alt

উপ-সম্পাদকীয়

বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয়

বাবুল রবিদাস

: বুধবার, ২৯ জুন ২০২২

সংবাদপত্রের পাতা উল্টাতে গিয়ে প্রায়ই আমরা লক্ষ্য করি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রপাতজনিত দুর্ঘটনায় প্রাণহানির খবর। প্রকৃতির লীলাখেলায় আমরা হারাই স্বজন, গবাদিপশু অথবা গাছপালা।

বজ্রাঘাতে সাধারণত শরীরের চামড়ার ওপরের স্তরটিই পুড়ে যায়। বজ্রপাতে দগ্ধ হওয়া ছাড়াও অন্য যেসব বিপদ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে মানসিক বিপর্যয় অন্যতম। মানসিক অবস্থার সুস্পষ্ট পরিবর্তন ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তি হয়ে পড়ে হতবাক, ভীত ও সন্ত্রস্ত। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে বজ্রাঘাতজনিত কারণে সরাসরি বিদ্যুৎ অভিঘাতের ফলে হৃৎপিন্ড নিশ্চল হয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্ট জটিলতায় যদি শ্বাসক্রিয়া বন্ধ না হয়ে যায় তাহলে হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা পুনঃস্থাপন করা সম্ভব। এই অবস্থায় হৃৎপিন্ডের স্পন্দন বৃদ্ধি পায়। এমনকি হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি গুলোতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা হারানোর মতো জটিল অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে অনায়াসেই। বজ্রাঘাতে প্রাণীদের কেন্দ্রীয় স্নায়ু প্রণালিতেও নানা জটিলতার সৃষ্টি করে। কখনো কখনো আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান লোপ পায়, দেহের প্রান্তীয় অঞ্চলে স্নায়ু ও পরিসঞ্চালন ব্যবস্থায় অস্থিরতার সৃষ্টি করে। বজ্রাঘাতের ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি বা প্রাণী তাৎক্ষণিকভাবে মাটিতে ছিটকে পড়ে। এ অবস্থার কেন সৃষ্টি হয়? কারণ দেহে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হবার ফলে মাংসপেশিগুলোর তীব্র সংকোচন ঘটে। ফলে সৃষ্ট ধাক্কায় আক্রান্ত মানুষ অথবা প্রাণী ছিটকে পড়ে, এর ফলে মাংসপেশি ও অস্থিসমূহে নানা জখমের সৃষ্টি হয়। এ সময়ে দেহে ভোঁতা ধরনের আঘাত পাওয়া অতি স্বাভাবিক।

বজ্রাঘাতে চোখে ও কানে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। যেমন-চোখে ছানি পড়া, হাইফেমা, ইউভেইটিস, ভিট্রিয়াস হেমোরেজ, আইরিডোসাইক্লাইটিস ইত্যাদি। প্রচন্ড শব্দে কানে তালা লেগে যায়। কখনো কখনো আবার কানের পর্দা ফেটেও যেতে পারে।

সাধারণত বজ্রাঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসক্রিয়া বিঘ্নিত বা বন্ধ হয়ে যায় বলে তাৎক্ষণিকভাবে শরীরের সব বায়ুপথ সচল রাখা একান্তভাবে প্রয়োজন। এদিকে সযত্ন দৃষ্টি নিতে হবে। তারপর দ্রুত শ্বাস ও হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা পুনর্জীবিত করার দিকে যত্নবান হতে হবে। মনে রাখতে হবে, আক্রান্ত ব্যক্তি আপাতত দৃষ্টিতে মৃতপ্রায় মনে হলেও সময়মতো সিপিআর-এর ফলে বাঁচিলে তোলা সম্ভব। এরপর আঘাতের ধরন লক্ষ করতে হবে।

বজ্রাঘাতের ফলে ছিটকে পড়া লোকটি কোনো ভোঁতা ধরনের আঘাত প্রাপ্তির ফলে দেহে অদৃশ্য রক্তক্ষরণে মৃত্যুমুখে পতিত হতে পারে। তাই শরীরিক আলামত নিরীক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করতে হবে। শরীরে প্রাপ্ত জখম ও অস্থিসমূহের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি-না তাও নিশ্চিত হতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন দেহের পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

