন এরকম দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে তার জন্য যথাযথ সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নেয়া। বাংলাদেশে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেÑ সড়ক-নৌ-রেল পথে, কর্মস্থলে, আগুনে পুড়ে, রাসায়নিক বিস্ফোরণে নানাভাবে মানুষ নিহত ও জখম হয়, প্রাণ-প্রকৃতি বিপন্ন হয় কিন্তু সেইসব দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য দুর্ঘটনার বিভিন্ন পূর্বশর্ত ও অন্তর্নিহিত কার্যকারণ শনাক্ত করে তা দূর করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয় না। দুর্ঘটনার পর রুটিন অনুসারে এক বা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেসব তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয় না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিদ্যমান ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা বা অব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য লাভজনক, ফলে এসব গোষ্ঠীর প্রভাবে কাঠামোগত সমস্যাগুলো সমাধানের পথে বাধা তৈরি হয়। আবার দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য যে বাড়তি বিনিয়োগ করতে হয় তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে লাভজনক হলেও তাৎক্ষণিক লাভ-লোকসান বিবেচনায় অনেকেই এই বিনিয়োগটুকু করতে চায় না। আর এ কারণেই নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি এক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি দেখে দুর্ঘটনা ঘটলে তাদের কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বা ক্ষতিপূরণের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না তাহলে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিনিয়োগের কোনো তাগিদ সেই প্রতিষ্ঠানের থাকে না।

দেশে এখন যেভাবে ভবন/মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে উপদেশ বা পরামর্শ কোনো কাজে আসে না। উন্নত দেশগুলোতে অনেক নিয়ম-কানুন আছে। নতুন ভবনের ক্ষেত্রে সঠিক নকশা ও নির্মাণ পদ্ধতি অনুসরণ করলে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। কিন্তু ইতোমধ্যে যেসব ভবন নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর অগ্নিনিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়? এটা বর্তমানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ইতোমধ্যে নির্মিত অধিকাংশ ভবনের কাঠামোগত পরিবর্তন জটিল ও ব্যয়বহুল, পারফরম্যান্স-বেইজড রেট্রোফিটিং করা যেতে পারে। আমাদের শহরগুলোতে বিশেষত সুউচ্চ ভবনের এলাকাগুলোতে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন এবং বিদ্যমান ভবনে পর্যাপ্ত পানির আধার বা ট্যাংক না থাকলে দু-একটি তলা ভেঙে ফেলে পানির আধার নির্মাণ করা যেতে পারে। বাস্তবসম্মত বিকল্প ব্যবস্থা না করা গেলে উপযুক্ত সফটওয়্যারের মাধ্যমে অধিবাসীদের বহির্গমনের গতিবিধি সিমুলেট করে ভবনের যত তলা পর্যন্ত মানুষের নিরাপদ বহির্গমন সম্ভব হবে, তত তলাই ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে। আগুন ও ধোঁয়া যাতে ছড়াতে না পারে এবং করিডোর ও সিঁড়িঘরে যাতে আগুন ও ধোঁয়া ছড়াতে না পারে, সেজন্য পর্যাপ্ত ফায়ার সেপারেশন ও ধোঁয়া নির্গমনপথের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভবনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত ফায়ার ড্যাম্পার ব্যবহার করতে হবে। সুউচ্চ ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার লিফট রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। বহুতল ভবনগুলোতে অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনা ও নিয়মিত ফায়ার ড্রিল অনুশীলনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে রাজউক এবং ফায়ার সার্ভিস বিভাগ নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে ফায়ার সনদ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। মোটকথা, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মেনে চলতে হবে, ভবনগুলোকে নিরাপদ করতেই হবে।

