জাঁ-নেসার ওসমান
‘বৌ বনাম বেগম...’
ছি: ছি:, এই কথাটা আপনাকে মানায় না। আপনার চরিত্রের সাথে একেবারে যায় না। আপনি বাঙালি হয়ে বাঙালিকে ছোট করছেন! যেই থালায় খাই সেই থালায় ফুটা করি। ধিক ধিক আপনারে।’
‘লেবব্বাবা! আমি আবার কবে কখন বাঙালিকে ছোট করলাম?’
‘এই যে লিখছেন বৌ বনাম বেগম...!’
‘বৌ বনাম বেগম...লিখলাম তো কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেলো!’
‘অশুদ্ধ হবে না! মিয়া বাঙলার গাঁয়ের বধূর সাথে মুঘলদের হারেমে থাকা বেগমের সাথে তুলনা, মানে আপেল আর কাঁঠালের কি তুলনা চলে!’
‘এর মাঝে তুই আবার তুলনা কি দেখলি?’
‘দেখবো না! বৌ মানে, বাংলার গাঁয়ের বধূ গায়ে কোনো মত একটা লালপেড়ে সাদা শাড়ি, কালচে গায়ের রং, মুখে বলে শ্যামলা, চ্যাপা শুঁটকি খাওয়া ফ্যাশন প্যারেডের মেয়েদের মতো শীর্ণকায় গতর, জিরো ফিগার, বেচারির দেহ দেখলে মনে হবে, পি-নাট অন দি ফ্লোর, সেই বাংলার মরা ধরা বৌয়ের সাথে মুঘলদের হারেমের পেস্তাবাদাম, আঙুর আখরোট খাওয়া, কাঁচুলি পরা, ছত্রিশ-তেইশ-চল্লিশ
সাইজের বেগমদের তুলনা হয়! বৌ বনাম বেগম। ওই সব বেগমের গায়ের দুধে-আলতা রং দেখলে মনে হবে হেনরী মাতিস যেন নিজ হাতে রংগুলিয়ে ক্যানভাসে আবির লেপছে। মহাভারতের ঋষি শরদ্বান তো জানপদীর ফিগার দেখে, আদিরসের বন্যা বইয়ে দিলেন, ফলে স্যারের ধ্যানভঙ্গ হলো। আপনে মিয়া মেনকার মতো বেগমের সাথে তুলনা করতে যেয়ে নিজ বাংলার সকল ললনার বেইজ্জতি করছেন! শরম শরম!! আপনের কথাটা উইথড্র করতে হবে, কথাটা উইথড্র করেন মিয়া।’
‘আচ্ছা তোর কথামতো মুই কথাটা উইথড্র করমু, তয় উইথড্র করুম কোনডা? বৌডা নাকি বেগমডা?’
‘নিশ্চয় বৌডা, আপনে বিদেশি উৎভিন্না যৌবনাগোর লগে বেগমদের তুলনা করেন, তবেই না লড়াইটা সেয়ানে সেয়ানে মানে সমানে সমানে হবে।’
‘কিন্তু ভাইডি আমি বিদেশে যে বাঙালি বাড়ি কিনে বেগমপাড়া বানিয়েছে সেই বেগমদের সাথে ঢাকায় যারা বৌয়ের নামে বাড়ি কিনছেন তাদের একটা তুলনা মূলক আলোচনা করতে চাইছি। এখানে সবাই বাঙালি অন্য কোনো, মুঘল, আর্য, অনার্য, দ্রাবিড়, উৎকল-পাঞ্জাব, মহেঞ্জাদারো, হরপ্পা... কেউ নেই। কেবল শ্রেফ বাঙালি আর বাঙালি, মাছে-ভাতে ভেতো বাঙালি। একজন বাড়ি কিনছেন বিদেশে আর একজন বাড়ি কিনছেন স্বদেশে। এদের মাঝে প্রতিযোগিতা হলে কে জিতবে? তাই লিখলাম, বৌ বনাম বেগম...’।
‘হে হে হে, এই কথাটা আগে বলবেন না! শুনেছি বেগমপাড়ায় নাকি বাঙালি পাবলিক একশ-দুইশ কোটি টাকা দিয়া বাড়ি কিনছে!’