বজ্রঘাতে প্রতি বছরই আমাদের দেশে কিছু লোক অকালে মৃত্যুমুখে পতিত হন। প্রকৃতির এই লীলাখেলা অপ্রতিরোধ্য হলেও, দুর্ঘটনা ঘটে যাবার পরে আক্রান্তদের জন্য করণীয় দায়িত্ব আমাদের সামনে রয়ে গেছে। বজ্রপাতের ফলে বৈদ্যুতিক অভিঘাতে আক্রান্ত মানুষ ও প্রাণীকে সহজেই তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করার উপায় ও করণীয় কর্তব্যটুকু জানা থাকলে আমরা সহজেই তাদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দাঁড়াতে পারি। প্রকৃতি তার বিচিত্র খেয়ালে নানা খেলায় মেতে থাকবেই। তারই মধ্যে আমাদের খুঁজে নিতে হবে বাঁচার পথ।

[লেখক : সভাপতি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ]

চিকিৎসা জগতের বাতিঘর জন হপকিনস বিশ^বিদ্যালয়

জলবায়ু পরিবর্তনের দৃশ্যমান প্রভাব

দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ও আজকের বাংলাদেশ

আবিষ্কারমূলক শিখন পদ্ধতি

টেকসই কৃষিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা

ছবি

জয়নুলের সাঁওতাল দম্পতি এবং সুমনের সৌন্দর্যপ্রিয়তা

এরপরও কি গাছ লাগাবেন না, বন রক্ষা করবেন না?

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

খুব জানতে ইচ্ছে করে

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

কৃষিগুচ্ছ : ভর্তির আবেদনের নূ্যূনতম যোগ্যতা ও ফলাফল প্রস্তুতিতে বৈষম্য

ছবি

গণপরিবহনে নৈরাজ্যের শেষ কোথায়

ছাত্র রাজনীতি : পক্ষে-বিপক্ষে

ছবি

বি আর আম্বেদকর : নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিনিধি

চেকের মামলায় আসামির মুক্তির পথ কী

রাম-নবমী : হিন্দুত্বের নয়া গবেষণাগার

‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ উদ্যোগ কি সফল হবে

কিশোর গ্যাং : সমস্যার মূলে যেতে হবে

গীতি চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’ : সুস্থধারার চলচ্চিত্র বিকাশ ঘটুক

ছবি

ঋতুভিত্তিক চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতি

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন

উদার-উদ্দাম বৈশাখ চাই

ঈদ নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি, বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ

প্রসঙ্গ: বিদেশি ঋণ

ছাত্ররাজনীতি কি খারাপ?

জাকাত : বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস : শুরুর কথা

ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

tab

উপ-সম্পাদকীয়

বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয়

বাবুল রবিদাস

বুধবার, ২৯ জুন ২০২২

সংবাদপত্রের পাতা উল্টাতে গিয়ে প্রায়ই আমরা লক্ষ্য করি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রপাতজনিত দুর্ঘটনায় প্রাণহানির খবর। প্রকৃতির লীলাখেলায় আমরা হারাই স্বজন, গবাদিপশু অথবা গাছপালা।