আমরা অগ্নিকা-ের মতো দুর্ঘটনার পর কেবল প্রতিক্রিয়াই লক্ষ্য করি। আসলে আমাদের কাজটা করে দেখাতে হবে। রোগ হলে যেমন চিকিৎসা দিতে হয়, তেমনই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনাও দেখার বিষয়। এক্ষেত্রেও তাই। ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনা এড়াতে টিআইবির ১০ দফা সুপারিশমালা বাস্তবায়ন প্রণিধানযোগ্য যেমনÑ যে কোনো দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে রাসায়নিক বিপর্যয় রোধে জাতীয়ভাবে একটি রাসায়নিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন এবং রাসায়নিক নিরাপত্তা বিষয়ে নির্দেশিকা তৈরি ও নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের অগ্নিকা-ের ঝুঁকি সম্পর্কে বোঝাতে হবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে; ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ কারখানা চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করতে হবে অথবা অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ হিসেবে স্বল্পমেয়াদি সময় দিয়ে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে; পুরান ঢাকার অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে নিজস্ব অগ্নি নির্বাপণ ও জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করতে হবে; রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক ও স্বচ্ছ করতে হবে; আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজউক, কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনীয় ক্ষমতা আইনে নিশ্চিত করতে হবে। ফায়ার সার্ভিসকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তাদের জনবল এবং উন্নত যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা এখন জরুরি প্রয়োজন। এছাড়া ভবন নির্মাণের সময় ফায়ার সেফটি কোড অনুসরণ, ভবনের বাসিন্দাদের নিয়মিত ফায়ার ফাইটিং প্রশিক্ষণ ও মহড়ার আয়োজন করা এবং আবাসিক এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচলের জন্য প্রশস্ত রাস্তা থাকাও জরুরি। এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস চাইলে সহযোগিতা করবে। আগুন লাগলে কী করতে হবে না হবে, সব তারা দেখিয়ে দেবে। সর্বোপরি অসতর্কতা অগ্নিকা-ের প্রধান কারণ। তাই নিজেরা সচেতন হলে অগ্নিকা-ের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।

[লেখক : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]

বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস

শিক্ষক নিয়োগ : পর্বতসম দুর্নীতির সামান্য প্রকাশ

সব মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে

ছবি

চৌবাচ্চার ফুটো এবং আমাদের উন্নয়ন

কিশোর গ্যাং : নষ্ট রাজনীতির বিনষ্ট সংস্কৃতি

মন্ত্রণালয় ভাগ করে লাভবান হলো কারা?

রম্যগদ্য : মর্জিনার কলঙ্কিত দাগ

সোমালিয়ার গরিব জেলেরা কীভাবে জলদস্যু হলো

চিকিৎসা জগতের বাতিঘর জন হপকিনস বিশ^বিদ্যালয়

জলবায়ু পরিবর্তনের দৃশ্যমান প্রভাব

দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ও আজকের বাংলাদেশ

আবিষ্কারমূলক শিখন পদ্ধতি

টেকসই কৃষিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা

ছবি

জয়নুলের সাঁওতাল দম্পতি এবং সুমনের সৌন্দর্যপ্রিয়তা

এরপরও কি গাছ লাগাবেন না, বন রক্ষা করবেন না?

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

খুব জানতে ইচ্ছে করে

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

কৃষিগুচ্ছ : ভর্তির আবেদনের নূ্যূনতম যোগ্যতা ও ফলাফল প্রস্তুতিতে বৈষম্য

ছবি

গণপরিবহনে নৈরাজ্যের শেষ কোথায়

ছাত্র রাজনীতি : পক্ষে-বিপক্ষে

ছবি

বি আর আম্বেদকর : নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিনিধি

চেকের মামলায় আসামির মুক্তির পথ কী

রাম-নবমী : হিন্দুত্বের নয়া গবেষণাগার

‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ উদ্যোগ কি সফল হবে

কিশোর গ্যাং : সমস্যার মূলে যেতে হবে

গীতি চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’ : সুস্থধারার চলচ্চিত্র বিকাশ ঘটুক

ছবি

ঋতুভিত্তিক চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতি

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

tab

উপ-সম্পাদকীয়

অগ্নিদুর্ঘটনা : মায়াকান্না আর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করাই কি যথেষ্ট

ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

আগুন হলো মানব সভ্যতার একটি উপকরণ। আগুন আজ যানবাহন চলাচলে, ইলেকট্রিসিটি উৎপাদনে এবং আরও অনেক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। আগুন ছাড়া বর্তমান সভ্য জগত চলতে পারে না। অথচ এ আগুন প্রতি বছর প্রচুর জানমালের ক্ষতির কারণ হচ্ছে। এর কারণ যদি আমরা খুঁজি তবে দেখতে পাব আমাদের অজ্ঞতা ও অসর্তকতা এই ক্ষতির জন্য দায়ী। আগুন দুর্ঘটনা আমাদের একটি নাগরিক ভাবনায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দুর্যোগের মধ্যে অগ্নি দুর্যোগ একটি মারাত্মক দুর্যোগ। ঘন ঘন মহড়া, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথ চিহ্নিত করে রাখার পরামর্শ দেন দমকল কর্মীরা। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে অগ্নি দুর্ঘটনার সংখ্যা লক্ষাধিক; যাতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তাদের তথ্যমতে অগ্নিকা-ের প্রধান কারণ তিনটিÑ বৈদ্যুতিক গোলযোগ, চুলা থেকে লাগা আগুন এবং সিগারেটের আগুন। যত অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে তার ৮০ শতাংশই ঘটে এ তিনটি কারণে। অনেক সময়ই অবহেলা ও অবজ্ঞার ভাব নিয়ে মানুষ কিছু কিছু ভুল করে থাকেন। আর এহেন কতিপয় তুচ্ছ ভাবনা থেকে এমন কিছু অঘটন ঘটে থাকে যার পরিণতি ভয়াবহ ও মারাত্মক। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা অনুসারে, নিয়ম লঙ্ঘন করে পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের ব্যবসা চালিয়ে নিতে ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়। টিআইবির গবেষণা থেকে দেখা যায়, আনুষ্ঠানিকভাবে রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা স্থাপনে লাইসেন্স প্রদান বা নবায়ন বন্ধ থাকলেও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে এবং রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে লাইসেন্স বের করা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের অসাধু কর্মকর্তাদের পরামর্শে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে রাসায়নিক শব্দটি বাদ দিয়ে এন্টারপ্রাইজ হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স বের করে নেয়। রাসায়নিকের ব্যবসায় অনাপত্তিপত্র, লাইসেন্স, ছাড়পত্র নেয়া বা নবায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরকে বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে।

দেশে একের পর এক কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থজনিত কারণে বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক অগ্নিকা- ও বিস্ফোরণ দুর্ঘটনায় মানবিক বিপর্যয়সহ ধনসম্পদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হলেও ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি, পরিদর্শন ও নজরদারির অভাব রয়েছে। তাছাড়া দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া এবং কলকারখানা মালিকপক্ষের উদাসীনতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং ফায়ার সেফটি গাইডলাইন মেনে না চলা সর্বোপরি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়ার কারণে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ভিকটিম হচ্ছে সাধারণ নাগরিক। দেশে বিভিন্ন সময়ে বারবার মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলেও সরকারি কর্তৃপক্ষ ও মালিকপক্ষের উদাসীনতা, অবহেলা এবং দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে দুর্ঘটনা যেন সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে। অথচ দুর্ঘটনা রোধে তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও সুনির্দিষ্ট কিছু কাঠামোগত পদক্ষেপ নিলে সেইসব দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু নানা কারণে এই অতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো না নেয়ার কারণে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে।

বাংলাদেশে খুব কম ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার জন্য কোনো কারখানা, যানবাহন, কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যবস্থাপক থেকে শুরু করে অনুমোদন ও তদারককারী প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহি ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়! বিশ্বের যেসব দেশে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রতিটি দুর্ঘটনার জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় সেসব দেশে দুর্ঘটনার হার অনেক কম। বাংলাদেশে এমন কোনো জবাবদিহিতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বা সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি বলেই দুর্ঘটনার কাঠামোগত ভিত্তিগুলো দিনের পর দিন দুর্বল হয়েছে। যে কোনো দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হলো দুর্ঘটনার পূর্বশর্ত ও অন্তর্নিহিত কারণগুলোকে নির্মূল করা, যেন দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে। আর যদি কোনো কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেই যায়, সে ক্ষেত্রে যথাযথ তদন্ত করে তার পেছনের কারণগুলোকে উন্মোচন করা এবং ভবিষ্যতে আর যেন এরকম দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে তার জন্য যথাযথ সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নেয়া। বাংলাদেশে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেÑ সড়ক-নৌ-রেল পথে, কর্মস্থলে, আগুনে পুড়ে, রাসায়নিক বিস্ফোরণে নানাভাবে মানুষ নিহত ও জখম হয়, প্রাণ-প্রকৃতি বিপন্ন হয় কিন্তু সেইসব দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য দুর্ঘটনার বিভিন্ন পূর্বশর্ত ও অন্তর্নিহিত কার্যকারণ শনাক্ত করে তা দূর করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয় না। দুর্ঘটনার পর রুটিন অনুসারে এক বা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেসব তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয় না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিদ্যমান ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা বা অব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য লাভজনক, ফলে এসব গোষ্ঠীর প্রভাবে কাঠামোগত সমস্যাগুলো সমাধানের পথে বাধা তৈরি হয়। আবার দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য যে বাড়তি বিনিয়োগ করতে হয় তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে লাভজনক হলেও তাৎক্ষণিক লাভ-লোকসান বিবেচনায় অনেকেই এই বিনিয়োগটুকু করতে চায় না। আর এ কারণেই নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি এক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি দেখে দুর্ঘটনা ঘটলে তাদের কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বা ক্ষতিপূরণের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না তাহলে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিনিয়োগের কোনো তাগিদ সেই প্রতিষ্ঠানের থাকে না।