‘তোর এই বেগমপাড়ার গল্প শোনার আগে তোকে শুনতে হবে বেগমপুরার কথা।’
‘বেগমপুরা সেইটা আবার কী? এখানে কি পুরাটাই বেগমরা নেয়?’
‘আরে না, সব সময়তো পুরাটা নিতে পাওে না। এক ভারতীয় মহিলা চলচ্চিত্র নির্মাতা, বেগমপুরা নামে ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র বানিয়েছিলো, সেখানে দেখানো হয় যে- ভারতীয় মহিলারা ক্যানাডায় থাকে আর তাদের স্বামীরা বিদেশে যেমন- আরব আমিরাতে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠায় আর সেই বৈধ ডলার দিয়ে ক্যানাডায় ভারতীয়রা স্ত্রীর নামে বাড়ি কিনে। সেই ডকুমেন্টারির নাম ছিলো ‘বেগমপুরা’।
কিন্তু সেই সব বাড়ি কেনা হতো বৈধ টাকায়। এই সময় ক্যানাডা সরকার বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আনলে তাকে, অভিবাসন দেওয়া শুরু করলো, সেই টাকা সাদা হোক আর কালো হোক, ক্যানাডা সরকারের কোনো মাথাব্যাথা নেই। কারণ ট্যাকা
ট্যাকাই, কালো আর সাদা বাহিরে কেবল ভেতরে সবার সমান দাম।’
‘ছন্দ মিলল না!’
‘না মিলুক, কথাতো সত্য। এখন শোন, তোদের দেশের বৈধ-অবৈধ আয় নিয়ে সবাই- দুবাই, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি কিনতে শুরু করলেন। তোদের ওয়ান ইলেভেনের সময় অনেকে তো বছর দুই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বেগমপাড়ায় বসবাস করে আবার নিজ দেশে ফেরৎ ও পুনর্দ্যােমে ট্যাকা কামানো শুরু করলেন।’
‘তো আপনের এই বেগমপুরা বেগমপাড়ায় রূপ নিলো কখন?’
‘আরে ক্যানাডায় বসবাসরত এক বাঙালি সাংবাদিক একবার এসব বৌয়ের নামে চোরাপথে পাচার করা বাঙালি ব্যবসায়ী, গামলা, আমলার-মামলা, মিয়া ডনের বাড়ি কেনার রিপোর্ট করলো, তখন সেই টাইটেলে ‘বেগমপুরা’ না লিখে লিখলো ‘বেগমপাড়া’ ব্যাস টাইটেল হিট। বাঙালি পাঠক মজা পেলো। সেই থেকে তোর এই বেগম পাড়া, বহুল প্রচলিত মানে ভাইরাল হইলো। দেশের মন্ত্রী মিনিস্টার এমনকি দুদকও এই নাম অ্যাপ্রুভ করছে।’
‘তো এই বেগমের লগে আমরার ভেড়ামারার বাঙালি বৌয়ের সম্পর্ক কী?’
‘এই সম্পর্ক তুমি বোঝ না! কঁচি খুকা। দ্যাখ, বাংলাদেশের প্রথম দশকে অবৈধ টাকা দিয়া যারা সম্পদ বানাইছে, তারা কইতো এইডা আমার শ্বশুরে দিছে। তো আপনার শ্বশুর এই ট্যাকা পাইলো কই?’
‘পাকিস্তান আমলের বাঙালি শ্বশুরের তো এতো টাকা থাকার কথা নয়!’
‘তোর আন্দাজ ঠিক, পাকিস্তান আমলে বেশির ভাগ বাঙালি নিম্নআয়ের বাসিন্দা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের পিয়ন, দারোয়ান, ড্রাইভার, দোকানের ছ্যেরা, ঘরমুছনি কামের বেটির পোলাÑ এরা সবাই ওই ব্যবসাগুলো তৎকালীন প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় নিজেদের নামে কওে নিলো। আর এসব ফোর্থক্লাস কর্মচারীর জামাই যতই অবৈধ আয় করে সব শ্বশুরের পিপিপি প্রজেক্টে বৈধ করে। সরকারও খুশ পাবলিকও খুশি।’
‘তাহলে বাঙালি বৌয়ের সাথে বিদেশি বেগমের কি কম্পিটিশন?’