বজ্রাঘাতে সাধারণত শরীরের চামড়ার ওপরের স্তরটিই পুড়ে যায়। বজ্রপাতে দগ্ধ হওয়া ছাড়াও অন্য যেসব বিপদ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে মানসিক বিপর্যয় অন্যতম। মানসিক অবস্থার সুস্পষ্ট পরিবর্তন ঘটে। আক্রান্ত ব্যক্তি হয়ে পড়ে হতবাক, ভীত ও সন্ত্রস্ত। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে বজ্রাঘাতজনিত কারণে সরাসরি বিদ্যুৎ অভিঘাতের ফলে হৃৎপিন্ড নিশ্চল হয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্ট জটিলতায় যদি শ্বাসক্রিয়া বন্ধ না হয়ে যায় তাহলে হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা পুনঃস্থাপন করা সম্ভব। এই অবস্থায় হৃৎপিন্ডের স্পন্দন বৃদ্ধি পায়। এমনকি হৃৎপিন্ডের মাংসপেশি গুলোতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা হারানোর মতো জটিল অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে অনায়াসেই। বজ্রাঘাতে প্রাণীদের কেন্দ্রীয় স্নায়ু প্রণালিতেও নানা জটিলতার সৃষ্টি করে। কখনো কখনো আক্রান্ত ব্যক্তির জ্ঞান লোপ পায়, দেহের প্রান্তীয় অঞ্চলে স্নায়ু ও পরিসঞ্চালন ব্যবস্থায় অস্থিরতার সৃষ্টি করে। বজ্রাঘাতের ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি বা প্রাণী তাৎক্ষণিকভাবে মাটিতে ছিটকে পড়ে। এ অবস্থার কেন সৃষ্টি হয়? কারণ দেহে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হবার ফলে মাংসপেশিগুলোর তীব্র সংকোচন ঘটে। ফলে সৃষ্ট ধাক্কায় আক্রান্ত মানুষ অথবা প্রাণী ছিটকে পড়ে, এর ফলে মাংসপেশি ও অস্থিসমূহে নানা জখমের সৃষ্টি হয়। এ সময়ে দেহে ভোঁতা ধরনের আঘাত পাওয়া অতি স্বাভাবিক।

বজ্রাঘাতে চোখে ও কানে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। যেমন-চোখে ছানি পড়া, হাইফেমা, ইউভেইটিস, ভিট্রিয়াস হেমোরেজ, আইরিডোসাইক্লাইটিস ইত্যাদি। প্রচন্ড শব্দে কানে তালা লেগে যায়। কখনো কখনো আবার কানের পর্দা ফেটেও যেতে পারে।

সাধারণত বজ্রাঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসক্রিয়া বিঘ্নিত বা বন্ধ হয়ে যায় বলে তাৎক্ষণিকভাবে শরীরের সব বায়ুপথ সচল রাখা একান্তভাবে প্রয়োজন। এদিকে সযত্ন দৃষ্টি নিতে হবে। তারপর দ্রুত শ্বাস ও হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা পুনর্জীবিত করার দিকে যত্নবান হতে হবে। মনে রাখতে হবে, আক্রান্ত ব্যক্তি আপাতত দৃষ্টিতে মৃতপ্রায় মনে হলেও সময়মতো সিপিআর-এর ফলে বাঁচিলে তোলা সম্ভব। এরপর আঘাতের ধরন লক্ষ করতে হবে।

বজ্রাঘাতের ফলে ছিটকে পড়া লোকটি কোনো ভোঁতা ধরনের আঘাত প্রাপ্তির ফলে দেহে অদৃশ্য রক্তক্ষরণে মৃত্যুমুখে পতিত হতে পারে। তাই শরীরিক আলামত নিরীক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করতে হবে। শরীরে প্রাপ্ত জখম ও অস্থিসমূহের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি-না তাও নিশ্চিত হতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন দেহের পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

বজ্রঘাতে প্রতি বছরই আমাদের দেশে কিছু লোক অকালে মৃত্যুমুখে পতিত হন। প্রকৃতির এই লীলাখেলা অপ্রতিরোধ্য হলেও, দুর্ঘটনা ঘটে যাবার পরে আক্রান্তদের জন্য করণীয় দায়িত্ব আমাদের সামনে রয়ে গেছে। বজ্রপাতের ফলে বৈদ্যুতিক অভিঘাতে আক্রান্ত মানুষ ও প্রাণীকে সহজেই তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করার উপায় ও করণীয় কর্তব্যটুকু জানা থাকলে আমরা সহজেই তাদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দাঁড়াতে পারি। প্রকৃতি তার বিচিত্র খেয়ালে নানা খেলায় মেতে থাকবেই। তারই মধ্যে আমাদের খুঁজে নিতে হবে বাঁচার পথ।

[লেখক : সভাপতি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ]

back to top