দেশে এখন যেভাবে ভবন/মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে উপদেশ বা পরামর্শ কোনো কাজে আসে না। উন্নত দেশগুলোতে অনেক নিয়ম-কানুন আছে। নতুন ভবনের ক্ষেত্রে সঠিক নকশা ও নির্মাণ পদ্ধতি অনুসরণ করলে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। কিন্তু ইতোমধ্যে যেসব ভবন নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর অগ্নিনিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়? এটা বর্তমানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ইতোমধ্যে নির্মিত অধিকাংশ ভবনের কাঠামোগত পরিবর্তন জটিল ও ব্যয়বহুল, পারফরম্যান্স-বেইজড রেট্রোফিটিং করা যেতে পারে। আমাদের শহরগুলোতে বিশেষত সুউচ্চ ভবনের এলাকাগুলোতে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন এবং বিদ্যমান ভবনে পর্যাপ্ত পানির আধার বা ট্যাংক না থাকলে দু-একটি তলা ভেঙে ফেলে পানির আধার নির্মাণ করা যেতে পারে। বাস্তবসম্মত বিকল্প ব্যবস্থা না করা গেলে উপযুক্ত সফটওয়্যারের মাধ্যমে অধিবাসীদের বহির্গমনের গতিবিধি সিমুলেট করে ভবনের যত তলা পর্যন্ত মানুষের নিরাপদ বহির্গমন সম্ভব হবে, তত তলাই ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে। আগুন ও ধোঁয়া যাতে ছড়াতে না পারে এবং করিডোর ও সিঁড়িঘরে যাতে আগুন ও ধোঁয়া ছড়াতে না পারে, সেজন্য পর্যাপ্ত ফায়ার সেপারেশন ও ধোঁয়া নির্গমনপথের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভবনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত ফায়ার ড্যাম্পার ব্যবহার করতে হবে। সুউচ্চ ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার লিফট রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। বহুতল ভবনগুলোতে অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনা ও নিয়মিত ফায়ার ড্রিল অনুশীলনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে রাজউক এবং ফায়ার সার্ভিস বিভাগ নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে ফায়ার সনদ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। মোটকথা, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মেনে চলতে হবে, ভবনগুলোকে নিরাপদ করতেই হবে।

আমরা অগ্নিকা-ের মতো দুর্ঘটনার পর কেবল প্রতিক্রিয়াই লক্ষ্য করি। আসলে আমাদের কাজটা করে দেখাতে হবে। রোগ হলে যেমন চিকিৎসা দিতে হয়, তেমনই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনাও দেখার বিষয়। এক্ষেত্রেও তাই। ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনা এড়াতে টিআইবির ১০ দফা সুপারিশমালা বাস্তবায়ন প্রণিধানযোগ্য যেমনÑ যে কোনো দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে রাসায়নিক বিপর্যয় রোধে জাতীয়ভাবে একটি রাসায়নিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন এবং রাসায়নিক নিরাপত্তা বিষয়ে নির্দেশিকা তৈরি ও নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের অগ্নিকা-ের ঝুঁকি সম্পর্কে বোঝাতে হবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে; ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ কারখানা চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করতে হবে অথবা অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ হিসেবে স্বল্পমেয়াদি সময় দিয়ে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে; পুরান ঢাকার অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে নিজস্ব অগ্নি নির্বাপণ ও জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করতে হবে; রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক ও স্বচ্ছ করতে হবে; আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজউক, কলকারখানা ও পরিদর্শন অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনীয় ক্ষমতা আইনে নিশ্চিত করতে হবে। ফায়ার সার্ভিসকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তাদের জনবল এবং উন্নত যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা এখন জরুরি প্রয়োজন। এছাড়া ভবন নির্মাণের সময় ফায়ার সেফটি কোড অনুসরণ, ভবনের বাসিন্দাদের নিয়মিত ফায়ার ফাইটিং প্রশিক্ষণ ও মহড়ার আয়োজন করা এবং আবাসিক এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচলের জন্য প্রশস্ত রাস্তা থাকাও জরুরি। এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস চাইলে সহযোগিতা করবে। আগুন লাগলে কী করতে হবে না হবে, সব তারা দেখিয়ে দেবে। সর্বোপরি অসতর্কতা অগ্নিকা-ের প্রধান কারণ। তাই নিজেরা সচেতন হলে অগ্নিকা-ের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।

[লেখক : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]

back to top