‘বর্তমানে বেশির ভাগ দেশ দরদি নেতা, বাস-মিনিবাস, চামড়ার ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, টেম্পোস্ট্যান্ড, রাস্তার হকারের টাকা সব তো আর বিদেশে পাঠাচ্ছে না, কিছু টাকা দিয়ে নিজ দেশেই বৌয়ের নামে বাড়ি-গাড়ি, ব্যবসা শুরু করছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই অবৈধ বা কালো টাকাতো দেশেই থাকছে। বিদেশে পাচার হচ্ছে না। তাছাড়া বিদেশে আর কতো বাঙালি বাড়ি কিনছে বড় জোর দুই হাজার বা তিন হাজার বাঙালি আর দেশে লক্ষ লক্ষ লোক, ড্রাইভার, পিয়ন, সিআইটির দারোয়ান, এমএলএসএস, সবের তিন তলা ফ্ল্যাট, কারো সাতটা বাড়ি, কারো কান্দিরপাড়ায় বৌয়ের নামে দশ কোটি টাকার আলিশান প্রাসাদ। তাই ভাবি মনে মনে/ দেখাও দেশবাসী গণে/ আইনের শাষণ মেলিয়া/ স্বদেশের বৌ’ধর/ বিদেশের
বেগম ফেলিয়া/ খামাখা তোরা বিদেশের সামান্য কয়েক হাজার প্রবাসী বেগম না ধরে দেশের ভেতরে হাতের কাছের নিজের ঘরের লক্ষ লক্ষ বাড়িওয়ালী বৌগুলারে ধর, তাহলে অচিরেই তুই উন্নত আয়ের দেশে পৌঁছে যাবি।’
‘সাধু সাধু।’
[লেখক : চলচ্চিত্রকার]
জাঁ-নেসার ওসমান
শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
‘বৌ বনাম বেগম...’
ছি: ছি:, এই কথাটা আপনাকে মানায় না। আপনার চরিত্রের সাথে একেবারে যায় না। আপনি বাঙালি হয়ে বাঙালিকে ছোট করছেন! যেই থালায় খাই সেই থালায় ফুটা করি। ধিক ধিক আপনারে।’
‘লেবব্বাবা! আমি আবার কবে কখন বাঙালিকে ছোট করলাম?’
‘এই যে লিখছেন বৌ বনাম বেগম...!’
‘বৌ বনাম বেগম...লিখলাম তো কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেলো!’
‘অশুদ্ধ হবে না! মিয়া বাঙলার গাঁয়ের বধূর সাথে মুঘলদের হারেমে থাকা বেগমের সাথে তুলনা, মানে আপেল আর কাঁঠালের কি তুলনা চলে!’
‘এর মাঝে তুই আবার তুলনা কি দেখলি?’
‘দেখবো না! বৌ মানে, বাংলার গাঁয়ের বধূ গায়ে কোনো মত একটা লালপেড়ে সাদা শাড়ি, কালচে গায়ের রং, মুখে বলে শ্যামলা, চ্যাপা শুঁটকি খাওয়া ফ্যাশন প্যারেডের মেয়েদের মতো শীর্ণকায় গতর, জিরো ফিগার, বেচারির দেহ দেখলে মনে হবে, পি-নাট অন দি ফ্লোর, সেই বাংলার মরা ধরা বৌয়ের সাথে মুঘলদের হারেমের পেস্তাবাদাম, আঙুর আখরোট খাওয়া, কাঁচুলি পরা, ছত্রিশ-তেইশ-চল্লিশ
সাইজের বেগমদের তুলনা হয়! বৌ বনাম বেগম। ওই সব বেগমের গায়ের দুধে-আলতা রং দেখলে মনে হবে হেনরী মাতিস যেন নিজ হাতে রংগুলিয়ে ক্যানভাসে আবির লেপছে। মহাভারতের ঋষি শরদ্বান তো জানপদীর ফিগার দেখে, আদিরসের বন্যা বইয়ে দিলেন, ফলে স্যারের ধ্যানভঙ্গ হলো। আপনে মিয়া মেনকার মতো বেগমের সাথে তুলনা করতে যেয়ে নিজ বাংলার সকল ললনার বেইজ্জতি করছেন! শরম শরম!! আপনের কথাটা উইথড্র করতে হবে, কথাটা উইথড্র করেন মিয়া।’
‘আচ্ছা তোর কথামতো মুই কথাটা উইথড্র করমু, তয় উইথড্র করুম কোনডা? বৌডা নাকি বেগমডা?’
‘নিশ্চয় বৌডা, আপনে বিদেশি উৎভিন্না যৌবনাগোর লগে বেগমদের তুলনা করেন, তবেই না লড়াইটা সেয়ানে সেয়ানে মানে সমানে সমানে হবে।’
‘কিন্তু ভাইডি আমি বিদেশে যে বাঙালি বাড়ি কিনে বেগমপাড়া বানিয়েছে সেই বেগমদের সাথে ঢাকায় যারা বৌয়ের নামে বাড়ি কিনছেন তাদের একটা তুলনা মূলক আলোচনা করতে চাইছি। এখানে সবাই বাঙালি অন্য কোনো, মুঘল, আর্য, অনার্য, দ্রাবিড়, উৎকল-পাঞ্জাব, মহেঞ্জাদারো, হরপ্পা... কেউ নেই। কেবল শ্রেফ বাঙালি আর বাঙালি, মাছে-ভাতে ভেতো বাঙালি। একজন বাড়ি কিনছেন বিদেশে আর একজন বাড়ি কিনছেন স্বদেশে। এদের মাঝে প্রতিযোগিতা হলে কে জিতবে? তাই লিখলাম, বৌ বনাম বেগম...’।
‘হে হে হে, এই কথাটা আগে বলবেন না! শুনেছি বেগমপাড়ায় নাকি বাঙালি পাবলিক একশ-দুইশ কোটি টাকা দিয়া বাড়ি কিনছে!’
‘তোর এই বেগমপাড়ার গল্প শোনার আগে তোকে শুনতে হবে বেগমপুরার কথা।’
‘বেগমপুরা সেইটা আবার কী? এখানে কি পুরাটাই বেগমরা নেয়?’
‘আরে না, সব সময়তো পুরাটা নিতে পাওে না। এক ভারতীয় মহিলা চলচ্চিত্র নির্মাতা, বেগমপুরা নামে ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র বানিয়েছিলো, সেখানে দেখানো হয় যে- ভারতীয় মহিলারা ক্যানাডায় থাকে আর তাদের স্বামীরা বিদেশে যেমন- আরব আমিরাতে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠায় আর সেই বৈধ ডলার দিয়ে ক্যানাডায় ভারতীয়রা স্ত্রীর নামে বাড়ি কিনে। সেই ডকুমেন্টারির নাম ছিলো ‘বেগমপুরা’।
কিন্তু সেই সব বাড়ি কেনা হতো বৈধ টাকায়। এই সময় ক্যানাডা সরকার বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আনলে তাকে, অভিবাসন দেওয়া শুরু করলো, সেই টাকা সাদা হোক আর কালো হোক, ক্যানাডা সরকারের কোনো মাথাব্যাথা নেই। কারণ ট্যাকা
ট্যাকাই, কালো আর সাদা বাহিরে কেবল ভেতরে সবার সমান দাম।’
‘ছন্দ মিলল না!’
‘না মিলুক, কথাতো সত্য। এখন শোন, তোদের দেশের বৈধ-অবৈধ আয় নিয়ে সবাই- দুবাই, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি কিনতে শুরু করলেন। তোদের ওয়ান ইলেভেনের সময় অনেকে তো বছর দুই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বেগমপাড়ায় বসবাস করে আবার নিজ দেশে ফেরৎ ও পুনর্দ্যােমে ট্যাকা কামানো শুরু করলেন।’
‘তো আপনের এই বেগমপুরা বেগমপাড়ায় রূপ নিলো কখন?’
‘আরে ক্যানাডায় বসবাসরত এক বাঙালি সাংবাদিক একবার এসব বৌয়ের নামে চোরাপথে পাচার করা বাঙালি ব্যবসায়ী, গামলা, আমলার-মামলা, মিয়া ডনের বাড়ি কেনার রিপোর্ট করলো, তখন সেই টাইটেলে ‘বেগমপুরা’ না লিখে লিখলো ‘বেগমপাড়া’ ব্যাস টাইটেল হিট। বাঙালি পাঠক মজা পেলো। সেই থেকে তোর এই বেগম পাড়া, বহুল প্রচলিত মানে ভাইরাল হইলো। দেশের মন্ত্রী মিনিস্টার এমনকি দুদকও এই নাম অ্যাপ্রুভ করছে।’
‘তো এই বেগমের লগে আমরার ভেড়ামারার বাঙালি বৌয়ের সম্পর্ক কী?’
‘এই সম্পর্ক তুমি বোঝ না! কঁচি খুকা। দ্যাখ, বাংলাদেশের প্রথম দশকে অবৈধ টাকা দিয়া যারা সম্পদ বানাইছে, তারা কইতো এইডা আমার শ্বশুরে দিছে। তো আপনার শ্বশুর এই ট্যাকা পাইলো কই?’
‘পাকিস্তান আমলের বাঙালি শ্বশুরের তো এতো টাকা থাকার কথা নয়!’
‘তোর আন্দাজ ঠিক, পাকিস্তান আমলে বেশির ভাগ বাঙালি নিম্নআয়ের বাসিন্দা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের পিয়ন, দারোয়ান, ড্রাইভার, দোকানের ছ্যেরা, ঘরমুছনি কামের বেটির পোলাÑ এরা সবাই ওই ব্যবসাগুলো তৎকালীন প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় নিজেদের নামে কওে নিলো। আর এসব ফোর্থক্লাস কর্মচারীর জামাই যতই অবৈধ আয় করে সব শ্বশুরের পিপিপি প্রজেক্টে বৈধ করে। সরকারও খুশ পাবলিকও খুশি।’
‘তাহলে বাঙালি বৌয়ের সাথে বিদেশি বেগমের কি কম্পিটিশন?’
‘বর্তমানে বেশির ভাগ দেশ দরদি নেতা, বাস-মিনিবাস, চামড়ার ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, টেম্পোস্ট্যান্ড, রাস্তার হকারের টাকা সব তো আর বিদেশে পাঠাচ্ছে না, কিছু টাকা দিয়ে নিজ দেশেই বৌয়ের নামে বাড়ি-গাড়ি, ব্যবসা শুরু করছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই অবৈধ বা কালো টাকাতো দেশেই থাকছে। বিদেশে পাচার হচ্ছে না। তাছাড়া বিদেশে আর কতো বাঙালি বাড়ি কিনছে বড় জোর দুই হাজার বা তিন হাজার বাঙালি আর দেশে লক্ষ লক্ষ লোক, ড্রাইভার, পিয়ন, সিআইটির দারোয়ান, এমএলএসএস, সবের তিন তলা ফ্ল্যাট, কারো সাতটা বাড়ি, কারো কান্দিরপাড়ায় বৌয়ের নামে দশ কোটি টাকার আলিশান প্রাসাদ। তাই ভাবি মনে মনে/ দেখাও দেশবাসী গণে/ আইনের শাষণ মেলিয়া/ স্বদেশের বৌ’ধর/ বিদেশের
বেগম ফেলিয়া/ খামাখা তোরা বিদেশের সামান্য কয়েক হাজার প্রবাসী বেগম না ধরে দেশের ভেতরে হাতের কাছের নিজের ঘরের লক্ষ লক্ষ বাড়িওয়ালী বৌগুলারে ধর, তাহলে অচিরেই তুই উন্নত আয়ের দেশে পৌঁছে যাবি।’
‘সাধু সাধু।’
[লেখক : চলচ্চিত্রকার]